নারী-পুরুষের সলাত আদায়ের সহিহ পদ্ধতি ও এর আনুসঙ্গিক কার্যাবলী দলিলসহ (নিয়ত, ওজু, তাইমুম, গোসল, সলাত) বিস্তারিত আলোচনাঃ
🔰 নিয়ত কী ও কাকে বলে এর বাস্তব প্রমাণ দেখুন।
❐ নিয়ত হলো মনের ইচ্ছা।
আর মুখে নিয়ত পড়া বিদআত।
আর মুখে নিয়ত পড়া বিদআত।
❐ যে কোনও আমলের জন্য নিয়ত জরুরী। নিয়ত ছাড়া কোন ইবাদত বা আমল শুদ্ধ হয় না। মহানবী (সাঃ) বলেন, “আমলসমূহ তো নিয়তের উপরেই নির্ভরশীল।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১নং)
ইমাম নওবী (রহঃ) বলেন, নিয়ত বলে মনের সংকল্পকে। (যার স্থল হল হৃদয় ও মস্তিষ্ক।) সুতরাং নামাযী নির্দিষ্ট নামাযকে তার মন-মস্তিষ্কে উপস্থিত করবে। যেমন যোহ্র, ফরয ইত্যাদি নামাযের প্রকার ও গুণ মনে মনে স্থির করবে। অতঃপর প্রথম তকবীরের সাথে সাথে (মন-মস্তিষ্কে উপস্থিতকৃত কর্ম করার) সংকল্প করবে। (রওযাতুত ত্বালেবীন ১/২২৪, সিফাতু স্বালাতিন নাবী (সাঃ), আলবানী ৮৫পৃ:)
এই সংকল্প করার জন্য নির্দিষ্ট কোন শব্দ শরীয়তে বর্ণিত হয় নি। আরবীতে বাঁধা মনগড়া নিয়ত বা নিজ ভাষায় কোন নির্দিষ্ট শব্দাবলী দ্বারা রচিত নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বা আওড়ানো বিদআত। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/৩১৪, ৩১৫) সুতরাং নিয়ত করা জরুরী, কিন্তু পড়া বিদআত।
ইবনুল কাইয়েম (রহঃ) বলেন, নবী (সাঃ) যখন নামাযে দাঁড়াতেন তখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলতেন। এর পূর্বে তিনি কিছু বলতেন না এবং মোটেই নিয়ত মুখে উচ্চারণ করতেন না। তিনি এ কথাও বলতেন না যে, (নাওয়াইতু আন) ‘উসাল্লী লিল্লাহি সালাতান---, আল্লাহর উদ্দেশ্যে অমুক নামায, কেবলাহ্ মুখে, চার রাকআত, ইমাম বা মুক্তাদী হয়ে পড়ছি।’ আর না তিনি আদায়, কাযা বা বর্তমান ফরযের কথা উল্লেখ করতেন। উক্ত ১০ প্রকার বিদআতগুলির কোন একটি শব্দও তাঁর নিকট হতে কেউই বর্ণনা করেন নি; না সহীহ সনদ দ্বারা, না যয়ীফ দ্বারা, না মুসনাদ রুপে, আর না-ই মুরসাল রুপে। বরং তাঁর কোন সাহাবী হতেও ঐ নিয়তের কথা বর্ণিত হয়নি। কোন তাবেয়ীও তা বলা উত্তম মনে করেন নি, আর না-ই চার ইমামের কেউ---। (যাদুল মাআদ ১/২০১)
নিয়ত করতে হয়,,পড়তে হয় না,,পড়লে এটা বিদায়াত।
কেনো না আল্লাহর রাসূল করেনি ও করতে বলেনি।।
এভাবে, প্রত্যেকটা কাজের ইচ্ছা বা
সংকল্প করা হলো নিয়ত। তাই শুধু শুধু কষ্ট
করে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়তে হবে
না। আপনি কাজটা কেন করছেন, আল্লাহ
মনের খবর জানেন। "মানুষ তার নিয়ত
অনুযায়ী প্রতিদান পাবে।" (সহিহ বুখারি,
হাদিস নং ১)
মুখে নিয়ত পাঠ করা জঘন্যতম বিদআত।
কেনো না আল্লাহর রাসূল করেনি ও করতে বলেনি।।
এভাবে, প্রত্যেকটা কাজের ইচ্ছা বা
সংকল্প করা হলো নিয়ত। তাই শুধু শুধু কষ্ট
করে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়তে হবে
না। আপনি কাজটা কেন করছেন, আল্লাহ
মনের খবর জানেন। "মানুষ তার নিয়ত
অনুযায়ী প্রতিদান পাবে।" (সহিহ বুখারি,
হাদিস নং ১)
মুখে নিয়ত পাঠ করা জঘন্যতম বিদআত।
❐ সবাই মনে রাখবেন,
দ্বীন (ইসলাম) হচ্ছে সহজ। (বুখারি ৩৯)
নিয়ত পড়তে হয় না। নিয়ত করতে হয়।
(বুখারি ১)
দ্বীন (ইসলাম) হচ্ছে সহজ। (বুখারি ৩৯)
নিয়ত পড়তে হয় না। নিয়ত করতে হয়।
(বুখারি ১)
এটা দীনের মধ্যে নতুন সৃষ্টি,,
তাই এটা প্রত্যাখ্যাত।
তাই এটা বাতিল করতে হবে।
এটা অাল্লাহর রাসূল বলেছেন।
(মিশকাত হাদিস : ১৪০,বুখারী হাদিস : ২৬৯৭, ইবনে মাজাহ হাদিস : ১৪)
তাই এটা প্রত্যাখ্যাত।
তাই এটা বাতিল করতে হবে।
এটা অাল্লাহর রাসূল বলেছেন।
(মিশকাত হাদিস : ১৪০,বুখারী হাদিস : ২৬৯৭, ইবনে মাজাহ হাদিস : ১৪)
❐নিয়তের এর বাস্তব কিছু প্রমান দেখুনঃ⤵
❐প্রসংগ সিয়ামঃ------------------
❐ আপনি রাত্রে ঘুম থেকে ওঠে সাহরি খাচ্ছেন? কেন খাচ্ছেন? অবশ্যই সিয়াম রাখার জন্য। অন্তরে সিয়াম রাখার এই সংকল্প করাই হলো প্রকৃত নিয়ত।
❐ আবার, আপনি হঠাৎ করে সন্ধ্যার সময় শরবত, খেজুর ইত্যাদি খাবার নিয়ে মাগরিবের আজানের জন্য অপেক্ষা করছেন? কেন অপেক্ষা করছেন? খাবার আপনার সামনে থাকা সত্ত্বেও কেন খাচ্ছেন না? অন্যান্য মাসে তো এরকম করেন না! অবশ্যই সারাদিন সিয়াম রেখেছেন, এখন সিয়াম ভাঙ্গার জন্যই মাগরিবের আজানের জন্য অপেক্ষা করছেন। এটাই হলো প্রকৃত নিয়ত।
❐প্রসংগঃ সলাতঃ----------------
ধরুন আছরের আজান দিলো। আপনি অজু করতে গেলেন।
এখন আপনি কেন অজু করতে গেলেন????
নিশ্চয়ই আছরের সলাত পরার জন্য!! মানে অন্তরে নিয়ত হয়ে গেছে।
এখন আপনি কেন অজু করতে গেলেন????
নিশ্চয়ই আছরের সলাত পরার জন্য!! মানে অন্তরে নিয়ত হয়ে গেছে।
আবার, জায়নামাজ বিছালেন বা সলাত পরার স্থানে গেলেন। কিন্তু কেন?? উদ্দেশ্য কি??
নিশ্চয়ই আছরের সলাত পড়ার জন্য?? তার মানে নিয়ত হয়ে গেছে।
নিশ্চয়ই আছরের সলাত পড়ার জন্য?? তার মানে নিয়ত হয়ে গেছে।
আবার, আপনি সলাতের জন্য দাড়ালেন। কিসের সলাত?? নিশ্চয় আছরের সলাত?? এটা আপনার আগেই জানা আছে। (কোন ওয়াক্তের সলাত তার নিয়ত হয়ে গেছে)
আসরের সলাত কয় রাকাত তাও আপনার জানা আছে।(কয় রাকাত সলাত পরবেন তার নিয়তও হয়ে গেল)
এখন ফরজ সলাত পরবেন নাকি সুন্নাত সলাত পরবেন এটাও অলরেডি আপনি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছেন। (মানে আপনার ফরজ বা সুন্নাত সলাতের নিয়তও হয়ে গেল)
আসরের সলাত কয় রাকাত তাও আপনার জানা আছে।(কয় রাকাত সলাত পরবেন তার নিয়তও হয়ে গেল)
এখন ফরজ সলাত পরবেন নাকি সুন্নাত সলাত পরবেন এটাও অলরেডি আপনি মনে মনে ঠিক করে ফেলেছেন। (মানে আপনার ফরজ বা সুন্নাত সলাতের নিয়তও হয়ে গেল)
❐ এভাবে, প্রত্যেকটা কাজের ইচ্ছা বা সংকল্প করা হলো নিয়ত। তাই শুধু শুধু কষ্ট করে মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত পড়তে হবে না। আপনি কাজটা কেন করছেন, আল্লাহ মনের খবর জানেন। "মানুষ তার নিয়ত অনুযায়ী প্রতিদান পাবে।" (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১)
❐ নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই দ্বীন (ইসলাম) সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার উপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর..।" (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩৯)
❐ অতএব, শুধু শুধু কষ্ট করে সুন্নাহ পরিপন্থি আরবি নিয়ত মুখস্হ করবেন কেন? এসব নিয়ত মুখস্হ না করে কুর'আনের অন্তত ৩ টা আয়াত মুখস্হ করুন। নামাযে পড়তে পারবেন। সওয়াবও হবে। ইংশা'আল্লাহ।
❐ সবাই মনে রাখবেন,
দ্বীন (ইসলাম) হচ্ছে সহজ। (বুখারি ৩৯)
নিয়ত পড়তে হয় না। নিয়ত করতে হয়। (বুখারি ১)
দ্বীন (ইসলাম) হচ্ছে সহজ। (বুখারি ৩৯)
নিয়ত পড়তে হয় না। নিয়ত করতে হয়। (বুখারি ১)
❐ আল্লাহ, আমাদের সবাইকে সঠিক ও সহজ দ্বীন বুঝার ও বেশি বেশি নেক আমল করার তাওফিক দিন।
আমিন ছুম্মা আমিন
➥➥➥➥➥➥
🔰ওজুর নিয়মাবলীঃ
১▪ নামাযী প্রথমে মনে মনে ওযুর নিয়ত করবে। কারণ নিয়ত ছাড়া কোন কর্মই শুদ্ধ হয় না।
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১নং)
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ১নং)
২▪‘বিসমিল্লাহ্’ বলে ওযু শুরু করবে। কারণ শুরুতে তা না বললে ওযু হয় না। (আবূদাঊদ, সুনান ৯২নং)
৩▪ তিনবার দুইহাত কব্জি পর্যন্ত ধুয়ে নেবে।হাতে ঘড়ি, চুড়ি, আংটি প্রভৃতি থাকলে তা হিলিয়ে তার তলে পানি পৌঁছাবে। আঙ্গুল দিয়ে আঙ্গুলের ফাঁকগুলো খেলাল করবে।
(আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৪০৭নং)
(আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৪০৭নং)
এরপর পানির পাত্রে হাত ডুবিয়ে পানি নিতে পারে। (বুখারী, মুসলিম, সহীহ ৩৯৪নং) প্রকাশ যে, নখে নখ পালিশ বা কোন প্রকার পুরু পেন্ট থাকলে তা তুলে না ফেলা পর্যন্ত ওযু হবে না। পক্ষান্তরে মেহেদী বা আলতা লেগে থাকা অবস্থায় ওযু-গোসল হয়ে যাবে।
(ইং শা আল্লাহ)
(ইং শা আল্লাহ)
৪▪তারপর ডানহাতে পানি নিয়ে ৩ বার কুল্লি করবে।
৫▪অতঃপর পানি নিয়ে নাকের গোড়ায় লাগিয়ে টেনে নিয়ে বামহাত দ্বারা নাক ঝাড়বে। এরুপ ৩ বার করবে। তবে রোযা অবস্থায় থাকলে সাবধানে নাকে পানি টানবে, যাতে গলার নিচে পানি না চলে যায়।
(তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান ৮৯, মিশকাত ৪০৫, ৪১০নং)
(তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান ৮৯, মিশকাত ৪০৫, ৪১০নং)
অবশ্য এক লোট পানিতেই একই সাথে অর্ধেক দিয়ে কুল্লি করে বাকি অর্ধেক দিয়ে নাক ঝাড়লেও চলে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৩৯৪নং)
৬▪অতঃপর মুখমন্ডল (এক কান থেকে অপর কানের মধ্যবর্তী এবং কপালের চুলের গোড়া থেকে দাড়ির নিচের অংশ পর্যন্ত অঙ্গ) ৩ বার পানি লাগিয়ে দুইহাত দ্বারা ধৌত করবে। (বুখারী ১৪০নং) এক লোট পানি দাড়ির মাঝে দিয়ে দাড়ির ফাঁকে ফাঁকে আঙ্গুল চালিয়ে তা খেলাল করবে। (আবূদাঊদ, সুনান, মিশকাত ৪০৮নং) মহিলাদের কপালে টিপ (?) থাকলে ছাড়িয়ে ফেলে (কপাল) ধুতে হবে। নচেৎ ওযু হবে না।
[তবে টিপ দেয়া মুসলিমের জন্য বৈধ নয় বরং তা হারম]
[তবে টিপ দেয়া মুসলিমের জন্য বৈধ নয় বরং তা হারম]
৭▪অতঃপর প্রথমে ডানহাত আঙ্গুলের ডগা থেকে কনুই পর্যন্ত এবং তদনুরুপ বামহাত ৩ বার (প্রত্যেক বারে পুরোহাতে পানি ফিরিয়ে রগড়ে) ধৌত করবে।
৮▪ অতঃপর একবার মাথা মাসাহ্ করবে; নতুন পানি দ্বারা দুই হাতকে ভিজিয়ে আঙ্গুল গুলিকে মুখোমুখি করে মাথার সামনের দিক (যেখান থেকে চুল গজানো শুরু হয়েছে সেখান) থেকে পিছন দিক (গর্দানের যেখানে চুল শেষ হয়েছে সেখান) পর্যন্ত স্পর্শ করে পুনরায় সামনের দিকে নিয়ে এসে শুরুর জায়গা পর্যন্ত পূর্ণ মাথা মাসাহ্ করবে। (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৩৯৪নং) মাথায় পাগড়ি থাকলে তার উপরেও মাসাহ্ করবে। (মুসলিম, মিশকাত ৩৯৯নং)
৯▪অতঃপর আর নতুন পানি না নিয়ে ঐ হাতেই দুই কান মাসাহ্ করবে; শাহাদতের (তর্জনী) দুই আঙ্গুল দ্বারা দুই কানের ভিতর দিক এবং দুই বুড়ো আঙ্গুল দ্বারা দুই কানের পিঠ ও বাহির দিক মাসাহ্ করবে। (আবূদাঊদ, সুনান ৯৯, ১২৫নং)
[বি.দ্রঃগর্দান মাসাহ্ করা বিধেয় নয়। বরং এটা বিদআত]
১০▪অতঃপর প্রথমে ডান পা ও পরে বাম পা গাঁট পর্যন্ত ৩ বার করে রগড়ে ধোবে। কড়ে আঙ্গুল দ্বারা পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকগুলো খেলাল করে রগড়ে ধৌত করবে। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৪০৭নং)
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “পূর্ণাঙ্গরুপে ওযু কর, আঙ্গুলের ফাঁকগুলো খেলাল কর আর রোযা না থাকলে নাকে খুব ভালরুপে পানি চড়াও। (তারপর তা ঝেড়ে ফেলে উত্তমরুপে নাক সাফ কর।) (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৪০৫-৪০৬ নং)
১১▪এরপর হাতে পানি নিয়ে কাপড়ের উপর থেকে শরমগাহে ছিটিয়ে দেবে। বিশেষ করে পেশাব করার পর ওযু করলে এই আমল অধিকরুপে ব্যবহার্য। যেহেতু পেশাব করে তাহারতের পর দু-এক কাতরা পেশাব বের হওয়ার অসঅসা থাকে। সুতরাং পানি ছিটিয়ে দিলে ঐ অসঅসা দূর হয়ে যায়। (আবূদাঊদ, সুনান ১৫২-১৫৪, ইবনে মাজাহ্, সুনান ৩৭৪-৩৭৬নং) এই আমল খোদ জিবরাঈল (আঃ) মহানবী (সাঃ) কে শিক্ষা দিয়েছেন। (ইবনে মাজাহ্, সুনান, দারেমী, সুনান,হাকেম, মুস্তাদরাক, বায়হাকী, আহমাদ, মুসনাদ, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী।)
🔰ওজুর শেষে নিম্নক্ত দুয়া পাঠঃ
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের মধ্যে যে কেউই পরিপূর্ণরুপে ওযু করার পর (নিম্নের যিক্র) পড়ে তার জন্যই জান্নাতের আটটি দ্বার উন্মুক্ত করা হয়; যে দ্বার দিয়ে ইচ্ছা সে প্রবেশ করতে পারে।
أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ।
“আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু অহ্দাহু লা শারীকা লাহু অ আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু অরাসূলুহ্।”
অর্থাৎ, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই। তিনি একক তাঁর কোন অংশী নেই। আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাঃ) তাঁর বান্দা ও রসূল। (মুসলিম ২৩৪নং, আবু দাঊদ, ইবনে মাজাহ্)
➡তিরমিযীর বর্ণনায় এই দুআর শেষে নিম্নের অংশটিও যুক্ত আছে:-
اَللّهُمَّ اجْعَلْنِيْ مِنَ التَّوَّابِيْنَ، وَاجْعَلْنِيْ مِنَ الْمُتَطَهِّرِيْنَ।
উচ্চারণ:- আল্লাহুম্মাজ আলনী মিনাত তাওয়াবীনা, অজ্আলনী মিনাল মুতাত্বাহ্হিরীন।
অর্থ:- হে আল্লাহ! আমাকে তওবাকারী ও পবিত্রতা অর্জনকারীদের দলভুক্ত কর। (মিশকাত ২৮৯নং)
➡ওযুর শেষে নিম্নের দুআ পাঠ করলে তা শুভ্র নিবন্ধে লিখে সীল করা হয় এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা নষ্ট করা হয় না।
سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَّ إِلهَ إِلاَّ أَنْتَ أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوْبُ إِلَيْكَ।
“সুবহানাকাল্লা-হুম্মা অবিহামদিকা, আশহাদু আল লা ইলা-হা ইল্লা আন্ত , আস্তাগফিরুকা অ আতূবু ইলাইক।”
অর্থাৎ, তোমার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করছি হে আল্লাহ! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তুমিই একমাত্র সত্য উপাস্য। আমি তোমার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি ও তোমার দিকে প্রত্যাবর্তন (তওবা) করছি। (ত্বাহাবী, সহিহ তারগিব ২১৮নং, ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১/১৩৫, ৩/৯৪)
[বি.দ্রঃএ ছাড়া প্রত্যেক অঙ্গ ধোয়ার সময় নির্দিষ্ট দুআ অথবা শেষে ‘ইন্না আনযালনা’ পাঠ বিদআত।]
নোটঃওজুর অঙ্গ গুলির মধ্যে সামান্যতম যায়গা শুকনো থাকলে তার অজু হবে না (সহিহ বুখারি)
🔰ওজুর ফরজ ৪টিঃ
➡মুখমণ্ডল ধৌত করা।
➡দুই হাত কনুই সহ ধৌত করা।
➡মাথা মাসাহ করা।ও
➡দুই পা টাখনু সহ ধৌত করা।
(বাকি সব সুন্নত)
▪মহান আল্লাহর বানী,
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসাহ্ করবে। আর পা দু’টিকে গাঁট পর্যন্ত ধৌত করবে।
(কুরআন মাজীদ ৫/৬)
➡মুখমণ্ডল ধৌত করা।
➡দুই হাত কনুই সহ ধৌত করা।
➡মাথা মাসাহ করা।ও
➡দুই পা টাখনু সহ ধৌত করা।
(বাকি সব সুন্নত)
▪মহান আল্লাহর বানী,
হে ঈমানদারগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও হাত কনুই পর্যন্ত ধৌত করবে এবং তোমাদের মাথা মাসাহ্ করবে। আর পা দু’টিকে গাঁট পর্যন্ত ধৌত করবে।
(কুরআন মাজীদ ৫/৬)
➡বড় নাপাকী না থাকার ফলে গোসলের দরকার না হলেও নামাযের জন্য ছোট নাপাকী থেকে পবিত্রতা অর্জনের উদ্দেশ্যে ওযু ফরয। এ ব্যাপারে মহানবী (সাঃ) ও বলেন, “ওযু নষ্ট হয়ে গেলে পুনরায় ওযু না করা পর্যন্ত আল্লাহ কারো নামায কবুল করেন না।”
(বুখারী, মুসলিম, সহীহ মিশকাত ৩০০নং)
(বুখারী, মুসলিম, সহীহ মিশকাত ৩০০নং)
▪নবী মুহাম্মদ সঃ বলেন,,
“কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে আহ্বান করা হবে; আর সেই সময় ওযুর ফলে তাদের মুখমন্ডল ও হাত-পা দীপ্তিময় থাকবে।”
(বুখারী ১৩৬, মুসলিম, সহীহ ২৪৬নং)
“কিয়ামতের দিন আমার উম্মতকে আহ্বান করা হবে; আর সেই সময় ওযুর ফলে তাদের মুখমন্ডল ও হাত-পা দীপ্তিময় থাকবে।”
(বুখারী ১৩৬, মুসলিম, সহীহ ২৪৬নং)
➥➥➥➥➥➥
🔰ওজু ভঙ্গের কারন সমুহঃ
১▪পেশাব ও পায়খানা দ্বার হতে কিছু (পেশাব, পায়খানা, বীর্য, মযী, হাওয়া, রক্ত, কৃমি, পাথর প্রভৃতি) বের হলে ওযু ভেঙ্গে যায়। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ১/২২০)
তদনুরুপ দেহের অন্যান্য অঙ্গ থেকে (যেমন অপারেশন করে পেট থেকে পাইপের মাধ্যমে) অপবিত্র (বিশেষ করে পেশাব-পায়খানা) বের হলেও ওযু নষ্ট হয়ে যাবে। (ঐ১/২২১)
২▪যাতে গোসল ওয়াজেব হয়, তাতে ওযুও নষ্ট হয়।
৩▪কোন প্রকারে বেহুশ বা জ্ঞানশূন্য হলে ওযু নষ্ট হয়।
৪▪গাঢ়ভাবে ঘুমিয়ে পড়লে ওযু ভাঙ্গে। আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেন, “ চোখ হল মলদ্বারের বাঁধন। সুতরাং যে ঘুমিয়ে যায়, সে যেন ওযু করে।” (আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৩১৬, জামে ৪১৪৯নং)
অবশ্য হাল্কা ঘুম বা ঢুল (তন্দ্রা) এলে ওযু ভাঙ্গে না। সাহাবায়ে কেরাম নবী (সাঃ) এর যুগে এশার নামাযের জন্য তাঁর অপেক্ষা করতে করতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে ঢুলতেন। অতঃপর তিনি এলে তাঁরা নামায পড়তেন, কিন্তু নতুন করে আর ওযু করতেন না। (মুসলিম, সহীহ ৩৭৬নং, আবূদাঊদ, সুনান ১৯৯-২০১নং)
৫ ▪পেশাব অথবা পায়খানা-দ্বার সরাসরি স্পর্শ করলে ওযু নষ্ট হয়। (কাপড়ের উপর থেকে হাত দিলে নষ্ট হয় না।) (জামে ৬৫৫৪, ৬৫৫৫নং) মহানবী (সাঃ) বলেন, “তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি বিনা পর্দায় ও অন্তরালে নিজের শরমগাহ্ স্পর্শ করে, তার উপর ওযু ওয়াজেব হয়ে যায়।”
(জামে ৩৬২, সিলসিলাহ সহীহাহ, আলবানী ১২৩৫ নং)
হাতের কব্জির উপরের অংশ দ্বারা স্পর্শ হলে ওযু ভাঙ্গবে না। (আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ১/২২৯)
৬▪ উটের গোশত খেলে ওযু ভেঙ্গে যায়। এক ব্যক্তি মহানবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করল, ‘উটের গোশত খেলে ওযু করব কি?’ তিনি বললেন, “হ্যাঁ, উটের গোশত খেলে ওযু করো।” (মুসলিম, সহীহ ৩৬০নং)
তিনি বলেন, “উটের গোশত খেলে তোমরা ওযু করো।”
(আহমাদ, মুসনাদ, আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, জামে ৩০০৬ নং)
❌ওজু ভাংগার ভ্রান্ত ধারনাঃ----
🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻
🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻🔻
▪হাটুর উপর কাপড় উঠলে ওজু ভংগ হয়।
▪মেয়েদের মাথার কাপড় পড়ে গেলে ওজু নষ্ট হয়।
▪স্ত্রীকে চুমু দিলে ওজু নষ্ট হয়।
▪পড়নের কাপড় পরিবর্তন করলে ওজু নষ্ট হয়।
▪ওজুতে ঘার মাসাগ না করলে ওজুই হয়না।
▪আকশের দিকে তাকালে ওজু নষ্ট হয়।
▪বাচ্চাদের দুধ পান করালে ওজু নষ্ট হয়।
▪ছোট বাচ্চাকে সৌচ কাজ কড়ালে ওজু নষ্ট হয়।
▪কুকুরের গায়ের সংগে কাপড় লেগে গেলে ওজু নষ্ট হয়।
▪সলাতের মধ্য অট্ট হাসি দিলে ওজু নষ্ট হয়।
🔰ওজু যে কারনে নষ্ট হয় নাঃ-------
১▪ নারীদেহ্ স্পর্শ করলে ওযু ভাঙ্গে না। কারণ, মহানবী (সাঃ) রাত্রে নামায পড়তেন, আর মা আয়েশা (রাঃ) তাঁর সম্মুখে পা মেলে শুয়ে থাকতেন। যখন তিনি সিজদায় যেতেন, তখন তাঁর পায়ে স্পর্শ করে পা সরিয়ে নিতে বলতেন। এতে তিনি নিজের পা দু’টিকে গুটিয়ে নিতেন। (বুখারী ৫১৩, মুসলিম, সহীহ ৫১২নং)
তিনি হযরত আয়েশা (রাঃ)কে চুম্বন দিতেন। তারপর ওযু না করে নামায পড়তে বেরিয়ে যেতেন।
(আবূদাঊদ, সুনান ১৭৮-১৭৯ নং, আহমাদ, মুসনাদ ৬/২১০, দি: ৮৬, নাসাঈ, সুনান ১৭০, ইবনে মাজাহ্, সুনান ৫০২নং, দারাক্বুত্বনী, সুনান ১/১৩৮, বায়হাকী ১/১২৫)
অবশ্য স্পর্শ বা চুম্বনে মযী বের হলে তা ধুয়ে ওযু জরুরী।
(ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন১/২৮৫-২৮৬)
২▪ হো-হো করে হাসলে; এ প্রসঙ্গের হাদীসটি দলীলের যোগ্য নয়। তাই হাসলে ওযু ভাঙ্গে না।
(ফিকহুস সুন্নাহ্ উর্দু ১/৫০-৫১, বুখারী, ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ১/৩৩৬)
৩▪বমি করলে; একদা নবী (সাঃ) বমি করলে রোযা ভেঙ্গে ফেললেন। তারপর তিনি ওযু করলেন।
(আহমাদ, মুসনাদ ৬/৪৪৯, তিরমিযী, সুনান) এই হাদীসে তাঁর কর্মের পরস্পর অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। বমি করলেন বলে ওযু ভেঙ্গে গিয়েছিল, তাই তিনি ওযু করেছিলেন -তা প্রমাণ হয় না। (ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১/১৪৮, আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ১/২২৪-২২৫)
(আহমাদ, মুসনাদ ৬/৪৪৯, তিরমিযী, সুনান) এই হাদীসে তাঁর কর্মের পরস্পর অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। বমি করলেন বলে ওযু ভেঙ্গে গিয়েছিল, তাই তিনি ওযু করেছিলেন -তা প্রমাণ হয় না। (ইরওয়াউল গালীল, আলবানী ১/১৪৮, আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ১/২২৪-২২৫)
৪▪ গাঁটের নিচে কাপড় ঝুলালে; গাঁটের নিচে কাপড় ঝুলানো কাবীরা গুনাহ। কিয়ামতে আল্লাহ সেই ব্যক্তির দিকে তাকিয়েও দেখবেন না, যে ব্যক্তি তার পরনের কাপড় পায়ের গাঁটের নিচে পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরে। (বুখারী ৫৭৮৪, মুসলিম, সহীহ ২০৮৫নং) কিন্তু এর ফলে ওযু ভাঙ্গে না। এক ব্যক্তি ঐরুপ কাপড় ঝুলিয়ে নামায পড়লে মহানবী (সাঃ) তাকে পুনরায় ওযু করে নামায পড়তে হুকুম দিয়েছিলেন বলে যে হাদীস আবূ দাঊদে বর্ণিত হয়েছে, তা যয়ীফ এবং দলীলের যোগ্য নয়। (যয়ীফ আবূদাঊদ, সুনান ১২৪, ৮৮৪নং)
৫▪নাক থেকে রক্ত পড়লে; এতে ওযু নষ্ট হয় বলে হাদীস ইবনে মাজায় বর্ণিত হয়েছে, তা যয়ীফ। (যয়ীফ ইবনে মাজাহ্, সুনান ২৫২, যয়ীফ জামে ৫৪২৬নং)
৬▪দেহের কোন অঙ্গ কেটে রক্ত পড়লে, দাঁত থেকে রক্ত ঝরলে, তীরবিদ্ধ হয়ে রক্ত পড়লে; যা-তুর রিকা’ যুদ্ধে নবী (সাঃ) উপস্থিত ছিলেন। সেখানে এক ব্যক্তি তীরবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত হলেও সে রুকু সিজদা করে নামায সম্পন্ন করেছিল। হাসান বাসরী (রহঃ) বলেন, মুসলিমরা এ যাবৎ তাদের রক্তাক্ত ক্ষত নিয়েই নামায পড়ে আসছে। হযরত ইবনে উমার (রাঃ) একটি ফুসকুরি গেলে দিলে তা থেকে রক্ত বের হল। কিন্তু তিনি ওযু করলেন না। ইবনে আবী আওফা রক্তমাখা থুথু ফেললেন। অতঃপর তিনি তাঁর নামায সম্পন্ন করলেন। ইবনে উমার ওহাসান বলেন, কেউ শৃঙ্গ লাগিয়ে বদ-রক্ত বের করলে কেবল ঐ জায়গাটা ধুয়ে নেবে। এ ছাড়া ওযু-গোসল নেই। (বুখারী ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ১/৩৩৬)
পূর্বোক্ত তীরবিদ্ধ লোকটি ছিল একজন আনসারী। তার সঙ্গী এক মুহাজেরী তার রক্তাক্ত অবস্থা দেখে বলল, ‘সুবহানাল্লাহ্! (তিন তিনটে তীর মেরেছে?!) প্রথম তীর মারলে তুমি আমাকে জাগিয়ে দাওনি কেন?’ আনসারী বলল, ‘আমি এমন একটি সূরা পাঠ করছিলাম, যা সম্পূর্ণ না করে ছেড়ে দিতে পছন্দ করিনি!’ (আবূদাঊদ, সুনান ১৯৮নং)
৭▪মুর্দা গোসল দিলে; মহানবী (সাঃ) বলেন, “যে ব্যক্তি মুর্দা কে গোসল দেবে, সে যেন নিজে গোসল করে নেয়। আর যে ব্যক্তি জানাযা বহন করবে, সে যেন ওযু করে নেয়।” (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ ২/২৮০ প্রভৃতি) কিন্তু এই নির্দেশটি মুস্তাহাব। অর্থাৎ না করলেও চলে। তবে করা উত্তম। কারণ, গোসলদাতার দেহে নাপাকী লেগে যাওয়ার সন্দেহ্ থাকে তাই। তাই তো অন্য এক বর্ণনায় আছে; তিনি বলেন, “মুর্দাকে গোসল দিলে তোমাদের জন্য গোসল করা জরুরী নয়। কারণ তোমাদের মুর্দা তো আর নাপাক নয়। অতএব তোমাদের হাত ধুয়ে নেওয়াই যথেষ্ট।” (হাকেম, মুস্তাদরাক ১/৩৮৬, বায়হাকী ৩/৩৯৮)
হযরত উমার (রাঃ) বলেন, ‘আমরা মাইয়্যেতকে গোসল দিতাম। তাতে আমাদের মধ্যে কেউ কেউ গোসল করে নিত। আবার অনেকে করত না।’ (দারাক্বুত্বনী, সুনান ১৯১নং)
অবশ্য মাইয়্যেতকে গোসল দেওয়ার সময় তার শরমগাহে হাত লেগে থাকলে ওযু অবশ্যই নষ্ট হবে। আর জানাযা বহন করাতে ওযু নষ্ট হয় না। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্ ২৬/৯৬)
৮▪ মৃতদেহের পোষ্টমর্টেম করাতেও ওযু ভাঙ্গে না।
(ঐ ২৭/৪০)
৯▪ওযু করে মায়েরা যদি তাদের শিশুর পেশাব বা পায়খানা সাফ করে, তবে তা হাতে লাগলেও ওযু ভাঙ্গে না। অবশ্য পায়খানাদ্বার বা পেশাবদ্বার ধোয়ার সময় কোন দ্বারে হাত লাগলে ওযু নষ্ট হয়ে যায়। (ঐ ২২/৬২)
১০▪ কোনও নাপাক বস্তু (মানুষ বা পশুর পেশাব, পায়খানা, রক্ত প্রভৃতি)তে হাত বা পা দিলে ওযু ভাঙ্গে না। (ঐ ৩৫/৯৬)
১১▪ ওযু করার পর ধূমপান করলে ওযু নষ্ট হয় না। তবে ধূমপান করা অবশ্যই হারাম।
(ঐ ১৮/৯২-৯৩)
(ঐ ১৮/৯২-৯৩)
১২▪কোলন, কোহল বা স্পিরিট-মিশ্রিত আতর বা সেন্টব্যবহার করলে ওযুর কোন ক্ষতি হয় না। তবে তা ব্যবহার বৈধ নয়। (ফাতাওয়া ইসলামিয়্যাহ্, সঊদী উলামা-কমিটি ১/২০৩)
১৩▪ চুল, নখ ইত্যাদি সাফ করলে ওযু ভাঙ্গে না। (ফাতাওয়া ইবনে উষাইমীন ১/২৯২, বুখারী ১/৩৩৬) তদনুরুপ অশ্লীল কথা বললে, হাঁটুর উপর কাপড় উঠে এলে, মহিলার মাথা খোলা গেলে, কাউকে বা নিজেকে উলঙ্গ দেখলে ওযু নষ্ট হয় না।
দুধ পান করলে নামাযের পূর্বে কুল্লি করা মুস্তাহাব।
(বুখারী ২১১, মুসলিম, সহীহ ৩৫৮নং)
✅মনে রাখবেন দ্বীন (ইসলাম)হচ্ছে সহজ৷
( বুখারী ৩৯)আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
( বুখারী ৩৯)আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার উপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং (মধ্যপন্থার) নিকটে থাক, আশান্বিত থাক এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে
(‘ইবাদাত সহযোগে)
(‘ইবাদাত সহযোগে)
➥➥➥➥➥➥
🔰 তায়াম্মুম এর নিয়মাবলী:
♻তায়াম্মুম অর্থ,সংকল্প করা। পানি না পাওয়া গেলে ওজু বা গোসলের পরিবর্তে পাক মাটি ( ধুলো বালি) দ্বারা পবিত্রতা অর্জনের ইসলামী পদ্ধতিকে তায়াম্মুম বলে।
♻তায়াম্মুমের নির্দেশ মহান আল্লহ্ তাআলা দিয়েছেন। তিনি বলেন,
وَإِنْ كُنْتُمْ مَّرْضَى أَوْ عَلى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِّنْكُمْ مِّنَ الْغَائِطِ أَوْ لاَمَسْتُمُ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوْا مَاءً فَتَيَمَّمُوْا صَعِيْداً طَيِّباً فَامْسَحُوْا بِوُجُوْهِكُمْ وَأَيْدِيَكُمْ مِّنْهُ
অর্থাৎ, যদি তোমরা অসুস্থ হও অথবা সফরে থাক, কিংবা তোমাদের মধ্যে কেউপায়খানা করে আসে অথবা তোমরা স্ত্রী-সঙ্গম কর, অতঃপর পানি না পাও, তাহলে পাক মাটি দ্বারা তায়াম্মুম করে নাও; তোমাদের মুখমন্ডল ও হাতকে মাটি দ্বারা মাসাহ্ কর---।
(সুরা মায়েদা /৬)
(সুরা মায়েদা /৬)
♻সরল ও সহ্জ দ্বীনের নবী (সাঃ) বলেন, “সকল মানুষ (উম্মতের) উপর আমাদেরকে ৩টি বিষয়ের মাধ্যমে শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে; আমাদের কাতারকে করা হয়েছে ফিরিশ্তাবর্গের কাতারের মত, সারা পৃথিবীকে আমাদের জন্য মসজিদ করে দেওয়া হয়েছে এবং পানি না পাওয়া গেলে মাটিকে আমাদের জন্য পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ করা হয়েছে। (মুসলিম, মিশকাত ৫২৬নং)
♻আবূ হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার উপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং (মধ্যপন্থার) নিকটে থাক, আশান্বিত থাক এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে (‘ইবাদাত সহযোগে) সাহায্য চাও।(সহিহ বুখারীঃ৩৯)
নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ নিশ্চয়ই দ্বীন সহজ। দ্বীন নিয়ে যে বাড়াবাড়ি করে দ্বীন তার উপর জয়ী হয়। কাজেই তোমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং (মধ্যপন্থার) নিকটে থাক, আশান্বিত থাক এবং সকাল-সন্ধ্যায় ও রাতের কিছু অংশে (‘ইবাদাত সহযোগে) সাহায্য চাও।(সহিহ বুখারীঃ৩৯)
🔰যে অবস্থায় তায়াম্মুম করা বৈধ:
১▪একেবারেই পানি না পাওয়া গেলে অথবা পান করার মত থাকলে এবং ওযু-গোসলের জন্য যথেষ্ট পানি না পাওয়া গেলে।
হযরত ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) বলেন, আমরা নবী (সাঃ) এর সঙ্গে এক সফরে ছিলাম। এক সময় তিনি লোকেদের নিয়ে নামায পড়লেন। যখন তিনি নামায শেষ করলেন, তখন দেখলেন একটি লোক একটু সরে পৃথক দাঁড়িয়ে আছে। সে জামাআতে নামাযও পড়েনি। তিনি তাকে বললেন, “কি কারণে তুমি জামাআতে নামায পড়লে না?” লোকটি বলল, ‘আমি নাপাকে আছি, আর পানিও নেই।’ তিনি বললেন, “পাক মাটি ব্যবহার কর। তোমার জন্য তাই যথেষ্ট।” (বুখারী, মুসলিম, সহীহ মিশকাত ৫২৭নং)
তিনি আরো বলেন, “দশ বছর যাবৎ পানি না পাওয়া গেলে মুসলিমের ওযুর উপকরণ হল পাক মাটি। পানি পাওয়া গেলে গোসল করে নেওয়া উচিৎ। আর এটা অবশ্যই উত্তম।” (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, আহমাদ, মুসনাদ, মিশকাত ৫৩০নং)
অবশ্য আশে-পাশে বা সঙ্গীদের কারো নিকট পানি আছে কি না, তা অবশ্যই দেখে নিতে হবে। যখন একান্ত পানি পাওয়ার কোন আশাই থাকবে না, তখন তায়া ম্মু ম করে নামায পড়তে হবে।
২▪অসুস্থ থাকলে অথবা দেহে কোন প্রকার ক্ষত বা ঘা থাকলে এবং পানি ব্যবহারে তা বেড়ে যাওয়া বা সুস্থ হতে বিলম্ব হওয়ার আশঙ্কা হলে।
হযরত জাবের (রাঃ) বলেন, একদা আমরা কোন সফরে বের হ্লাম। আমাদের মধ্যে এক ব্যক্তির মাথায় পাথরের আঘাত লেগে ক্ষত হয়েছিল। এরপর তার স্বপ্ন দোষও হল। সে সঙ্গীদেরকে জিজ্ঞাসা করল, ‘আমার জন্য কি তায়াম্মুম বৈধ মনে কর?’ সকলে বলল, ‘তুমি পানি ব্যবহার করতে অক্ষম নও। অতএব তোমার জন্য আমরা তায়াম্মুম বৈধ মনে করি না।’ তা শুনে লোকটি গোসল করল এবং এর প্রতি ক্রি য়ায় সে মারা গেল। অতঃপর আমরা যখন নবী (সাঃ)-এর নিকট ফিরে এলাম তখন তাঁকে সেই লোকটার ঘটনা খুলে বললাম। তা শুনে তিনি বললেন, “ওরা ওকে মেরে ফেলল, আল্লাহ ওদেরকে ধ্বংস করুক! যদি ওরা জানত না, তবে জেনে কেন নেয়নি? অজ্ঞতার ওষুধ তো প্রশ্নই।” (সহীহ আবূদাঊদ, সুনান ৩২৫, ইবনে মাজাহ্, সুনান, দারাক্বুত্বনী, সুনান, মিশকাত ৫৩১নং)
৩▪পানি অতিরিক্ত ঠান্ডা হলে এবং তাতে ওযু-গোসল করাতে অসুখ হবে বলে দৃঢ় আশঙ্কা হলে, পরন্তু পানি গরম করার সুযোগ বা ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম বৈধ।
হযরত আম্র বিন আস (রাঃ) বলেন, যাতুস সালাসিল যুদ্ধ-সফরে এক শীতের রাতে আমার স্বপ্ন দোষ হল। আমার ভয় হল যে, যদি গোসল করি তাহলে আমি ধ্বংস হয়ে যাব। তাই আমি তায়াম্মুম করে সঙ্গীদেরকে নিয়ে (ইমাম হয়ে) ফজরের নামায পড়লাম। আমার সঙ্গীরা একথা নবী (সাঃ)-এর নিকটে উল্লেখ করলে তিনি বললেন, “হে আম্র! তুমি নাপাক অবস্থায় তোমার সঙ্গীদের ইমামতি করেছ?” আমি গোসল না করার কারণ তাঁকে বললাম। আরো বললাম যে, আল্লাহ তাআলার এ বাণীও আমি শুনেছি, তিনি বলেন, “তোমরা আত্মহ্ত্যা করো না। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি বড় দয়াশীল।” (কুরআন মাজীদ ৪/২৯)
একথা শুনে তিনি হাসলেন এবং আর কিছুই বললেন না। (বুখারী, সহীহ আবূদাঊদ, সুনান ৩২৩নং, আহমাদ, মুসনাদ,হাকেম, মুস্তাদরাক, দারাক্বুত্বনী, সুনান, ইবনে হিব্বান, সহীহ)
৪▪ পানি ব্যবহারে ক্ষতি না হলে এবং পানি নিকটবর্তী কোন জায়গায় থাকলেও তা আনতে জান, মাল বা ইজ্জতহানির আশঙ্কা হলে, পানি ব্যবহার করতে গিয়ে সফরের সঙ্গীদের সঙ্গ-ছাড়া হওয়ার ভয় হলে, বন্দী অবস্থায় থাকলে অথবা ( কুঁয়ো ইত্যাদি থেকে) পানি তোলার কোন ব্যবস্থা না থাকলে তায়াম্মুম করা বৈধ। কারণ উক্ত অবস্থাগুলো পানি না পাওয়ার মতই অবস্থা।
৫▪ পানি কাছে থাকলেও তা ওযুর জন্য ব্যবহার করলে পান করা, রান্না করা ইত্যাদি হবে না আশঙ্কা হলেও তায়াম্মুম বৈধ। (মুগনী, ফিকহুস সুন্নাহ্ উর্দু ১/৬১-৬২)
🔰 তায়াম্মুম নষ্ট হওয়ার কারন:
যে যে কারণে ওযু নষ্ট হয়, ঠিক সেই সেই কারণে তায়াম্মুমও নষ্ট হয়ে যায়। কারণ তায়াম্মুম হল ওযুর বিকল্প। এ ছাড়া যে অসুবিধার কারণে তায়াম্মুম করা হয়েছিল, সেই অসুবিধা দূর হয়ে গেলেই তায়াম্মুম নষ্ট হয়ে যায়। যেমন পানি না পাওয়ার কারণে তায়াম্মুম করলে পানি পাওয়ার সাথে সাথে তায়াম্মুম শেষ হয়ে যায়। অসুখের কারণে করলে, অসুখ দূর হয়ে যাওয়ার পর পরই আর তায়াম্মুম থাকে না।(ফিকহুস সুন্নাহ্ উর্দু ১/৬৩)
(বিঃদ্রঃ প্রত্যেকটি কথার দলিল যথাস্থানে দেয়া আছে)
➥➥➥➥➥➥
🔰গোসলের নিয়মাবলিঃ
গোসল আরবী শব্দ এর অর্থ ধৌত করা। শারঈ পরিভাষায় গোসলের অর্থঃ পবিত্রতা অর্জনের নিয়তে ওজু করে সর্বাঙ্গ ধৌত করা।
গোসল ২ প্রকার ফরজ(অপরিহার্য) ও মুস্তাহাব (অপরিহার্য নয়)
গোসল ২ প্রকার ফরজ(অপরিহার্য) ও মুস্তাহাব (অপরিহার্য নয়)
#ফরজঃ ঐ গোসলকে বলা হয় যা করা অপরিহার্য। বালেগ বয়সে নাপাক হলে গোসল করা ফরজ।যেমন আল্লহ বলেন,, وَ إِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوْا
যদি তেমরা নাপাক হয়ে থাক তাহলে গোসল কর।
[সুরা মায়িদা ৫:৬]
যদি তেমরা নাপাক হয়ে থাক তাহলে গোসল কর।
[সুরা মায়িদা ৫:৬]
#মুস্তাহাবঃ ঐ গোসলকে বলা হয়, যা অপরিহার্য নয়। কিন্তু করলে নেকী আছে। যেমন- জুম‘আর দিনে বা দুই ঈদের দিনে গোসল করা। সাধারণ গোসলের পূর্বে ওযূ করা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। সাইয়িদ সাবিক্ব একে ‘মানদূব’ (পসন্দনীয়) বলেছেন। [ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৪১]
গোসলের পদ্ধতিঃ
নাপাকীর গোসল করতে হলে গোসলের নিয়ত করে মুসলিম প্রথমে ৩ বার দুইহাত কব্জি পর্যন্ত ধুবে। অতঃপর বাম হাতের উপর পানি ঢেলে দেহের নাপাকী ধুয়ে ফেলবে। তারপর বাম হাতকে মাটি অথবা সাবান দ্বারা ধুয়ে নামাযের জন্য ওযু করার মত পূর্ণ ওযু করবে। অবশ্য গোসলের জায়গা পরিষ্কার না হলে পা দুটি গোসল শেষে ধুয়ে নেবে। ওযুর পর ৩ বার মাথায় পানি ঢেলে ভাল করে চুলগুলো ধোবে, যাতে সমস্ত চুলের গোড়ায় গোড়ায় পানি পৌঁছে যায়। তারপর সারা দেহে ৩ বার পানি ঢেলে ভালরুপে ধুয়ে নেবে।
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৪৩৫-৪৩৬ নং)
(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৪৩৫-৪৩৬ নং)
মহিলাদের গোসলও পুরুষদের অনুরুপ। অবশ্য মহিলার মাথার চুলে বেণী বাঁধা (চুটি গাঁথা) থাকলে তা খোলা জরুরী নয়। তবে ৩ বার পানি নিয়ে চুলের গোড়া অবশ্যই ধুয়ে নিতে হবে। (বুখারী, মিশকাত ৪৩৮নং) নখে নখপালিশ বা কোন প্রকার পুরু পেন্ট্ থাকলে তা তুলে না ফেলা পর্যন্ত গোসল হবে না। পক্ষান্তরে মেহেদী বা আলতা লেগে থাকা অবস্থায় গোসল হয়ে যাবে।ইংশা আল্লহ কপালে টিপ (?) থাকলে ছাড়িয়ে ফেলে (কপাল) ধুতে হবে। নচেৎ গোসল হবে না।
বীর্যপাত বা সঙ্গম-জনিত নাপাকী ও মাসিকের গোসল, অথবা মাসিক ও ঈদ, অথবা বীর্যপাত বা সঙ্গম-জনিত নাপাকী ও জুমআ বা ঈদের গোসল নিয়ত হলে একবারই যথেষ্ট। পৃথক পৃথক গোসলের দরকার নেই। (ফিকহুস সুন্নাহ্ উর্দু ৬০পৃ: দ্র:)
গোসলের পর নামাযের জন্য আর পৃথক ওযুর প্রয়োজন নেই। গোসলের পর ওযু ভাঙ্গার কোন কাজ না করলে গোসলের ওযুতেই নামায হয়ে যাবে। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, নাসাঈ, সুনান, ইবনে মাজাহ্, সুনান, মিশকাত ৪৪৫নং)
রোগ-জনিত কারণে যদি কারো লাগাতার বীর্য, মযী, স্রাব বা ইস্তিহাযার খুন ঝরে তবে তার জন্য গোসল ফরয নয়; প্রত্যেক নামাযের জন্য ওযুই যথেষ্ট। এই সকল অবস্থায় নামায মাফ নয়।
[আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ৫৬০-৫৬১ নং]
[আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, মিশকাত ৫৬০-৫৬১ নং]
প্রকাশ যে, গোসল, ওযু বা অন্যান্য কর্মের সময় নিয়ত আরবীতে বা নিজ ভাষায় মুখে উচ্চারণ করা বিদআত।
সতর্কতার বিষয় যে, নাপাকী দূর করার জন্য কেবল গা-ধোয়া বা গা ডুবিয়ে নেওয়া যথেষ্ট নয়। পূর্বে ওযু করে যথানিয়মে গোসল করলে তবেই পূর্ণ গোসল হয়। নচেৎ অনেকের মতে কুল্লি না করলে এবং নাকে পানি না নিলে গোসলই শুদ্ধ হবে না।
[আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ১/৩০৪]
[আলমুমতে’, শারহে ফিক্হ, ইবনে উষাইমীন ১/৩০৪]
✳[]সংক্ষেপেঃফরয গোসলের জন্য প্রথমে দু’হাতের কব্জি পর্যন্ত ধুবে ও পরে নাপাকী ছাফ করবে। অতঃপর ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ছালাতের ওযূর ন্যায় ওযূ করবে। অতঃপর প্রথমে মাথায় তিনবার পানি ঢেলে চুলের গোড়ায় খিলাল করে ভালভাবে পানি পৌঁছাবে। তারপর সারা দেহে পানি ঢালবে ও গোসল সম্পন্ন করবে।
[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৩৫][]
[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৪৩৫][]
জ্ঞাতব্য :
♻ গোসলের সময় মেয়েদের মাথার খোপা খোলার দরকার নেই। কেবল চুলের গোড়ায় তিনবার তিন চুল্লু পানি পৌঁছাতে হবে। অতঃপর সারা দেহে পানি ঢালবে। [মুসলিম, মিশকাত হা/৪৩৮।]
♻রাসূল (ছাঃ) এক মুদ্দ (৬২৫ গ্রাম) পানি দিয়ে ওযূ এবং অনধিক পাঁচ মুদ্দ (৩১২৫ গ্রাম) বা প্রায় সোয়া তিন কেজি পানি দিয়ে গোসল করতেন।
[ মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯; চার মুদ্দে এক ছা‘ হয়। ইরওয়া, উক্ত হাদীছের টীকা ১/১৭০ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/৯৬]
[ মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, ইরওয়াউল গালীল হা/১৩৯; চার মুদ্দে এক ছা‘ হয়। ইরওয়া, উক্ত হাদীছের টীকা ১/১৭০ পৃঃ; আবুদাঊদ হা/৯৬]
♻ নারী হৌক পুরুষ হৌক সকলকে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) পর্দার মধ্যে গোসল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।[ আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৪৭]
♻বাথরুমে বা পর্দার মধ্যে বা দূরে লোকচক্ষুর অন্তরালে নগ্নাবস্থায় গোসল করায় কোন দোষ নেই।[মুসলিম হা/৩৩৯; বুখারী হা/২৭৮; ঐ, মিশকাত হা/৫৭০৬-০৭; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৫৮।]
♻ ওযূ সহ গোসল করার পর ওযূ ভঙ্গ না হ’লে পুনরায় ওযূর প্রয়োজন নেই।
[আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৪৫।]
[আবুদাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/৪৪৫।]
♻ ফরয গোসলের পূর্বে নাপাক অবস্থায় পবিত্র কুরআন স্পর্শ করা যাবে না। তবে মুখে কুরআন পাঠ করা এবং মসজিদে প্রবেশ করা জায়েয আছে।[ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৫১-৫২।]
°° সাধারণ অপবিত্রতায় কুরআন স্পর্শ করা বা বহন করা জায়েয আছে।°°
[ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৪৩।]
[ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৪৩।]
মুস্তাহাব গোসল সমূহ :
♻ জুম‘আর ছালাতের পূর্বে গোসল করা।
[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৫৩৭-৩৯, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়-৩, ‘মাসনূন গোসল’ অনুচ্ছেদ-১১]
[মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৫৩৭-৩৯, ‘পবিত্রতা’ অধ্যায়-৩, ‘মাসনূন গোসল’ অনুচ্ছেদ-১১]
♻মোর্দা গোসল দানকারীর জন্য গোসল করা।
[ইবনু মাজাহ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৪১।]
[ইবনু মাজাহ, তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/৫৪১।]
♻ ইসলাম গ্রহণের সময় গোসল করা।[তিরমিযী, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৫৪৩।]
♻ হজ্জ বা ওমরাহর জন্য ইহরাম বাঁধার পূর্বে গোসল করা।
[দারাকুৎনী, হাকেম, ইরওয়াউল গালীল হা/১৪৯, ১/১৭৯ পৃঃ।]
[দারাকুৎনী, হাকেম, ইরওয়াউল গালীল হা/১৪৯, ১/১৭৯ পৃঃ।]
♻আরাফার দিন গোসল করা।
[বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৪৬, ‘ফায়েদা’ দ্রষ্টব্য; নায়ল ১/৩৫৭।]
[বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৪৬, ‘ফায়েদা’ দ্রষ্টব্য; নায়ল ১/৩৫৭।]
♻দুই ঈদের দিন সকালে গোসল করা।
[ বায়হাক্বী, ইরওয়া হা/১৪৬, ‘ফায়েদা’ দ্রষ্টব্য; নায়ল ১/৩৫৭]
♻ গোসলের পূর্বে উযূ করা।
বিস্তারিত ⤵
وَقَوْلِ اللهِ تَعَالَى )وَإِنْ كُنْتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُوا وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمْ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ مِنْهُ مَا يُرِيدُ اللهُ لِيَجْعَلَ عَلَيْكُمْ مِنْ حَرَجٍ وَلَكِنْ يُرِيدُ لِيُطَهِّرَكُمْ وَلِيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكُمْ لَعَلَّكُمْ تَشْكُرُونَ( وَقَوْلِهِ جَلَّ ذِكْرُهُ )يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَقْرَبُوا الصَّلاَةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى حَتَّى تَعْلَمُوا مَا تَقُولُونَ وَلاَ جُنُبًا إِلاَّ عَابِرِي سَبِيلٍ حَتَّى تَغْتَسِلُوا وَإِنْ كُنْتُمْ مَرْضَى أَوْ عَلَى سَفَرٍ أَوْ جَاءَ أَحَدٌ مِنْكُمْ مِنَ الْغَائِطِ أَوْ لَامَسْتُمْ النِّسَاءَ فَلَمْ تَجِدُوا مَاءً فَتَيَمَّمُوا صَعِيدًا طَيِّبًا فَامْسَحُوا بِوُجُوهِكُمْ وَأَيْدِيكُمْ إِنَّ اللهَ كَانَ عَفُوًّا غَفُورًا. (
★এ প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ কিন্তু যদি তোমরা অপবিত্র থাক তবে উত্তমরূপে পবিত্র হবে। আর যদি তোমরা পীড়িত হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা সেরে আসে কিংবা তোমরা স্ত্রী সহবাস কর, তারপর পানি না পাও, তবে তোমরা পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করবে-ঐ মাটি দিয়ে নিজেদের মুখমন্ডল ও হাত মাসহ করে নিবে। আল্লাহ্ তোমাদের অসুবিধায় ফেলতে চান না, বরং তিনি তোমাদের পাক-পবিত্র রাখতে চান এবং তোমাদের প্রতি তাঁর নিয়ামাত পূর্ণ করতে চান, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
(সূরাহ্ আল-মায়িদাহ্ ৫/৬)
(সূরাহ্ আল-মায়িদাহ্ ৫/৬)
হে যারা ঈমান এনেছ! তোমরা নেশায় মত্ত অবস্থায় সালাতের কাছেও যেও না যতক্ষণ না তোমরা যা বল তা বুঝতে পার; আর অপবিত্র অবস্থায় নয় যতক্ষণ পর্যন্ত না তোমরা গোসল কর, তবে মুসাফির অবস্থার কথা স্বতন্ত্র। আর যদি তোমরা অসুস্থ হও কিংবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা থেকে এসে থাকে অথবা তোমরা স্ত্রী সহবাস করে থাক এবং পানি না পাও, তবে পবিত্র মাটি দিয়ে তায়াম্মুম করে নাও- মাসেহ করবে স্বীয় মুখমন্ডল ও হাত। নিশ্চয় আল্লাহ্ হলেন অতিশয় মার্জনাকারী, পরম ক্ষমাশীল। (সূরাহ্ আন-নিসা ৪/৪৩)
★ ‘আয়িশাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন জানাবাতের গোসল করতেন, তখন প্রথমে তাঁর হাত দু’টো ধুয়ে নিতেন। অতঃপর সালাতের উযূর মত উযূ করতেন। অতঃপর তাঁর আঙ্গুলগুলো পানিতে ডুবিয়ে নিয়ে চুলের গোড়া খিলাল করতেন। অতঃপর তাঁর উভয় হাতের তিন আজলা পানি মাথায় ঢালতেন। তারপর তাঁর সারা দেহের উপর পানি ঢেলে দিতেন।
(২৬২, ২৭২; মুসলিম ৩/৯, হাঃ ৩১৬, আহমাদ ২৫৭০৪)
(২৬২, ২৭২; মুসলিম ৩/৯, হাঃ ৩১৬, আহমাদ ২৫৭০৪)
➥➥➥➥➥➥
🔰 নারী-পুরুষের সলাত আদায়ের সহিহ পদ্ধতিসমূহঃ
📖১- বড় পবিত্রতা বা ফরয গোসলের পূর্বে অযু করতে হবে তারপর আর ওজু না ভাঙলে ফরয গোসলের পরে নতুন করে অযু করার দরকার নেই ।
(বুখারী হাদীস নং ২৪৮- পৃষ্ঠা ১৩৪)
(বুখারী হাদীস নং ২৪৮- পৃষ্ঠা ১৩৪)
📖২- ছোট পবিত্রতা বা অযুর সময় ঘাড় মাসাহ করা যাবে না, মাথা মাসাহ করতে হবে ১বার এবং তার পদ্ধতি হচ্ছে ২হাতকে মাথার সামনে থেকে পিছনে নিয়ে যেতে হবে এবং পিছন থেকে সামনে আনতে হবে তারপর ২তর্জনী আঙ্গুল ২কানের ছিদ্রের মধ্যে দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং তারপর কানের ছিদ্রের উপরের ভাজ তর্জনী আঙ্গুল দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে এবং শেষে ২বৃদ্ধাঙ্গুল দারা ২কানের পিছনে মূছে দিতে হবে। অন্যান্য অঙ্গগুলো ৩বার করে ধুতে হবে এবং হাত ও পায়ের আঙ্গুলগুলোর মধ্যে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে ভালকরে খিলাল করে পরিষ্কার করতে হবে। মুখে পানি নিয়ে গড়গড়া করতে হবে এবং নাকে পানি নেওয়ার সময় পানি নাকের মধ্যে টেনে নিতে হবে তারপর নাক ঝেরে ফেলতে হবে।(বুখারী হাদীস নং ১৬৪-১৬৫-পৃষ্ঠা ৯৭-৯৮)
📖৩- স্বলাতে দাড়িয়ে অন্তরে নিয়ত করতে হবে কিন্তু মুখে পড়তে হবে না(কোন ব্যক্তি স্বলাত আদায় করবে বলেই সে স্বলাতে দাড়িয়েছে, এটাই তার নিয়ত। সে যদি স্বলাতের নিয়ত না করতো তবে সে অযুও করতো না এবং স্বলাতেও দাঁড়াতো না আর সবচেয়ে বড় কথা মুখে নিয়ত করার কোন প্রমাণ নেই সুতরাং একাজ বিদয়াত)।(বুখারী ৭৯৩, ৮০৩ -পৃষ্ঠা ৩৮৫, ৩৯০)
ফজর বা যোহর বা আসরের ফরজ সলাত বা সুন্নাত সলাত আদায় করছি মনে মনে এই সংকল্প করে আল্লাহু আকবার দিয়ে সলাত আরম্ভ করবে।
ফজর বা যোহর বা আসরের ফরজ সলাত বা সুন্নাত সলাত আদায় করছি মনে মনে এই সংকল্প করে আল্লাহু আকবার দিয়ে সলাত আরম্ভ করবে।
📖৪- তাকবীরে তাহরীমা অর্থাৎ আল্ল-হু আকবার বলে কাধ বরাবর বা কাঁন বরাবর হাত উঠিয়ে(তবে কাঁন বা কাঁনের লতি স্পর্শ করতে হবে না) বুকে হাত বাধতে হবে।
(নাসাঈ ১১০২- পৃষ্ঠা ৩৫৩, বুখারী ৭৩৮, ৭৪০ - পৃষ্ঠা ৩৫৪, ৩৫৭। আবু দাউদ ৭৫৯ - পৃষ্ঠা ৫১০)
📖৫- স্বলাতের কাতারে একে অন্যের পায়ের সাথে পা এবং কাধের সাথে কাধ মিলীয়ে দাড়াতে হবে অর্থাৎ একে অন্যের মাঝে কোন ফাকা রাখা যাবে না।
(বুখারী হাদীস নং ৭২৫ - পৃষ্ঠা ৩৪৯)
📖৬- স্বলাতে দাড়িয়ে কোন কাজ ইমামের আগে বা ইমামের সাথে সাথে করা যাবে না বরং ইমাম করার পর করতে হবে।
(বুখারী হাদীস নং ৬৮৯, ৬৯১ - পৃষ্ঠা ৩৩৩-৩৩৪)
📖৭- একাকী বা ইমামের পিছনে, সরবে কিরাত বা নিরবে কিরাত সর্বোবস্থায় সবাইকে সূরা ফাতিহা পড়তে হবে।(মুসলিম হাদিস নং ৭৬৪, বুখারী হাদীস নং ৭৫৬ - পৃষ্ঠা ৩৬৭, তিরমিযী ৩১১ – পৃষ্ঠা ২৭৪)
📖৮- সরবে কিরাতের স্বলাতে সূরা ফাতিহা শেষে ইমামের সাথে জোরে আমীন বলতে হবে এবং নিরবে কিরাতের স্বলাতে সূরা ফাতিহা শেষে নিরবে আমীন বলতে হবে।(বুখারী ৭৮০ - পৃষ্ঠা ৩৭৮)
📖৯- রুকু করার আগে রফউল ইয়াদাইন করতে হবে(২হাতকে প্রথম তাকবীরে তাহরীমায় উঠানোর মতো কাধ বরাবর বা কাঁন বরাবর ঊঠাতে হবে)।
(বুখারী হাদীস ৭৩৫-পৃষ্ঠা ৩৫৩, মুসলিম ৭৪৭ পৃষ্ঠা-৩৭৫)
📖১০- রুকু করার সময় পিঠ একেবারে সোজা করতে হবে।
(বুখারী হাদীস নং ৭৯১, ৭৯৩ - পৃষ্ঠা ৩৮৪-৩৮৫)
(বুখারী হাদীস নং ৭৯১, ৭৯৩ - পৃষ্ঠা ৩৮৪-৩৮৫)
📖১১- রুকু থেকে উঠে রফউল ইয়াদাইন করতে হবে এবং ধীর-স্থিরতার সাথে অবশ্যই সোজা হয়ে দাড়াতে হবে নইলে স্বলাত হবে না।
(বুখারী হাদীস নং ৭৩৫,। ৮০০ - পৃষ্ঠা ৩৫৩,। ৩৮৮)
📖১২- সেজদায় যাওয়ার সময় আগে ২ হাত মাটিতে রাখতে হবে, অবশ্য হাঁটু আগে রাখলেও চলে।
(আবু দাউদ ৮৪০ - পৃষ্ঠা ৫৭৯)
📖১৩- সেজদার সময় ২পা মিলে যাবে, ২হাত মাটীতে কাধ বরাবর বা কাঁন বরাবর থাকবে, আঙ্গুলের মাঝে কোন ফাকা থাকবে না। ২হাতের বাহুকে কুকুরের মতো মাটীতে বিছিয়ে দেওয়া যাবে না এবং হাতকে পেট এবং পা থেকে এতোটা দূরে রাখতে হবে যাতে পেটের নিচ দিয়ে ১টা ছাগলের বাচ্চা যাওয়ার মতো জায়গা থাকে।
(বুখারী ৮২২, ৮০৭ – পৃষ্ঠা ৪০০, ৩৯৪, মুসলিম ৯৯৪ – পৃষ্ঠা ৪৬৩, নাসাঈ ১১০২- পৃষ্ঠা ৩৫৩, সহীহ্ ইবনে খুযাইমা)
(বুখারী ৮২২, ৮০৭ – পৃষ্ঠা ৪০০, ৩৯৪, মুসলিম ৯৯৪ – পৃষ্ঠা ৪৬৩, নাসাঈ ১১০২- পৃষ্ঠা ৩৫৩, সহীহ্ ইবনে খুযাইমা)
📖১৪- রুকু এবং সেজদা ধীর-স্থিরতার সাথে করতে হবে। কাঁকের মতো দ্রুত ঠোকর মারলে স্বলাত হবে না।
(বুখারী হাদীস নং ৭৯১, ৭৯৩ - পৃষ্ঠা ৩৮৪-৩৮৫)
📖১৫- সেজদাতে কপালের সাথে নাকও অবশ্যই মাটীতে রাখতে হবে, নাক উপরে উঠে গেলে হবে না।
(বুখারী হাদীস নং ৮১২ - পৃষ্ঠা ৩৯৬, আবু দাউদ ৮৯৪ – পৃষ্ঠা ৩২)
📖১৬- প্রথম সেজদা থেকে উঠে সোজা হয়ে বসতে হবে এবং এ সময় পঠনীয় যে দোয়া রয়েছে (রব্বিগফিরলি রব্বিগফিরলি) তা অবশ্যই বলতে হবে।
(বুখারী হাদীস নং ৮০১ - পৃষ্ঠা ৩৮৮.। আবু দাউদ ৮৫০, ৮৭৪ - পৃষ্ঠা ৫)
📖১৭- স্বলাতের মধ্যে ১ বা ৩ রাকাতের সময় দ্বিতীয় সেজদা শেষে কিছুসময় বসতে হবে তারপর ২ হাত জমিনের উপর ভর করে উঠতে হবে।
(বুখারী হাদীস নং ৮২৪ - পৃষ্ঠা ৪০১)
📖১৮- স্বলাত যদি ২ রাকাতের বেশী হয় তবে ২য় রাকাতের বৈঠক শেষ করে উঠে আবার রফউল ইয়াদাইন করতে হবে।
(বুখারী হাদীস নং ৭৩৯ - পৃষ্ঠা ৩৫৫)
📖১৯- ২ রাকাতের বেশী স্বলাতের ক্ষেত্রে শেষ বৈঠকে তাওয়াররুক করতে হবে অর্থাৎ ডান পা খাড়া রেখে বাম পাকে ডান পায়ের ভীতরে ঢুকিয়ে নিতম্বের উপর বসতে হবে।
(বুখারী হাদীস ৮২৮ – পৃষ্ঠা ৪০৩)
📖২০- তাশাহুদের বৈঠকে সবসময় তর্জনী আঙ্গুল নাড়াতে হবে এবং চোখ তর্জনী আঙ্গুলের দিকে থাকবে।
(মিশকাত ৯১৩ - পৃষ্ঠা ৫৩৯, নাসাঈ ১১৬০, ১১৫৯ - পৃষ্ঠা ৩৭০, মুসলিম ১১৯৬-১১৯৮ – পৃষ্ঠা ৫৫, তিরমিযী ২৯৪, ৩৫৫৭ – পৃষ্ঠা ২৫৭, ৪১৪)
📖২১- পুরো স্বলাতের সময় চোখ সেজদার জায়গায় রাখতে হবে শুধু তাশাহুদের বৈঠকে চোখ তর্জনী আঙ্গুলের দিকে রাখতে হবে। (বাইহাকী, হাকেম)
📖২২- সালাম দিয়ে স্বলাত শেষ হয়ে যাবে।
(বুখারী হাদীস নং ৮৩৭ - পৃষ্ঠা ৪০৮, মুসলিম ৯৯৭ – পৃষ্ঠা ৪৬৪)
(বুখারী হাদীস নং ৮৩৭ - পৃষ্ঠা ৪০৮, মুসলিম ৯৯৭ – পৃষ্ঠা ৪৬৪)
📖২৩- সলাতের পদ্ধতিতে নারি এবং পুরুষের কোন পার্থক্য নেই, সলাত আদায়ের পদ্ধতি উভয়ের জন্য একই রকম। (বুখারি হাদিস ৬৩১)
🖋মহান আল্লহ বলেন,,
((সুরা আহযাব ৩৬))
وَ مَا کَانَ لِمُؤۡمِنٍ وَّ لَا مُؤۡمِنَۃٍ اِذَا قَضَی اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗۤ اَمۡرًا اَنۡ یَّکُوۡنَ لَہُمُ الۡخِیَرَۃُ مِنۡ اَمۡرِہِمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیۡنًا ﴿ؕ۳۶﴾
((সুরা আহযাব ৩৬))
وَ مَا کَانَ لِمُؤۡمِنٍ وَّ لَا مُؤۡمِنَۃٍ اِذَا قَضَی اللّٰہُ وَ رَسُوۡلُہٗۤ اَمۡرًا اَنۡ یَّکُوۡنَ لَہُمُ الۡخِیَرَۃُ مِنۡ اَمۡرِہِمۡ ؕ وَ مَنۡ یَّعۡصِ اللّٰہَ وَ رَسُوۡلَہٗ فَقَدۡ ضَلَّ ضَلٰلًا مُّبِیۡنًا ﴿ؕ۳۶﴾
মহান আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন নির্দেশ দিলে কোন মুমিন পুরুষ ও নারীর জন্য নিজদের ব্যাপারে অন্য কিছু এখতিয়ার করার অধিকার থাকে না; আর যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করল সে স্পষ্টই পথভ্রষ্ট হবে।
🖋নবী ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াছাল্লামের জীবনাদর্শকে পূর্ণাঙ্গরূপে মেনে নেওয়াই একজন মুমিনের কর্তব্য। তার জীবনাদর্শের বাইরে যাওয়ার চিন্তা করা মুমিন কল্পনা করতে পারেন না। সুন্নাতের বাইরে যাওয়াকে তিনি তার আখিরাতের ঝুঁকি মনে করেন। মুমিন জায়েয না-জায়েযের বাহাসে লিপ্ত না হয়ে হুবহু নবীর আদর্শের উপর থাকাকেই কর্তব্য মনে করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদীস তাকে এক সুঁতো পরিমাণ বাইরে যেতে দেয় না। কদাচিৎ এমন হয়ে গেলে তিনি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন:
«ما من نبى بعثه الله فى أمة قبلى إلا كان له من أمته حواريون وأصحاب يأخذون بسنته ويقتدون بأمره ثم إنها تخلف من بعدهم خلوف يقولون ما لا يفعلون ويفعلون ما لا يؤمرون فمن جاهدهم بيده فهو مؤمن ومن جاهدهم بلسانه فهو مؤمن ومن جاهدهم بقلبه فهو مؤمن وليس وراء ذلك من الإيمان حبة خردل ». )
صحيح مسلم، كتاب الايمان، باب كون النهي عن المنكر من الايمان...، رقم:188)
صحيح مسلم، كتاب الايمان، باب كون النهي عن المنكر من الايمان...، رقم:188)
‘‘আল্লাহ তা‘আলা আমার পূর্বে যখনই কোনো জাতির মাঝে নবী প্রেরণ করেছেন তখনই উম্মাতের মধ্যে তার এমন হাওয়ারী ও সাথী দিয়েছেন, যারা তাঁর আদর্শ অনুসরণ করে চলতেন, তার নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতেন। অনন্তর তাদের পরে এমনসব লোক তাদের স্থলাভিষিক্ত হয়েছে, যারা মুখে যা বলে বেড়াত কাজে তা পরিণত করত না, আর সেসব কর্ম সম্পাদন করত যেগুলোর জন্য তারা আদিষ্ট ছিল না। এদের বিরুদ্ধে যারা হাত দ্বারা জিহাদ করবে তারা মুমিন, যারা এদের বিরুদ্ধে মুখের কথা দ্বারা জিহাদ করবে তারাও মুমিন এবং যারা এদের বিরুদ্ধে অন্তরের ঘৃণা দ্বারা জিহাদ করবে তারাও মুমিন। এর বাইরে সরিষার দানা পরিমানও ঈমান নেই।’
[সহীহ মুসলিম, ঈমান অধ্যায়, অনুচ্ছেদ: মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা ঈমানের অঙ্গ....,নং: ১৮৮।]
🖋মহান আল্লহ আরও বলেন,
فَاِنۡ تَوَلَّوۡا فَاِنَّمَا عَلَیۡکَ الۡبَلٰغُ الۡمُبِیۡنُ ﴿۸۲﴾
সুতরাং যদি তারা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে(মুখ ফিরিয়ে নেয়), তবে তোমার দায়িত্ব তো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া।
[সুরা আন নাহল আয়াত ৮৩]
(তাওহিদ পাব্লিকেসনের থেকে হাদিসের নাম্বার মিলিয়ে দেখা যেতে পারে)
No comments:
Post a Comment