Sunday, December 29, 2019

জানাযার সলাতের নিয়ম

জানাযার সলাতের নিয়মঃ


যাবতীয় প্রশংসা আল্লহ্‌র। আর সলাত ও সালাম সর্বশেষ নাবী ও রসূল মুহাম্মাদ (স.) উপর। পরকথা:—
প্রিয় মুসলিম ভাইয়েরা! যখন দেখলাম সঠিক পদ্ধতিতে জানাযার নামায আদায়ের নিয়ম জানা প্রয়োজন অনেকের, তাই আমি এ সংক্ষিপ্ত লেখাটি লিখলাম। আল্লাহ্‌র তাওফীক কামনা করে বলছি,
(১) মুসলিমদের জানাযার সাথে কাতারে দাঁড়াবেন, মনে মনে জানাযার নামাযের নিয়ত (দৃঢ়সংকল্প) করবেন।
(২) ইমামের পরপরই প্রথম তাকবীর দিবেন الله اكبر (আল্লাহু আকবার) “আল্লাহ সবচেয়ে বড়”। বলার সময়ে দু’হাত কাঁধের সমান উঠাবেন। তারপর হাত দুটি বুকের উপর রেখে পড়বেন ‘সুরা ফাতেহা’।
(৩) ইমামের পরপর দ্বিতীয় তাকবীর দিবেন, তারপর নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর দরূদ পড়বেন এই বলে,
- «اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ، وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ».

“হে আল্লাহ! আপনি (আপনার নিকটস্থ উচ্চসভায়) মুহাম্মাদকে সম্মানের সাথে স্মরণ করুন এবং তাঁর পরিবার-পরিজনকে, যেমন আপনি সম্মানের সাথে স্মরণ করেছেন ইবরাহীমকে ও তাঁর পরিবার-পরিজনদেরকে। নিশ্চয় আপনি অত্যন্ত প্রশংসিত ও মহামহিমান্বিত। হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ ও তাঁর পরিবার পরিজনের উপর বরকত নাযিল করুন যেমন আপনি বরকত নাযিল করেছিলেন ইবরাহীম ও তাঁর পরিবার-পরিজনের উপর। নিশ্চয় আপনি অত্যন্ত প্রশংসিত ও মহামহিমান্বিত”।
[বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৬/৪০৮, নং ৩৩৭০; মুসলিম, নং ৪০৬]
এছাড়া সুন্নায় বর্ণিত অন্য যে কোনো দরূদে-ইব্রাহীমীও পড়তে পারেন।

(৪) ইমামের পরপর তৃতীয় তাকবীর দিবেন। অতঃপর মৃত ব্যক্তির জন্য দো‘আ করবেন ঐকান্তিকতা ও ইখলাসের সাথে। নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক পঠিত কিছু দো‘আ নিম্নে দেওয়া হলো:

- «اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِحَيِّنَا وَمَيِّتِنَا، وَشَاهِدِنَا وَغَائِبِنَا، وَصَغِيرِنَا وَكَبيرِنَا، وَذَكَرِنَا وَأُنْثَانَا. اللَّهُمَّ مَنْ أَحْيَيْتَهُ مِنَّا فَأَحْيِهِ عَلَى الْإِسْلاَمِ، وَمَنْ تَوَفَّيْتَهُ مِنَّا فَتَوَفَّهُ عَلَى الإِيمَانِ، اللَّهُمَّ لاَ تَحْرِمْنَا أَجْرَهُ، وَلاَ تُضِلَّنَا بَعْدَهُ».

“হে আল্লাহ! আমাদের জীবিত ও মৃত, উপস্থিত ও অনুপস্থিত, ছোট ও বড় এবং নর ও নারীদেরকে ক্ষমা করুন। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মধ্যে যাদের আপনি জীবিত রাখবেন তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখুন এবং যাদেরকে মৃত্যু দান করবেন তাদেরকে ঈমানের সাথে মৃত্যু দান করুন। হে আল্লাহ! আমাদেরকে তার (মৃত্যুতে ধৈয্যধারণের) সওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না এবং তার (মৃত্যুর) পর আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করবেন না।”
[ আবূ দাঊদ, নং ৩২০১; তিরমিযী, নং ১০২৪; নাসাঈ, নং ১৯৮৫; ইবন মাজাহ, ১/৪৮০, নং ১৪৯৮; আহমাদ ২/৩৬৮, নং ৮৮০৯। আরও দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ্‌ ১/২৫১]

«اللَّهُمَّ اغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ، وَعَافِهِ، وَاعْفُ عَنْهُ، وَأَكْرِمْ نُزُلَهُ، وَوَسِّعْ مُدْخَلَهُ، وَاغْسِلْهُ بِالْمَاءِ وَالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ، وَنَقِّهِ مِنَ الْخَطَايَا كَمَا نَقَّيْتَ الثَّوْبَ الأَبْيَضَ مِنَ الدَّنَسِ، وَأَبْدِلْهُ دَاراً خَيْراً مِنْ دَارِهِ، وَأَهْلاً خَيْراً مِنْ أَهْلِهِ، وَزَوْجَاً خَيْراً مِنْ زَوْجِهِ، وَأَدْخِلْهُ الْجَنَّةَ، وَأَعِذْهُ مِنْ عَذَابِ القَبْرِ [وَعَذَابِ النَّارِ]».

“হে আল্লাহ! আপনি তাকে ক্ষমা করুন, তাকে দয়া করুন, তাকে পূর্ণ নিরাপত্তায় রাখুন, তাকে মাফ করে দিন, তার মেহমানদারীকে মর্যাদাপূর্ণ করুন, তার প্রবেশস্থান কবরকে প্রশস্ত করে দিন। আর আপনি তাকে ধৌত করুন পানি, বরফ ও শিলা দিয়ে, আপনি তাকে গুনাহ থেকে এমনভাবে পরিষ্কার করুন যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে পরিষ্কার করেছেন। আর তাকে তার ঘরের পরিবর্তে উত্তম ঘর, তার পরিবারের বদলে উত্তম পরিবার ও তার জোড়ের (স্ত্রী/স্বামীর) চেয়ে উত্তম জোড় প্রদান করুন। আর আপনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করান এবং তাকে কবরের আযাব [ও জাহান্নামের আযাব] থেকে রক্ষা করুন” । [মুসলিম ২/৬৬৩, নং ৯৬৩]

اللَّهُمَّ عَبْدُكَ وَابْنُ أَمَتِكَ احْتَاجَ إِلَى رَحْمَتِكَ، وَأَنْتَ غَنِيٌّ عَنْ عَذَابِهِ، إِنْ كَانَ مُحْسِناً فَزِدْ فِي حَسَنَاتِهِ، وَإِنْ كَانَ مُسِيئاً فَتَجَاوَزْ عَنْهُ».

“হে আল্লাহ, আপনার এক দাস, আর এক দাসীর পুত্র, আপনার অনুগ্রহের মুখাপেক্ষী, আপনি তাকে শাস্তি দেওয়া থেকে অমুখাপেক্ষী। যদি সে নেককার বান্দা হয়, তবে তার সওয়াব আরও বাড়িয়ে দিন, আর যদি বদকার বান্দা হয়, তবে তার অপরাধকর্ম এড়িয়ে যান।”
[হাদীসটি সংকলণ করেন, হাকেম তাঁর মুস্তাদরাকে এবং সহীহ বলেছেন, ১/৩৫৯; আর যাহাবী সেটা সমর্থন করেছেন। আরও দেখুন, আলবানী, আহকামুল জানায়েয, পৃ. ১২৫]

«اللَّهُمَّ إِنَّ فُلاَنَ بْنَ فُلاَنٍ فِي ذِمَّتِكَ، وَحَبْلِ جِوَارِكَ، فَقِهِ مِنْ فِتْنَةِ الْقَبْرِ، وَعَذَابِ النَّارِ، وَأَنْتَ أَهْلُ الْوَفَاءِ وَالْحَقِّ، فَاغْفِرْ لَهُ وَارْحَمْهُ إِنَّكَ أَنْتَ الغَفُورُ الرَّحيمُ».

“হে আল্লাহ, অমুকের পুত্র অমুক আপনার যিম্মাদারীতে, আপনার প্রতিবেশিত্বের নিরাপত্তায়; সুতরাং আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা থেকে এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। আর আপনি প্রতিশ্রুতি পূর্ণকারী এবং প্রকৃত সত্যের অধিকারী। অতএব, আপনি তাকে ক্ষমা করুন এবং তার উপর দয়া করুন। নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল, দয়ালু।”
[ইবন মাজাহ্‌, নং ১৪৯৯। দেখুন, সহীহ ইবন মাজাহ ১/২৫১। তাছাড়া হাদীসটি আবূ দাউদও বর্ণনা করেছেন, ৩/২১১, নং ৩২০২]

-আর যদি মৃতব্যক্তি শিশু হয়, তবে বলুন,
«اللَّهُمَّ اجْعَلْهُ لَنَا فَرَطاً، وَسَلَفاً، وَأَجْراً».

“হে আল্লাহ, আমাদের জন্য তাকে অগ্রগামী প্রতিনিধি, অগ্রিম পূণ্য এবং সওয়াব হিসেবে নির্ধারণ করে দিন।”
[হাসান বসরী রাহেমাহুল্লাহ যখন ছোট শিশুদের জানাযা পড়তেন তখন তার উপর সূরা ফাতেহা পড়তেন এবং উপরোক্ত দো‘আ বলতেন। হাদীসটি ইমাম বাগভী তার শারহুস সুন্নাহ ৫/৩৫৭ এ বর্ণনা করেছেন। আরও বর্ণনা করেছেন, আব্দুর রায্‌যাক তার মুসান্নাফে, নং ৬৫ ৮৮। তাছাড়া ইমাম বুখারী, কিতাবুল জানায়েয এর, ৬৫, বাবু কিরাআতি ফাতিহাতিল কিতাব আলাল জানাযাত ২/১১৩; ১৩৩৫ নং হাদীসের পূর্বে এটাকে তা‘লীক বা সনদ ব্যতীত বর্ণনা করেছেন]
(৫) ইমামের তাকবীরের পরপরই চতুর্থ তাকবীর দিবেন। প্রতি তাকবীরেই হাত তুলবেন, যেমনটি ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণনা এসেছে।
আর জানাযার নয়টি পর্যন্ত তাকবীর দেওয়া জায়েয, কিন্তু অধিকাংশ হাদীসেই চার তাকবীরের কথা এসেছে।
(৬) ইমামের পর সালাম ফিরাবেন এই বলে,
السلام عليكم ورحمة الله
(‌‘আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লহ’)
“আপনাদের উপর আল্লাহর সালাম ও তাঁর রহমত নাযিল হোক”।
আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের আমলকে একান্তভাবে তাঁর জন্য এবং রাসুলে আমীনের সুন্নাত অনুযায়ী করে নেন।
আর সকল প্রসংশা আল্লাহ্‌র জন্য।
#লিখেছেনঃ আব্দুল হালীম ইবন মুহাম্মাদ নাসসার আস-সালাফী
#অনুবাদঃ আবদুর রহমান ইবন আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
#সম্পাদনাঃ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া
আপনার প্রয়োজন পুরো হলে লেখাটি এমন কাউকে দিন, যে এর দ্বারা উপকৃত হবে।

ফেসবুক পোস্ট লিংকঃ https://www.facebook.com/kmarifin98/posts/609619946458521?__tn__=K-R

Saturday, December 28, 2019

স্বামীকে পরকীয়া থেকে রক্ষা করার উপায় কি?

*স্বামীকে পরকীয়া থেকে রক্ষা করার উপায়*
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
প্রশ্ন: এক বোনের পক্ষ থেকে প্রশ্নঃ
_আমার হাজবেন্ড অন্য মেয়ের সাথে পরকীয়া করে। তার সাথে আমার তেমন শারীরিক সম্পর্কও হয় না। আমার মনে হয়, পরকীয়ার কারণে সে আমার প্রতি আগ্রহী নয়। তবে সে আমাকে খাওয়া-পরা নিয়ে কোনো অভাবে রাখে না। আমার দুটা সন্তান আছে। এই যন্ত্রণা আমার সহ্য হয় না। সে একবার আমার কাছে ধরা পড়ার পর ক্ষমাও চায়। কিন্তু ঐ মেয়ের পাল্লায় পড়ে আবারও তার সাথে সম্পর্ক করে। এই ক্ষেত্রে আমার করণীয় কী?_
*উত্তর:*
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ক্ষমা করুন।
পরকীয়া নি:সন্দেহে দাম্পত্য জীবন, সন্তান-সন্ততির ভবিষ্যৎ এবং সামাজিক সুস্থতা ও স্থিতিশীলতার জন্য বিরাট হুমকি। এটি নিজের হালাল স্ত্রীর সাথে আমানতের খেয়ানত, প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার শামিল এবং আল্লাহ তাআলা ক্রোধের কারণ।
*যাহোক, কোন স্বামী এই ফিতনায় জড়িয়ে গেলে স্ত্রীর করণীয় হল:*
 ১. কুরআন-হাদিসের আলোকে তাকে পরকীয়া, অবৈধ প্রেমপ্রীতি ও যিনাব্যাভিচারের ভয়াবহতা, ইসলামী আইন অনুযায়ী দুনিয়াতে এর কঠিন শাস্তি, আখিরাতের আযাব, আল্লাহর অসন্তুষ্টি ইত্যাদি বিষয়গুলো বুঝানো। এ বিষয়ে কুরআন-হাদীসে পর্যাপ্ত ব্ক্তব্য রয়েছে। তাই এ সংক্রান্ত যে কোন ভালো ইসলামী বই বা ইসলামী আলোচনার ভিডিও কাজে লাগানো যেতে পারে।
 ২. তার হেদায়েতের জন্য দয়াময় আল্লাহর নিকট দুআ করা।
 ৩. স্ত্রীর মাঝে স্বামীর নিকট অপছন্দীয় কোন আচার-আচরণ থাকলে তা পরিবর্তন করা এবং যথাসাধ্য তাকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা। দাম্পত্য জীবনে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক স্বামী-স্ত্রী এ বিষয়ে অজ্ঞতা বা অবহেলার কারণে সময়ের ব্যবধানে তারা দাম্পত্য জীবনের উষ্ণতা ও আবেদন হারায়। ফলে দুজনের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং অবশেষে ঈমানী দূর্বলতা, কুপ্রবৃত্তির তাড়না এবং শয়তানের কুমন্ত্রণায় তারা ভিন্ন পথ খুঁজা শুরু করে।
 ৪. প্রয়োজনে স্ত্রীর পক্ষ থেকে স্বামীকে ‌আরেকটি বিয়ে করার সম্মতি দেয়া।
উল্লেখ্য যে, আল্লাহর দেয়া এ বিধানটির ব্যাপারে অনেক স্ত্রীর কঠোর ও ভয়াবহ আক্রমণাত্মক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অনেক দুর্বল ইমানদার স্বামী অবৈধ পথের দিকে পা বাড়ায়। এ ক্ষেত্রে স্ত্রীও এই অন্যায়ের জন্য দায়ী হিসেবে বিবেচিত হবে।
 ৫. সম্ভব হলে সাক্ষ্য-প্রমাণ সাপেক্ষে পারিবারিক বা সামাজিক সালিশ অথবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
 ৬. এগুলোর মাধ্যমে কোন উপকার না হলে হয় স্ত্রীকে ধৈর্য ধারণ করে স্বামীকে এ পথ থেকে ফিরানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে হবে। অন্যথায় সবশেষে তার সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ করে পৃথক হয়ে যেতে হবে।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানী)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সৌদি আরব।

Wednesday, December 25, 2019

কোন কোন ক্ষেত্রে গীবত বৈধ?

হারাম কাজ- ৩
সৎকার্যের আদেশ করো এবং অসৎকার্য হতে নিষেধ করো। [সূরা লোকমান ৩১:১৭]
বিশ্বাসঘাতকদের পক্ষ নিয়ে বিতর্ক করো না। [সূরা নিসা ৪:১০৫]
জ্ঞান ও প্রজ্ঞা ও উত্তম যুক্তি দ্বারা আল্লাহ্‌ তা’আলার প্রতি আহ্বান করো। [সূরা নাহ্‌ল ১৬:১২৫]
________________________________________________
গ্রন্থঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন হাদিস নম্বরঃ ১৫৩৯
পরিচ্ছেদ ২৫৬ : যে সব কারণে গীবত বৈধ

জেনে রাখুন যে, সঠিক শরয়ী উদ্দেশ্যে গীবত বৈধ; যখন গীবত ছাড়া সে উদ্দেশ্য পূরণ হওয়া সম্ভবপর হয় না। এমন কারণ ৬টিঃ-

১। অত্যাচার ও নির্যাতনঃ নির্যাতিত ও অত্যাচারিত ব্যক্তির পক্ষে বৈধ যে, সে শাসক, বিচারক প্রমুখ [প্রভাবশালী] ব্যক্তি যারা অত্যাচারীকে উচিত সাজা দিয়ে ন্যায় বিচার করার কর্তৃত্ব ও ক্ষমতা রাখেন তাঁদের নিকট নালিশ করবে যে, ‘অমুক ব্যক্তি আমার উপর এই অত্যাচার করেছে।’

২। মন্দ কাজের অপসারণ ও পাপীকে সঠিক পথ ধরানোর কাজে সাহায্য কামনা। বস্ত্ততঃ শরীয়ত বহির্ভূত কর্মকাণ্ড বন্ধ করার ব্যাপারে শক্তিসম্পন্ন ব্যক্তিকে গিয়ে বলবে যে, ‘অমুক ব্যক্তি মন্দ কাজে লিপ্ত। সুতরাং আপনি তাকে তা থেকে বাধা দিন’ ইত্যাদি। তবে এর পিছনে কেবল অন্যায় ও মন্দ কাজ থেকে বাধা দেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য হতে হবে; অন্যথা তা হারাম হবে।

৩। ফতোয়া জানা। মুফতি [বা আলেমের] নিকট গিয়ে বলবে, ‘আমার পিতা আমার ভাই বা আমার স্বামী অথবা অমুক ব্যক্তি এই অন্যায় অত্যাচার আমার প্রতি করেছে। তার কি কোন অধিকার আছে? [এমন করার অধিকার যদি না থাকে] তবে তা থেকে মুক্তি পাবার এবং অন্যায়ের প্রতিকার করার ও নিজ অধিকার অর্জন করার উপায় কি?’ অনুরূপ আবেদন পেশ করা। এরূপ বলা প্রয়োজনে বৈধ। তবে সতর্কতামূলক ও উত্তম পন্থা হল, নাম না নিয়ে যদি বলে, ‘এক ব্যক্তি, বা লোক বা স্বামী এই করেছে, সে সম্পর্কে আপনি কি বলেন?’ নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির নাম না নিয়ে এরূপ বললে উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যাবে। এ সত্ত্বেও নির্দিষ্ট করে নাম নিয়ে ফতোয়া জিজ্ঞাসা করা বৈধ। যেমন এ মর্মে পরবর্তীতে হিন্দের হাদিস উল্লেখ করব---ইন শাআল্লাহ তা'আলা।

৪। মুসলিমদেরকে মন্দ থেকে সতর্ক করা ও তাদের মঙ্গল কামনা করা। এটা অনেক ধরণের হতে পারে। তার মধ্যে যেমনঃ-

[ক] হাদিসের দোষযুক্ত রাবী ও [বিচারকার্যে] সাক্ষীর দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করা। সর্বসম্মতিক্রমে এরূপ করা বৈধ; বরং প্রয়োজন বশতঃ ঐরূপ করা অত্যাবশ্যক।

[খ] কোন ব্যক্তির সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক জোড়ার জন্য, কোন ব্যবসায়ে অংশীদারি গ্রহণের উদ্দেশ্যে, কারো কাছে আমানত রাখার জন্য, কারো সাথে আদান-প্রদান করার মানসে অথবা কারো প্রতিবেশী হবার জন্য ইত্যাদি উদ্দেশ্যে পরামর্শ চাওয়া। আর সে ক্ষেত্রে যার নিকট পরামর্শ চাওয়া হয়, তার উচিত প্রকৃত অবস্থা খুলে বলা। বরং হিতাকাঙ্ক্ষী মনোভাব নিয়ে যত দোষ-ত্রুটি থাকবে সব ব্যক্ত করে দেবে। অনুরূপভাবে যখন কোন দ্বীনী জ্ঞান পিপাসুকে দেখবে যে, সে কোন বিদআতী ও মহাপাপী লোকের নিকট জ্ঞানার্জন করতে যাচ্ছে এবং আশংকা বোধ করবে যে, ঐ বিদআতী ও ফাসেক [মহাপাপী] দ্বারা সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তাহলে সে আবশ্যিকভাবে তাকে তার অবস্থা ব্যক্ত করে তার মঙ্গল সাধন করবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শর্ত হল যে, এর পিছনে তার উদ্দেশ্য যেন হিতাকাঙ্ক্ষী হয়। এ ব্যাপারটি এমন যে, সাধারণত: এতে ভুল হয়ে থাকে। কখনো বা বক্তা হিংসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐ কথা বলে। কিন্তু শয়তান তার ব্যাপারটা গোলমাল করে দেয় এবং তার মাথায় গজিয়ে দেয় যে, সে হিত উদ্দেশ্যেই ঐ কাজ করছে [অথচ বাস্তব তার বিপরীত]। এ জন্য মানুষের সাবধান থাকা উচিত।

[গ] যখন কোন উচ্চপদস্থ সরকারী অফিসার, গভর্নর বা শাসক, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করে---হয় তার অযোগ্যতার কারণে কিংবা পাপাচারী বা উদাসীন থাকার কারণে ইত্যাদি---তাহলে উক্ত ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রনেতার নিকট তার স্বরূপ তুলে ধরা একান্ত কর্তব্য। যাতে সে তার স্থানে অন্য উপযুক্ত কর্মী নিয়োগ করতে পারে কিংবা কমপক্ষে তার সম্পর্কে তার জানা থাকবে এবং সেই অনুযায়ী তার সাথে আচরণ করবে এবং তার প্রতারণা থেকে মুক্ত থাকবে, আর সে তাকে সংশোধন হবার জন্য উৎসাহিত করার চেষ্টা করবে, তারপর তাকে পরিবর্তন করে দেবে।

৫। প্রকাশ্যভাবে কেউ পাপাচরণ বা বিদআতে লিপ্ত হলে তার কথা বলা। যেমন প্রকাশ্যভাবে মদ্য পান করলে, লোকের ধন অন্যায়ভাবে আত্মসাৎ করলে, বলপূর্বক ট্যাক্স বা চাঁদা আদায় করলে, অন্যায়ভাবে যাকাত ইত্যাদি অসূল করলে, অন্যায় কাজের কর্তৃত্ব করলে, তার কেবল সেই প্রকাশ্য অন্যায়ের কথা উল্লেখ করা বৈধ। [যাতে তার অপ-নোদন সম্ভব হয়] পক্ষান্তরে তার অন্যান্য গোপন দোষ-ত্রুটি উল্লেখ করা বৈধ নয়। তবে যদি উল্লিখিত কারণসমূহের মধ্যে অন্য কোন কারণ থাকে, যেমন আমরা পূর্বে বর্ণনা করেছি, তাহলে তাও ব্যক্ত করা বৈধ হবে।

৬। প্রসিদ্ধ নাম ধরে পরিচয় দেওয়া। সুতরাং যখন কোন মানুষ কোন মন্দ খেতাব দ্বারা সুপরিচিত হয়ে যাবে; যেমন চোখ-ওঠা, খোঁড়া, কালা, অন্ধ, টেরা ইত্যাদি তখন সেই পরিচায়ক খেতাবগুলি উল্লেখ করা সিদ্ধ। তবে অবমাননা বা হেয় প্রতিপন্ন করার অভিপ্রায়ে সে সব উল্লেখ করা নিষিদ্ধ। পক্ষান্তরে উক্ত পদবী ছাড়া অন্য শব্দ বা নাম দ্বারা যদি পরিচয় দান সম্ভব হয়, তাহলে সেটাই সব চাইতে উত্তম।

এই হল ছয়টি কারণ, যার ভিত্তিতে গীবত করা বৈধ। আর এর অধিকাংশ সর্ববাদিসম্মত। সহীহ হাদিস থেকে এর বিভিন্ন দলীলও প্রসিদ্ধ। যার কিছু নিম্নরূপ:-

১/১৫৩৯। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, একটি লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট আসার অনুমতি চাইল। তিনি বললেন, ‘‘ওকে অনুমতি দাও। ও নিজ বংশের অত্যন্ত মন্দ ব্যক্তি।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]

এ হাদিস দ্বারা ইমাম বুখারী [রহঃ] ফ্যাসাদ সৃষ্টিকারী ও সন্দিগ্ধ ব্যক্তিদের গীবত করার বৈধতা প্রমাণ করেছেন।

[1] সহীহুল বুখারী ৬০৩২, ৬০৫৪, ৬১৩১, মুসলিম ২৫৯১, তিরমিযী ১৯৯৬, আবূ দাউদ ৪৭৯১, ৪৭৯২, আহমাদ ২৩৫৮৬, ২৩৯৮৪, ২৪২৭৭, ২৪৭২৬, ২৪৮৭৮, মুওয়াত্তা মালিক ১৬৭২ হাদিসের মানঃ সহিহ
________________________________________________

রিয়াযুস স্বা-লিহীন
হাদিস নম্বরঃ ১৫৪১
পরিচ্ছেদ ২৫৬ : যে সব কারণে গীবত বৈধ

৩/১৫৪১। ফাতেমাহ বিন্তে ক্বাইস রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হয়ে নিবেদন করলাম, ‘আবুল জাহাম ও মুয়াবিয়াহ আমাকে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছেন। [এ ক্ষেত্রে আমি কি করব?]’ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘মুআবিয়াহ তো গরীব মানুষ, তার নিকট মালধনই নেই। আর আবুল জাহম, সে তো নিজ কাঁধ হতে লাঠিই নামায় না।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]

মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে যে, ‘আবুল জাহাম তো স্ত্রীদেরকে অত্যন্ত মারধর করে।’ আর এই বর্ণনাটি ‘সে তো নিজ কাঁধ হতে লাঠিই নামায় না’--এর ব্যাখ্যা স্বরূপ। কারো মতে তার অর্থ, সে অধিকাংশ সময় সফরে থাকে।

[1] মুসলিম ১৪৮০, তিরমিযী ১১৩৫, ১১৮০, নাসায়ী ৩২২২, ৩২৩৭, ৩২৪৪, ৩২৪৫, ৩৪০৩, ৩৪০৪, ৩৪০৫, ৩৪১৮, ৩৫৪৫ ৩৫৪৯, ৩৫৫১, ৩৫৫২, আবূ দাউদ ২২৮৪, ২২৮৮, আহমাদ ২৬৫৬০, ২৬৭৭৫, ২৬৭৮৭, ২৬৭৯১, ২৬৭৯৩, ২৬৭৯৭, মুওয়াত্তা মালিক ১২৩৪, দারেমী ২১৭৭, ২২৭৪, ২২৭৫ হাদিসের মানঃ সহিহ
________________________________________________

গ্রন্থঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন
হাদিস নম্বরঃ ১৫৪৩
পরিচ্ছেদ ২৫৬ : যে সব কারণে গীবত বৈধ

৫/১৫৪৩। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবূ সুফয়ানের স্ত্রী হিন্দ্ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বললেন যে, ‘আবূ সুফয়ান একজন কৃপণ লোক। আমি তার সম্পদ থেকে [তার অজান্তে] যা কিছু নিই তা ছাড়া সে আমার ও আমার সন্তানকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খরচ দেয় না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমার ও তোমার সন্তানের প্রয়োজন মোতাবেক খরচ [তার অজান্তে] নিতে পার।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]

[1] সহীহুল বুখারী ২২১১, ২৪৬০, ৫৩৫৯, ৫৩৬৪, ৫৩৭০, ৬৬৪১, ৭১৬১, ৭১৮০, মুসলিম ১৭১৪, নাসায়ী ৫৪২০, আবূ দাউদ ৩৫৩২, ৩৫৩৩, ইবনু মাজাহ ২২৯৩, আহমাদ ২৩৫৯৭, ২৩৭১১, ২৫১৮৫, ২৫৩৬০, দারেমী ২২৫৯ হাদিসের মানঃ সহিহ
________________________________________________
গ্রন্থঃ রিয়াযুস স্বা-লিহীন   হাদিস নম্বরঃ ১৫৪২
পরিচ্ছেদ ২৫৬ : যে সব কারণে গীবত বৈধ

৪/১৫৪২। যায়েদ ইবনে আরক্বাম রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে এক সফরে বের হলাম, যাতে লোকেরা সাংঘাতিক কষ্ট পেয়েছিল। আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই [মুনাফিকদের সর্দার, স্ব-মতাবলম্বী লোকদেরকে সম্বোধন করে] বলল, ‘তোমরা আল্লাহর রাসূলের সঙ্গীদের জন্য ব্যয় করো না, যতক্ষণ না তারা সরে দাঁড়ায়।’ এবং সে আরও বলল, ‘আমরা মদিনায় ফিরে গেলে সেখান হতে সম্মানী অবশ্যই হীনকে বহিষ্কার করবে।’ [যায়েদ বলেন,] আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে তা জানিয়ে দিলাম। সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে ডেকে পাঠালেন।

আব্দুল্লাহ ইবনে উবাই [কিন্তু] বারবার শপথ করে বলল যে, সে তা বলেনি। লোকেরা বলল, ‘যায়েদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে মিথ্যা কথা বলেছে।’ [যায়েদ বলেন,] লোকদের কথা শুনে আমার মনে অত্যন্ত দুঃখ হল। অবশেষে আল্লাহ আমার কথার সত্যতায় সূরা ‘ইযা জা-আকাল মুনাফিক্বূন’ অবতীর্ণ করলেন। তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম [আল্লাহর নিকট] তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার উদ্দেশ্যে তাদেরকে ডাকলেন। কিন্তু তারা নিজেদের মাথা ফিরিয়ে নিল। (বুখারী ও মুসলিম) [1]

[1] সহীহুল বুখারী ৪৯০০, মুসলিম ২৭৭২, তিরমিযী ৩৩১২-৩৩১৪, আহমাদ ১৮৭৯৯, ১৮৮০৯, ১৮৮৪৬ হাদিসের মানঃ সহিহ
________________________________________________
ইসলামে বিরুদ্ধে গেলে তার প্রতি প্রতিবাদ করুন!

আহলে হাদিস নাম ধারনকারীদের নিকট কিছু প্রশ্ন


📢প্রথম কথা আহলে হাদিস শব্দটি আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো বলেননি একটি নির্দেশনাও নেই
________________________&
কেউ কেউ হাদিসের রেফারেন্স দেয় কোন এক তাবেয়ী বলেছে সে আহলে হাদিস আর তার হাদিসটির শেষে সহি লাগিয়ে এটা প্রমাণ করতে চায় যে তার কথা ঠিক, কি আজব তামা শা🤔


📢 দ্বিতীয় কথা আহলে হাদিস একটি দল
_________________________&
কেউ কেউ বলে এটি বৈশিষ্ট্য গত নাম কথা হচ্ছে আল্লাহ এত বৈশিষ্ট্যগত নাম দিয়েছে তা রেখে এই বৈশিষ্ট্যগত কেন এটি আল্লার বা তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দেয়াও নয়
কেউ কেউ বলে আহলে হাদিস এটি মানহাজ বা আকিদার নাম, তাহলে ইসলামি আকিদার নামটাই দিতে ভুলে গেলেন আল্লাহর রাসুল?
কেউ কেউ বলে আহলে হাদিস বলতে কুরআন হাদিসের আনুশারিদের বুঝায় ও ভাই কুরআন হাদিসে যেই নামটা এসেছে সেটি হল মুসলিম তাহলে কি মুসলিম নামটির চেয়ে আহলে হাদিস পরিচয়টি বেশি জরুরি?


📢 তৃতীয় কথা আহলে হাদিস পারিচয় না দিলে ক্ষতি কি?
_________________________&
আপনি যদি এই পরিচয়টি এ্যবাউট করেন এড়িয়ে যান তাহলে আপনি আহলে হাদিসের দলটির শত্রু কেউ কেউ এভাবে বলে আহলে হাদিসের বিরোধীতা তারাই করে যারা বেদাআতী ও ভাই যেই ব্যানারের মানহাজ,দলের নামটাই বেদায়াতী তারা এমন কথা বললে কেমনে হয়?

Monday, December 16, 2019

স্ত্রীর জন্য স্বামীর আনুগত্য করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ নাকি পিতামাতা?

স্ত্রীর জন্য কার আনুগত্য অগ্রগণ্য, স্বামী নাকি পিতা মাতা?

স্ত্রী যদি পিতা মাতা ও স্বামী উভয়ের আনুগত্য করতে সক্ষম হয় তাহলে তা খুবই উত্তম । কিন্তু যখন পিতা মাতা ও স্বামীর আনুগত্যের মধ্যে বিরোধ দেখা দিবে তখন স্ত্রী তার স্বামীর আনুগত্যকে প্রাধান্য দিবে । যদি তার স্বামীর কাজটি অন্যায় কাজ না হয়। কারন স্বামীই তার স্ত্রীর বাকি জীবনের অভিভাবক।
শরীয়তে পিতা মাতার আনুগত্যের জন্য সুস্পষ্ট নাছ আছে কিন্তু স্বামী ও পিতা মাতার আনুগত্যে বিরোধ হলে কি করতে হবে সে বিষয়ে কোন নাছ বা দলীল নেই ।
তবে ক্ষেত্রে উলামাগণ বলেন , যখন একজন মেয়ে তার পিতা মাতার অভিভাবকত্বে থাকবে অর্থাৎ বিয়ের আগ পর্যন্ত সে তার পিতা মাতার আনুগত্য করবে ।কিন্তু বিয়ের পরে সে তার স্বামীর দায়ীত্বে ও অভিভাবকত্বে থাকে। তাই স্বামীর আনুগত্য করাই তার উপরে আবশ্যক ।
কিন্তু এর অর্থ এইটা না , বিবাহের পরে পিতা মাতার হক অবহেলা করতে হবে, বরং তাদের হক তো সর্বদা বিয়ের আগে বা পরে । কিন্তু বিরোধের সময় স্বামীর আনুগত্যকেই তাকিদ দেওয়া হয়েছে ।

1. কোন মহিলা নিজ স্বামীর সমূহ অধিকার আদায় না করলে সে আল্লাহ্ তা‘আলার সমূহ অধিকার আদায় করেছে বলে ধর্তব্য হবে না।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন: ‘‘আমি যদি কাউকে আল্লাহ্ তা‘আলা ছাড়া অন্য কারোর জন্য সিজ্দাহ্ করতে আদেশ করতাম তা হলে মহিলাকে তাঁর স্বামীর জন্য সিজ্দাহ্ করতে আদেশ করতাম। কারণ, সে সত্তার কসম যাঁর হাতে আমার জীবন! কোন মহিলা নিজ প্রভুর সমূহ অধিকার আদায় করেছে বলে ধর্তব্য হবে না যতক্ষণ না সে তার স্বামীর সমূহ অধিকার আদায় করে। এমনকি কোন মহিলাকে তার স্বামী সহবাসের জন্য ডাকলে তাতে তার অস্বীকার করার কোন অধিকার নেই। যদিও সে তখন উটের পিঠে আরোহণ অবস্থায় থাকুক না কেন’’। (ইব্নু মাজাহ্ ১৮৮০; আহমাদ ৪/৩৮১ ইব্নু হিববান/ইহ্সান, হাদীস ৪১৫৯ বায়হাক্বী ৭/২৯২)
2.স্বামীর সন্তুষ্টিতেই স্ত্রীর জান্নাত এবং তার অসন্তুষ্টিতেই স্ত্রীর জাহান্নাম।
একদা জনৈকা সাহাবী মহিলা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তার স্বামীর কথা উল্লেখ করলে তিনি তাকে বলেন:
‘‘ভেবে দেখো তার সাথে তুমি কি ধরনের আচরণ করছো! কারণ, সেই তো তোমার জান্নাত এবং সেই তো তোমার জাহান্নাম’’।
(আহমাদ ৪/৩৪১ নাসায়ী/’ইশ্রাতুন্ নিসা’, হাদীস ৭৬, ৭৭, ৭৮, ৭৯, ৮০, ৮১, ৮২, ৮৩ ইব্নু আবী শাইবাহ্ ৪/৩০৪; হা’কিম ২/১৮৯ বায়হাক্বী ৭/২৯১)

3.কোন মহিলা তার স্বামীর অবদানসমূহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ না করলে আল্লাহ্ তা‘আলা তার প্রতি কখনো সন্তুষ্টির দৃষ্টিতে তাকাবেন না।
আব্দুল্লাহ্ বিন্ ’উমর (রাযিয়াল্লাহু আন্হুমা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:‘‘আল্লাহ্ তা‘আলা এমন মহিলার দিকে (সন্তুষ্টির দৃষ্টিতে) তাকান না যে নিজ স্বামীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না; অথচ সে তার স্বামীর প্রতি সর্বদাই মুখাপেক্ষিণী’’। (নাসায়ী/’ইশ্রাতুন্ নিসা’, হাদীস ২৪৯, ২৫০; হা’কিম ২/১৯০ বায়হাক্বী ৭/২৯৪ খতীব ৯/৪৪৮)
4.কোন মহিলা তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দিলে তার জান্নাতী অপরূপা সুন্দরী স্ত্রী তথা ’হূররা সে মহিলাকে তিরস্কার করতে থাকে।
মু‘আয বিন্ জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:.‘কোন মহিলা তার স্বামীকে দুনিয়াতে কষ্ট দিলে তার জান্নাতী অপরূপা সুন্দরী স্ত্রীরা বলে: তাকে কষ্ট দিও না। আল্লাহ্ তোমাকে ধ্বংস করুক! কারণ, সে তো তোমার কাছে কিছু দিনের জন্য। বেশি দেরি নয় যে, সে তোমাকে ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে’’। (ইব্নু মাজাহ্ ২০৪৪)
আল্লাহ্ তা‘আলা, তদীয় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং স্বামীর আনুগত্যহীনতার কারণেই অধিকাংশ মহিলারা জাহান্নামে যাবে।
’ইমরান বিন্ ’হুস্বাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন:‘‘আমি জান্নাতে উঁকি মেরে দেখতে পেলাম, জান্নাতীদের অধিকাংশই গরীব শ্রেণীর এবং জাহান্নামে উঁকি মেরে দেখতে পেলাম, জাহান্নামীদের অধিকাংশই মহিলা’’। (বুখারী ৩২৪১; মুসলিম ২৭৩৮)
আবূ সা’ঈদ্ খুদ্রী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন: একদা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন:
‘‘হে মহিলারা! তোমরা (বেশি বেশি) সাদাকা করো। কারণ, আমি তোমাদেরকেই জাহান্নামের অধিকাংশ অধিবাসী রূপে দেখেছি। মহিলারা বললো: কেন হে আল্লাহ্’র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: তোমরা বেশি লা’নত করে থাকো এবং স্বামীর কৃতজ্ঞতা আদায় করো না’’। (বুখারী ৩০৪; মুসলিম ৮০)
ইবনু কুদামা রহ বলেন, স্ত্রী তার স্বামীর অমুমতি ব্যতীত বাড়ি থেকে বের হতে পারবেনা খুবই জরুরী কাজ ছাড়া, হোক সেটি তার পিতা মাতাকে দেখতে যাওয়া ,বা তাদের সেবা করা বা তাদের কারো জানাজাতে উপস্থিত হওয়া (অর্থাত এগুলো জরুরী কাজের মধ্যে না)

ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল রহ বলেছেন, স্ত্রীর মা আসুস্থ এমন অবস্থাতে তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া তার মায়ের সেবা করতে পারবেনা, স্বামীর আনুগত্য করাটাই তার জন্য বেশি অাবশ্যক ( মুগনী)

তিনি আরো বলেন, স্বামীর সাথে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে এমন অবস্থাতে পিতামাতার আনুগত্য করা আবশ্যক না, বরং তার স্বামীর আনুগত্য করাটাই অধিক আবশ্যক, (ইনছাফ)

ইবনু হাজার হায়ছামী রহ বলেন,
জরুরী কারনে স্বামী ছাড়া বের হওয়া জায়েজের আলোচনা করার পরে,

সে বের হতে পারবেনা কোন অসুস্থ কে সেবা করার জন্য যদিও তার পিতা মাতা হয় , বা তার মৃত্যুতে উপস্থিত হওয়া ,বা তাদের জানাজাতে উপস্থিত (আল ফাতাওয়াতুল ফিকহিয়্যাতুল কুবরা)

শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যা রহ বলেন,
যখন কোন মেয়ের বিবাহ হয়ে যায় তখন তার স্বামীই তার জন্য বড় অভিভাবক পিতামাতার চেয়ে ,এবং তার স্বামীর আনুগত্য করাটাই তার জন্য বেশি আবশ্যক, এবং তিনি আরে বলেন,
স্বামীর অনুমতি ছাড়া সে তার বাড়ি থেকে বের হতে পারবেনা সেটা পিতামাতা বা অন্য কোন বিষয়ে হোক না কেন..এ বিষয়ে ইমামগণ একমত আছেন,
(মাজমাউল ফাতাওয়া)

Wednesday, December 4, 2019

একাধারে ৪০ দিন ৪০ বার করে 'আল আওয়াল' যিকির করলে সন্তান লাভের আশা পূরণ হয় & রোগ-ব্যাধির জন্য ৪১ বার সুরা ফাতিহা পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে তা পান করা -এগুলো কি সঠিক?

সন্তান লাভের উদ্দেশ্যে ৪০ দিন আল্লাহ আআলার 'আল আওয়াল' নাম যপা এবং রোগ-ব্যাধির জন্য ৪১ বার সুরা ফাতিহা পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে তা পান করার বিধান
▬▬▬◄❖►▬▬▬
প্রশ্ন: একাধারে ৪০ দিন ৪০ বার করে মহান আল্লাহর নাম 'আল আওয়াল' যিকির করলে সন্তান লাভের আশা পূরণ হয় এবং ৪১ বার সূরা ফাতিহা পাঠ করে পানিতে ফুঁ দিয়ে পান করলে রোগ-ব্যাধি ভালো হয়--এটা কি সঠিক?

উত্তর:

🔰 "একাধারে ৪০ দিন ৪০ বার করে 'আল আওয়াল' পাঠ করলে সন্তান লাভের আশা পূর্ণ হয়"--আমাদের জানামতে এ মর্মে কোন হাদিস বর্ণিত হয় নি। সুতরাং হাদিস ছাড়া এমন কথা গ্রহণযোগ্য নয়।

তবে সন্তান লাভের জন্য প্রয়োজনীয় ডাক্তারের পরামর্শ নেয়ার পাশাপাশি বেশি পরিমাণে ইস্তিগফার করা যেতে পারে এবং আল্লাহর নিকট আশা পূরণের জন্য দুআ করা করতে হবে। তাহলে আল্লাহ যদি ইচ্ছে করেন তাহলে অবশ্যই তিনি মনের বাসনা পূর্ণ করবেন।

🔰 অনুরূপভাবে "৪১ বার সূরা ফাতিহা পড়ে পানিতে ফুঁ দিয়ে পান করলে রোগ-ব্যাধি ভালো হয়" এ মর্মেও কোন হাদিস আছে বলে জানা নাই।
তবে সাধারণভাবে রোগীর গায়ে সুরা ফাতিহা, ইখলাস, ফালাক, নাস ও হাদিসে বর্ণিত দুআ পড়ে ফুঁ দেয়ার মাধ্যমে চিকিৎসা করা হাদিস দ্বারা সু প্রমাণিত।
কিন্তু আমাদের জানামতে কুরআন-সুন্নায় এক চল্লিশ বার সূরা ফাতিহা পড়ার কথা আসে নি। এ নির্দিষ্ট সংখ্যায় যদি কোনও ফায়দা থাকত তাহলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অবশ্যই তার উম্মতকে নির্দেশনা দিয়ে যেতেন-যেমনটি বিভিন্ন ক্ষেত্রে যিকিরের সংখ্যা নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
কথিত বুযুর্গ ও পীর-ফকিরের অভিজ্ঞতার আলোকেও যিকির বা রুকিয়ার জন্য সূরা বা দুআর সংখ্যা নির্দিষ্ট করা বৈধ নয়। হাদিসে যা অনির্দিষ্ট রাখা হয়েছে তা দলীল বহির্ভূতভাবে নির্দিষ্ট করার সুযোগ নাই। অন্যথায় তা বিদআত হিসেবে পরিগণিত হবে।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।

Monday, December 2, 2019

"মানুষ দুনিয়াতে যাকে ভালবাসত কিয়ামতের দিন সে তার সাথেই থাকবে" এর ব্যাখ্যা কি?

"মানুষ দুনিয়াতে যাকে ভালবাসত কিয়ামতের দিন সে তার সাথেই থাকবে",,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
▬▬▬▬●◈●▬▬▬▬
∆প্রশ্ন: "হাদিসে বর্ণিত হয়েছে,,,“মানুষ তার সাথেই থাকবে যাকে সে ভালোবাসে,,,” কুরআন-হাদিসের আলোকে এ হাদিসটির ব্যাখ্যা জানতে চাই"।।
.
∆উত্তর:
" প্রথমে আমরা এ সংক্রান্ত হাদিসগুলো এবং এ প্রসঙ্গে সাহাবীদের অনুভূতি সম্পর্কে জানব। তারপর এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মনিষীদের বক্তব্য দেখব ইনশাআল্লাহ। তাহলে আশা করি,,,হাদীসটির মর্মার্থটি আমাদের নিকট স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আল্লাহ সাহায্যকারী।
.
▪️ "হাদিসটির: আনাস ইবনে মালিক (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,,,আমি ও রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ে মসজিদে নববী হতে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় মসজিদের দরজায় এক লোকের সাথে সাক্ষাৎ হল।
সে বলল: “হে আল্লাহর রসূল,,,কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে.....??
"রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: "‏ مَا أَعْدَدْتَ لَهَا“তুমি কিয়ামাতের জন্যে কী প্রস্তুত করেছো...??
"আনাস রা. বলেন: তখন লোকটি যেন (এত বড় প্রশ্ন শুনে) ভয়ে পেয়ে নরম হয়ে গেল। তারপর বলল: “হে আল্লাহর রসূল..! আমি তো কিয়ামতের জন্য বেশি পরিমাণ সলাত,,,সিয়াম ও দান-সদকা সংগ্রহ করি নি তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি।”
"রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ “তুমি তার সাথেই থাকবে যাকে তুমি ভালবেসেছ।”
[সহীহ মুসলিম, হা/6608, অধ্যায়: সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার (كتاب البر والصلة والآداب) পরিচ্ছদ: যাকে যে মানুষ ভালবাসে সে তার সাথেই থাকবে- হাদিস একাডেমী]
.
▪️"আরেকটি হাদী: আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন:
، جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ كَيْفَ تَرَى فِي رَجُلٍ أَحَبَّ قَوْمًا وَلَمَّا يَلْحَقْ بِهِمْ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ "‏ الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ ‏"‏
“জনৈক ব্যক্তি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল: হে আল্লাহর রাসূল,,,“সে ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কী মনে করেন, যে একটি কউম বা জাতিকে ভালবাসে অথচ সে তাদের সাথে সম্পৃক্ত হয় নি....??
"রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন: الْمَرْءُ مَعَ مَنْ أَحَبَّ “মানুষ তার সাথেই থাকবে যাকে সে ভালোবাসে।”
[সহীহ মুসলিম, হা/৬৪৭৭, অধ্যায়: সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা ও শিষ্টাচার (كتاب البر والصلة والآداب) পরিচ্ছদ: মানুষ তার সাথেই থাকবে যাকে সে ভালোবাসে- হাদিস একাডেমী]
.
▪️" আনাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন:
: فَمَا فَرِحْنَا بِشَيْءٍ ، فَرَحَنَا بِقَوْلِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : أَنْتَ مَعَ مَنْ أَحْبَبْتَ
" فَأَنَا أُحِبُّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَأَبَا بَكْرٍ، وَعُمَرَ، وَأَرْجُو أَنْ أَكُونَ مَعَهُمْ بِحُبِّي إِيَّاهُمْ ، وَإِنْ لَمْ أَعْمَلْ بِمِثْلِ أَعْمَالِهِمْ "
"এই হাদিসটি শুনে এত বেশি বেশি আনন্দিত হয়েছি যে,,,আর কোন কিছুতে এত আনন্দিত হই নি। কারণ আমি নবী সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম,,,আবু বকর রা. এবং ওমর রা. কে ভালবাসি। সুতরাং আমি আশা করি,,,তাদেরকে আমার ভালোবাসার কারণে কেয়ামতের দিন তাদের সাথেই থাকব যদিও আমি তাদের মত আমল করিনি।”
.
▪️" ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন,,,,“মানুষ তার প্রিয়জনের কাছে থাকার বিষয়টি স্বভাবজাত প্রবণতা; এর ব্যতিক্রম হয় না।” (মজুম ফতোয়া)
.
▪️" ইবনুল কাইয়েম রহঃ. বলেন: “প্রত্যেক ব্যক্তিকে কর্মগতভাবে তার সমগোত্রীয় ব্যক্তির সাথে মিলিত করা হবে। সুতরাং যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে একে অপরকে ভালবাসত তারা একসাথে জান্নাতে থাকবে আর যারা শয়তানের অনুসরণে একে অপরকে ভালবাসত তারা দুজন একসাথে জাহান্নামে থাকবে। সুতরাং মানুষ ইচ্ছা করুক অথবা না করুন তাকে তার সাথেই রাখা হবে যাকে সে ভালবাসত।”
(যাদুল মাআদ ৪/২৪৮)
.
▪️"মোটকথা,,,কেউ যদি সৎ-পরহেজগার ও দ্বীনদার-আল্লাহ ওয়ালা লোকদেরকে কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালোবাসে তাহলে সে তাদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে সৎকর্ম করবে,,, পাপাচার থেকে দূরে থাকবে এবং তার প্রতিদান হিসেবে সে জান্নাতবাসী হবে এবং দুনিয়াতে যাদেরকে আল্লাহর জন্য ভালবাসত সে সে তাদের সাথেই অবস্থান করবে। পক্ষান্তরে কেউ যদি কাফের- মুশরিক,,,শয়তানের অনুসারী ও পাপাচারী লোকদেরকে ভালোবাসে তাহলে সে স্বভাবতই তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে পাপ ও অন্যায়-অপকর্ম করবে এবং তার প্রাপ্য হিসেবে কেয়ামতের দিন তাদের সাথে জাহান্নামে অবস্থান করবে। আল্লাহ আমাদেরকে হেফাজত করুন। আমীন।।।
.
▬▬▬✪✪✪▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব৷

Sunday, December 1, 2019

শিফা বা রোগ মুক্তির সূরা গুলো কি কি?

*শিফা (রোগমুক্তি) এর সূরাগুলো কী কী?*
➖➖➖➖➖➖
প্রশ্ন: কুরআনকে তো শিফা বলা হয়। তাহলে কোন কোন আয়াত শিফার জন্য তা কি নির্দিষ্ট আছে? আর মানসিক সমস্যার জন্য নাকি ইয়াসীন সুরা পড়তে হয়- এটা কি সহিহ?

উত্তর:
কুরআনের মধ্যে অবশ্যই রোগমুক্তি রয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَنُنَزِّلُ مِنَ الْقُرْآنِ مَا هُوَ شِفَاءٌ وَرَحْمَةٌ لِّلْمُؤْمِنِينَ ۙ
 “আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত।” (সূরা আলে ইসরা/বনী  ইসরাঈল: ৮২)
 তাই মানুষের বিভিন্ন ধরণের রোগ-ব্যাধী, মানসিক সমস্যা, দুশ্চিন্তা, যাদু-টোনা, জিন আক্রমন ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যার জন্য কুরআনের আয়াত পড়ে ফুঁ দিলে সমস্যার সমাধান হয়। এটি সুপ্রমাণিত ও পরীক্ষিত।
তবে কুরআনের নির্দিষ্ট কোন আয়াত বা সূরাকে আয়াতুশ শিফা বলতে হলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর হাদীস থেকে তার পক্ষে প্রমাণ থাকতে হবে। দলীল ছাড়া বিশেষ কোন আয়াতকে শিফার আয়াত মনে করে ঝাড়ফুঁক করা বৈধ হবে না।
হাদীস দ্বারা ছয়টি সূরা রুকিয়া (ঝাড়ফুঁক) এবং রোগ মুক্তির সূরা হিসেবে সুপ্রমাণিত। সেগুলো হল:
১) সূরা ফাতিহা
২) আয়াতুল কুরসী (সূরা বাকারার ২৫৫ নং আয়াত)
৩) সূরা বাকারর শেষ দুটি আয়াত।
৪) সূরাতুল ইখলাস
৫) সূরাতুল ফালাক
৬) সূরাতুন নাস।
উৎস: kalemtayeb ওয়েব সাইট)

মানসিক সমস্যার জন্য ইয়াসীন সুরা পড়ার কথা আমার জানা মতে সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত নয়। আল্লাহ্ আলাম।

✒✒✒✒✒
*উত্তর প্রদানে:*
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল,সৌদি আরব

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...