Monday, June 17, 2019

বিবাহের ক্ষেত্রে পাত্র কি পাত্রীর মুখ বা চেহারা কি দেখতে পারবে

জাবির ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোন নারীকে বিবাহের প্রস্তাব দিবে তখন সম্ভব হলে তার এমন কিছু যেন দেখে নেয় যা তাকে বিবাহে উৎসাহিত করে। বর্ণনাকারী বলেন, আমি একটি মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেবার পর তাকে দেখার আকাঙ্ক্ষা-অন্তরে গোপন রেখেছিলাম। অতঃপর আমি তার মাঝে এমন কিছু দেখি যা আমাকে তাকে বিয়ে করতে আকৃষ্ট করলো। অতঃপর আমি তাকে বিয়ে করি।
আবু দাউদ ২০৮২

রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন-“তোমাদের কেউ যদি কোন মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দেয় এবং তার এমন কিছু দেখতে পারে-যা তাকে আগ্রহশীল করবে,তবে সে যেন তা করে নেয়”
হযরত জাবের (রাঃ) বলেন-“আমি বনী সালামা গোত্রের এক মেয়েকে বিবাহের প্রস্তাব দেই এবং তাকে এক দৃষ্টি দেখার জন্য খেজুর গাছ তলায় লুকিয়ে থাকি ।একদিন আমি তাকে দেখে ফেলি-যা আমাকে তার ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলে ।ফলে আমি তাকে বিবাহ করে নিই।”
সুনানে বাইহাকী, ৭ম খন্ড, ৮৪ পৃষ্ঠা;হাদীস নং ১৩৪৮৭

অন্য বর্ণনায় আছে-একদা মুগীরা ইবনে শু’বা (রাঃ) জনৈক মেয়েকে বিবাহ করার ইচ্ছা করেন ।
তখন রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন-“যাও, তাকে দেখে এসো ।কারণ, এ দেখা তোমাদের মাঝে আগ্রহ সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে ।”
মুগীরা (রাঃ) বলেন-একথা শুনে আমি পাত্রী দেখে আসি। …সুনানে বাইহাকী- নং ১৩৪৮৮

জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ কোন মেয়েকে বিবাহের পয়গাম বা প্রস্তাব দিবে তখন দেখা সম্ভব হলে, যে বিষয় বিবাহের জন্য তাকে আহ্বান করে তা যেন দেখে নেয়। -এ হাদীসের রাবীগণ নির্ভরযোগ্য। হাকিম একে সহীহ বলেছেন। আহমাদ ১৪১৭৬, ১৪৪৫৫।
বুলুগুল মারাম__৯৭৪

মুগীরাহ বিন শু'বাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর নিকট এসে এক মহিলাকে বিবাহ করার ব্যাপারে তাঁর সাথে আলাপ করলাম। তিনি বলেনঃ " তুমি যাও এবং তাকে দেখে নাও। হয়তো তাতে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসার সৃষ্টি হবে। " অতএব আমি এক আনসার মহিলার নিকটে এসে তার পিতা-মাতার নিকট তাকে বিবাহ করার প্রস্তাব দিলাম এবং সাথে সাথে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর হাদীসও তাদের অবহিত করলাম। কিন্তু মনে হলো তার পিতা-মাতা এটা অপছন্দ করলো। রাবী বলেন, মেয়েটি পর্দার আড়াল থেকে উক্ত হাদীস শুনে বললোঃ রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনাকে পাত্রী দেখার আদেশ দিয়ে থাকলে আপনি দেখে নিন। অন্যথায় আমি আপনাকে শপথ দিচ্ছি (না দেখার জন্যে)। সে যেন ব্যাপারটিকে অভিনব মনে করলো। রাবী বলেন, আমি তাকে দেখে নিলাম এবং তাকে বিবাহ করলাম। পরে মুগীরাহ (রাঃ) তার সাথে সুসম্পর্কের কথা উল্লেখ করেন।
ইবনে মাজাহ_১৮৬৬

তা-ছাড়া ফিকহের কিতাবগুলোতে বিবাহেচ্ছুক ব্যক্তি তার কাঙ্খিত পাত্রীর কতটুকু অংশ দেখতে পারবে, তার একটা সীমারেখা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ।লুকিয়ে দেখার ক্ষেত্রে এ সীমারেখা নির্ধারণের আবেদনও নিঃশেষ হয়ে যায় ।সুতরাংফিকহের কিতাবসমূহের প্রাসঙ্গিক আলোচনা দ্ধারা পাত্রী দেখানোর অবকাশ আছে বলে প্রমাণিত হয় ।তবে- সেটা ঘটা করে বাজাঁকজমকপূর্ণভাবে না হওয়া চাই ।বরং অনানুষ্ঠানিক ও অনাড়ম্বরভাবে হওয়া বাঞ্ছণীয় ।তেমনিভাবে-পাত্রীকে শুধু পাত্র দেখতে পারবে,পাত্র ছাড়া পাত্রের ভাই, পিতা, চাচা বা কোন মুরব্বী (পুরুষ) কিংবাঅন্যকোন পুরুষ পাত্রীকে দেখতে পারবে না ।তা কিছুতেই জায়িয নয় ।
সূত্রঃ সুনানে ইবনে মাজাহ,২য় খন্ড, ৭২৮ পৃষ্ঠা;হাদীস নং ১৮৬৬/মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, ৬ষ্ঠ খন্ড, ১৬৩ পৃষ্ঠা;হাদীস নং ১০৩৩৫}

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...