Tuesday, May 21, 2019

মৃতদাহ_vs_মৃতসমাধি:

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব।প্রতিটি মানুষই সমাজের একেকটি উপাদান।সমাজের মানুষের আচার-আচরণ,কৃষ্টি-কালচার,লেনদেন,ধ্যান-ধারণা,বিশ্বাস ইত্যাদি সমাজবদ্ধ জীব মানুষের সভ্যতা-সংস্কৃতির আওতায় পড়ে।যদি হাজার বছর পেছনে ঘুরে তাকায় অনেক ধরণের সভ্যতা আমাদের চোখে ধরা দেবে।উদাহরণ হিশেবে বলতে পারেন ,ব্যাবেলিনীয় সভ্যতা,প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতা,প্রাচীন গ্রীক সভ্যতা,পম্পেই সভ্যতা,মায়ান সভ্যতা ইত্যাদি।এ সকল সভ্যতাগুলো কালের গর্ভে অতল তলে তলিয়ে গেছে যা পুনরায় ফিরে আসার কোনো জো নেই।এর বিপরীতে ইসলামি সভ্যতা তথা ইসলামি আক্বিদা বা বিশ্বাসমালা থেকে উৎসারিত সভ্যতা যা কিনা মানব সৃষ্টির আদিকাল থেকে আজ পর্যন্ত আপন কক্ষপথে বিরাজমান।আর ইসলামি সভ্যতার এ স্বকীয়তা বা ধ্রুবকতার একমাত্র কারণ ঐশি সাহায্য বা মদদ(unseen succor)।
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগতে পারে,Hinduism কেন আজ পর্যন্ত টিকে আছে?টিকে আছে কেবল অশিক্ষিত এবং কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজে,শিক্ষিত সমাজের কাছে তা অনেক আগেই পরিত্যায্যে প্রতিপন্ন হয়েছে।
 আসুন ইসলাম ও হিন্দুধর্মের আলোকে মানবজীবনের কোনো একটি সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করি,দেখা যাক কোন সমীকরণ মানবকল্যাণে সিদ্ধ হয়।তার আগে একটি কথা ভালভাবে জেনে রাখুন যেহেতু আলোচনা কোনো একটি ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত করতে পারে তাই আপনি এ বিষয়টি সাইবার ক্রাইম হিশেবে চিহ্নিত করতে পারেন।এ সংশয় আগে নিরসন করা দরকার।
 বর্তমান যুগ ইলেক্ট্রনিক্সের যুগ।এই আধুনিক যুগে আদিকালের কুসংস্কারগুলো মানুষের চোখে নিমেষেই ধরা পড়ে।তাই বলে আপনি কি বিজ্ঞান মনস্কতা ছেড়ে দিয়ে কুসংস্কারের পথ বেছে নেবেন?একটি কুসংস্কারকে প্রতিষ্ঠা করতে বিজ্ঞানকে না করবেন?যদি করেন তাহলে তা হবে আপনার মূর্খতার বহি:প্রকাশ।তাই আলোচনাটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার জন্যে নয়;বরং কুসংস্কার ও মিথ্যার বেড়াজাল থেকে বের হয়ে আসার জন্য।
 যাই হোক,আলোচনার করতে চাচ্ছিলাম মানবজীবনের একটি সমস্যা সমাধানে কোন ধর্ম কতটুকু ভূমিকা রাখে সে বিষয় নিয়ে।মৃতব্যক্তির লাশের ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করা যাক।
 প্রথমেই হিন্দুধর্মের দিকে।আমাদের সমাজ হিন্দুমুসলিমের সংমিশ্রণে গঠিত বিধায় আমাদের সকলের কমবেশি জানা আছে,কোনো হিন্দু মারা গেলে তাকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়।আমাদের মানবদেহ হলো একটি রসায়নের ল্যাবরেটরি যেখানে রয়েছে ২৬প্রকারের বিভিন্ন ধরণের মৌল।এগুলোর সংমিশ্রণে প্রতিনিয়ত আমাদের দেহে ঘটে চলেছে বিভিন্ন ধরণের ক্রিয়া- প্রতিক্রিয়া।যখন মানুষের দেহ জ্বালানো হয় তখন সালফার,নাইট্রোজেন বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন করে ।উৎপন্ন সালফার ডাই অক্সাইড ও নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড বৃষ্টির পানির সাথে বিক্রিয়া করে নাইট্রিক এসিড ও সালফিউরিক এসিড উৎপন্ন করে যা এসিড বৃষ্টি হয়ে পৃথিবীর বুকে এসে নদীনালা,ফসলের ক্ষেত,দালানকোঠার চরম ক্ষতিসাধন করে।এ আবার কেমন ধর্ম যা মানুষের উপর কল্যাণের পরিবর্তে অকল্যাণের বাদল নিয়ে আসে?তাদের এতগুলো দেবদেবী মিলে একটু ভাল কিছুর ব্যবস্থা করতে পারে নি যাতে সেটা মৃতব্যক্তির জন্যও কল্যাণকর এবং বাকি জীবিতদের জন্যও কল্যাণকর ?করবে কি করে তারা তো নিজেদের ভাল খারাপেরও মালিক না ,অপরেরর ভাল খারাপ তো দূরের কথা।
 পক্ষান্তরে ইসলামি রীতি অনুসারে ,মৃতদাহের পরিবর্তে মৃতসমাধির প্রচলন রয়েছে।এতে যেমন মৃতব্যক্তির যেমন সম্মানের অবমাননা হয় না বাকি জীবিত প্রণীদের আর কষ্ট পোহাতে হয় না;বরং এ সকল মৃতদেহগুলো অনেক বছর ধরে তাপ ও চাপের প্রভাবে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসে পরিণত হয় ।পেট্রোলিয়াম থেকে উৎপন্ন হয় পেট্রোলিয়াম গ্যাস,গ্যাসোলিন,ন্যাপথা,কেরোসিন,ডিজেল ,লুব্রিকেন্ট,প্যারাফিন মোম,পিচ,জ্বালানি তেল ওবিটুমিন ইত্যাদি।প্রাকৃতিক গ্যাসের মধ্যে ৮০% মিথেন,৭% ইথেন,৪% বিউটেন ও আইসোবিউটেন এবং ৩% পেন্টেন।এসবের কোনো টি waste product নয়।সবকিছুই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে একাকার হয়ে গেছে।এসব জ্বালনীর বদৌলতে আমাদের সভ্যতা আজ আকাশ ছুঁই ছুঁই।এই প্রভূত কল্যাণের মূল চাবিকাঠি মানুষের হাতে আদৌ ছিল না এবং থাকবে না যদি না সেখানে ঐশি শক্তি না থাকে।আল্লাহ আমাকে -আপনাকে-সকলকে বোঝার তৌফিক দিক।।।
 আমিন

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...