Tuesday, May 21, 2019

বিজ্ঞানসম্মত উপবাস ও সিয়াম

বিজ্ঞানসম্মত উপবাস বনাম রোজা              --------------------------------------
প্রকৃতির কতগুলি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে ।  সুতরাং আমাদের দেহ পরিচালিত হচ্ছে দেহের নিজস্ব নিয়মে । আল্লাহ , ভগবান , ঈশ্বর , গড  ইত্যাদি যাহাই বলি না কেন , তাদের প্রবর্তিত নিয়ম গুলো যদি আমাদের দেহের নিয়মের সাথে সাংঘর্ষিক হয় তবে তা দেহের জন্য ক্ষতিকারক হবে ।
উপবাস এর প্রয়োজনীয়তা  :                                                       মানুষের দেহ যখন নানাবিধ  রোগে  আক্রান্ত হয় তখন এই সকল দূষিত পদার্থ ধ্বংশ করার একটি একটি উত্তম পন্থা হচ্ছে উপবাস । এই পদ্ধতি প্রাচীন কাল থেকে চলে আসছে ।
আধুনিক বিজ্ঞানের মতে এবং আয়ুর্বেদীয় শাস্ত্র মতে আমাদের দেহের বিপাকীয় ক্রিয়া কখনোই বন্ধ থাকে না কারণ প্রয়োজনীয় পুষ্টি ব্যতীত দেহের কোষ গুলো জীবন্ত থাকতে পারে না ।
প্রথমত :  আমাদের অনেকের দেহের নানা স্থানে সবসময়ই কিছু সঞ্চিত পুষ্টি থাকে এবং তা হলো দেহের চর্বি । তাই যখন পুষ্টি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন কোষগুলো এই সঞ্চিত চর্বি খেতে শুরু করে । দেহের চর্বি দুই প্রকার , একটি হলো Good কোলেস্টরেল  এবং অন্যটি হইল Bad কোলেস্টেরল ।  Bad কোলেস্টরেল নানাবিধ দূষিত পদার্থ সঞ্চিত থাকে যাহা দেহের নানাবিধ ক্ষতিসাধন করে থাকে ।                      দ্বিতীয়ত :         আমাদের দেহের প্রতিটি কোষের মধ্যে রয়েছে একটি করে বিদ্যুৎ কেন্দ্র । কোষ থেকে উৎপন্ন এই বিদ্যুৎ দ্বারা আমাদের দেহ পরিচালিত হয় ।  এই বিদ্যুৎকে দেহের প্রাণ শক্তি ও বলা যেতে পারে । আমাদের কোষ সমূহ  কিছু প্রয়োজনীয় পদার্থের পাশাপাশি  কিছু দূষিত পদার্থ সমূহ সঞ্চিত করে রাখে । দীর্ঘ  সময়ব্যাপিয়া এই প্রক্রীয়া চলার ফলে দূষণের  মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে  কোষগুলো বিভিন্ন রোগ ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে পড়ে ।
কিন্তু যখন পুষ্টি সরবরাহে ঘাটতি পড়ে যায় তখন কোষ সমূহের প্রধান খাদ্য হয়ে পড়ে  দেহের সঞ্চিত চর্বি এবং কোষ এর মধ্যকার নানাবিধ দূষিত পদার্থ সমূহ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি রূপে ব্যবহৃত হইতে থাকে । তাই সাধারণত দেহের দূষণের মাথার উপর নির্ভর করে নির্ধারিত হবে একজন ব্যক্তি কত সময় উপবাস থাকবেন ।সাধারণত সর্বনিম্ন একদিন থেকে সর্বোচ্চ 7 দিন পর্যন্ত উপবাস করা যেতে পারে ।
  উপবাস করার পদ্ধতি
আমাদের দেহ প্রচারিত হবে তার নিজস্ব নিয়মে ।
 প্রতিটি যন্ত্রের একটি সহ্য করার নির্দিষ্ট ক্ষমতা রয়েছে এবং কেবলমাত্র নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ইহা বৃদ্ধি করা সম্ভব হয় । 
 প্রথমত  উপবাস করতে হলে প্রথমে দেহকে প্রথমে উপবাস করার উপযোগী করতে হবে । যদি দুই দিনের জন্য উপবাস করা হয় তবে দুইদিন পূর্ব হতেই তাকে বিভিন্ন প্রকার হালকা খাবার খেয়ে দেহকে উপবাস করার উপযোগী করে তুলতে হবে ।
এরপর উপবাস শুরু করতে হবে । এই সময় রক্তে দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাবে , জিব্বাহ দূষিত পদার্থ জমা হবে এবং তাই  শ্বাস-প্রশ্বাসে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হবে । ফলে দেহকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হলে প্রচুর পানির প্রয়োজন পড়ে এবং তাই প্রতি ঘন্টায় এক গ্লাস করে লেবু  মিশ্রিত পানি পান করতে হবে । দ্বিতীয়তঃ পানির স্বল্পতার কারণে হাড়ের বিভিন্ন জয়েন্ট সমূহে সমস্যা হতে পারে ।  কারণ আমাদের হাড়ের জয়েন্ট গুলোতে  যে লুব্রিকেটিং সিস্টেম রয়েছে সেখানে পানি প্রয়োজন হয় । তৃতীয়তঃ পানির অভাবে পরিপাকতন্ত্রের ক্ষতিসাধন হবার সম্ভাবনা থাকে ।
চতুর্থত  যেহেতু দেহের বিপাকীয় ক্রিয়া বন্ধ হয় না তাই বিপাকীয় ক্রিয়া চালু রাখতে হলে প্রচুর পানির প্রয়োজন পড়ে
উপবাস ভাঙার পদ্ধতি :
উপবাস কালীন সময়ে দেহের পরিপাকতন্ত্রের ক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকে । তাই যন্ত্রটি হঠাৎ করে পূর্বের ন্যায় কর্মক্ষম হতে পারে না । তাকে কিছুটা সময় দিতে হয় । তাই উপবাস সামান্য কিছু ফলমূল এবং তরল জাতীয় খাবার দিয়ে ভাঙতে  হয় এবং পর্যায়ক্রমে ধাপে ধাপে স্বাভাবিক অবস্থানে ফেরত যেতে হয়। যদি তিন দিনের জন্য উপবাস করা হয় তবে পরিপাকতন্ত্রকে পূর্বের অবস্থানে ফেরত যেতে তিন দিন সময় দিতে হবে । অন্যথায় যন্ত্রটির ক্ষতি হবার সম্ভাবনা থাকে । হয়তো তা আমরা বুঝতে পারি না ।
রোজা
ইহা চৌদ্দশ সাল পুরানো একটি পদ্ধতি যাহা উপবাসের সাথে তুলনা করলেই বুঝা যায় এটি কত অনুপোযোগী একটি পদ্ধতি । উপরন্ত এই পদ্ধতিটি জনগণের কল্যাণকর দিক বিবেচনার চেয়ে সামরিক প্রশিক্ষণের দিকটিকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল । টানা এক মাস কেবলমাত্র সামরিক প্রশিক্ষণ হতে পারে কিন্তু কোন উপবাস হতে পারে না । তাই রোজা রাখার প্রাচীন সেই পদ্ধতিটি মানুষের জন্য কল্যাণকর  নয় বরং ক্ষতিকর । ইহা রোগের চিকিৎসা করার পরিবর্তে মানুষকে রোগী বানিয়ে ফেলে । হয়তো তাৎক্ষণিকভাবে ইহার ক্ষতিকর ক্রিয়া উপলব্ধি করা যায় না কিন্তু ইহা ভবিষ্যতে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে ।

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...