Monday, May 25, 2020

রছুলুল্লহ (ছঃ) এর কওলি হাদিসের বানী

♦♦রছুল ছঃ এর ক্বওলী হাদীস (বাণী):

আব্দুর রহমান ইবনে যায়েদ (র.) থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই রছুলুল্লহ (ছ.) বলেছেন,
“...যদি (মুসলিমদের) দু’জন স্বাক্ষ্য দেয় যে, তারা (নতুন চাঁদ উদয়ের ব্যাপারে) দেখেছে, তাহলে তোমরা ছওম (রোজা) ও ঈদ পালন কর”। [নাসাঈ, সহীহ্, অধ্যায়ঃ ৮, হাদিস # ২১১৬।]

এখানে রছুল ছঃ দুইজন স্বাক্ষ্যের কথা বলেছেন। রছুল ছঃ বলেননি শুধু মদীনার বর্ডারের ভিতরের দুইজন বা শুধু সৌদির সীমান্তের ভিতরের দু'জন বা শুধু বাংলাদেশের কাঁটাতারের বেড়ার ভিতরের দুইজন। দুইজন বলতে গোটা বিশ্বের যেকোন দুইজন মুসলিম।

আর "তোমরা" বলতে শুধু মদীনার বর্ডারের ভিতরের মানুষ, বা শুধু সৌদির সীমান্তের ভিতরের মানুষ, বা শুধু বাংলাদেশের কাঁটাতারের বেড়ার ভিতরের মানুষকে নির্দিষ্ট করেননি। বরং "তোমরা" বলতে পৃথিবীর সকল মানুষ।

♦♦রছুল ছঃ এর ফে’লী হাদীস (আমল বা কাজ):

হযরত আবু উমাইর ইবনু আনাস (রঃ) হতে বর্ণিত
রছুলুল্লহ (ছঃ) -এর নিকট একদল আরোহী আসল এবং তারা সাক্ষ্য দিল যে তারা গতকাল (শাওয়ালের) চাঁদ দেখেছে। ফলে রছুলুল্লহ (ছঃ) মানুষকে ছিয়াম (রোজা) ছাড়ার আদেশ দিলেন। পরের দিন প্রাতঃকালে সকলেই ঈদগাহে সমবেত হলেন”। [(আবু দাউদ, সহীহ, হাদীস নং ১১৫৭, ইংরেজি অনুবাদ হাদীস নং ১১৫৩, নাসায়ী, মিশকাত-১২৭)]

সংবাদ শোনার সাথে সাথে রছুলুল্লহ (ছঃ) এবং সাহাবাগণ (রঃ) ছিয়াম ভেঙে ফেললেন। সেই কাফেলা কোন দেশ থেকে এসেছে কিংবা কতদূর থেকে এসেছে রছুলুল্লহ (ছঃ) তা জিজ্ঞাসা করেননি। সুতরাং বুঝা গেল, নিজ এলাকায় চাঁদ দেখা না গেলেও দূর এলাকা থেকে আসা সংবাদ রছুলুল্লহ (ছঃ) গ্রহণ করেছেন। এটাও বুঝা গেল, সেই সংবাদ পৌঁছেছে পরদিন দুপুরের পর এবং এত দেরীতে আসা সংবাদও রছুলুল্লহ (ছঃ) গ্রহণ করে ছিয়াম ভেঙেছেন। শুধু তাই নয়, এটাও বুঝা গেল সংবাদ না পৌছালে কি করতে হবে আর পৌছালে কি করতে হবে।

এ থেকে বুঝা যায় বিষয়টি নির্ভর করে সংবাদ পৌছেছে কিনা তার উপর। দুইজন মুসলিমের সংবাদ পৌছালে আমল জরুরী।

এক শহরের চাঁদ দেখা অন্য শহরে গ্রহণযোগ্য বলেই মদীনাবাসী চাঁদ না দেখার পরও রছুলুল্লহ (ছঃ) অন্য শহর থেকে আসা সংবাদে ছিয়াম ভেঙেছেন। আর শুধু দেশের কাঁটাতারের বেড়ার ভিতরের চাঁদের সংবাদ গ্রহণ করা যাবে অথবা বর্ডারের বাইরের চাঁদের সংবাদ গ্রহণ করা যাবেনা, এ মর্মে কোন আয়াত বা হাদীস নেই।

বৃটিশের দেয়া জাতিয়তাবাদী কাঁটাতারের বেড়ার একপাশে লাইলাতুল ক্বদর একরাতে আর অপর পাশে লাইলাতুল ক্বদর তার পরের রাতে, এটা হতে পারেনা। কারণ কুরআন তো দুই রাতে নাযিল হয়নি, বরং একরাতেই হয়েছে। তেমনি জাতিয়তাবাদী বর্ডারের একপাশে প্রধান শয়তানকে যেদিন বাঁধা হয়, অপরপাশে তার পরের দিন বাঁধা হয়, এটাও হতে পারেনা। তেমনিভাবে জাতিয়তাবাদী সীমান্তের একপাশে যেদিন ঈদ, অন্যপাশে সেদিন ছিয়াম (রোজা) এটাও গ্রহণযোগ্য নয়। ঈদের দিন ছিয়াম (রোজা) রাখা হারাম।

মুসলিমদের ভূমি একটাই। হারাম জাতিয়তাবাদী বর্ডার দিয়ে একক মুসলিম উম্মাহকে বিভক্ত করা হারাম। চাঁদ দেখার সংবাদ গ্রহণের ক্ষেত্রে রছুলুল্লহ (ছঃ) দেশের সীমারেখার কোন শর্ত দেননি আমরাও দেই না।

সুতরাং কেউ পালন করুক আর নাই করুক, রমাদনের চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে ২ জন মুসলিমের নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছালে তারিখ পহেলা রমাদন হয়ে যাবে। যতদূর পৌঁছাবে ততদূর হবে। কেউ পালন করুক আর নাই করুক, শাওয়ালের চাঁদের ক্ষেত্রে ২ জন মুসলিমের চাঁদ দেখার নির্ভরযোগ্য সংবাদ পৌঁছালে পহেলা শাওয়াল বা ঈদের দিন হয়ে যাবে। যতদূর পৌঁছাবে ততদূর হবে ইংশাআল্লহ।  

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...