Thursday, May 9, 2019

৮ রাকাত তারাবীহর অকাট্য প্রমান


৮ রাকাত তারাবীহর অকাট্য প্রমান:

----------------------------------------------------------
حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ، قَالَ حَدَّثَنِي مَالِكٌ، عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّهُ سَأَلَ عَائِشَةَ ـ رضى الله عنها ـ كَيْفَ كَانَتْ صَلاَةُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي رَمَضَانَ فَقَالَتْ مَا كَانَ يَزِيدُ فِي رَمَضَانَ، وَلاَ فِي غَيْرِهَا عَلَى إِحْدَى عَشْرَةَ رَكْعَةً، يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ تَسَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي أَرْبَعًا فَلاَ تَسَلْ عَنْ حُسْنِهِنَّ وَطُولِهِنَّ، ثُمَّ يُصَلِّي ثَلاَثًا‏.‏ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَتَنَامُ قَبْلَ أَنْ تُوتِرَ قَالَ ‏ "‏ يَا عَائِشَةُ إِنَّ عَيْنَىَّ تَنَامَانِ وَلاَ يَنَامُ قَلْبِي ‏"‏‏.‏
আবূ সালামা ইবনু ‘আবদুর রাহমান (রহঃ)
তিনি ‘আয়িশা (রাঃ)-কে জিজ্ঞেস করেন যে, রমযানে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) –এর সালাত কিরূপ ছিল? তিনি বললেন, রমযান মাসে ও রমযানে ব্যতীত অন্য সময়ে (রাতে) তিনি এগার রাক’আত হতে বৃদ্ধি করতেন না। তিনি প্রথমে (২+২) চার রাক’আত সালাত আদায় করতেন, তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। অতঃপর তিনি (২+২) চার রাক’আত পড়েন। তুমি তার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করো না। এরপর তিন রাক’আত সালাত আদায় করতেন। আমি (‘আয়িশা রাঃ) বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আপনি বিতর আদায়ের আগে ঘুমিয়ে যাবেন? তিনি বললেনঃ হে ‘আয়িশা! আমার দু’চোখ ঘুমায় বটে কিন্তু আমার কাল্‌ব নিদ্রাভিভূত হয়না।(সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২০১৩)
*
উক্ত হাদীসের আলোচনা :
-------------------------------------------
হাদীসটি প্রায় সকল হাদীস গ্রন্থেই বর্নিত হয়েছে । এর বিশুদ্ধতা সম্পর্কে আলোচনার প্রশ্নই উঠে না ।
*
কারন ইমাম বুখারী ও মুসলিম স্ব স্ব সহীহ গ্রন্থে এটি বর্ননা করেছেন ।
*
বিশেষ করে ইমাম বুখারী (র:) হাদীসটি ‘তারাবীহর সালাত’ অধ্যায়ে বর্ননা করেছেন । (সহীহ বুখারী হা/২০১৩)
*
তিনি ‘তাহাজ্জুদ’ অধ্যায়ে রমাযান ও অন্য মাসে রাসূল (স:) এর রাত্রির সালাত অনুচ্ছেদেও হাদীসটি উল্লেখ করেছেন । (সহীহ বুখারী হা/১১৪৭)
*
এছাড়াও ইমাম বুখারী (র:) অন্য আরেকটি অধ্যায়ে হাদীসটি বর্ননা করেছেন । (সহীহ বুখারী হা/৩৫৬৯)
*
*
উল্লেখ্য যে ইমাম বুখারী উক্ত শিরোনাম উল্লেখ করলেও ভারত উপমহাদেশের ছাপা সহীহ বুখারী থেকে তা বাদ দেয়া হয়েছে । কারন হল --
*
প্রথমত :
--------------
মুসলিম সমাজে মিথ্যাচার করা হয় যে, ‘আয়েশা (রা:) এর উক্ত হাদীসে তাহাজ্জুদের কথা বলা হয়েছে’, ‘তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ পৃথক সালাত’, ‘তারাবীহ ২০ রাকআত আর তাহাজ্জুদ ১১ রাকআত’ ইত্যাদি ইত্যাদি ।
*
কিন্তু ইমাম বুখারীর শিরোনামের মাধ্যমে উক্ত দাবীগুলো মিথ্যা প্রমানিত হয়েছে ।
*
দ্বিতীয়ত :
---------------
সহীহ বুখারী পাঠদান ও পাঠগ্রহনকারী লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-ছাত্র ও ওলামায়ে কেরামকে ধোকা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে ।
*
কারন ইমাম বুখারীর বিষয়টি যখন তারা বুঝতে পারবেন তখন তাদের নিকট বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে যে, তারাবীহর সালাত ৮ রাকআত ২০ রাকআত নয় ।
*
তাই এই ন্যক্কারজনক কৌশল গ্রহন করা হয়েছে ।
*
আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি ছলচাতুরি করে ইসলামী শরীয়তকে কখনো গোপন রাখা যায়না ।
*
ছহীহ বুখারী শুধু উপমহাদেশেই ছাপা হয় না; বরং বিশ্বের বহু দেশে মহান আল্লাহ তার ছাপানোর ব্যবস্থা করে রেখেছেন ।
*
তাই সিরিয়া, মিশর, কুয়েত, লেবানন, সৌদি আরব সহ অন্যান্য দেশে সহীহ বুখারী যত বার ছাপানো হয়েছে সেখানেই উক্ত শিরোনাম বহাল রয়েছে, তা পরাতন হোক আর নতুন হোক ।
*
আফসোস হক্ব গোপন করার এই কৌশলী ব্যবসা আর কতদিন চলবে ?
*
এই ধান্দাবাজি আর চলতে দেয়া যায়না ।
*
এখনই সময় এসেছে এ ধরনের কুটকৌশলের বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে সাধারন মুসলমানদের সচেতন করার ।
*
সহীহ বুখারীর উক্ত হাদীস থেকে স্পষ্টভাবে প্রমানিত হয় যে, রমাযান মাসে হোক আর অন্য মাসে হোক রাসূল (স:) রাত্রির সালাত ১১ রাকআতের বেশি পড়তেন না ।
*
যার মধ্যে ৮ রাকআত তারাবীহ বা তাহাজ্জুদ এবং তিন রাকআত বিতর ।
*
আরো প্রমানিত হল যে, তারাবীহ ও তাহাজ্জুদ একই সালাত ভিন্ন কোন সালাত নয় ।
*
দ্বর্থহীন কন্ঠে বলা যায় যে , রাসূল (স:) এর রাত্রির সালাত অর্থাত তারাবীহ ও তাহাজ্জুদের রাকআত সংখ্যার ব্যপারে এর চেয়ে অধিক বিশুদ্ধ হাদীস পৃথিবীতে আর নেই ।
*
এছাড়া আবু সালামা আয়েশা (রা:) কে রাসূল (স:) এর রমাযান মাসের রাত্রির সালাত সম্পর্কেই জিজ্ঞেস করেছিলেন । আর তারই জবাবে তিনি ১১ রাকআতের কথা উল্লেখ করেন ।
*
আরো স্পষ্ট হয় যে, হাদীসটি বর্ননা করেছেন মা আয়েশা (রা:) । আর রাসূল (স:) এর রাত্রিকালিন অবস্থা সম্পর্কে অন্যান্যদের চেয়ে মা আয়েশা (রা:) - ই সবচেয়ে বেশি জানবেন ।
*
যেমনটি ইবনে হাজার আসকালীন (র:) উক্ত হাদীসের আলোচনায় বলেন, ‘রাসূল (স:) এর রাত্রিকালীন অবস্থা সম্পর্কে অন্যদের চেয়ে মা আয়েশা (রা:)-ই বেশি জানবেন এটাই স্বাভাবিক’ ।(ফাৎহুল বারী শারহু সহীহিল বুখারী ৪র্থ খন্ড, হা/২০১৩)
*
অতএব দ্বীনের প্রকৃত অনুসারীদের জন্য এই একটি হাদীসই যথেষ্ট ।

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...