Friday, May 31, 2019

নতুন চাঁদ দেখে কি দেশে দেশে ঈদ পালন করতে হবে


আব্দুল্লাহ্ ইবনে ওমার (রা.) থেকে বর্ণিত,
“রসূলুল্লাহ্ (দ.) রমজানের কথা আলোচনা করে বললেন, চাঁদ না দেখে তোমরা সওম (রোজা) পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ফিতর (ঈদুল ফিতর) উদযাপন করবে না।...-বুখারী, অধ্যায় ঃ ৩০, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৫, রমজান বলা হবে, না রমজান মাস বলা হবে? যে বলে, উভয়টাই বলা যাবে, হাদিস # ১৯০০, অনুচ্ছেদ ঃ ১১, নাবী (দ.) এর কথা যখন তোমরা নতুন চাঁদ দেখো তখন স্বওম (রোজা) আরম্ভ কর। আবার যখন নতুন চাঁদ দেখো তখনই (ঈদুল) ফিতর উদ্যাপন কর, হাদিস # ১৯০৬, ১৯০৭, মুসলিম, অধ্যায় ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ২, নতুন চাঁদ দেখে স্বওম (রোজা) পালন করা এবং নতুন চাঁদ দেখে (ঈদুল) ফিতর উদ্যাপন করা এবং মাসের প্রথমে বা শেষের দিন মেখাচ্ছন্ন থাকলে ত্রিশ দিন পূর্ণ করা, হাদিস # ৩,৪,৬,৭,৮,৯/১০৮০, নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ২২, স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১২, আমর বিন দিনার (রহ.) কর্তৃক ইবনু আব্বাস (রা.) থেকে উক্ত হাদিসের বর্ণনায় বিরোধ, হাদিস # ২১২৪, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১০, নতুন চাঁদ দেখে স্বওম (রোজা) পালন অথবা ত্রিশ দিন পূর্ণ করা, হাদিস # ৭৯২৫, ৭৯২৮, ৭৯৩১ (হাদিসটি বুখারীর বর্ণনা)।
এই হাদিসটি বলছে যে, আমাদেরকে নতুন চাঁদ দেখে সওম ও ঈদ পালন করতে হবে। এ থেকেই প্রমাণ হয়ে গেল যে, যার-যার দেশের নতুন চাঁদ অনুযায়ী স্বওম ও ঈদ পালন করতে হবে।

উত্তর : আপনার ব্যাখ্যাটি সত্যিই হাস্যকর। কারণ, হাদিসে তোমরা” শব্দটি আ ম (সার্বজনিন) শব্দ। আপনি কিভাবে এই তোমরা” শব্দটিকে খাস (নির্দিষ্ট) করে যার-যার দেশের নতুন চাঁদ অনুযায়ী স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালনের জন্য ব্যাখ্যা করলেন?
এখানে তোমরা” শব্দটি দ্বারা রসূলুল্লাহ (দ.) পুরো মুসলিম জাতিকে সম্বোধন করেছেন। হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা হবে-
“রসূলুল্লাহ্ (দ.) রমজানের কথা আলোচনা করে বললেন, চাঁদ না দেখে তোমরা (পুরো মুসলিম জাতি) স্বওম (রোজা) পালন করবে না এবং চাঁদ না দেখে ফিতর (ঈদুল ফিতর) উদযাপন করবে না।...
এখন হাদিসের তোমরা” শব্দটি দ্বারা প্রত্যেক দেশের মুসলিমদেরকে যদি পৃথক-পৃথকভাবে বুঝানো হয়, তাহলে ভাই বলুনতো ১৯৭১ইং সালের পূর্বে যখন আমাদের এই বাংলাদেশ পাকিস্তানের অন্তর্ভূক্ত ছিল তখন রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর “তোমরা” শব্দটি দ্বারা কি পাকিস্তানীদের বুঝানো হয়েছিল? এরও পূর্বে যখন পাকিস্তান ভারতবর্ষের অন্তর্ভূক্ত ছিল তখন কি রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর “তোমরা” শব্দটি দ্বারা ভারতবর্ষের মুসলিমদেরকে বুঝানো হয়েছিল? ধরুন, কখনও যদি ঠাকুরগাঁও বাংলাদেশ থেকে আলাদা হয়ে যায় তখন কি “তোমরা” শব্দটি দ্বারা ঠাকুরগাঁয়ের মুসলিমদের পৃথকভাবে বুঝানো হবে? স্বাভাবিক বিবেক-বুদ্ধি সম্পন্ন যেকোন ব্যক্তি-ই বলবেন যে, সত্যিই বিষয়টি হাস্যকর।

অতএব, হাদিসে তোমরা” শব্দটি আমভাবে (সার্বজনিন) ব্যবহার হওয়ায় তা পুরো মুসলিম জাতিকেই বুঝানো হবে। কোনভাবেই মানুষের তৈরী করা দেশের সীমানা অনুযায়ী মুসলিমদেরকে বুঝানো হবে না।

আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ  (রা.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন,

“...যদি (মুসলিমদের) দু’জন স্বাক্ষ্য দেয় যে, তারা (নতুন চাঁদ উদয়ের ব্যাপারে) স্ব্যা দেয় তাহলে তোমরা স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালন কর।” -নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, রমজান মাসে নতুন চাঁদ দেখার ব্যাপারে একজনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করা এবং এ ব্যাপারে সিমাক (রহ.) এর হাদিসে সুফিয়ান (রহ.) এর বর্ণনায় বিরোধ, হাদিস # ২১১৬।

এই হাদিসে রসূলুল্লাহ্ (দ.) বলেছেন, দুইজন মুসলিম নতুন চাঁদ উদয়ের স্বাক্ষ্য দিলেই আমরা স্বওম (রোজা) ও ঈদ পালন করতে পারব। আর এখানে কোন অঞ্চলের মুসলিম বলে আলাদাভাবে উল্লেখ করেননি। বরং আমভাবে (সার্বজনিন) যে কোন অঞ্চল থেকে দু’জন মুসলিম নতুন চাঁদ উদয়ের স্বাক্ষ্য দেয়ার তথ্য পৌঁছলেই স্বওম ও ঈদ পালন করতে হবে।

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...