Saturday, August 24, 2019

কুরআন খতম করে বকশিয়ে দেওয়া কি জায়েজ?

কুরআন খতম করে হুজুরকে দিয়ে বকশিয়ে দেওয়ার কোন বিধান কি রাসুলের (ﷺ) সুন্নাহয় আছে কি ??
.
আমাদের দেশের অধিকাংশ এলাকায় দেখা যায় যে, অনেকে কুর’আন খতম করার পর কিছু টাকা পয়সা এবং কিছু মিষ্টি এনে ইমাম সাহেবকে অথবা কোন আলেমকে বলে যে, আমি অথবা আমার স্ত্রী অথবা আমার মা-বাবা কুর’আন খতম দিয়েছেন, আপনি উহাকে মুরুব্বিদের জন্য বখশিয়ে দিন, অথবা বলে যে, আপনি তাদের জন্য দু’আ করে দিন ইত্যাদি।
.
অথচ এভাবে কোরআন খতম কোন মোল্লা মৌলোভী দিয়ে বকশিয়ে দেওয়ার বিধান ইসলামে নেই। বরং এটা সরাসরি রাসুলের নির্দেশনার বিরোধিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। এমন কোন আমল রাসুল (ﷺ) ও সাহাবারা করেছেন বলে সহিহ হাদিসে আছে বলে আমার জানা নেই।
.
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর সহীহ্ হাদীস ও সাহাবায়ে কেরামদের আমলের দ্বারা একথা প্রমাণিত হয় যে, কুর’আন তেলাওয়াত করার পর বান্দা যদি আল্লাহর নিকট কোন কিছুর জন্য দু’আ করে তাহলে উহা কবুল হবে। এর দলিল হলো
.
ইমরান ইবনে হুসাইন (রাঃ) হতে বর্ণিত (হাদীসের অংশ) তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) কে একথা বলতে শুনেছি,
مَنْ قَرَأَ الْقُرْآنَ فَلْيَسْأَلِ اللَّهَ بِهِ
যে ব্যক্তি কুর’আন পাঠ করে সে যেন উহার মাধ্যমে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে।
(তিরমিযী ২৯১৭ নং)
.
উল্লেখিত হাদীস দ্বারা একথাই প্রমাণিত হলো: যে ব্যক্তি কুর’আন তিলাওয়াত করবে, সে নিজেই এই কুর’আন তেলাওয়াতকে অসীলা বানিয়ে নিজের জন্য এবং পরিবার পরিজনের জন্য ও সকল মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ করবে, কারণ কুর’আন তেলাওয়াত হলো ইবাদত সমূহের একটি ইবাদত, আর ইবাদতকে অসীলা বানিয়ে দু’আ করা নিঃসন্দেহে জায়েজ। আর যে সমস্ত স্থানে বান্দার দু’আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশী তার অন্যতম একটি স্থান হলো: কুর’আন তেলাওয়াত করার পর।
তাই যে কোন মুসলমান নর হউক চাই নারী হউক যখনই কুর’আন তেলাওয়াত করবে, তখনই সে কুর’আন তেলাওয়াতকে অসীলা বানিয়ে নিজের জন্য এবং পরিবার পরিজনের জন্য ও সকল জীবিত ও মৃত মুসলমানদের জন্য আল্লাহর নিকট দু’আ করবে।
.
রাসুল (ﷺ) বলেনঃ
.
تَعَلَّمُوا الْقُرْآنَ وَسَلُوا اللهَ بِهِ الْجَنَّةَ قَبْلَ أَنْ يَتَعَلَّمَهُ قَوْمٌ يَسْأَلُونَ بِهِ الدُّنْيَا فَإِنَّ الْقُرْآنَ يَتَعَلَّمُهُ ثَلَاثَةٌ :رَجُلٌ يُبَاهِي بِهِ وَرَجُلٌ يَسْتَأْكِلُ بِهِ وَرَجُلٌ يَقْرَأُهُ لِلهِ عز وجل
‘‘তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তার অসীলায় জান্নাত প্রার্থনা কর, সেই জাতি আসার পূর্বে, যারা তার অসীলায় দুনিয়া প্রার্থনা করবে। কুরআন তিন শ্রেণীর লোক শিক্ষা করবে; কিছু লোক তা নিয়ে ফখর করে বেড়াবে, কিছু লোক তার মাধ্যমে পেট চালাবে এবং কিছু লোক মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য তা তেলাঅত করবে।’’
.
বাইহাক্বীর শুআবুল ঈমান ২৬৩০,
সিলসিলাহ সহীহাহ ২৫৮
.
হাদিসের মানঃ সহিহ
.
অতএব,
বিদআত ছেড়ে দিয়ে সুন্নাহর দিকে ফিরে আসুন..

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...