পুরুষের ভাগ্যে সাধারণতঃ তিন প্রকার স্ত্রী জোটে।
১। কারো ভাগ্যে জোটে প্রভু! ফলে সে স্ত্রীর নিকট স্ত্রৈণ হয়। নিহাতই বিবির গোলাম হয়ে তার আঁচল ধরে সংসার করে। বিবি যেমন বলে ঠিক তেমনি চলে। দাড়িকে ‘ছিঃ’ করলে চট্ ক’রে গাল তেল পারা করে। সিনেমায় যাওয়ার বায়না ধরলে শতখুশী হয়ে স্ত্রীর পশ্চাতে পশ্চাতে চলে। দ্বীন শিখতে, লেখাপড়া করতে বাধা দিলে তাই মানে। মা-বাপকে দেখতে মানা করলে তাই শোনে। ঘরে থাকে সে, আর বাজার করে বিবি। মাছ ধরে সে, ভাগ করে বিবি! আল্লাহর অবাধ্যাচরণ করেও বিবির বাধ্য থেকে সুখানুভব করে। কোন বিষয়ে স্ত্রীকে শাসন করার কথা কল্পনাই করা যায় না, উল্টে সেই স্বামীকে দস্ত্তরমত শাসিয়ে থাকে; এমন মেয়ে কোকিলবধূ হয়, এমনকি নিজেরও যত্ন নেয় না সে।
এমন স্ত্রী স্বামীকে যা বলে স্বামী তা ধ্রুব সত্য বলে মেনে তাকে ফিরিশ্তার মত বিশ্বাস করে এবং যার বিরুদ্ধে বলে তাকে পাকা দুশমন মনে করে। স্বামীর সুস্থ বিবেককে একেবারে হজম করে ফেলে। কোন ভুল হলে কথায় এবং কখনও দৈহিক আঘাতও দিয়ে থাকে স্বামীকে! অথচ এমন গোবেচারী মুসলিম হলে সেই কষ্ট দেখে তার বেহেশ্তী স্ত্রী (হুর)গণ ঐ স্ত্রীকে অভিশাপ দিয়ে বলতে থাকে ‘ওকে কষ্ট দিস্ না, আল্লাহ তোকে ধবংস করুক! ও তো তোর নিকট ক’দিনকার মেহমানমাত্র। অদূর ভবিষ্যতে তোকে ছেড়ে ও আমাদের কাছে এসে যাবে।’’[1]
এমন সংসারে শান্তি কোথায়? কথায় বলে, ‘রাজার দোষে রাজ্য নষ্ট প্রজা কষ্ট পায়, আর নারীর দোষে সংসার নষ্ট শান্তি চলে যায়।’
২। কারো ভাগ্যে স্ত্রী হয় নিহাতই চরণের দাসী। ফুটবলের মত যে দিকেই লাথি খায়, সে দিকে গড়িয়ে যায়। কত নির্যাতন সহ্য করে দাসীর মতই। স্বামী ছাড়া স্বামীর মা-বোনও তাকে কষ্ট দিয়ে থাকে। ‘তোমার জন্য দাসী আনতে চললাম মা’ কথাকে বাস্তবায়ন করে স্বামী। সময়ে খেতে পায় না কাজের চাপে, সুন্দর পরতে পায় না কথার চোটে। অথচ স্ত্রীর উপর কর্তৃত্ব থাকলেও অবৈধ কর্তৃত্ব নেই। এর জন্যও জবাবদিহি করতে হবে স্বামীকে।
৩। তৃতীয় প্রকার স্ত্রী স্বামীর জন্য অতি উত্তম বন্ধু সরূপ। এমন স্ত্রীর নিকট স্বামী শ্রদ্ধা ও সমীহ পায়, ভক্তি ও ভালোবাসা পায়, পরামর্শ ও সদুপদেশ পায়। এই হল সেই আদর্শ স্ত্রী, যার জন্য হাদীস শরীফে বলা হয়েছে ‘‘জগতের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্পদ।’’[2]
প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,
أَربَعٌ منَ السَّعَادَة : المرأَةُ الصَّالحَةُ وَالمسكَنُ الوَاسعُ وَالجَارُ الصَّالِحُ وَالمَركَبُ الهَنيءُ، وَأَربَعٌ منَ الشَّقَاوَة : الجارُ السُّوء وَالمرأَةُ السُّوء وَالمسكَنُ الضَّيِّقُ وَالمركَبُ السُّوء.
‘‘পুরুষের জন্য সুখ ও সৌভাগ্যের বিষয় হল চারটি; সাধবী নারী, প্রশস্ত বাড়ি, সৎ প্রতিবেশী এবং সচল সওয়ারী (গাড়ি)। আর দুখ ও দুর্ভাগ্যের বিষয়ও চারটি; অসৎ প্রতিবেশী, অসতী স্ত্রী, অচল সওয়ারী (গাড়ি) এবং সংকীর্ণ বাড়ি।[3]
‘‘সৌভাগ্যের স্ত্রী সেই; যাকে দেখে স্বামী মুগ্ধ হয়। সংসার ছেড়ে বাইরে গেলে স্ত্রী ও তার সম্পদের ব্যাপারে নিশ্চিন্ত থাকে। আর দুর্ভাগার স্ত্রী হল সেই; যাকে দেখে স্বামীর মন তিক্ত হয়, যে স্বামীর উপর জিভ লম্বা করে (লানতান করে) এবং সংসার ছেড়ে বাইরে গেলে ঐ স্ত্রী ও তার সম্পদের ব্যাপারে সে নিশ্চিন্ত হতে পারে না।’’[4]
-------------------------------------
[1] (তিরমিযী, ইমা, প্রভৃতি,আযি ২৮৪পৃঃ) [2] (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৩৪১৩নং) [3] (আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২৮২নং) [4] (ঐ ১০৪৭নং)
-------------------------------------
[1] (তিরমিযী, ইমা, প্রভৃতি,আযি ২৮৪পৃঃ) [2] (সহীহ আল-জা-মিউস সাগীর অযিয়াদাতুহ ৩৪১৩নং) [3] (আস-সিলসিলাতুস সহীহাহ ২৮২নং) [4] (ঐ ১০৪৭নং)
No comments:
Post a Comment