🌹আমাদের দীন একটাই- ইসলাম। আমাদের পরিচয় একটাই- মুসলিম।🌹 -----------------------------------------------------------------------------
💐বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম💐
💐✍🏾অসংখ্য নবী-রাসূলের আগমনস্থল, তাওহীদের দীপ্ত মিনার মক্কাতুল মুকার্রমা যখন শিরকের চাদরে পরিবেষ্টিত। ইব্রাহীম (আ:) এর দীনে হানীফের অনুসারীরা যখন ‘মুতাওজ্জু’ শত প্রতিমার দিকে। এক ইলাহে আত্মসমর্পিত জাতি যখন আবদ্ধ হয়েছিল শত দেবতার শৃঙ্খলে। এক রব ছেড়ে যখন আঁকড়ে ধরেছিল আরবাব। এক দীনকে যখন করা হয়েছিল খন্ড বিখন্ড। নানান দল-উপদলে জাতি যখন বিভক্ত। এক জাতি- এক দেহ ছিল যে জাতির মূল স্পৃহা, সে জাতি যখন গোত্রবাদের কালো কুঠুরিতে নিমজ্জিত। আসাবিয়্যাতই যখন হক-বাতিলের মানদন্ড। শত্রুতা ও বন্ধুত্বের মাপকাঠি যখন ঘৃণ্য জাতীয়তাবাদ। যুদ্ধ-হানাহানিতে যখন ক্ষত-বিক্ষত পুরো জাতি। নিজেরাই যখন নিজেদের ধ্বংসের কারণ।
অথচ তখনও তারা নিজেদের মনে করতো ইবরাহীম (আ:) এর অনুসারী।
ঠিক তখন- মিল্লাতে ইবরাহীমের (আ:) ঝান্ডা দিয়ে, দীনে হানীফকে পূনরুজ্জীবিত করতে, সমস্ত শিরক এবং মুশরিকদের নামনিশানাটুকু মুছে ফেলতে, তামাম আদিয়ানে বাতেলার উপর দীনে হককে গালেব করতে, এক জাতি এক দেহরূপে আবারও বিশ্ববাসীকে গড়ে তোলতে, ইবরাহীম (আ:) এর দুআর ফলস্বরূপ আল্লাহ তাআলা পাঠালেন শেষ নবী মুহাম্মাদ (সা:) -কে।
বংশ-গোত্র, জাত-পাত, মাযহাব-মতবাদ, কৃষ্টি-কালচার, দেশ-খেশ, সাদা-কালো, ধনী-গরীব নির্বিশেষে এক কালিমার ভিত্তিতে বিশ্ববাসীকে ঐকবদ্ধ হওয়ার আহবান জানালেন তিনি।
রাসূল (সা:) সে আহবান ছড়িয়ে পড়ল দিগ্বিদিক।
শতধা বিচ্ছিন্ন জাতি যেন খুঁজে পেল মুক্তির রাজপথ।
কে সাদা কে কালো, কে ধনী কে গরীব, কে আরবী কে আজমী, কে কোন্ গোত্রের, কে কোন্ দেশের- সব ভুলে গিয়ে, সে কালিমা পড়েছে, তো সে আমার ভাই।দীনী সম্পর্কের ভাই। রক্তের চেয়েও বড় শক্ত এ বাঁধন। যেন এক দেহ, এক প্রাণ। একাংশ তার আঘাতপ্রাপ্ত হলে আরেকাংশ গর্জে উঠে।রক্তের বন্ধন ছিন্ন হতে পারে (ঈমান-কুফরের প্রশ্নে) তরবারির আঘাতে, কিন্তু দীনের বন্ধন যার সাথে- মুখের সামান্য কথায়ও আঘাত দেওয়া যায় না তাকে।এক আল্লাহর গোলাম, এক কিতাবের অনুসারী, এক কাবার দিকে রজু- যেন একই সূত্রে গ্রন্থিত এক পঙ্গপাল। এদেরতো শুধু একটিই দীন- ইসলাম। যে দীন নিয়ে আগমন করেছিলেন সমস্ত নবী-রাসূল।তাদের ইবাদাতের;
আভ্যন্তরীণ দিক সাজানো ছিল: 💐(১)তাওহীদের নির্মল আলোয়,
আর বাহ্যিকদিক সাজানো:
💐(২)সুন্নাহর দৃপ্তিতে।
কিন্তু, দুঃখজনক হলেও সত্য যে, প্রথম দিকের সেই কয়েক শতকের পর থেকেই এই উম্মাহর বৃহত্তর অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এই দীনের মূল থেকে। মূল ছেড়ে আঁকড়ে ধরেছে শাখা-প্রশাখা।
এমনকি শাখাকে ধরে নিয়েছে মূল হিসেবে। এভাবে দিনকে দিন ক্রমান্বয়ে দূরে সরতে লাগল আল্লাহর দীন থেকে।
কেউ তো সরাসরি মূর্তির পুজো শুরু করল, আবার কেউ শুরু করল ভাবমূর্তির পুজা। আবারও আঁকড়ে ধরল সেই পুরনো জাহিলিয়াত, আসাবিয়াত।
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বিভক্ত হয়ে গেল শত দল, মত, মাযহাব, তরীকায়।
আল্লাহ তা 'আলা; বলেন:
📔সূরা আল আনআম;আয়াত: ১৫৯
إِنَّ ٱلَّذِينَ فَرَّقُوا۟ دِينَهُمْ وَكَانُوا۟ شِيَعًا لَّسْتَ مِنْهُمْ فِى شَىْءٍ إِنَّمَآ أَمْرُهُمْ إِلَى ٱللَّهِ ثُمَّ يُنَبِّئُهُم بِمَا كَانُوا۟ يَفْعَلُونَ
অর্থঃ যারা নিজেদের (পূর্ণ পরিণত) দ্বীনকে খন্ডে খন্ডে বিভক্ত করে নিয়েছে আর (আপন আপন অংশ নিয়ে) দলে দলে ভাগ হয়ে গেছে তাদের কোন কাজের সাথে তোমার কোন সম্পর্ক নেই। তাদের ব্যাপারটি পুরোপুরি আল্লাহর ইখতিয়ারভুক্ত। (সময় হলেই) তিনি তাদেরকে জানিয়ে দেবেন তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে।
ভৌগলিকভাবে বিভক্ত হলো ৫৭টি সীমানায়। ভুলে গেল আল-ওয়ালা ওয়াল বারাআ’র আকীদা। ছুঁড়ে ফেলল হাবলুল্লাহ- ঐক্যের রজ্জু। ফলে আল্লাহ তাআলার পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এই উম্মাহর উপর নেমে এলো মহাবিপর্যয়। আরাকান,আফগান, ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, দক্ষিণ সুদান, পূর্ব তিমুরসহ পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রান্তে তারা পিষ্ট হতে লাগলো নির্যাতন-নিপীড়নের স্ট্রীম রোলারে।
মায়ের সামনে হত্যা করা হলো সন্তানকে, সন্তানের সামনে মা’কে।
ভাইয়ের সামনে ধর্ষণ করা হলো বোনকে, বোনের সামনে খুন করা হলো ভাইকে।
স্ত্রীর সামনে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুচিয়ে হত্যা করা হলো স্বামীকে।
যেদিকে তাকাই, সেদিকেই আজ তাদের প্রবাহিত রক্তের স্রোত। পৃথিবীর আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত আজ তাদের আর্তনাদে...। কলমও অবশ হয়ে আসে লিখতে এ বাস্তবতা।
👉🏾হ্যাঁ, এই যুলুম, এই অত্যাচার চলতেই থাকবে যতক্ষণ না আমরা আবার তাওহীদ ও সুন্নাহর দিকে ফিরে আসবো ।
💐✍🏾তাই আমাদের করণীয় হল সমস্ত মানব রচিত দল-মত,মানব রচিত তরীকা,মানব রচিত মাযহাব, তন্ত্র-মন্ত্রে বাদ দিয়ে । 💐👉🏾সবার ঊর্ধ্বে ;একমাত্র রাসূলে(সা:) এর আদর্শকে সর্বোত্তম স্থান দিতেই হবেই ।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📔সূরা আল আহ্যাব;আয়াত: ২১
لَّقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ ٱللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِّمَن كَانَ يَرْجُوا۟ ٱللَّهَ وَٱلْيَوْمَ ٱلْءَاخِرَ وَذَكَرَ ٱللَّهَ كَثِيرًا
অর্থঃ যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর (সা:) মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে।
আমাদের করণীয় হল রাসূলের (সা:) আনীত আদর্শের বিপরীতে যে সমস্ত ,মানব রচিত তরীকা,মানব রচিত মাযহাব ও ফিরকা,আছে তাহা ত্যাগ করা।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📔সূরা আন নিসা;আয়াত: ৬৫
فَلَا وَرَبِّكَ لَا يُؤْمِنُونَ حَتَّىٰ يُحَكِّمُوكَ فِيمَا شَجَرَ بَيْنَهُمْ ثُمَّ لَا يَجِدُوا۟ فِىٓ أَنفُسِهِمْ حَرَجًا مِّمَّا قَضَيْتَ وَيُسَلِّمُوا۟ تَسْلِيمًا
অর্থঃ অতএব, তোমার পালনকর্তার কসম, সে লোক ঈমানদার হবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদের ব্যাপারে তোমাকে ন্যায়বিচারক বলে মনে না করে। অতঃপর তোমার মীমাংসার ব্যাপারে নিজের মনে কোন রকম সংকীর্ণতা পাবে না এবং তা হূষ্টচিত্তে কবুল করে নেবে।
💐✍🏾প্রতিটি মুসলিমই ফিরকাবন্দিকে অভিশাপ মনে করে। উম্মাহর এক হয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। আবার নিজ ফিরকা ভ্রান্ত প্রমাণিত হলেও ছাড়তে চায় না। এটা কথা ও কর্মের বৈপরীত্য।
এভাবে ফিরকাবন্দি কখনও খতম হতে পারে না এবং উম্মাহর এক হয়ে যাওয়ার স্বপ্নও বাস্তবায়িত হতে পারে না। অথচ এই ফিরকাবন্দি সেই মুশরিকদের কাজ, যাদের সাথে বারাআত করা আমাদের আকীদার মূল ভিত্তি।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📕সূরা আর রুম;আয়াত: ৩১
مُنِيبِينَ إِلَيْهِ وَٱتَّقُوهُ وَأَقِيمُوا۟ ٱلصَّلَوٰةَ وَلَا تَكُونُوا۟ مِنَ ٱلْمُشْرِكِينَ
অর্থঃ সবাই তাঁর অভিমুখী হও এবং ভয় কর, নামায কায়েম কর এবং মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না।
আল্লাহ তা 'আলা বলেন:
📔সূরা আর রুম;আয়াত: ৩২
مِنَ ٱلَّذِينَ فَرَّقُوا۟ دِينَهُمْ وَكَانُوا۟ شِيَعًا كُلُّ حِزْبٍۭ بِمَا لَدَيْهِمْ فَرِحُونَ
অর্থঃ যারা তাদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং অনেক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। প্রত্যেক দলই নিজ নিজ মতবাদ নিয়ে উল্লসিত।
📔সূরা আল ইমরান;আয়াত: ১০২
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ ٱتَّقُوا۟ ٱللَّهَ حَقَّ تُقَاتِهِۦ وَلَا تَمُوتُنَّ إِلَّا وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ
অর্থঃ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে যেমন ভয় করা উচিৎ ঠিক তেমনিভাবে ভয় করতে থাক। এবং অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না।
সুতরাং আসুন, আমরা একমাত্র দীন- ইসলাম গ্রহণ করে সত্যিকারের মুসলিম হই। খতম করি ফিরকাবন্দির অভিশাপকে। আমাদের দীন একটাই- ইসলাম। আমাদের পরিচয় একটাই- মুসলিম।
💐✍🏾আল্লাহ তা'আলা ;সমস্ত মুসলিম ভাই ও বোনদের; সঠিক দীন,ইসলামকে বুঝবার ও মেনে চলার তৌফিক দান করুন "আমিন "।
No comments:
Post a Comment