Saturday, April 11, 2020

মহামারী আতঙ্কে মাসজিদে ছলাত বন্ধ করা কি জায়েজ?

করোনা ভাইরাস মহামারী আতংকে জুমার ছলাত ও জামাতবদ্ধ ছলাত পরিত্যাগ করা কি বৈধ হবে ???
🔺🔺🔺🔺🔺🔺🔺
🤍سُئل الشيخ أحمد الكوري الشنقيطي حفظه الله:
শাইখ আহমাদ আল-কাওরী আল শানকিতী হাফিজাহুল্লাহকে করা প্রশ্নের উত্তর:

⁉ هل يجوز للمسلمين الأصحاء ترك الجمعة والجماعة خوفا من المرض (كورونا)؟!
প্রশ্ন: করোনা রোগের ভয়ে জুমা ও জামায়াতবদ্ধ ছলাত পরিত্যাগ করা মুসলিমদের জন্য কি বৈধ?!
✒ *أولا*:
في الخوف من العدو المحقق عند القتال في سبيل الله لم تسقط الجماعة فكيف تسقط بسبب الخوف المتوهم من المرض؟
📖{ *وإذا كنت فيهم فأقمت لهم الصلاة
فلتقم طائفة منهم معك..}* الآية.
#প্রথমত*
আল্লহর রাস্তায় যুদ্ধকালীন প্রত্যক্ষ শত্রুর ভয়ে জামায়াত রহিত হয়নি সুতরাং রোগাক্রান্ত হওয়ার অনিশ্চি আতংকে কিভাবে রহিত হবে ?
আল্লাহ বলেন:
((হে নবী) আপনি যখন তাদের মাঝে বিদ্যমান এবং তাদের জন্য ছলাতে দন্ডায়মান হন; তখন যেনো তাদের একটি দল আপনার সাথে দন্ডায়মান হয়) {নিসা:১০২}
🤍🤍🤍🤍
*ثانيا*
هذه الأوبئة والأمراض سببها الحقيقي هو الذنوب والمعاصي.
قال تعالى:
📖 *{وما أصابكم من مصيبة فبما كسبت أيديكم}*
وقال تعالى:
📖 *{ظهر الفساد في البر والبحر بما كسبت أيدي الناس ليذيقهم بعض الذي عملوا لعلهم يرجعون}.*
ألم يبين تعالى أن العلاج إنما هو في الرجوع إلى الله بالتوبة والاستغفار والصلاة والتلاوة والدعاء ...
وليس في ترك بعض ما أوجب علينا من جمعة وجماعة ؟!!
#দ্বিতীয়ত:
এসকল মহামারী ও রোগব্যাধির প্রকৃত কারণ হচ্ছে গুনাহসমূহ ও অবাধ্যতা ৷
আল্লহ তাআলা বলেন:
*(তোমাদেরকে যে বিপদাপদ পেয়ে বসে তা তোমাদের হাতেরই কর্মফল)
{শূরা:৩০}
তিনি আরো বলেন:
*{স্থলে ও জলে সংঘটিত বিপর্যয় মানুষের হাতের কর্মফল যাতে তিনি তাদের কৃতকর্মের কিয়দাংশ আস্বাদন করাতে পারেন, সম্ভবত তারা ফিরে আসবে}*
আল্লহ কি বর্ণনা করেননি যে নিশ্চয় রোগব্যাধি সেটা তো কেবলমাত্র আল্লহর দিকে ফিরে আসা; তাওবা, ইস্তিগফার, সালাত, তেলাওয়াত ও দুআ'র মাধ্যমে....
🤍🤍🤍🤍
*ثالثا*:
قول الله تعالى:
📖 *{ما أصاب من مصيبة في الأرض ولا في أنفسكم إلا في كتاب من قبل أن نبرأها}.*
#তৃতীয়ত*
আল্লহর বাণী: {পৃথিবীতে ও তোমাদের অন্তরসমূহে কোনো বিপদাপদ পতিত হয়না তবে সেটা আমরা ঘটানোর পূর্বেই কিতাবে বিদ্যমান}
وقال تعالى:
📖 *{قل لن يصيبنا إلا ما كتب الله لنا}*.
আল্লহর বাণী: হে নাবী আপনি বলুন, আমাদের কাছে কখনোই কিছু পৌছে না তবে উহা ব্যতিত যা আল্লহ আমাদের জন্য লিখে রেখেছেন}
وقال تعالى:
📖 *{قل لو كنتم في بيوتكم لبرز الذي كتب عليهم القتل إلى مضاجعهم}*.
আল্লহর বাণী: হে নাবী আপনি বলুন, তোমরা যদি তোমাদের বাড়িতেও থাকো তথাপি অবশ্যই যাদের উপর প্রাণঘাত লিখিত হয়েছে তারা তাদের নির্ধারিতস্থলে উপস্থিত হবেই}*
🍃وقال صلى الله عليه وسلم:
" *واعلم أن الأمة لواجمعت على أن ينفعوك لم ينفعوك إلا بشيء قد كتبه الله لك ولو اجتمعوا على أن يضروك لم يضروك إلا بشيء قد كتبه الله عليك.*"
📒رواه أحمد والترمذي
وقال حسن صحيح .
*নাবী ছঃ বলেছেন:
আর জেনে রাখো! নিশ্চয় সমগ্রজাতি যদি তোমার উপকারার্থে সর্বসম্মত হয় তবে ততোটুকুই করতে সক্ষম হবে যা আল্লহ তোমার জন্য লিখে রেখেছেন ৷ আর যদি তারা তোমার ক্ষতি সাধনার্থে সর্বসম্মত হয় তবে তারা তোমার ততোটুকুই ক্ষতিসাধনে সক্ষম হবে যা আলহ তোমার উপর লিখে রেখেছেন ৷*
(আহমাদ, তিরমিযী, ইমাম তিরমিযী হাদিসটি হাসান সহীহ বলেছেন)

فإيماننا بالقضاء والقدر وتوكلنا على الله جل وعلا ألا يمنعنا من ترك ما أوجب علينا من صلاة الجمعة والجماعة خوفا من المرض وغيره؟!!!
সুতরাং তাকদির ও চূড়ান্ত ফায়সালার প্রতি আমাদের আস্থা এবং মহান আল্লহর উপর আমাদের সুদৃঢ় বিশ্বাস কখনোই রোগব্যাধি ও অন্যকিছুর ভয়ে আমাদের উপর অত্যাবশ্যকীয় জামায়াত ও জুমার ছলাত বর্জনে বাঁধা হতে পারে না?!!!
🤍🤍🤍🤍
*رابعا*.
ألم يتحدث صلى الله عليه وسلم عن كيفية التعامل مع الطاعون
↙ وأنه لا يجوز دخول الأرض التي فيها الطاعون ولا الخروج من الأرض التي فيها ..
فهل ذكر فيه ترك صلاة الجماعة؟!!
#চতুর্থ*
নাবী ছঃ কি প্লেগ-মহামারীর সাথে আচরণবিধি আলোচনা করেন নি?!!
তা হচ্ছে- প্লেগ ও মহামারীতে আক্রান্ত ভূমিতে প্রবেশ এবং সেই ভূমি হতে বাহির হওয়া উভয়টাই অবৈধ ৷
সুতরাং সেখানে কি তিনি জামায়াত বর্জনের কথা উল্লেখ করেছেন ?!!
🤍🤍🤍🤍
*خامسا.*
وقع الطاعون في عهد عمر بن الخطاب رضي الله عنه وتشاور في أمره مع المهاجرين ثم الأنصار ثم مسلمة الفتح ..
فهل عطلوا بسببه جمعة أو جماعة؟!
#পঞ্চম*
উমার ইবনুল খাত্তাব রযিয়াল্লাহু আনহুর শাসনামলে প্লেগ মহামারী সংঘটিত হয়েছিলো ৷ তিনি এ বিষয়ে মুহাজিরীন, আনসার সাহাবীসহ মাসলামাহ আল ফাতহ সাথে পরামর্শ করেছিলেন ৷ তিনি কি এই কারণে জুমা ও জামাত রহিত করেছিলেন?
*سادسا.*
يقول الله سبحانه وتعالى
📖 *{واستعينوا بالصبر والصلاة}*

فهل الإستعانة هنا بإقامة الصلاة في المسجد كما كان النبي صلى الله عليه وسلم يؤديها أم بترك الجمع والجماعات؟
*ষষ্ঠ*
মহান আল্লহ তাআলা বলেন:
*{তোমরা ধৈর্য ও ছলাতের মাধ্যমে সাহায্য চাও}*
সুতরাং যেভাবে নাবী ছঃ মাসজিদে জামায়াত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সাহায্য চেয়েছেন সেটা করবো নাকি জামাআত ও জুমা পরিত্যাগ করবো?
🤍🤍🤍🤍
*سابعا.*
يقول صلى الله عليه وسلم:
" *من صلى الصبح في جماعة فهو في ذمة الله.*."
ألا يكفينا أننا في ذمة الله؟!
{ *أليس الله بكاف عبده*}؟!!
#সপ্তম*
নাবী ছঃ বলেছেন: যে ব্যক্তি ফজরের ছলাত জামায়াতে পড়বে সে আল্লহর নিরাপত্তাধীন ৷
আমরা আল্লহর নিরাপত্তাধীন এটা কি আমাদের জন্য যথেষ্ট নয় ?!
*{আল্লহ কি উপাস্য হিসেবে যথেষ্ট নয়}*?!!
🤍🤍🤍🤍
*ثامنا.*
إذا كان صلى الله عليه وسلم لم يأذن للأعمى في التخلف عن الجماعة مع قوله بأنه لا قائد له وأن المدينة كثيرة الهوام والسباع ... كيف يؤذن للصحيح في التخلف عنها لمجرد خوف المرض؟!
#অষ্টম*
নাবী ছঃ একজন দৃষ্টিহীন ব্যক্তিকে যার কোনো পথপ্রদর্শক নেই এমন উযর অবগত হওয়া সত্বেও তাকে জামায়াত থেকে পিছনে থাকার অনুমতি দেননি ৷ যদিও মদিনাতে প্রচুর সিংহ ও চতুষ্পদ জন্তু ছিলো ৷ তাহলে কিভাবে সুস্থ্যদের জন্য শুধুমাত্র রোগব্যাধির আশংকায় জামায়াত থেকে পিছনে থাকার অনুমতি দেওয়া যাবে ?!
🤍🤍🤍🤍🤍
*تاسعا.*
لقد كان النبي صلى الله عليه وسلم إذا حزبه أمر بادر إلى الصلاة..
فهل إذا حزبنا فيروس الكورونا نترك صلاة الجمعة والجماعة؟!!
#নবম*
রসুলুল্লহ ছঃ এর কাছে কোনো বিষয় কষ্টকর হওয়া মাত্রই তিনি ছলাতের জন্য দ্রুত বের হয়ে যেতেন ৷ আর আমাদের জন্য ভাইরাসস করোনা কষ্টদায়ক হওয়ার কারনে আমরা জুমার ছলাত ও জামায়াত পরিত্যাগ করে চলছি ?!!
🤍🤍🤍🤍
*عاشرا.*
لقد كان في كل مدينة إسلامية جامع واحد يصلي فيه الجميع..
وقد كان يصيب المسلمين الوباء والطاعون من حين لآخر ..
#দশম*
প্রতিটি ইসলামী নগরীতে মাত্র একটি জামে মাসজিদ ছিলো তাতেই সকলে ছলাত পড়তো...যুগ যুগান্তরে মুসলিমদেরকে বহুবার প্লেগ মহামারী গ্রাস করেছে...

فهل أفتى أحد من علماء المسلمين عبر التاريخ بغلق المساجد بسبب وباء أو طاعون؟!!
তথাপি এযাবত ইতিহাসে মুসলিমদের কোনো একজন উলামা কি প্লেগ/মহামারীর কারণে মাসজিদসমূহ বন্ধ করার ফতুয়া দিয়েছে?!!
⁉⁉⁉

((( ماذا فعل المسلمون قديما .. حينما انتشر الطاعون سنة ٦٧٤ھ؟! )))👇
----
قال قاضي (صفد) الإمام محمد بن عبدالرحمن القرشي الدمشقي الشافعي (توفى: بعد ٧٨٠هـ) في كتابه ( شفاء القلب المحزون، في بيان ما يتعلق بالطاعون ) - :
((( প্রাচীনকালে মুসলিমরা কি করেছে....যখন ৬৭৪ হিজরী সনে প্লেগ মহামারীর বিস্তার ঘটেছিলো )?!!
------
কাজী (সাফাভিড) ইমাম মুহাম্মাদ ইবনু আব্দুর রহমান আল কোরাশি, আল দিমাস্কী, আস শাফিঈ (মৃত্যু: ৭৮০ হিজরীর পর) রহিমাহুল্লাহু স্বীয় গ্রন্থে বলেছেন {চিন্তিত হৃদয়ের আরোগ্যলাভ, যা প্লেগ দূরারোগ্যের সাথে সম্পৃক্ত বয়ানে বিদ্যমান}
↙↙↙
( ..وكان الناس به على خير عظيم : مِن إحياء الليل، وصوم النهار، والصدقة، والتوبة؛ ... [ فهجرنا البيوت ، ولزمنا المساجد ] رجالنا وأطفالنا ونساءنا ؛ فكان الناس به على خير .. ) . أ. ه
(.. জনসাধারণ প্লেগের উপস্থিতিতেও মহাকল্যাণে ছিলো: রাত্রি জাগরণ, দিনে সিয়াম পালন, সাদকা প্রদান ও তাওবা করা...{আমরা বাসস্থান ছেড়ে দিয়েছিলাম, মসজিদকে আবশ্যিকভাবে গ্রহণ করেছিলাম} আমাদের পুরুষেরা, আমাদের শিশু কিশোররা, আমাদের মহিলারাসহ; মানুষেরা প্লেগের উপস্থিতিতেও সৎকর্মের উপর অটুট ও অবিচল ছিলো)
অনেকে এটাকে বৈধ করার জন্য যে হাদিসটি পেশ করেন তা হলো-
নাফি’ (রহঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, প্রচণ্ড এক শীতের রাতে ইব্‌নু ‘উমর (রাঃ) যাজনান নামক স্থানে আযান দিলেন। অতঃপর তিনি ঘোষণা করলেনঃ তোমরা আবাস স্থলেই সালাত আদায় করে নাও। পরে তিনি আমাদের জানালেন যে, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সফরের অবস্থায় বৃষ্টি অথবা তীব্র শীতের রাতে মুয়াজ্জিনকে আযান দিতে বললেন এবং সাথে সাথে এ কথাও ঘোষণা করতে বললেন যে, তোমরা নিজ বাসস্থলে সালাত আদায় কর। (বুখারী ৬৬৬; মুসলিম ৬/৩, হাঃ ৬৯৭, আহমাদ ৪৫৮০) (আ.প্র. ৫৯৬, ই.ফা. ৬০৪) সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬৩২
কিন্তু উক্ত হাদিস এ ওযরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
মসজিদে যাওয়ার পথে বাধা রয়েছে, এমন অবস্থা হলে এই হাদিস প্রযোজ্য।
কিন্তু এখন মসজিদে যাওয়া অসম্ভব নয়।
বরং শুধুমাত্র অনিশ্চিত আশংকা রয়েছে।
শুধুমাত্র আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য নিষিদ্ধ।
যেমনঃ
একদল লোক নবী সঃ এঁর নিকট বাইয়াত নিতে আসলে সবাইকে হাতে হাত রেখে বাইয়াত নিলেন,ঐ দলে কুষ্ঠ রোগী ছিল। নাবীজি ছঃ তার হাত না ধরে বাইয়াত নিলেন। (মুসলিম-৫৭১৫)

ইবনে মাসউদ র. কখনো রোগাক্রান্ত হলে তার থেকে মুক্তির জন্য দু'আও করতেন না। বলতেন, আল্লহ ভালবেসে দিয়েছেন। আমার লজ্জা হয় আল্লহর হাদিয়া ফেরৎ দিতে!
আজ করোনাভাইরাসে সবাই দিশেহারা। অথচ উমার র. এর শাসনামলে সিরিয়ায় মহামারী দেখা দিয়েছিল। সেখানের শাসক ছিলেন পর্যায়ক্রমে আবু উবাইদা ও মু'আজ ইবনে জাবাল র.। উভয়ে মিম্বারে উঠে বলেছিলেন,
"এটা আল্লহর পক্ষ থেকে মুমিনের জন্য তুহফা। এটা রহমাহ"।
এরপর উভয়ে মহামারীতে শহীদ হয়ে যান। তবু 'আরও কিছুদিন বাঁচি, একটু সুস্থ হই' এ দু'আ করেননি।
এ ছিল তাদের ধৈর্য! সর্বোত্তম ধৈর্য!
আর আপনারা মাসজিদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলছেন।
জেনে রাখবেন, সতর্কতা অবলম্বন আল্লহরই নির্দেশ।
তবে অতি সতর্কতা দেখিয়ে আল্লাহর কাছ থেকে দূরবর্তী হওয়া নয়।
সতর্কতার মধ্যমপন্থা অবলম্বন করুন।
অতি সতর্কতা আযাব কমাবে না, উল্টা বাড়াবে। cld.
🔺🔺🔺🔺🔺🔺

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...