Friday, May 31, 2019

নতুন চাঁদ দেখে কি দেশে দেশে ঈদ পালন করতে হবে


আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমার (রা.) থেকে বর্ণিত,
“রসূলুল্লাহ্ (দ.) রমজানের কথা আলোচনা করে বললেন, চাঁদ না দেখে তোমরা সওম (রোজা) পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ফিতর (ঈদুল ফিতর) উদযাপন করবে না।...-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৩০, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৫, রমজান বলা হবে, না রমজান মাস বলা হবে? যে বলে, উভয়টাই বলা যাবে, হাদিস # ১৯০০, অনুচ্ছেদ ঃ ১১, নাবী (দ.) এর কথা যখন তোমরা নতুন চাঁদ দেখো তখন স্বওম (রোজা) আরম্ভ কর। আবার যখন নতুন চাঁদ দেখো তখনই (ঈদুল) ফিতর উদ্যাপন কর, হাদিস # ১৯০৬, ১৯০৭, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ২, নতুন চাঁদ দেখে স্বওম (রোজা) পালন করা এবং নতুন চাঁদ দেখে (ঈদুল) ফিতর উদ্যাপন করা এবং মাসের প্রথমে বা শেষের দিন মেখাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন পূর্ণ করা, হাদিস # ৩,৪,৬,৭,৮,৯/১০৮০, নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ২২, স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১২, আমর বিন দিনার (রহ.) কর্তৃক ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে উক্ত হাদিসের বর্ণনায় বিরোধ, হাদিস # ২১২৪, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১০, নতুন চাঁদ দেখে স্বওম (রোজা) পালন অথবা ত্রিশ দিন পূর্ণ করা, হাদিস # ৭৯২৫, ৭৯২৮, ৭৯৩১ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।
এই হাদিসটি বলছে যে, আমাদেরকে নতুন চাঁদ দেখে সওম ও ঈদ পালন করতে হবে। এ থেকেই প্রমাণ হয়ে গেল যে, যার-যার দেশের নতুন চাঁদ অনুযায়ী স্বওম ও ঈদ পালন করতে হবে।

উত্তর : আপনার ব্যাখ্যাটি সত্যিই হাস্যকর। কারণ, হাদিসে তোমরা” শব্দটি আ ম (সার্বজনিন) শব্দ। আপনি কিভাবে এই তোমরা” শব্দটিকে খাস (নির্দিষ্ট) করে যার-যার দেশের নতুন চাঁদ অনুযায়ী স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালনের জন্য ব্যাখ্যা করলেন?
এখানে তোমরা” শব্দটি দ্বারা রসূলুল্লাহ (দ.) পুরো মুসলিম জাতিকে সম্বোধন করেছেন। হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা হবে-
“রসূলুল্লাহ্ (দ.) রমজানের কথা আলোচনা করে বললেন, চাঁদ না দেখে তোমরা (পুরো মুসলিম জাতি) স্বওম (রোজা) পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ফিতর (ঈদুল ফিতর) উদযাপন করবে না।...
এখন হাদিসের তোমরা” শব্দটি দ্বারা প্রত্যেক দেশের মুসলিমদেরকে যদি পৃথক-পৃথকভাবে বুঝানো হয়, তাহলে ভাই বলুনতো ১৯৭১ইং সালের পূর্বে যখন আমাদের এই বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত ছিল তখন রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর “তোমরা” শব্দটি দ্বারা কি পাকিস্তানীদের বুঝানো হয়েছিল? এরও পূর্বে যখন পাকিস্তান ভারতবর্ষের অন্তর্ভূক্ত ছিল তখন কি রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর “তোমরা” শব্দটি দ্বারা ভারতবর্ষের মুসলিমদেরকে বুঝানো হয়েছিল? ধরুন, কখনও যদি ঠাকুরগাঁও বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে যায় তখন কি “তোমরা” শব্দটি দ্বারা ঠাকুরগাঁয়ের মুসলিমদের পৃথকভাবে বুঝানো হবে? স্বাভাবিক বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন যেকোন ব্যক্তি-ই বলবেন যে, সত্যিই বিষয়টি হাস্যকর।

অতএব, হাদিসে তোমরা” শব্দটি আমভাবে (সার্বজনিন) ব্যবহার হওয়ায় তা পুরো মুসলিম জাতিকেই বুঝানো হবে। কোনভাবেই মানুষের তৈরী করা দেশের সীমানা অনুযায়ী মুসলিমদেরকে বুঝানো হবে না।

আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ  (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,

“...যদি (মুসলিমদের) দু’জন স্বাক্ষ্য দেয় যে, তারা (নতুন চাঁদ উদয়ের ব্যাপারে) স্ব্যা দেয় তাহলে তোমরা স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালন কর।” -নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, রমজান মাসে নতুন চাঁদ দেখার ব্যাপারে একজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা এবং এ ব্যাপারে সিমাক (রহ.) এর হাদিসে সুফিয়ান (রহ.) এর বর্ণনায় বিরোধ, হাদিস # ২১১৬।

এই হাদিসে রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন, দুইজন মুসলিম নতুন চাঁদ উদয়ের স্বাক্ষ্য দিলেই আমরা স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালন করতে পারব। আর এখানে কোন অঞ্চলের মুসলিম বলে আলাদাভাবে উল্লেখ করেননি। বরং আমভাবে (সার্বজনিন) যে কোন অঞ্চল থেকে দু’জন মুসলিম নতুন চাঁদ উদয়ের স্বাক্ষ্য দেয়ার তথ্য পৌঁছলেই স্বওম ও ঈদ পালন করতে হবে।

Thursday, May 30, 2019

উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডার

আলহামদুলিল্লাহ । সারা বিশ্বব্যাপী একই বার ও তারিখ অনুযায়ী ৪ ঠা জুন ২০১৯ তারিখ মঙ্গলবার মোতাবেক ১ লা শাওয়াল ১৪৪০ হিজরী সৌদি আরবের উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডার, ফিকহ কাউন্সিল অব নর্থ আমেরিকা ক্যালেন্ডার ও তুরস্কের দিনিয়াত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী পবিত্র ঈদুল ফিতর বা রোজার ঈদ অনুষ্ঠিত হবে ।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী নবচন্দ্র ৩ রা জুন ২০১৯ তারিখ সোমবার ১০ : ০৩ ইউনিভার্সেল টাইমে জন্ম নিবে । ৩ রা জুন ২০১৯ তারিখ সর্বপ্রথম দৃশ্যমান নবচন্দ্র খুব শক্তিশালী টেলিস্কোপ দিয়ে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশগুলোতে দেখা যাবে এবং প্রশান্ত মহাসাগরস্হ পলিনেশিয়ান দ্বীপপু্ঞ্জভুক্ত দেশসমুহে আবহাওয়া ভাল থাকা সাপেক্ষে খালিচোখে দেখা যেতে পারে ।

প্রকাশ থাকে যে. সৌদি আরবের উম্মুল কুরা ক্যালেন্ডার অগ্রিম তৈরী করা হয় নবচন্দ্রে সর্বপ্রথম দৃশ্যমানতার সক্ষমতাকে হিসেব করে ।

1st Day of Shawwal (Eid al-Fitr) in Different Countries (Updated when information is available)
Countries that follow Saudi Arabia (Expected date: Tuesday, June 4, 2019)
1. Saudi Arabia
2. Afghanistan
3. Albania
4. Algeria
5. Armenia
6. Austria
7. Azerbaijan
8. Bahrian
9. Belgium
10. Bolivia
11. Bulgaria
12. Burkina Faso
13. Chechnia
14. Denmark
15. Finland
16. Georgia
17. Hungary
18. Iceland
19. Iraq (Sunnis Follow Saudi)
20. Italy
21. Japan
22. Jordan
23. Kazakhstan
24. Kuwait
25. Kyrgizstan
26. Lebanon
27. Mauritania
28. Palestine
29. Philippines
30. Qatar
31. Romania
32. Russia
33. Singapore
34. Sudan
35. Sweden
36. Switzerland
37. Syria
38. Taiwan
39. Tajikistan
40. Tatarstan
41. Togo
42. Turkmenistan
43. U.A.E.
44. Uzbekistan
Countries that follow Turkey (Tuesday, June 4, 2019)
1. Turkey (European Council for Fatwa & Research) Altitude >5°, elongation>8° anywhere
2. Algeria
3. Angola
4. Bosnia and Hercegovina
5. Croatia
6. France (CFCM - French Council of Muslims)
7. Germany
8. Ireland
9. Kosovo
10. Luxembourg
11. Macedonia
12. Montenegro
13. Serbia
14. Slovania
15. Tunisia
16. USA & Canada - Fiqh Council of North America (FCNA) /Islamic Society of North America (ISNA).
Source : Moonsighting.com
Update : 27 May 2019

কতজন মুসলিমের চাঁদ দেখা গ্রহনীয়

কতজন মুসলিমের চাঁদ দেখা গ্রহণীয়
আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ  (রা.) থেকে বর্ণিত,  নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,
“...যদি (মুসলিমদের) দু’জন স্বাক্ষ্য দেয় যে, তারা (নতুন চাঁদ উদয়ের ব্যাপারে) দেখেছে, তাহলে তোমরা স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালন কর।” নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, রমজান মাসে নতুন চাঁদ দেখার ব্যাপারে একজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা এবং এ ব্যাপারে সিমাক (রহ.) এর হাদিসে সুফিয়ান (রহ.) এর বর্ণনায় বিরোধ, হাদিস # ২১১৬।

এই হাদিসটি থেকে বুঝা যায় যে, যদি দু’জন মুসলিম রমজানের বা শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ উদয়ের ব্যাপারে স্বাক্ষ্য দেয়, তাহলে তা সকল মুসলিমের জন্য প্রয়োজ্য হবে। অর্থাৎ দু’জন মুসলিম নতুন চাঁদের স্ব্যা দিলেই তা অনুযায়ী সকল মুসলিম স্বওম  (রোজা) এবং  ঈদ  পালন  করবে।

হুসাইন ইবনুল হারিস আল-জাদালী (রহ.) সূত্রে বর্ণিত,
“একদা মাক্কাহ্’র আমীর ভাষণ প্রদানের সময় বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে চাঁদ দেখে হাজ্বের সময় নির্ধারণ করতে বলেছেন। যদি চাঁদ না দেখি তাহলে নিষ্ঠাবান দু’জন ব্যক্তির (চাঁদ দেখার) স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতে যেন আমরা হাজ্ব পালন করি। আবু মালিক বলেন, আমি হুসাইন ইবনুল হারিস (রহ.)কে জিজ্ঞেস করি, মাক্কাহ্’র আমীর কে? তিনি বললেন আমার জানা নেই। পরবর্তীতে তাঁর সাথে আমার স্বাক্ষাৎ হলে তিনি বলেন, মাক্কাহ্’র আমীর হলেন মুহাম্মাদ ইবনুল হাতিবে ভাই হারিস ইবনুল হাতিব। অতপরঃ উক্ত আমীর বললেন, তোমাদের মাঝে এমন একজন আছেন যিনি আমার চেয়েও আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল সম্পর্কে অধিক জানেন। আর তিনিই একথাটি রসূলুল্লাহ্ (দ.) থেকে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন। এই কথা বলে তিনি একজন লোকের দিকে ইশারা করলেন। হুসাইন (রহ.) বলেন, আমার পাশে বসা একজন বৃদ্ধলোককে জিজ্ঞেস করলাম, আমীরের ইশারাকৃত এই লোকটি কে? তিনি বললেন, আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমার (রা.)। তিনি যে বলেছেন, (আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমার (রা.) আমার চেয়েও অধিক জ্ঞাত তাও সঠিক (কথা)। এরপর আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমার (রা.) বলেন, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে উক্ত নির্দেশ দিয়েছেন।
- আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দেয়া, হাদিস # ২৩৩৮, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৫ (হাদিসটি আবু দাউদের বর্ণনা)।

এই হাদিসটি থেকেও বুঝা যায় যে, নতুন চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য দু’জন ব্যক্তি থেকে হতে হবে।

শিক্ষা:
১। দু’জন মুসলিম নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলেই তা সকল মুসলিমের জন্য মেনে নিতে হবে। সকল মুসলিমের চাঁদ দেখা শর্ত নয়।

চাঁদ দেখা না গেলে অন্য জায়গার দেখার খবর পেলে করণীয়

এক অঞ্চলে নতুন চাঁদ দেখা না গেলে অন্য অঞ্চল
থেকে নতুন চাঁদ দেখার সংবাদ আসলে করণীয়

আনাস্ ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,
“রসূলুল্লাহ্ (স.) এর স্বহাবী আমার কতিপয় আনসার চাচা আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ আমাদের উপর গোপন থাকে। আমরা (পরের দিন) স্বওম (রোজা) পালন করি। এমতাবস্থায়, ঐ দিনের শেষভাগে একটি কাফিলা নাবী (স.) এর কাছে এসে স্বাক্ষ্য দেন যে, তাঁরা গতকাল নতুন চাঁদ দেখেছে। তখন রসূলুল্লাহ্ (স.) আমাদের স্বওম (রোজা) ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন এবং আগামীকাল ঈদগাহে (স্বলাতের জন্য) আসতে বললেন।” -আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলে, হাদিস # ২৩৩৯, ইবনু মাজাহ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৭, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ, ঃ ৫, দুইজন নতুন চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য দিলে, হাদিস # ১৬৫৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্যের ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৮, ৮১৮৯, ৮১৯০, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৩, হাদিস # ৮১৯৬, ৮১৯৮, ৮১৯৯ (হাদিসটি ইবনু মাজাহ্’র বর্ণনা)।

এই হাদিসটি থেকে বুঝা যায় যে, মাদিনায় রসূলুল্লাহ্ (দ.) এবং তাঁর সাহাবীগণ কেউই শাওয়াল মাসের নতুন চাঁদ দেখেননি। তাই তাঁরা সকলে পরেরদিন স্বওম (রোজা) পালন করছিলেন। কিন্তু ঐ দিনের শেষভাগে অর্থাৎ ইফতারের কিছু সময় পূর্বে মাদিনার বাহিরে থেকে  আ গত একটি কাফেলা নাবী (দ.) কে জানাল যে, তাঁরা গতকাল সন্ধ্যায় নতুন চাঁদ দেখেছেন। রসূলুল্লাহ্ (স.) যখন জানতে পারলেন যে, তাঁরা মুসলিম তখন তিনি সকলকে স্বওম (রোজা) ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন।

অর্থাৎ বুঝা গেল যে, নিজ শহরে নতুন চাঁদ দেখা না গেলেও বাহিরের শহরের নতুন চাঁদ উঠার খবর আসলে তা গ্রহণ করতে হবে। কারণ, রসূলুল্লাহ্ (স.) স্বয়ং নিজেই অন্য শহরের নতুন চাঁদের সংবাদ গ্রহণ করে আমাদের তা শিখিয়ে দিয়েছেন।

শিক্ষা:
১। নিজ অঞ্চলে ঈদের নতুন চাঁদ দেখা না গেলে স্বওম (রোজা) পালন করতে হবে। কিন্তু যদি বাহিরের অঞ্চল থেকে নতুন চাঁদ উদয়ের সংবাদ পাওয়া যায় তাহলে নিজ অঞ্চলের চাঁদ না দেখা গেলেও স্বওম (রোজা) ভেঙ্গে ফেলতে হবে। অর্থাৎ বাহিরের অঞ্চলের নতুন চাঁদ আমাদের অঞ্চলের চাঁদ হিসেবে গণ্য হবে।

২। নিজ অঞ্চলের নতুন চাঁদ দেখা না গেলে অন্য অঞ্চলের নতুন চাঁদ উদয়ের সংবাদ আসলে তা গ্রহণ করা রসূলুল্লাহ্ (স.) এর নিয়ম।

ইসলামে মেয়েদের চাকরি করার বিধিবিধান

***ইসলামে মেয়েদের চাকরি করার অনুমতি আছে কি?

**পিসটিভির প্রশ্নোত্তর পর্বে ডা. জাকির নায়েককে প্রশ্ন করা হয়, ইসলামে নারীরা স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করলে এর বৈধতা রয়েছে কিনা। নারীদের ক্যারিয়ারের ব্যাপারে ইসলাম কি বলে? উত্তরে ডা. জাকির নায়েক বলেন, নারীরা স্বাবলম্বী হতে চাইলে হতে পারবে তবে তাদের জন্য স্বাবলম্বী হওয়া বা উপার্জন করা আবশ্যক নয়। নারীদের আর্থিক যোগানের দায়িত্ব পুরুষদের। বিয়ের আগে তাদের দায়িত্ব বাবার ওপর, বিয়ের পরে স্বামীর ওপর। তবে তারা চাইলে স্বাবলম্বী হতে পারবে। তবে তাদের উপার্জনের জন্য জোর দেওয়া যাবে না। নারী পুরুষের অধিকার সমান তবে অভিন্ন নয়।

যেমন কোনো পুরুষ চাইলে সে গর্ভধারণ করতে পারবে না। উভয়ে তার নিজ জায়গা থেকে সমান অধিকার পাবে। দ্বিতীয়ত কোনো নারী তার ক্যারিয়ার ও স্বাবলম্বী হতে চাইলে ইসলামে কোনো বাধা নেই। তবে তা হতে হবে ইসলামি শরিয়া আইন মেনে। নারী পুরুষের পৃথক পৃথক ব্যবস্থার মাধ্যমে তারা কর্মক্ষেত্রে যোগ দিতে পারবে। একই রুমে একজন নারী ও পুরুষের বসা কোনো ক্রমেই উচিত হবে না। যেমন বস ও এসিসটেন্টদের মধ্যে হয়ে থাকে। ইসলামে বলা হয়েছে, কোনো নারী পুরুষ নির্জনে থাকলে তাদের মধ্যে তৃতীয়জন থাকে শয়তান। সেই সঙ্গে তাদের পরস্পর অযথা কথা বলাও উচিত নয়। হিজাব পরিধান করে তারা কর্মক্ষেত্রে যাবেন। এভাবে হলে নারীরাও তাদের ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

যেমন আমার দুই বোন ব্যবসা করেন। তাদের একজন ফ্যাক্টরি চালান। সে ম্যানেজিং ডাইরেক্টর। সে নারী পুরুষের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রেখেছে। অপরজনের এক্সপোর্টের ব্যবসা। তবে ক্যারিয়ার ও স্বাবলম্বী হতে যেয়ে অবৈধ কোনো কাজ করা যাবে না। যেমন মডেলিং, নাঁচ, গান ইত্যাদি। নারীদের প্রধান ক্যারিয়ার হচ্ছে একজন ভাল মা ও ভাল স্ত্রী হওয়া। নিজের ক্যারিয়ার গড়তে যেয়ে যেন ছেলে সন্তান ও স্বামীর প্রতি কর্তব্য পালনে বিঘ্ন সৃষ্টি না হয়।

কারণ ইসলামে বাবার চেয়ে মায়ের প্রতি বেশি সম্মান দেখাতে বলা হয়েছে। এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করল : আমি কার সঙ্গে সর্বোত্তম আচরণ করব? তিনি বললেন : তোমার মায়ের সঙ্গে। সেই ব্যক্তি আবার জিজ্ঞাসা করল : তারপর কার সঙ্গে? তিনি বললেন, তোমার মায়ের সঙ্গে। সেই ব্যক্তি আবার জিজ্ঞাসা করল : তারপর কার সঙ্গে? তিনি বললেন : তোমার মায়ের সঙ্গে। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করল : তারপর কার সঙ্গে? তিনি বললেন : তোমার পিতার সঙ্গে।

ইসলাম নারীকে এভাবেই মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। কারণ সন্তান লালন পালনে তাদের বড় ত্যাগ রয়েছে। সন্তান লালন পালনই হলো তাদের বড় ক্যারিয়ার।

ইসলামের চোখে নারীর অর্থ উপার্জন
অর্থ ছাড়া মানবজীবন চলতে পারে না। মানবজীবনে অর্থনীতির গুরুত্ব অপরিসীম। অন্ন-বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসা, মানুষের মৌলিক অধিকার। এগুলোর যোগান দিতে মানুষকে অর্থ উপার্জনের পন্থা বেছে নিতে হয়। অর্থ উপার্জন ও জীবিকা নির্বাহের জন্য মানুষ স্বাভাবিকভাবে দু-ধরনের পেশা অবলম্বন করে থাকেন। চাকরি বা ব্যবসায়। তবে সেই চাকরি ও ব্যবসাও হতে হবে বৈধ। আর এদুটোই হচ্ছে অর্থ উপার্জনের বৈধ পন্থা। অর্থ উপার্জনের মাধ্যম ছাড়া কারো পক্ষেই এসব মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ করা সম্ভব নয়।

অর্থনীতি মানবজীবনের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম চালিকা শক্তি। তাই আল্লাহ তা‘আলা ফরয ইবাদত সমাপনান্তে জীবিকা নির্বাহে উপার্জন করার লক্ষ্যে যমিনে বিচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, অর্থাৎ “সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর, এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করবে যাতে তোমরা সফলকাম হও।” (সুরা: জুমুআ ১০)

ইসলাম সর্বদা নারীদের শালীন পরিবেশে শিক্ষা, কাজ ও চলাফেরার কথা বলে। শরিয়ত নির্ধারিত গন্ডির মধ্যে থেকে নারীরা অবশ্যই শিক্ষা অর্জনসহ অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারবে। ইসলাম কোথাও নারীকে বন্দী করে রাখার কথা বলেনি। ইসলাম নারী শিক্ষার প্রতি যেমন গুরুত্বারোপ করেছে তেমনি নারী-পুরুষের ভোটাধিকারেও কোনো ধরনের পার্থক্য সৃষ্টি করেনি। এমনকি ইসলাম নারীকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে কাজ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের অধিকারও প্রদান করেছে।

কোরআনে কারিমের সূরা বাকারার ১৮৬ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আমি ব্যবসাকে হালাল করেছি এবং সুদকে হারাম করেছি।’ এই আয়াতে ব্যবসা হালাল হওয়া এবং সুদ হারাম হওয়া নারী-পুরুষের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। একজন পুরুষ হালাল পন্থায় যেসব ব্যবসা করতে পারবে। নারীও সে ধরনের ব্যবসা করতে পারবে। সে বিবাহিত হোক কিংবা অবিবাহিত হোক। সে তার অর্জিত সম্পদের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণকারী। সে কোনো বিধি নিষেধ ছাড়াই তার সম্পত্তির ব্যাপারে সব ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে, যা একজন পুরুষের জন্যও প্রযোজ্য।

কোরআন ও হাদিসের কোনো স্থানে নারীর কাজকর্মের ব্যাপারে কোনো বিধি নিষেধ আরোপিত হয়নি। শুধু দু’টি বিষয়ের প্রতি সঙ্গত কারণে নির্দেশ দিয়েছে। শর্ত দু’টি হলো প্রথমত, ব্যবসা হতে হবে হালাল পদ্ধতিতে ও শরিয়ত নির্ধারিত সীমারেখার মধ্যে। দ্বিতীয়ত, পর্দা রক্ষা করতে হবে। তাছাড়া ইসলাম নারীদের সৌন্দর্য প্রদর্শনকারী কোনো পেশায় নিয়োজিত হতেও নিষেধ করেছে। বর্তমান যুগ অর্থনৈতিক যুগ, অর্থের প্রয়োজন আজ যেন পূর্বাপেক্ষা অনেক গুণ বেশি বেড়ে গেছে। অর্থ ছাড়া এ যুগের জীবন ধারণ তো দূরের কথা শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণও যেন সম্ভব নয় - এমনি এক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে জীবন ও সমাজের সর্বক্ষেত্রে। তাই পরিবারের একজন লোকের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকা, এক ব্যক্তির উপার্জনে গোটা পরিবারের সব রকমের প্রয়োজন পূরণ করা আজ যেন সুদূরপরাহত ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আজকের লোকদের মনোভাব এমনি। তারা মনে করে, জীবন বড় কঠিন, সংকটময়, সমস্যা সংকুল। তাই একজন পুরুষের উপার্জনের উপর নির্ভর না করে ঘরের মেয়েদের-স্ত্রীদের উচিত অর্থোপার্জনের জন্য বাইরে বেরিয়ে পড়া। এতে করে একদিকে পারিবারিক প্রয়োজন পূরণের ব্যাপারে স্বামীর সাথে সহযোগিতা করা হবে, জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। অন্যথায় বেচারা স্বামীর একার পক্ষে সংসার সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নেয়া কিছুতেই সম্ভব হবে না। আর অন্যদিকে নারীরাও কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজেদের কর্মক্ষমতার বিকাশ সাধনের সুযোগ পাবে। এ হচ্ছে আধুনিক সমাজের মনসতত্ত্ব। এর আবেদন যে খুবই তীব্র আকর্ষণীয় ও অপ্রত্যাখ্যানীয়, তাতে সন্দেহ নেই।

এরই ফলে আজ দেখা যাচ্ছে, দলে দলে মেয়েরা ঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে পড়ছে। অফিসে, ব্যবসাকেন্দ্রে, হাসপাতালে, উড়োজাহাজে, রেডিও, টিভি স্টেশনে- সর্বত্রই আজ নারীদের প্রচন্ড ভিড়। এ সম্পর্কে দুটো প্রশ্ন অত্যন্ত মৌলিক, একটি পারিবারিক-সামাজিক ও নৈতিক আর দ্বিতীয়টি নিতান্তই অর্থনৈতিক। নারী সমাজ আজ যে ঘর ছেড়ে অর্থোপার্জন কেন্দ্রসমূহে ভিড় জমাচ্ছে, তার বাস্তব ফলটা যে কী হচ্ছে তা আমাদের গভীরভাবে ভেবে দেখতে হবে। পরিবারের মেয়েরা নিজেদের শিশু সন্তানকে ঘরে রেখে দিয়ে কিংবা চাকর-চাকরানির হাতে সপে দিয়ে অফিসে, বিপণীতে উপস্থিত হচ্ছে।

দীর্ঘ সময় ধরে দিন রাতের প্রায় সময়ই শিশু সন্তানরা মায়ের স্নেহ বঞ্চিত থাকতে বাধ্য হচ্ছে। আর তারা প্রকৃত পক্ষে লালিত-পালিত হচ্ছে, চাকর চাকরানির হাতে। ধাত্রী আর চাকর চাকরানিরা যে সন্তানের মা নয়, মায়ের কর্তব্য সঠিকভাবে পালন করাও তাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়- এ কথা যুক্তি দিয়ে বোঝাবার প্রয়োজন পড়ে না অথচ ছোট ছোট মানব শিশুদের পক্ষে মানুষ হিসেবে লালিত-পালিত হওয়ার সবচাইতে বেশি প্রয়োজনীয় হচ্ছে মায়ের স্নেহ-দরদ ও বাৎসল্যপর্ণ ক্রোড়। অপরদিকে স্বামী ও উপার্জনের জন্য বের হয়ে যাচ্ছে, যাচ্ছে স্ত্রীও। স্বামী এক অফিসে, স্ত্রী অপর অফিসে, স্বামী এক কারখানা, স্ত্রী অপর কারখানায়। স্বামী এক দোকানে, স্ত্রী অপর এক দোকানে। স্বামী এক জায়গায় ভিন মেয়েদের সঙ্গে পাশাপাশি বসে কাজ করছে, আর স্ত্রী অপর এক স্থানে ভিন পুরুষের সঙ্গে মিলিত হয়ে রুজি-রোজগারে ব্যস্ত হয়ে আছে। জীবনে একটি বৃহত্তম ক্ষেত্রে স্বামী আর স্ত্রী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

এর ফলে স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য জীবনের বন্ধনে ফাটল ধরা ছেদ আসা যে অতি স্বাভাবিক তা বলে বোঝাবার অপেক্ষা রাখে না। এতে করে না স্বামীত্ব রক্ষা পায়, না থাকে স্ত্রীর বিশ্বস্ততা। উভয়ই অর্থনৈতিক প্রয়োজনের দিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ, আত্মনির্ভশীল এবং প্রত্যেকেই নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজস্ব পদও সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে আত্মচিন্তায় মশগুল। প্রত্যেকেরই মনসতত্ত্ব সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ভাবধারায় চালিত ও প্রতিফলিত হতে থাকে স্বাভাবিকভাবেই। অতঃপর বাকী থাকে শুধু যৌন মিলনের প্রয়োজন পূরণ করার কাজটুকু। কিন্তু অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা লাভের পর এ সাধারণ কাজে পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল হওয়া কতটুকু সম্ভব- বিশেষত বাইরে যখন সুযোগ সুবিধার কোন অভাব নেই। বস্তুত এ রূপ অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক আকর্ষণ ক্ষীণ হয়ে আসতে বাধ্য।

অতঃপর এমন অবস্থা দেখা দেবে, যখন পরিচয়ের ক্ষেত্রে তারা পরস্পর স্বামী-স্ত্রী হলেও কার্যত তারা এক ঘরে রাত্রি যাপনকারী দুই নারী পুরুষ মাত্র। আর শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া তাদের ক্ষেত্রে বিচিত্র কিছু নয়। পারিবারিক শান্তি-শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি, নির্লিপ্ততা, গভীর প্রেম- ভালোবাসা শূন্য হয়ে বাস্তব ক্ষেত্রে অর্থোপার্জনের যন্ত্র বিশেষে পরিণত হয়ে পড়ে। এ ধরনের জীবনযাপনের এ এক অতি স্বাভাবিক পরিণতি ছাড়া আর কিছু নয়।

স্ত্রীর ঘাড়ে অর্থ উপার্জনের বোঝা চালানো : ইসলাম নারীর উপর অর্থনৈতিক কোন দায়-দায়িত্ব চাপায়নি। পরিবারের আর্থিক দায়-দায়িত্ব বহন করা পুরুষের উপর অর্পিত হয়েছে। সেহেতু নারীকে তার জীবিকার জন্য চাকরি করার প্রয়োজন নেই। তবে পুরুষের উপার্জিত যদি সংসার চালানোর জন্য যথেষ্ট না হয় এবং প্রকৃত অভাবের সময়, সংকটকালে উভয়েরই চাকরি করার প্রয়োজন দেখা দেয়, তবে এমন অবস্থায়ও নারীর স্বাধিনতা রয়েছে। ইচ্ছা করলে সে বাইরে চাকরি করতে পারে, ইচ্ছা করলে নাও করতে পারে। কেউ জোর করে তার ঘাড়ে চাকরির বোঝা চাপিয়ে দিতে পারে না। চাকরি না করে পুরুষের উপার্জন ভোগ করা তার অধিকার। এ অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তার ঘাড়ে উপার্জনের বোঝা চাপিয়ে দেয়া অন্যায়, জুলুম।
নারীর চাকরি করার অধিকার অবশ্যই আছে। ইসলাম নারীকে বাইরে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। কারণ, ইসলাম বাস্তব ও প্রাকৃতিক ধর্ম। এর পরিধি অত্যন্ত বিস্তৃত, এর আয়তন অতি ব্যাপক। তা মানবীয় প্রয়োজনেও জীবনের সর্বাবস্থায় সাড়া দেয়। অনেক মহিলাকে বাইরে কাজ করতে হয়। বিভিন্ন পরিস্থিতি তাদেরকে বাইরে কাজ করতে বাধ্য করে। যেমন করে বাপ মারা গেলে মাকে চাকরি করতে হয়, চাকরি করে এতিম ছেলে -মেয়েদের মুখে দু, মুঠো ভাত তুলে দিতে হয়। কোন গরিব যুবতীর বিয়ে শাদী না হলে তাকে চাকরি করে জীবন বাঁচাতে হয়।

কিন্তু যাদের সংসার সচ্ছল ,স্বামী বা ভাই চাকরি করে, তাদের সংসারেই প্রচুর কাজ রয়ে গেছে। তাদের বাইরে কাজ করার সময় ও সুযোগ কোথায়? যাদের পুরুষরা সারাদিন বাইরে কাজ করে জীবিকা উপার্জন করে, তাদের জন্য বাড়িতে একটা শান্তিপূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশ, একটা আরামদায়ক প্রতিবেশ সরবরাহ করা নারীর দায়িত্ব। ইসলামের অসাধারণ সৌন্দর্যগুলোর মধ্যে একটা সৌন্দর্য এই যে, পুরুষকে উপার্জন, রক্ষণাবেক্ষণ ও নারীর ভরণ–পোষণের কাজে নিয়োজিত রেখে নারী জাতিকে এ সকল দায়িত্ব থেকে মুক্ত দিয়েছে। আর নারীর উপর পুরুষের জন্য শান্তিপূর্ণ ঘরোয়া পরিবেশ সৃষ্টি করা, গর্ভে সন্তান ধারণ করা, সন্তান জন্ম দেয়া, তাদের লালন-পালন করা, শিক্ষা-দিক্ষা দিয়ে আদর্শ নাগরিক রূপে গড়ে তোলা ইত্যাদির এক লম্বা ধারাবাহিক কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

এভাবে ইসলামের দৃষ্টিতে একজন নারীর প্রধান কাজ ও প্রাথমিক দায়িত্ব হচ্ছে স্ত্রী ধর্ম ও মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা। এ গুরু দায়িত্বের উপর যদি তার উপর নিজের ভরণ – পোষণের জন্য এবং ছেলে-মেয়েদের উপার্জনের প্রচন্ড- কষ্ট-ক্লেশের অতিরিক্ত বোঝা চাপিয়ে দেয়া হয়, তবে সেটা হবে নারীর প্রতি অন্যায় –অবিচার।

তাই নবী (সাঃ) বলেছেন, স্বামীর খেদমত করা, সন্তুষ্টি অন্বেষণ করা, মাতৃত্বের দায়িত্ব পালন করা: যেমন, সন্তান গর্ভে ধারণ করা, তাদের সুশিক্ষা দান করা, তাদের চরিত্র গঠন করা ও ভবিষ্যৎ জীবনের উন্নত সাধন করা ইত্যাদি জন্য নারী জাতিকে উৎসাহিত করেছেন। তাছাড়া ঘর গুছানো, ঘর সাজানো, রান্না-বান্না করা, কাপড় সেলাই করা ইত্যাদি গৃহস্থালী কাজের এত ব্যাপক দায়িত্ব প্রকৃতগতভাবেই নারী জাতির উপর ন্যস্ত করে দেয়া হয়েছে।

যা হোক,ইসলামে নারী জাতির মূল্য , সমাজে তাদের গুরুত্ব ও মানুষ হিসেবে তাদের কৃতকার্যতার পরিমাণ নির্ণয় করা সম্পূর্ণ ভিন্ন নীতিতে। আর তা হলো , খোদাভীতি ও তার আনুগত্য স্বীকার করা, স্বামীর প্রতি তার কর্তব্য পালন করা , সন্তান গর্ভে ধারণ করা, তাদের লালন-পালন ও শিক্ষা দিক্ষা দেয়ার যে সকল দায়িত্ব তাদের উপর অর্পিত হয়েছে, সে সকল পূর্ণ করার উপর।

__উত্তরপ্রদানে ড. জাকির নায়ক__
__পিসটিভি__

Wednesday, May 29, 2019

আহলে হাদিস নামধারিদের দল-উপদল


আহলে হাদীস বিভিন্ন দল-উপদল ও মতে বিভক্ত। 
 
(১) জমিয়তে আহলে হাদীস
(২) গুরাবায়ে আহলে হাদীস
(৩) আহলে হাদীস আন্দোলন (গালীব)
(৪) আহলে হাদীস আন্দোলন হাদীস
(১০) আঞ্জুমানে আহলে হাদীস
(১১) বঙ্গ ও আসাম জমিয়তে আহলে হাদীস।
(১২) ট্রু সালাফী (আহলে হাদীস)
(১৩) কুতুবী সালাফী (আহলে হাদীস)
(১৪) সুরুলি সালাফী (আহলে হাদীস)
(১৫) জামিয়াহ আহলে হাদীস
(১৬) কুরবা আহলে হাদীস।


কথিত আহলে হাদিস নামধারিদের দল-উপদল মিলে ১৬৪টি ফেরকায় বিভক্ত হওয়ার তালিকাঃ 
https://markajomar.com/?p=1184&fbclid=IwAR2EPYOB9PUH5tEsr1i-tSFpKdS0PABNWuciTgj38TAbz46bdffiH1j4D7Y

Tuesday, May 28, 2019

ইস্তেহাযা কি ও এর বিধান

হায়েজের ‍তিন দিনের কমে ও দশ দিনের উপরে এবং নেফাসের ৪০দিনের অতিরিক্ত দিনগুলোতে নারীর যৌনাঙ্গ থেকে যে রক্ত বের হলে সে রক্তকে ইস্তেহাযা বলে।
এ অবস্থায় তাকে প্রতি ওয়াক্ত নামাযের জন্য অজু করতে হবে এবং রোজার দিন হলে রোজা রাখতে হবে।
তার জন্য কিছুতেই নামায রোযা কাযা করার অনুমতী নাই।
১ম হাদীস,
حَدَّثَنَا هَنَّادٌ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، وَعَبْدَةُ، وَأَبُو مُعَاوِيَةَ عَنْ هِشَامِ بْنِ عُرْوَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ جَاءَتْ فَاطِمَةُ بِنْتُ أَبِي حُبَيْشٍ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَتْ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي امْرَأَةٌ أُسْتَحَاضُ فَلاَ أَطْهُرُ أَفَأَدَعُ الصَّلاَةَ قَالَ ‏”‏ لاَ إِنَّمَا ذَلِكِ عِرْقٌ وَلَيْسَتْ بِالْحَيْضَةِ فَإِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ فَدَعِي الصَّلاَةَ وَإِذَا أَدْبَرَتْ فَاغْسِلِي عَنْكِ الدَّمَ وَصَلِّي ‏”‏ ‏.‏ قَالَ أَبُو مُعَاوِيَةَ فِي حَدِيثِهِ وَقَالَ ‏”‏ تَوَضَّئِي لِكُلِّ صَلاَةٍ حَتَّى يَجِيءَ ذَلِكَ الْوَقْتُ ‏”‏ ‏.‏ قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أُمِّ سَلَمَةَ ‏.‏ قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ عَائِشَةَ جَاءَتْ فَاطِمَةُ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ ‏.‏ وَهُوَ قَوْلُ غَيْرِ وَاحِدٍ مِنْ أَهْلِ الْعِلْمِ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم وَالتَّابِعِينَ ‏.‏ وَبِهِ يَقُولُ سُفْيَانُ الثَّوْرِيُّ وَمَالِكٌ وَابْنُ الْمُبَارَكِ وَالشَّافِعِيُّ أَنَّ الْمُسْتَحَاضَةَ إِذَا جَاوَزَتْ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا اغْتَسَلَتْ وَتَوَضَّأَتْ لِكُلِّ صَلاَةٍ
অর্থ, আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণনা করেন যে, ফাতিমা বিনত আবী হুবায়শ নামক জনৈক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমীপে এসে বললেন যে, আল্লাহর রাসূল, আমি তো ইস্তিহাযায় আক্রান্ত একজন মেয়ে। আমি তো পাক হই না। তাই আমি সালাত ছেড়ে দিব কি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, কারণ এ রক্ত হায়েযের নয় বরং শিরা থেকে বেরিয়ে আসা রক্ত। সুতরাং যখন তোমার হায়যের নির্ধারিত দিনগুলি আসে তখন সে ক‘দিন নামায ছেড়ে দিবে আর হায়যের দিনগুলো চলে গেলে তোমার রক্ত ধুয়ে নিবে এবং সালাত আদায় করবে। রাবী আবূ মুআবিয়া তার রিওয়ায়াতে আরো উল্লেখ করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ মহিলাকে বলেছিলেনঃ আরেক সালাতের ওয়াক্ত না আসা পর্যন্ত প্রতি ওয়াক্ত সালাতের জন্য উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নিবে। –
এই বিষয়ে উম্মু সালমা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে ওহাদিস বর্ণিত আছে। ইমাম আবূ ঈসা তিরমিযী বলেনঃ আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণিত হাদিসটি হাসান ও সহীহ। এই হচ্ছে একধিক সাহাবী ও তাবিঈর বক্তব্য। সুফইয়ান ছাওরী, মালিক, ইবনুল মুবারক, শাফিঈ (রহঃ) ও এই অভিমত ব্যক্ত করে বলেনঃ হায়যের নির্ধরিত দিনগুলো অতিক্রমের পর ইসতিহাযায় আক্রান্ত মহিলা গোসল করবে এবং প্রত্যেক সালাতের জন্য অযু করবে।
তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১২৫ ,
২য় হাদীস,
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا شَرِيكٌ، عَنْ أَبِي الْيَقْظَانِ، عَنْ عَدِيِّ بْنِ ثَابِتٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ فِي الْمُسْتَحَاضَةِ ‏ “‏ تَدَعُ الصَّلاَةَ أَيَّامَ أَقْرَائِهَا الَّتِي كَانَتْ تَحِيضُ فِيهَا ثُمَّ تَغْتَسِلُ وَتَتَوَضَّأُ عِنْدَ كُلِّ صَلاَةٍ وَتَصُومُ وَتُصَلِّي ‏”‏ ‏.‏
অর্থ, কুতায়বা (রহঃ) আদী ইবনু ছাবিত তার পিতা পিতামত এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, ইসতিহাযায় আক্রান্ত মহিলা সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, পূর্বে তার হায়যের যে নির্ধারিত দিনগুলি ছিল সেই দিনগুলির সালাত সে ছেড়ে দিবে। সে দিনগুলো অতিক্রান্ত হওয়ার পর সে গোসল করবে এবং প্রত্যেক সালাতের জন্য অযু করবে আর যথারীতি সিয়াম ও সালাত আদায় করতে থাকবে।
তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১২৬
ইবনু মাজাহ ৬২১, (বুখারি ও মুসলিম)

মুসলিমরা কি কাবা ঘরের পূজা করে

প্রশ্ন : মুসলিমরা কি কাবা ঘরের পূজা করে ?

💐বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম💐

উত্তর : না । কাবা ঘর হল নামাজ পড়ার জন্য একটা দিক,

কা’বা মুসলমানদের ‘কেবলা’। মুসলমানরা তাদের প্রার্থনায় দিক নির্দেশক হিসেবে গণ্য করে। এখানে লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, মুসলমানরা তাদের প্রার্থনায় কা’বার দিকে মুখ করে বটে তবে তারা কাবা ঘরের উপাসনা করে না।

 মহান আল্লাহ বলেন  :

قَدۡ نَرٰی تَقَلُّبَ وَجۡہِکَ فِی السَّمَآءِ ۚ فَلَنُوَلِّیَنَّکَ قِبۡلَۃً  تَرۡضٰہَا  ۪  فَوَلِّ وَجۡہَکَ شَطۡرَ الۡمَسۡجِدِ الۡحَرَامِ ؕ  وَ حَیۡثُ مَا کُنۡتُمۡ   فَوَلُّوۡا  وُجُوۡہَکُمۡ شَطۡرَہٗ ؕ وَ  اِنَّ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ لَیَعۡلَمُوۡنَ اَنَّہُ  الۡحَقُّ مِنۡ رَّبِّہِمۡ ؕ وَ مَا اللّٰہُ بِغَافِلٍ عَمَّا یَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۴۴﴾
অর্থঃ আকাশের দিকে বার বার তোমার মুখ ফিরানো আমি অবশ্যই দেখছি। অতএব আমি অবশ্যই তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরাব, যা তুমি পছন্দ কর। সুতরাং তোমার চেহারা মাসজিদুল হারামের দিকে ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাক, তার দিকেই তোমাদের চেহারা ফিরাও। আর নিশ্চয় যারা কিতাবপ্রাপ্ত হয়েছে, তারা অবশ্যই জানে যে, তা তাদের রবের পক্ষ থেকে সত্য এবং তারা যা করে, সে ব্যাপারে আল্লাহ গাফিল নন।
(💠সূরা বাকারাহ, আয়াত : 144)

মুসলমানরা যদি নামায আদায় করতে চায় তাহলে কোন দিকে ফিরে নামাজ পড়বে ?

কারো ইচ্ছা হবে উত্তর দিকে ফিরে নামায পড়তে, কারো ইচ্ছা হবে দক্ষিণ দিকে ফিরতে।

উত্তর, দক্ষিণ যেমন একটা দিক, ঠিক তেমনি কাবা হল নামাজ পড়ার জন্য একটা দিক,

 তাই উপাসনার ক্ষেত্রেও মুসলমানদের চূড়ান্তভাবে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য যেখানেই তারা থাকনা কেন এক আল্লাহর প্রতি এক মুখী হয়ে তাদের নামায আদায় করতে বলা হয়েছে।

‘কাবা’ সেই একটি দিকের দিক-নির্দেশক, অন্য কিছুই নয়। কাবার পশ্চিমাঞ্চলে যে মুসলমানরা বাস করে তারা মুখ করবে পূর্ব দিকে আর তার পূর্বাঞ্চলে যারা বাস করে তারা মুখ করবে পশ্চিম দিকে। একইভাবে উত্তরাঞ্চলের লোকেরা দক্ষিণ দিকে আর দক্ষিণাঞ্চলের লোকেরা উত্তর দিকে।

পৃথিবী গোলকের কেন্দ্রবিন্দু কা‘বা মুসলমানরাই প্রথম পৃথিবীর মানচিত্র এঁকেছিল। তাদের চিত্রে দক্ষিণ ছিল ওপর দিকে আর উত্তর ছিল নিচের দিকে। তখন কা‘বা ছিল কেন্দ্র বিন্দুতে। পরবর্তিকালে পশ্চিমা মানচিত্রকররা পৃথিবীর যে মানচিত্র আঁকলো তাতে ওপর দিকটা নিচে আর নিচের দিকটা ওপরে অর্থাৎ উত্তর হলো ওপরের দিকে আর দক্ষিণ হলো নিচের দিকে। আলহামদুলিল্লাহ এ ক্ষেত্রেও“কাবাই মানচিত্রের কেন্দ্র বিন্দু থেকে গেল”।

কা‘বাকে ঘিরে তওয়াফ করা আল্লাহর একত্বের নির্দেশক মুসলমানরা কা’বা যেয়ারতে মক্কায় গেলে ‘তাওয়াফ’ করে। অর্থাৎ কা’বা ঘরকে কেন্দ্র করে চারিদিকে প্রদক্ষিণ করে। কাজটি এক আল্লাহ বিশ্বাস ও উপাসনার নিদর্শন। প্রতিটি বৃত্ত গোলাকার এবং তার একটিই কেন্দ্র বিন্দু থাকে। কাজেই উপাসনার যোগ্য আল্লাহ-মাত্র একজনই, এটা তারই অন্যতম নিদর্শণ।

 হযরত উমর (রাঃ) এর হাদীস হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর সম্পর্কিত হযরত উমর (রা) এর একটি বিখ্যাত উক্তি রয়েছে।

👉🏻খালফ ইবনু হিশাম, মুকাদ্দমী, আবূ কামিল ও কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবনু সারজিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি টাক মাথাওয়ালা অর্থাৎ উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কে কালো পাথর হাজারে আসওয়াদ চুমো দিতে দেখেছি এবং তিনি বলেছেন, আল্লাহর শপথ! আমি অবশ্যই তোমাকে চুন্বন করব এবং আমি অবশ্যই জানি যে, তুমি একটি পাথর, তুমি কারও ক্ষতিও করতে পার না এবং উপকারও করতে পার না। আমি যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তোমায় চুম্বন করতে না দেখতাম তবে আমি তোমায় চুম্বন করতাম না।
💠মুসলিম ইফাঃ  ২৯৩৯

. মানুষ কা’বা ঘরের ওপরে উঠে আযান দিয়েছিল রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সময়ে লোকেরা কা’বা ঘরের ওপরে উঠে আযান দিত।

 মুসলমানরা কা’বা ঘরের উপাসনা করে বলে যারা মনে করেন তাদেরকে যদি কেউ প্রশ্ন করে যে, কোন মুর্তী-পূজারী, যে মুর্তী সে পূজা করে, তার মাথার ওপরে উঠে দাঁড়ায়?
👉🏻মহান আল্লাহ বলেন  :

اِنَّ اَوَّلَ بَیۡتٍ وُّضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِیۡ بِبَکَّۃَ مُبٰرَکًا  وَّ ہُدًی  لِّلۡعٰلَمِیۡنَ ﴿ۚ۹۶﴾
অর্থঃ নিশ্চয় প্রথম ঘর, যা মানুষের জন্য স্থাপন করা হয়েছে, তা মক্কায়। যা বরকতময় ও হিদায়াত বিশ্ববাসীর জন্য।

(💠সূরা আল ইমরান, আয়াত : 96)

فِیۡہِ اٰیٰتٌۢ بَیِّنٰتٌ مَّقَامُ  اِبۡرٰہِیۡمَ ۬ۚ وَ مَنۡ دَخَلَہٗ کَانَ اٰمِنًا ؕ وَ لِلّٰہِ عَلَی النَّاسِ حِجُّ الۡبَیۡتِ مَنِ اسۡتَطَاعَ اِلَیۡہِ سَبِیۡلًا ؕ وَ مَنۡ  کَفَرَ فَاِنَّ اللّٰہَ غَنِیٌّ عَنِ  الۡعٰلَمِیۡنَ ﴿۹۷﴾
অর্থঃ তাতে রয়েছে স্পষ্ট নির্দশনসমূহ, মাকামে ইবরাহীম। আর যে তাতে প্রবেশ করবে, সে নিরাপদ হয়ে যাবে এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ করা ফরয। আর যে কুফরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী।

(💠সূরা আল ইমরান, আয়াত : 97)

মুসলিমরা কাবা ঘরের কাছে কোন সাহায্য চায় না,

অথচ মূর্তি পূজারীরা তাদের দেব-দেবীর মূর্তির কাছে সাহায্য চায়।

তাই এ থেকে পরিষ্কার হয় যে, মুসলিমরা শুধুমাত্র আল্লাহ ইবাদত করে, কাবা ঘরকে পূজা করে না।


এই বিষয়ে ডাঃ জাকির নায়েকের উত্তর হলোঃ
https://youtu.be/bD4X7mAPc68


ফিতরা দেওয়ার এক সা' প্রসঙ্গে

১৫০৪ ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, মুসলিমদের প্রত্যেক আযাদ, গোলাম পুরুষ ও নারীর পক্ষ হতে সদাকাতুল ফিতর হিসেবে খেজুর অথবা যব-এর এক সা‘ পরিমাণ[1] আদায় করা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ করেছেন। (সহীহ বুখারী,,অধ্যায় ২৪,, পরিচ্ছেদ ২৪,, বুক অব যাকাত,, হাদিস নাম্বারঃ ১৫০৩) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৪০৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৪১৩)

হাদিসের ব্যাখ্যাঃ
সকল প্রকার খাদ্যদ্রব্য থেকে এক সা‘ পরিমাণ ফিতরা দিতে হবে। এটাই বিভিন্ন সহীহ হাদীসের দাবী এবং নাবী (সাঃ) ও ৪ খলীফাহর যুগের বাস্তব আমল। মু‘আবিয়া (রাঃ) তাঁর খিলাফতকালে যখন আসলেন এবং সেখানে গম আমদানী হল তখন তিনি বললেন, আমার মতে গমের এক মুদ (অন্য বস্তুর) দু’ মুদের সমান। তিরমিযীর বর্ণনায় রয়েছে। فعدل الناس إلى نصف صاع من بر অর্থাৎ লোকেরা গমের অর্ধ সা‘ এর সাথে অন্য বস্তুর এক সা‘ এর সমান হিসাব করলেন। অতএব বুঝা গেল এক সা‘ খেজুর, কিসমিস, পনির, যব এবং অন্য খাদ্য দ্রব্যের যে মূল্য ছিল সে পরিমাণ মূল্য ছিল অর্ধ সা‘ গমের। সে কারণে মু‘আবিয়া (রাঃ) অর্ধ সা‘ ফিতরাহ আদায়ের ফাতাওয়া দিলেন। কিন্তু সহাবীদের অধিকাংশই তাঁর প্রতিবাদ করেছেন। যেমন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) প্রতিবাদ করে বললেনঃ فأما أنا فلا أزال أخرجه كما كنت أخرجه أبدا ما عشت رواه مسلم আমি যতদিন বেঁচে থাকব ততদিন সর্বদা ঐভাবেই ফিতরা আদায় করব যেভাবে আগে আদায় করতাম। (মুসলিম ১ম খন্ড ৩১৮ পৃষ্ঠা)

ইমাম হাকিম ও ইবনু খুজাইমাহ সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, عن عياض بن عبد الله بن سعد بن أبي سريح قال : قال أبو سعيد و ذكر عنده صدقة الفطر فقال : لا أخرج إلا ما كنت أخرجه على عهد رسول الله صلى الله عليه و سلم صاعا من تمر أو صاعا من حنطة أو صاعا من شعير أو صاعا من إقط فقال له رجل من القوم : أو مدين من قمح فقال : لا تلك قيمة معاوية لا أقبلها و لا أعمل بها ‘
আইয়ায বিন ‘আবদুল্লাহ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, তার নিকট রামাযানের সদাকাহ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলে তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যামানায় যে পরিমাণ সদাকাতুল ফিতর আদায় করতাম তা ব্যতীত অন্যভাবে বের করব না। এক সা‘ খেজুর, এক সা‘ গম, এক সা‘ যব ও এক সা‘ পনির। কোন ব্যক্তি প্রশ্ন করল, গমের দু’ মুদ দ্বারা কি আদায় হবে না? তিনি বললেন, না। এটা মু‘আবিয়া (রাঃ)-এর মনগড়া নির্ধারিত। আমি সেটা গ্রহণও করব না বাস্তবায়নও করব না। (ফাতহুল বারী ৩য় খন্ড ৪৩৭ পৃষ্ঠা)

ইমাম নাববী (রহঃ) বলেন, যারা মু‘আবিয়ার কথা মত গমের দু’ মুদ আদায় করাকে গ্রহণ করেছে তাতে ত্রুটি রয়েছে। কেননা এ ব্যাপারে সাহাবী আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) এবং অন্যান্য সাহাবাগণ বিরোধিতা করেছেন যাঁরা দীর্ঘ সময় নাবী (সাঃ) এর সাথে ছিলেন এবং তাঁরা নাবী (সাঃ) এর অবস্থা সম্পর্কে অধিক অবগত ছিলেন। মু‘আবিয়া (রাঃ) নিজের রায় দ্বারা মত ব্যক্ত করেছেন। তিনি নাবী (সাঃ) হতে শুনে বলেননি। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)-এর হাদীসে ইত্তিবাহ ও সুন্নাত গ্রহণের প্রতি অত্যধিক গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। (ফাতহুল বারী ৩য় খন্ড ৪৩৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম শরহে নাববী ১ম খন্ড ৩১৭-৩১৮ পৃষ্ঠা, শরহুল মুহাযযাব ইমাম নাববী) ইমাম শাফিয়ী, আহমাদ, ইসহাক এক সা‘ ফিতরায় হাদীস প্রমাণ পেশ করেন। কেননা নাবী (সাঃ) সদাকাতুল ফিতর খাদ্যদ্রব্যের এক সা‘ আদায় করা ফরয করেছেন। আর গম হচ্ছে খাদ্যদ্রব্যেরই একটি। অতএব এক সা‘ ব্যতীত ফিতরা আদায় বৈধ হবে না। আর আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ), আবুল আলিয়া, আবুশ শা’সআ, হাসান বাসরী, জাবির বিন যায়িদ, ইমাম শাফিয়ী, ইমাম মালিক, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল ও ইসহাক (রহ.) প্রমুখ এ দলীল গ্রহণ করেছেন। নাইলুল আওতারে এভাবেই রয়েছে। তাতে আরো রয়েছে গম ও অন্য খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে পার্থক্য করা যাবে না। আর যারা অর্ধ সা‘ গমের কথা যে হাদীসগুলির দ্বারা বলে তা সম্পূর্ণ যঈফ। (তুহফাতুল আহ্ওয়াযী ৩য় খন্ড ২৮০-২৮১ পৃষ্ঠা) এ বিষয়ে সকল হাদীস পর্যালোচনা করে দেখা যায় মু‘আবিয়া (রাঃ) যখন মুসলিম রাষ্ট্রপ্রধান ছিলেন, হাজ্জ মৌসুমে হাজ্জ করে যখন লোকদের সাথে কথা বললেন তখন জানতে পারলেন শাম বা সিরিয়ার এক মুদ গমের যে দাম হিজাযের দু’ মুদ খেজুর, কিসমিস ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্যের একই দাম অথবা যখন হিজাযে গম আমদানী হল তখন দেখা গেল এক সা‘ খেজুর বা কিসমিসের মূল্য অর্ধ সা‘ গমের মূল্যের সমান। তাই মু‘আবিয়া (রাঃ) দামের দিক দিয়ে সমান করে দুই মুদ বা অর্ধ সা‘ গম আদায়ের কথা বলেন এবং সাহাবাদের প্রতিবাদের মুখে পড়েন।

রসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যামানায় দীনার, দিরহাম ইত্যাদি মুদ্রা চালু ছিল। কিন্তু দীনার দিরহামের দ্বারা অর্থাৎ আমাদের যামানায় প্রচলিত টাকা পয়সার দ্বারা যাকাতুল ফিতর আদায় করার প্রমাণ কোন হাদীসেই পাওয়া যায় না। তাঁরা তাঁদের খাদ্যবস্তু দিয়েই ফিতরা আদায় করতেন। আল্লাহর রসূল (সাঃ) এর এ ব্যবস্থাপনায় বহুবিধ কল্যাণ নিহিত আছে। ফিতরাহ দানকারী যখন ফিতরার খাদ্যবস্তু কিনে তখন বিক্রেতা উপকৃত হয়। ফিতরাহ গ্রহণকারী খাদ্যবস্তু বিক্রি করে দিলে ফিতরাহ গ্রহণ করে না এমন সব গরীব ক্রেতা উপকৃত হয়। والله أعلم
ফিতর টাকা দিয়ে নাকি খাদ্য দিয়ে দিতে হবে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে নিম্ন লিংকের ব্লগটি পড়ুনঃ
https://kmarifin.blogspot.com/2020/05/blog-post_14.html?m=1 ➽ সা’ হচ্ছে মূলত একটি পাত্রের নির্দিষ্ট পরিমান দ্রব্য !!!

সা’ এর পরিমান নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরী হচ্ছে! কেউ বলছে ২.৪০০ কেজি (২ কেজি ৪০০ গ্রাম), কেউ বলছে ২.১০০ কেজি (২ কেজি ১০০ গ্রাম), কেউ বলছে ২.০৪০ কেজি (২ কেজি ৪০ গ্রাম) , কেউ বলছে ৩ কেজি, আবার কেউ বলছে ৩.৩০০ কেজি (৩কেজি ৩০০ গ্রাম)! আরো বিভিন্ন মত থাকতে পারে!
এত পার্থক্য কেন? কোনটা মানব?
আসলে পার্থক্য তৈরী হয়েছে সা’ না বুঝার কারণে অথবা একেক দেশে একেক প্রচলিত ফসলের কারণে।
মূলত রাসুল (সাঃ) সা’ হচ্ছে একটি পাত্র। তিনি যখন ফিতরা দিতেন ওই পাত্র ভরে পাকা পুষ্ট গম বা খেজুর দিতেন । বুখারী মুসলিম।
এক সা’ = (৪) চার মুদ।
১ মুদ = একটি নির্দিষ্ট আকারের পাত্রের পরিমানকে মুদ বলা হয়, কাপ বা বল বা মগ জাতীয় । যার আনুমানিক পরিমান ১জন প্রমাণ সাইজের মানুষের দুই হাত মুনাজাতের মত একত্রিত করে তাতে যতটুকু ফসল নেয়া যায় ।
ওই পাত্রের আকারে ১ মুদ = আনুমানিক প্রায় ০.৭৫০ লিটার অর্থাত ৭৫০ মিলি লিটার! এখন ৭৫০ মিলি লিটার আয়তনের পাত্রে ফসল ভরলে যতটুকু হয় তা হচ্ছে এক মুদ।
তাহলে ১ সা’ = ৪ মুদ = ৪ x ০.৭৫০ মিলি লিটার = ৩ লিটার। এখন ১ সা’ ফসল = ৩ লিটার পাত্রে যেই পরিমান ফসল ধরে ।
স্বাভাবিকভাবে এভাবে একেক ফসলের ওজন ভিন্ন ভিন্ন হবে !
শায়খ সালেহ আল উসায়্মিন ফতোয়া আরকানুল ইসলামে উল্লেখ করেছেন, রসুল (সাঃ) এর এক সা’ ছিল আনুমানিক ২ কেজি ৪০ গ্রাম পাকাপুষ্ট গম।
এখন ওই পাত্রের পরিমান অনুযায়ী পাকা পুষ্ট গমের কেজি করলে তা দাড়ায় ২ কেজি ৪০ গ্রাম !
এখন ওই পাত্রে যদি খেজুর পূর্ণ করে ওজন দেয়া হয় তখন তো আর ২ কেজি ৪০ গ্রাম হবে না ! বেশি হতে পারে! কারণ খেজুরের আয়তন বড় এবং ওজন বেশি !
একইভাবে যদি ওই পত্র পূর্ণ চাল ওজন দেয়া হয় তাহলেও ওজনের তারতম্য ঘটবে !!
স্কলারগণ মানুষের সুবিধার্থে এই কেজির সংখ্যা নিরুপন করেছেন । যে গম হিসেবে তা ২ কেজি ৪০ গ্রাম থেকে শুরু করে প্রায় ৩ কেজি পর্যন্ত। এই সা’র ব্যাখ্যায় বিদ্বানগণের বিভিন্ন মতের পর একটি সুন্দর, সহজ ও নির্ভরযোগ্য ওজন প্রমাণিত হয় যা, সর্বকাল ও সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তা হল: একজন সাধারণ শারীরিক গঠনের মানুষ অর্থাৎ অধিক লম্বা নয় এবং বেঁটেও নয়, এই রকম মানুষ তার দুই হাত একত্রে করলে যে অঞ্জলি গঠিত হয়, ঐরকম পূর্ণ চার অঞ্জলি সমান হচ্ছে এক সা'। [ফাতাওয়া মাসায়েল/ ১৭২-১৭৩, সউদী ফাতাওয়া ও গবেষণা বিষয়ক স্থায়ী কমিটি, ফতোয়া নং ৫৭৩৩ খণ্ড ৯ম, পৃ: ৩৬৫ ]

ফিতরা হচ্ছে একটা দান, সদকাহ। অতএব একটু বেশি দেয়ার সমর্থ থাকলে দিলে সমস্যা কি?
না হয় সাড়ে ৩ কেজিই দিলেন ! (সংগৃহীত ও সংযোজিত)

Own experiment: (11-05-2020)

১ সা = ৩ লিটার হিসাব মতে আমি নিজে পরিমাপ করে পেলাম ২ কেজি ৬৭৭ গ্রাম (সাদা মোটা নতুন চাল)
এর প্রতি কেজির বর্তমান মূল্য খুচরা= ৫৫ টাকা
প্রতি কেজির মূল্য পাইকারী পরেছে ৫২.৫ টাকা

আমার ভাইয়ের হাতের ৪ কোশ দ্বারা পরিমাপ করিয়ে পেলাম প্রায় ১.৬৫ কেজি (১ কেজি ৬৫০ গ্রাম)।
আমার আব্বুর হাতের ৪ কোশ দ্বারা পরিমাপ করিয়ে পেলাম প্রায় ১.৯৫ কেজি (১কেজি ৯৫০ গ্রাম)।
অতএব দেখা গেলো মানুষভেদে পরিমানের তারতম্য ঘটছে! কারন, ব্যক্তিভেদে হাত ছোট /বড় হয়, আবার কোশ ধরার কৌশলগত কারনে যেমন মেলিয়ে ধরা বুঝিয়ে ধরা ইত্যাদি কারন।

সুতরাং আমার মতে স্টান্ডার্ড লিটার হিসাব মতে উক্ত চাল ২.৭ কেজি (২ কেজি ৭০০ গ্রাম) করে ফিতর হিসেবে দেওয়াই যথেষ্ট হবে ইংশাআল্লহ। তবে এর চাইতে বেশি দেওয়া আরো উত্তম কিন্তু এর থেকে কম দেওয়া উচিত নয়।
والله أعلم (মহান আল্লাহ ভালো জানেন)

Page & Group


সারা বিশ্বে  সময়ের ব্যবধানকে মেনে নিয়ে একই দিনে রোজা ও ঈদ পালন:
https://www.facebook.com/GlobalSowmEid/


Muslim Ummah:
https://www.facebook.com/muslimummahbd.org/


একই দিনে সারা বিশ্বে সাওম (রোজা) ও ঈদঃ
https://www.facebook.com/groups/955632667785453/

ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ

ইসলামের দৃষ্টিতে জন্ম নিয়ন্ত্রণ
১. প্রথমে জানতে হবে মানুষ জন্ম নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা রাখেন কিনা?
আল্লাহু রাব্বুল ‘আলামীন বলেন :
{الَّذِي خَلَقَ الْمَوْتَ وَالْحَيَاةَ لِيَبْلُوَكُمْ أَيُّكُمْ أَحْسَنُ عَمَلاً}
“যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন তোমাদেরকে পরীক্ষা করার জন্য। (মূলক : ২)
এর দ্বারা বুঝা গেল মানুষ মৃত্যুও জীবনের মালিক নয় তা কারো নিয়ন্ত্রণাধীন নয়।
২. জন্ম নিয়ন্ত্রণের নামে কোন পদ্ধতি যায়েয কিনা তা নির্ভর করবে প্রত্যেকের নিয়তের উপর কারণ রসূলুল্লাহ (সাঃ) এরশাদ করেন :
إنما لاعمال باالنيات
সকল কর্মই নিয়তের উপর নির্ভরশীল।
(বুখারী প্রথম হাদীস মিশকাত প্রথম হাদীস মুত্তাফাকুন আলাইহে)
এবার দেখার বিষয় হল আপনি কোন নিয়তে জন্মনিন্ত্রণের পদ্ধতিগ্রহণ করবেন।
আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্টির একটি নিয়ম আছে আর মানুষ সৃষ্টির নিয়ম হল স্বামী স্ত্রী মিলনের মাধ্যমে জন্ম দান করা অতএব এ নিয়মের মধ্যে ব্যতিক্রম করা যাবে না যথা আল্লাহ বলেন-
{وَمَنْ يَتَعَدَّ حُدُودَ اللَّهِ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ}
“যে ব্যক্তি আল্লাহর নির্দেশিত সীমালঙ্ঘন করে, সে নিজের উপর যুলুম করে থাকে”। (তালাক : ১)
শয়তান বলে ছিল :
{وَلَآمُرَنَّهُمْ فَلَيُغَيِّرُنَّ خَلْقَ اللَّهِ}
“(শয়তান বললো) আমি আদম সন্তানদের আদেশ দেব, আর তারা আল্লাহর গঠন প্রকৃতিতে পরিবর্তন সাধন করবে।” (নিসা : ১১৯)
আর পস্পরের মিলনের মধ্যেই রয়েছে শান্তি ও ভালবাসা যথা আল্লাহ বলেন-
{وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجاً لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً}
“আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গীণীদেরকে যাতে তোমরা তাদের নিকট শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসাও দয়া সৃষ্টি করেছেন।” (রূম : ২১)
নারীরা হল ক্ষেত স্বরূপ :
{نِسَاؤُكُمْ حَرْثٌ لَكُمْ فَأْتُوا حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ وَقَدِّمُوا}
“তোমাদের স্ত্রীগণ তোমাদের ফসলের জমির মত। সুতরাং তোমাদের ইচ্ছানুযায়ী জমিতে যাও এবং ভবিষ্যতের সংস্থান কর।” (বাকারাহ : ২২৩)
আপনি কি খাদ্যের অভাবে তা গ্রহণ করবেন?
তা করা যাবে না তার কারণ আল্লাহ বলেন :
{قَدْ خَسِرَ الَّذِينَ قَتَلُوا أَوْلادَهُمْ سَفَهاً بِغَيْرِ عِلْمٍ وَحَرَّمُوا مَا رَزَقَهُمُ اللَّهُ افْتِرَاءً عَلَى اللَّهِ}
যারা অজ্ঞতা ও নির্বুদ্ধিতার দরুণ আল্লাহ প্রদত্ত রিযিককে আল্লাহরই প্রতি মিথ্যা দোষারোপ করে নিজেদের জন্য হারাম করে দিয়েছে এবং সন্তানদের হত্যা করেছে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
(আনআম : ১৪০)
অন্যত্র বলেন-
{وَلا تَقْتُلُوا أَوْلادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ إِنَّ قَتْلَهُمْ كَانَ خِطْئاً كَبِيراً}
“তোমরা অভাবের আশঙ্কায় সন্তানকে হত্যা করো না। আমি তাদের ও তোমাদের রিযিকের ব্যবস্থা করে থাকি, তাদের হত্যা করা নিঃসন্দেহে মহাপাপ।” (বানী ইসরাঈল : ৩১)
জোর করে ইচ্ছামত করবেন তাও করা যাবে না
আল্লাহ তা‘আলা বলেন
{وَإِذَا تَوَلَّى سَعَى فِي الْأَرْضِ لِيُفْسِدَ فِيهَا وَيُهْلِكَ الْحَرْثَ وَالنَّسْلَ وَاللَّهُ لا يُحِبُّ الْفَسَادَ}
“আর যখন যে ক্ষমতা হাতে পায় তখন আল্লাহর দুনিয়ার বিপর্যয় সৃষ্টি এবং ফল শস্য ও সন্তান-সন্ততি ধ্বংস করার পরিকল্পনা করে।” (বাকারাহ : ১০৫)
অন্যত্র বলেন :
{وَإِنْ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا عِنْدَنَا خَزَائِنُهُ وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلَّا بِقَدَرٍ مَعْلُومٍ}
“এমন কোন জীব নেই যার জীবন ধারনোপযোগী সরঞ্জামাদি আমার কাছে নেই এবং একটি সুনির্দিষ্ট পরিমান ব্যতিত আমি কোন কিছুই প্রেরণ করি না।” (হিজর : ২১)
অন্যত্র বলেন :
{وَمَا مِنْ دَابَّةٍ فِي الْأَرْضِ إِلَّا عَلَى اللَّهِ رِزْقُهَا}
“পৃথিবীতে বিচরণশীল এমন কোন জীব নেই যার রিযিকের দাইত্ব আল্লাহ তা‘আলা গ্রহণ করেননি। (হূদ : ৬)
অন্যত্র বলেন :
{وَكَأَيِّنْ مِنْ دَابَّةٍ لا تَحْمِلُ رِزْقَهَا اللَّهُ يَرْزُقُهَا وَإِيَّاكُمْ}
“অসংখ্য জীব এমন আছে যারা কোন মওজুদ খাদ্য ভাণ্ডার বয়ে বেড়ায় না, অথচ আল্লাহ-ই এদের রিয্ক দিয়ে থাকেন তিনি তোমাদেরও রিয্কদাতা।” (আনকাবুত : ৬০)
তিনি আরো বলেন :
{إِنَّ اللَّهَ هُوَ الرَّزَّاقُ ذُو الْقُوَّةِ الْمَتِينُ}
“নিঃসন্দেহে আল্লাহ তা‘আলাই রিয্কদাতা, মহাশক্তিশালী ও পরাক্রান্ত।” (যারিয়াহ : ৫৮)
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন :
{لَهُ مَقَالِيدُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ يَشَاءُ وَيَقْدِرُ}
“আসমান ও জমিনের যাবতীয় সম্পদ একমাত্র তারই আয়ত্তাধীন তিনি যাকে ইচ্ছা প্রচুর্য দান করেন এবং যাকে ই্চছা অভাবের মধ্যে নিক্ষেপ করেন।” (শুরা : ১২)
আল্লাহ আরো বলেন :
وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ وَمَنْ لَسْتُمْ لَهُ بِرَازِقِينَ - {وَإِنْ مِنْ شَيْءٍ إِلَّا عِنْدَنَا خَزَائِنُهُ وَمَا نُنَزِّلُهُ إِلَّا بِقَدَرٍ مَعْلُومٍ
“আমি পৃথিবীতে তোমাদের জন্যও রিয্কের সংস্থান করেছি এবং তাদের জন্যও যাদের রিয্কদাতা তোমারা নও। এমন কোন বস্তু নেই যার ভাণ্ডার আমার হাতে নেই আর ভাণ্ডার থেকে আমি এক পরিকল্পিত হিসাব অনুসারে বিভিন্ন সময় রেযেক নাজিল করে থাকি।” (হিজর : ২০-২১)
অন্যত্র বলেন :
{وَلا تَقْتُلُوا أَوْلادَكُمْ خَشْيَةَ إِمْلاقٍ نَحْنُ نَرْزُقُهُمْ وَإِيَّاكُمْ}
“দারিদ্রের ভয়ে তোমাদের সন্তানদের হত্যা করো না আমি তাদের এবং তোমাদের রিয্ক দাতা।
(বানী ইসরাঈল : ৩১)
{فَابْتَغُوا عِنْدَ اللَّهِ الرِّزْقَ وَاعْبُدُوهُ وَاشْكُرُوا لَهُ}
“সুতরাং আল্লাহর কাছে রিয্ক অনুসন্ধান করো, তারই বন্দেগী করো এবং তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকো। (আনকাবুত : ১৭)
যদি জায়গার অভাবে জন্ম নিয়ন্ত্রণ করবেন তাও করা যাবে না
কারণ আল্লাহ বলেন :
{إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ}
“নিশ্চয়ই আমি যাবতীয় বস্তু পরিমাণ মতো সৃষ্টি করেছি।” (কামার : ৪৯)
অন্যত্র বলেন :
{وَمَا كُنَّا عَنِ الْخَلْقِ غَافِلِينَ}
“আমি সৃষ্টি সম্পর্কে অমনোযোগী নই।” (মু’মিনূন : ১৭)
দীর্ঘ আলোচনা দ্বারা একথাই প্রমাণিত হল যে, খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান কোন অভাবের জন্য পরিবার পচিকল্পানার কোন পদ্ধতি ব্যবহার করা যাবে না। তাহলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। তবে শারীরিক সুস্থতার জন্য অস্থায়ীভাবে যে কোন পদ্ধতি গ্রহণ করা যায় তাও ১২০ দিনের পূর্বে কারণ ১২০দিন পর আল্লাহ পাক আত্মা দান করেন আর আত্মা আসার পর সন্তান নষ্ট করার নামই হল সন্তান হত্যা করা।
যেমন বুখারী-মুসলিম হাদীসে রয়েছে :
أربعين يوما نطفة ثم يكون علقة مثل ذلك ثم يكون مضغة مثل ذلك ....ثم ينفخ فيه الروح (يخاري ومسلم)
অর্থাৎ মাতৃগর্ভে প্রথম ৪০ দিন শুক্ররূপে, অতঃপর ৪০ দিন জমাট রক্ত পিণ্ডরূপে। এরপর ৪০ দিন মাংস পিণ্ডরূপে......এরপর তার মধ্যে রূহ ফুঁকে দেন। (মিশকাত হাদীন- ৭৫)
আর সে দুনিয়ায় এসে কোথায় কখন কি খাবে, কোথায় থাকবে তাও লিখে দেয়া হয় তাও পাবেন উক্ত হাদীসে
كتب الله المقادير قبل أن يخلق السموات والأرض
আর মানুষ সৃষ্টির ৫০,০০০ পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্ব তার ভাগ্য লিখে রাখা হয়েছে দেখুন :
(মিশকাত- ৭২)
অতএব আপনার খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থানের জন্য চিন্তা করাটাই মহা পাপের কাজ।
আর এ অস্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করা অনুমতি নবী (সাঃ) থেকে পাওয়া যায়
যথা :
عن أبى سعيد الخدرى رضى الله عنه فاردنا انعذل ثم قفنا نعذل ورسول الله بين اظهرنا قبل أن نسأله عن ذلك قسالناه عن ذلك فقال ما عليكم أن لا تفعلوا ما من نسمة كائنة إلى يوم القيمة إلا وهي كائنة (بخاري صـ ৭৮৪، ومسلم صـ ৪৬৪، أبو داود صـ ২৯৫)
আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন আমরা আযল করার চিন্তা-ভাবনা করলাম অথচ রসূলুল্লাহ (সাঃ) তো আমাদের সঙ্গেই আছেন, তাকে এ ব্যপারে জিজ্ঞাসা করছি না কেন? অতঃপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন : যদি তোমরা তা কর, তবে তাতে দোষের কিছু নেই, তবে কিয়ামাত পর্যন্ত যারা সৃষ্টি হওয়ার, তারা সৃষ্টি হবেই- (রোধ করার ক্ষমতা কারো নেই)।
(বুখারী- আরবী ২য় খণ্ড- ৭৮৪ পৃঃ ১৫ লাইন পরে; মুসলিম- আবরী ৪৬৪ পৃঃ, ১৬ লাইন পরে; আবূ দাউদ- আরবী ২৯৫ পৃঃ, ইসলামিক ফাউ.- হাঃ ২১৬৯)
অন্যত্র নবী (সাঃ) অনুমতি প্রদান করেন :
আনসারদের মধ্যে এক ব্যক্তি আযল করার অনুমতি চাইলে নবী (সাঃ) তাকে অনুমতি প্রদান করেন যথা-
فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم اعذل عنها أن شئت فانه سياتيها ما قدرلها-
একদিন এক ব্যক্তি নবী (সাঃ)’র নিকট এসে আরয করলেন, আমার একটি দাসী আছে, যার সাথে আমি সহবাসও করি, কিন্তু সে গর্ভবতী হোক তা আমি পছন্দ করি না। তিনি বললেন : তুমি ইচ্ছা করলে তার সাথে আযল করতে পার, তবে জেনে রেখ! তার ভাগ্যে যা নির্ধারিত তা হবেই।
(আবূ দাউদ- ই. ফা. বাংলা তৃতীয় খণ্ড- ২১৬৮)
মূল কথা হল শারীরিক সুস্থ্যতার জন্য যে কোন অস্থায়ী পদ্ধতি গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু অন্য কোন নিয়তে কোন স্থায়ী পদ্ধতিগ্রহণ করা যাবে না। বিস্তারিত দেখুন নিুের প্রমাণপুঞ্জিতে :
আল কুরআন, বুখারী আরবী- ২য় খণ্ড- ৭৮৪ পৃঃ ১৫ লাইন পরে; মুসলিম- ১ম ৪৬৪ পৃঃ ১৬ লাইন পরে। আবূ দাউদ- ২৯৫ পৃঃ ৩ লাইন পরে।
বিঃ দ্রঃ কুরআন ও সহীহ হাদীস থাকতে কারো কোন মনগড়া ফাতওয়া মানা কোন প্রকার ঠিক হবে না দেখুন- সূরা নাহল : ৪৩ ও ৪৪ আয়াত।

Monday, May 27, 2019

লাইলাতুল কদরের দুয়া


লাইলাতুল কদরের দুয়াঃ

اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي

হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাকারী, তুমি মাফ করতেই পছন্দ কর, অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও

সুনান ইবনে মাজাহ, বই ৩৪ , হাদিস ২৪


মা আয়েশা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমি শবেকদর লাভ করলে তাতে কি দুআ পাঠ করব? উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘তুমি বলো,

اَللّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ.
উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউবুন তুহিববুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নী।

(আহমাদ, মুসনাদ ৬/১৭১, ১৮২, ১৮৩, ২৫৮, নাসাঈ আমালুল ইয়াওমি অল-লাইলাহ ৮৭২নং, ইবনে মাজাহ ৩৮৫০, হাকেম, মুস্তাদ্রাক ১/৫৩০)

اَللّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ كَرِيْمٌ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ.
উচ্চারণঃ- আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউবুন কারীমুন তুহিববুল আফওয়া, ফা’ফু আন্নী।

(তিরমিযী ৩৫১৩নং)

অর্থঃ- হে আল্লাহ! নিশ্চয় তুমি ক্ষমাশীল (মহানুভব), ক্ষমাকে পছন্দ কর। অতএব তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও।

হায়েজ অবস্থায় কুরআন তিলাওয়াত প্রসংগে


➽ 
হায়েয অবস্থায় কোন নারীর জন্য দোয়া করা কি জায়েয আছে? এমতাবস্থায় দোয়া করার সঠিক পদ্ধতি কী?

➦ https://islamqa.info/bn/answers/5048


➽ 

What are the rulings on menses in women?.

➦ http://islamqa.info/en/70438

Sunday, May 26, 2019

ইতিকাফ সংক্রান্ত একটি ভুল ধারণা

*ইতিকাফ সংক্রান্ত একটি ভুল ধারণা:*
🛑-------------🛑---------


প্রশ্ন: যদি এলাকার কেউ ইতিকাফে না বসে তাহলে কি পুরো এলাকাবাসী গুনাগার হবে? আর কেউ যদি বসে তাহলে কি পুরো এলাকাবাসী তার সওয়াব লাভ করবে?
উত্তর:
আমাদের দেশে মনে করা হয় যে, সমাজের পক্ষ থেকে এক ব্যক্তিকে অবশ্যই ইতিকাফে বসতে হবে তা না হলে সবাই গুনাহগার হবে। কিন্তু এ ধারণা মোটেই ঠিক নয়। কারণ, ইতিকাফ হল একটি সুন্নত ইবাদত। যে কোন মুসলিম তা পালন করতে পারে। যে ব্যক্তি তা পালন করবে সে অগণিত সওয়াবের অধিকারী হবে। সবার পক্ষ থেকে একজনকে ইতিকাফে বসতেই হবে এমন কোন কথা শরীয়তে নেই। কেননা তা ফরযে কেফায়াহ নয় রবং সুন্নত।
আল্লাহ তাআলা সকল ক্ষেত্রে তার নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নতকে যথাযথভাবে পালন করার তাওফীক দান করুন এবং সকল বিদআত ও সুন্নত বিরোধী কার্যকলাপ থেকে হেফাযত করুন। আমীন।
----------------
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব

Saturday, May 25, 2019

আমাদের দীন একটাই ইসলাম

🌹আমাদের দীন একটাই- ইসলাম। আমাদের পরিচয় একটাই- মুসলিম।🌹 -----------------------------------------------------------------------------
💐বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম💐

💐✍🏾অসংখ্য নবী-রাসূলের আগমনস্থল, তাওহীদের দীপ্ত মিনার মক্কাতুল মুকার্রমা যখন শিরকের চাদরে পরিবেষ্টিত। ইব্রাহীম (আ:) এর দীনে হানীফের অনুসারীরা যখন ‘মুতাওজ্জু’ শত প্রতিমার দিকে। এক ইলাহে আত্মসমর্পিত জাতি যখন আবদ্ধ হয়েছিল শত দেবতার শৃঙ্খলে। এক রব ছেড়ে যখন আঁকড়ে ধরেছিল আরবাব। এক দীনকে যখন করা হয়েছিল খন্ড বিখন্ড। নানান দল-উপদলে জাতি যখন বিভক্ত। এক জাতি- এক দেহ ছিল যে জাতির মূল স্পৃহা, সে জাতি যখন গোত্রবাদের কালো কুঠুরিতে নিমজ্জিত। আসাবিয়্যাতই যখন হক-বাতিলের মানদন্ড। শত্রুতা ও বন্ধুত্বের মাপকাঠি যখন ঘৃণ্য জাতীয়তাবাদ। যুদ্ধ-হানাহানিতে যখন ক্ষত-বিক্ষত পুরো জাতি। নিজেরাই যখন নিজেদের ধ্বংসের কারণ।
অথচ তখনও তারা নিজেদের মনে করতো ইবরাহীম (আ:) এর অনুসারী।

ঠিক তখন- মিল্লাতে ইবরাহীমের (আ:) ঝান্ডা দিয়ে, দীনে হানীফকে পূনরুজ্জীবিত করতে, সমস্ত শিরক এবং মুশরিকদের নামনিশানাটুকু মুছে ফেলতে, তামাম আদিয়ানে বাতেলার উপর দীনে হককে গালেব করতে, এক জাতি এক দেহরূপে আবারও বিশ্ববাসীকে গড়ে তোলতে, ইবরাহীম (আ:) এর দুআর ফলস্বরূপ আল্লাহ তাআলা পাঠালেন শেষ নবী মুহাম্মাদ (সা:) -কে।

বংশ-গোত্র, জাত-পাত, মাযহাব-মতবাদ, কৃষ্টি-কালচার, দেশ-খেশ, সাদা-কালো, ধনী-গরীব নির্বিশেষে এক কালিমার ভিত্তিতে বিশ্ববাসীকে ঐকবদ্ধ হওয়ার আহবান জানালেন তিনি।
রাসূল (সা:) সে আহবান ছড়িয়ে পড়ল দিগ্বিদিক।
শতধা বিচ্ছিন্ন জাতি যেন খুঁজে পেল মুক্তির রাজপথ।
কে সাদা কে কালো, কে ধনী কে গরীব, কে আরবী কে আজমী, কে কোন্ গোত্রের, কে কোন্ দেশের- সব ভুলে গিয়ে, সে কালিমা পড়েছে, তো সে আমার ভাই।দীনী সম্পর্কের ভাই। রক্তের চেয়েও বড় শক্ত এ বাঁধন। যেন এক দেহ, এক প্রাণ। একাংশ তার আঘাতপ্রাপ্ত হলে আরেকাংশ গর্জে উঠে।রক্তের বন্ধন ছিন্ন হতে পারে (ঈমান-কুফরের প্রশ্নে) তরবারির আঘাতে, কিন্তু দীনের বন্ধন যার সাথে- মুখের সামান্য কথায়ও আঘাত দেওয়া যায় না তাকে।এক আল্লাহর গোলাম, এক কিতাবের অনুসারী, এক কাবার দিকে রজু- যেন একই সূত্রে গ্রন্থিত এক পঙ্গপাল। এদেরতো শুধু একটিই দীন- ইসলাম। যে দীন নিয়ে আগমন করেছিলেন সমস্ত নবী-রাসূল।তাদের ইবাদাতের;
আভ্যন্তরীণ দিক সাজানো ছিল: 💐(১)তাওহীদের নির্মল আলোয়,

আর বাহ্যিকদিক সাজানো:

💐(২)সুন্নাহর দৃপ্তিতে।

কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রথম দিকের সেই কয়েক শতকের পর থেকেই এই উম্মাহর বৃহত্তর অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এই দীনের মূল থেকে। মূল ছেড়ে আঁকড়ে ধরেছে শাখা-প্রশাখা।
এমনকি শাখাকে ধরে নিয়েছে মূল হিসেবে। এভাবে দিনকে দিন ক্রমান্বয়ে দূরে সরতে লাগল আল্লাহর দীন থেকে।

কেউ তো সরাসরি মূর্তির পুজো শুরু করল, আবার কেউ শুরু করল ভাবমূর্তির পুজা। আবারও আঁকড়ে ধরল সেই পুরনো জাহিলিয়াত, আসাবিয়াত।

আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিভক্ত হয়ে গেল শত দল, মত, মাযহাব, তরীকায়।

আল্লাহ তা 'আলা; বলেন:
📔সূরা আল আনআম;আয়াত: ১৫৯

إِنَّ ٱلَّذِينَ فَرَّقُوا۟ دِينَهُمْ وَكَانُوا۟ شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِى شَىْءٍ إِنَّمَآ أَمْرُهُمْ إِلَى ٱللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُوا۟ يَفْعَلُونَ

অর্থঃ যারা নিজেদের (পূর্ণ পরিণত) দ্বীনকে খন্ডে খন্ডে বিভক্ত করে নিয়েছে আর (আপন আপন অংশ নিয়ে) দলে দলে ভাগ হয়ে গেছে তাদের কোন কাজের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি পুরোপুরি আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। (সময় হলেই) তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে।

ভৌগলিকভাবে বিভক্ত হলো ৫৭টি সীমানায়। ভুলে গেল আল-ওয়ালা ওয়াল বারাআ’র আকীদা। ছুঁড়ে ফেলল হাবলুল্লাহ- ঐক্যের রজ্জু। ফলে আল্লাহ তাআলার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এই উম্মাহর উপর নেমে এলো মহাবিপর্যয়। আরাকান,আফগান, ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, দক্ষিণ সুদান, পূর্ব তিমুরসহ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে তারা পিষ্ট হতে লাগলো নির্যাতন-নিপীড়নের স্ট্রীম রোলারে।
মায়ের সামনে হত্যা করা হলো সন্তানকে, সন্তানের সামনে মা’কে।
ভাইয়ের সামনে ধর্ষণ করা হলো বোনকে, বোনের সামনে খুন করা হলো ভাইকে।
স্ত্রীর সামনে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করা হলো স্বামীকে।
যেদিকে তাকাই, সেদিকেই আজ তাদের প্রবাহিত রক্তের স্রোত। পৃথিবীর আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত আজ তাদের আর্তনাদে...। কলমও অবশ হয়ে আসে লিখতে এ বাস্তবতা।

👉🏾হ্যাঁ, এই যুলুম, এই অত্যাচার চলতেই থাকবে যতক্ষণ না আমরা আবার তাওহীদ ও সুন্নাহর দিকে ফিরে আসবো ।
💐✍🏾তাই আমাদের করণীয় হল সমস্ত মানব রচিত দল-মত,মানব রচিত তরীকা,মানব রচিত মাযহাব, তন্ত্র-মন্ত্রে বাদ দিয়ে । 💐👉🏾সবার ঊর্ধ্বে ;একমাত্র রাসূলে(সা:) এর আদর্শকে সর্বোত্তম স্থান দিতেই হবেই ।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📔সূরা আল আহ্‌যাব;আয়াত: ২১

لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ ٱللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْءَاخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرًا
অর্থঃ যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর (সা:) মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।

আমাদের করণীয় হল রাসূলের (সা:) আনীত আদর্শের বিপরীতে যে সমস্ত ,মানব রচিত তরীকা,মানব রচিত মাযহাব ও ফিরকা,আছে তাহা ত্যাগ করা।

আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📔সূরা আন নিসা;আয়াত: ৬৫

فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا۟ فِىٓ أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا۟ تَسْلِيمًا
অর্থঃ অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।

💐✍🏾প্রতিটি মুসলিমই ফিরকাবন্দিকে অভিশাপ মনে করে। উম্মাহর এক হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। আবার নিজ ফিরকা ভ্রান্ত প্রমাণিত হলেও ছাড়তে চায় না। এটা কথা ও কর্মের বৈপরীত্য।
এভাবে ফিরকাবন্দি কখনও খতম হতে পারে না এবং উম্মাহর এক হয়ে যাওয়ার স্বপ্নও বাস্তবায়িত হতে পারে না। অথচ এই ফিরকাবন্দি সেই মুশরিকদের কাজ, যাদের সাথে বারাআত করা আমাদের আকীদার মূল ভিত্তি।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📕সূরা আর রুম;আয়াত: ৩১

مُنِيبِينَ إِلَيْهِ وَٱتَّقُوهُ وَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَلَا تَكُونُوا۟ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ

অর্থঃ সবাই তাঁর অভিমুখী হও এবং ভয় কর, নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।

আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📔সূরা আর রুম;আয়াত: ৩২

مِنَ ٱلَّذِينَ فَرَّقُوا۟ دِينَهُمْ وَكَانُوا۟ شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍۭ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ

অর্থঃ যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত।
📔সূরা আল ইমরান;আয়াত: ১০২

يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ

অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।

সুতরাং আসুন, আমরা একমাত্র দীন- ইসলাম গ্রহণ করে সত্যিকারের মুসলিম হই। খতম করি ফিরকাবন্দির অভিশাপকে। আমাদের দীন একটাই- ইসলাম। আমাদের পরিচয় একটাই- মুসলিম।

💐✍🏾আল্লাহ তা'আলা ;সমস্ত মুসলিম ভাই ও বোনদের; সঠিক দীন,ইসলামকে বুঝবার ও মেনে চলার তৌফিক দান করুন "আমিন "।

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...