উটের মূত্র পান সংক্রান্ত সহিহ বুখারির একটি হাদিস নিয়ে ইসলাম বিরোধী নাস্তিকদের আজেবাজে ঠাট্টা শুনে নাস্তিকরা তোপ হাসে মজা নেয় ই ... অনেক মুসলমানও এ বিষয়টা বুঝতে না পেরে হতাশ হয়ে তাদের যুক্তির হাসি ঠাট্টার নিকট পরাজয় বরন করেন!
মূলত না জানার কারনেই এ সমস্যায় মুসলমানরা পতিত হয়। আরেকটি বিষয় হচ্ছে কোন নাস্তিক বা ইসলাম বিরোধী কখনও ইসলামিক পণ্ডিতদের কাছে গিয়ে জানতে চায় না, তারা তাদের কাছেই যুক্তি তর্ক পেশ করে যারা জানে না। ফলে তারা খুব মজা পায় আর ভাবে তারাই জয়ী আর ইসলাম পরাজিত।
প্রথমত মহান আল্লাহর বানি দিয়ে শুরু করি।
মহান আল্লাহ বলেন :
সূরা আল আহযাব:36 - আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোন কাজের আদেশ করলে কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর সে বিষয়ে ভিন্ন ক্ষমতা নেই যে, আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে সে প্রকাশ্য পথভ্রষ্ট তায় পতিত হয়।
সহিহুল বুখারী যেভাবে বর্ণনা করা হয়েছে:::
ক্বাতাদাহ রহঃ হতে বর্নিত যে, আনাস রাঃ তাদেরকে বলেছেন, উকল এবং উরাইনাহ গোত্রের কতিপয় লোক মাদীনাতে রাসুল সাঃ এর কাছে এসে কালেমা পড়ে ইসলাম গ্রহণ করল।
এর পর তারা নাবী সাঃ কে বলল, হে আল্লাহর নাবী! আমরা দুগ্ধ পানে বেঁচে থাকি, আমরা কৃষক নই। তারা মাদিনার আবহাওয়া নিজেদের জন্য অনুকূল বলে মনে করল না। তাই রাসুলুল্লাহ সাঃ তাদেরকে একজন রাখাল সহ কতগুলো উট নিয়ে মাদিনার বাইরে যেতে এবং ওইগুলোর দুধ ও প্রস্রাব পান করার নির্দেশ দিলেন।
তারা যাত্রা করে হাররা এর নিকট পৌঁছে ইসলাম ত্যাগ করে আবার কাফির হয়ে গেল এবং নাবী সাঃ এর রাখালকে হত্যা করে উটগুলো তাড়িয়ে নিয়ে গেলো।
নাবী সাঃ এর কাছে এ খবর পৌঁছলে তিনি তাদের খোঁজে তাদের পিছে লোক পাঠালেন। তাদেরকে আনা হলে, তিনি তাদের প্রতি কঠিন দণ্ডাদেশ প্রদান করলেন।
সাহাবাগণ লৌহ শলাকা দিয়ে তাদের চোখ তুলে দিলেন এবং তাদের হাত কেটে দিলেন। এরপর হাররার এক প্রান্তে তাদেরকে ফেলে রাখা হল। শেষ পর্যন্ত তাদের এ অবস্থায়ই মৃত্যু হল।
ক্বাতাদাহ রাঃ বলেন, আমাদের কাছে খবর পৌঁছেছে যে, এ ঘটনার পর নাবী সাঃ প্রায়ই লোকজনকে সাদাকাহ প্রদান করার জন্য উৎসাহ দিতেন এবং মুসলা থেকে বিরত রাখতেন।
আধুনিক প্রকাশনী ৩৮৭২, ইসলামিক ফাঊন্ডেশন ৩৮৭৫, তাওহীদ পাবলিকেশন ৪১৯২।
কেউ কেউ বলেন যে ঘটনাটা কিসাস এর বিধান নাযিল হওয়ার পুর্বের।
যাইহোক, এঘটনা থেকে আমরা দেখি যে,
উটের মূত্র পানের নির্দেশ রাসুল সাঃ এর সাহাবীদের উপর নয় । এবং ওই সকল লোকের অসুস্থতার কারনে চিকিৎসা হিসেবে তাদের উপযোগী তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা হিসেবে ই নির্দেশ দিয়েছেন।
আজকাল বহু ঔষধ তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন প্রাণীর দেহ কোষ থেকে, লালা থেকে,শুকুরের চর্বি থেকে, সাপের বিষ এবং জঘন্য অনেক কিছু থেকে আমরা দিব্যি সেগুলো গ্রহণ করছি। আর যারা এই ধরনের পোষ্ট করছে তারা ইসলাম সম্পর্কে একবারেই না জানা মুফতি অথচ ভিতরে অহংকারে পরিপূর্ণ।
শেষকথা:::
হাদিস দুটিতে বিশেষ একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে এবং সেটি সেই ঘটনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। এটি সার্বজনীন কোন উপদেশ বাণী নয়। কোরআনে যেমন মধুর ব্যাপারে সার্বজনীন একটি বাণী আছে, “In honey there is a healing,” হাদিসে “In camel’s urine there is a healing” বলে কোন বাণী নেই বা মুসলিমদেরকে উটের মূত্র পান করার জন্য উপদেশও দেয়া হয়নি। অতএব যারা উটের মূত্র পান করে মাতাল হয়ে উপহাস-বিদ্রুপ করছে তারা নিজেদেরকেই বোকা বানিয়েছে!
No comments:
Post a Comment