Monday, June 17, 2019

নারী ও পুরুষের সলাতের কি পার্থক্য আছে

।♥ নারী-পুরুষের সালাতের পদ্ধতি কি একই?♥
.
(নারী-পুরুষ উভয় জাতির) উম্মতকে সম্বোধন করে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
.
তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত আদায় করতে দেখেছ সেভাবে সালাত আদায় করবে।
.
সহীহ্ বুখারী ৬৩১ (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৫৯৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৬০৩), সহীহ ইবনু খুযাইমাহ্ ৩৯৭, সহীহ ইবনু হিব্বান ১৬৫৮, সহীহ আল জামি‘ ৮৯৩। মিশকাতুল মাসাবীহ (মিশকাত) অধ্যায়ঃ পর্ব-৪ঃ সলাত হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩ ৷
.
যে আদেশ শরীয়ত পুরুষদেরকে করেছে, সে আদেশ মহিলাদের জন্যও এবং যে সাধারণ আদেশ মহিলাদেরকে করেছে তাও পুরুষদের ক্ষেত্রে পালনীয় -যদি বিশেষ হওয়ার ব্যাপারে কোন প্রকার দলীল না থাকে। যেমন, “যারা সতী মহিলাদের উপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করে, অতঃপর চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদের জন্য শাস্তি হল ৮০ কোড়া---।” (কুরআন মাজীদ ২৪/৪) পরন্তু যদি কেউ কোন সৎ পুরুষকে অনুরুপ অপবাদ দেয়, তবে তার জন্যও ঐ একই শাস্তি প্রযোজ্য।
.
সুতরাং মহিলা ও পুরুষ সালাতে একইভাবে হাত তুলবে, হাত বাঁধবে, রুকু সিজদাহ করবে ৷ তাশাহ্‌হুদেও সেইরুপ বসবে, যেরুপ পুরুষরা বসে। উম্মে দারদা (রাঃ) তাঁর নামাযে পুরুষের মতই বসতেন। আর তিনি একজন ফকীহ্‌ ছিলেন। (আত্‌-তারীখুস স্বাগীর, বুখারী ৯৫পৃ:, বুখারী, ফাতহুল বারী, ইবনে হাজার ২/৩৫৫) আর মহিলাদের জড়সড় হয়ে সিজদাহ করার ব্যাপারে কোন হাদীস সহীহ নয়। (সিলসিলাহ যায়ীফাহ, আলবানী ২৬৫২ নং)
.
সহীহ বুখারী তে আছে ৷ অধ্যায়ঃ ১০/ আযান হাদিস নম্বরঃ ৮২৭ ৷
১০/১৪৫. তাশাহ্হুদে বসার নিয়ম । যেখানে বলা হয়েছে—
.
উম্মু দারদা (রাযি.) তাঁর সালাতে পুরুষের মত বসতেন, তিনি ছিলেন দ্বীন সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞানী।
.
[ তাওহীদ পাবলিকেশন্স ৮২৭, ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৭৮৯ ]
.

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকে এরূপ একটি হাদীসও নেই যেখানে তিনি বলেছেন - "নারীরা সালাতে তোমরা বুকের উপর হাত বাঁধবে আর পুরুষেরা তোমরা নাভীর নিচে ৷" একটি হাদীসও বর্ণিত হয় নি ৷
.
তবে বিশেষ কয়েকটি ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। যথাঃ
.
✔ সতর ঢাকা ↴
.
সালাতের সময় পুরুষের জন্য দুই কাঁধ ও নাভী হতে হাঁটু পর্যন্ত অবশ্যই ঢাকতে হবে এবং মহিলাদের দুই হাতের কব্জি পর্যন্ত ও চেহারা ব্যতীত মাথা হতে পায়ের পাতা পর্যন্ত সর্বাঙ্গ সতর হিসাবে ঢাকা।[1] পুরুষের কাপড় সালাত ও সালাতের বাইরে সর্বদা টাখনুর উপরে রাখতে হবে।[2] কেননা টাখনুর নীচে যতটুকু যাবে, ততটুকু জাহান্নামে পুড়বে’।[3]
.
[1] ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১২৫; নায়ল ২/১৩৬; সহীহ বুখারী (তাওহীদ) হা/ ৩৫৯, ৩৬০ (ইফা) হা/ ৩৫২, ৩৫৩; সূনান নাসায়ী হা/ ৭৬৯ (ইফাঃ) হা/ ৭৭০; সহীহ মুসলিম (ইফাঃ) ১০৩৪ (হাঃ একাডেমী) ১০৩৮; সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) হা/ ৬২৬, ৬২৭, ৪১০৪ (ইফাঃ) ৬২৬, ৬২৭, ৪০৫৯ ; দারেমী ১৪১১; সুনানুল কুবরা লিল বায়হাক্বী ৩২০৪; মিশকাত হা/৭৫৫ ‘ছালাত’ অধ্যায়-৪; সূরা নূর ২৪/৩১; শামসুল হক আযীমাবাদী, আওনুল মা‘বূদ (কায়রো: মাকতাবা ইবনে তায়মিয়াহ, ৩য় সংস্করণ ১৪০৭/১৯৮৭) হা/৪০৮৬। [2] আবুদাঊদ হা/৬৩৭ ‘ছালাত’ অধ্যায়-২, ‘ছালাতে কাপড় ঝুলানো’ অনুচ্ছেদ-৮৩। [3] . বুখারী, মিশকাত হা/৪৩১৪ ‘পোষাক’ অধ্যায়-২২।
.
✔ সালাতে ইমামতি ↴
.
মহিলারা পুরুষদের ইমামতি করতে পারবে না।[1] কিন্তু পুরুষেরা সকলের ইমামতি করতে পারবে ৷
.
[1] . আর-রওযাতুন নাদিইয়াহ ১/৩১২।
.
মহিলা, মহিলা নামাযীদের ইমামতি করতে পারে। উম্মে অরাকাহ্‌ বিন নাওফাল (রাঃ) মহানবী (সাঃ)-এর নির্দেশমতে তাঁর পরিবারের মহিলাদের ইমামতি করতেন। (আবূদাঊদ, সুনান ৫৯১-৫৯২নং)
.
অবশ্য এ ক্ষেত্রে মহিলা ইমাম মহিলাদের কাতার ছেড়ে পুরুষের মত সামনে একাকিনী দাঁড়াবে না। বরং কাতারের মধ্যখানে দাঁড়িয়ে ইমামতি করবে। (আব্দুর রাযযাক, মুসান্নাফ, মুহাল্লা ৩/১৭১-১৭৩) আশেপাশে বেগানা পুরুষ না থাকলে সশব্দে তকবীর ও কিরাআত পড়বে। (মাজাল্লাতুল বুহূসিল ইসলামিয়্যাহ্‌ ৩০/১১৩)
.
✔ ইমামের ভুল হলে ↴
.
সলাতে ইমাম সাহেবের ভুল হলে পুরুষ মুক্তাদি ‘সুবহানাল্লাহ’ বলে ইমাম সাহেবকে সতর্ক করে দিবেন এবং মহিলা মুক্তাদি ‘হাতে তালি বাজিয়ে’ ইমাম সাহেবকে সতর্ক করে দিবেন।
.
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) হা/৮৪০-৮৪২ (ইফা) হা/৮৩৮-৮৪০; সহীহ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) হা/ ৬৮৪, ১২০১,১২০৪,১২১৮,১২৩৪, ২৬৯০, ৭১৯০ (ইফা) হা/ ৬৫০, ১১২৮, ১১৩০, ১১৩১, ১১৪৫, ১১৬২, ২৫১১, ৬৭০০; সুনান আবূ দাউদ (তাহকিককৃত) হা/ ৯৩৯-৯৪২; সূনান আত তিরমিজী [তাহকীককৃত] হা/ ৩৬৯; সুনানে আন-নাসায়ী হা/ ৭৮৪, ৭৯৩, ১১৮৩, ১২০৭, ১২০৮, ১২০৯, ১২১০ (ইফা) হা/ ৭৮৫, ৭৯৪, ১২১০, ১২১২, ১২১৩; সুনান ইবনে মাজাহ হা/ ১০৩৪-১০৩৬; আহমাদ ২২২৯৫, ২২৩০১, ২২৩০৯, ২২৩৪১, ২২৩৫৬,৭২৪৩, ৭৪৯৭, ২৭৪২১, ৮৬৭৪, ৯৩০২, ৯৩৮৯, ৯৭৬৪, ৯৮৫৬, ১০২১৩, ১০৪৭০; মুওয়াত্ত্বা মালিক ৩৯২; দারিমী হা/ ১৩৬৩, ১৩৬৪ ৷
.
✔ মসজিদে গমন ↴
.
মসজিদে পুরুষদের মত জামা‘আতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত ছালাত ও জুম‘আ আদায় করা নারীদের জন্য ফরয নয়। [1] অবশ্য মসজিদে যেতে তাদেরকে বাধা দেওয়াও যাবে না। এ সময় তারা সুগন্ধি মেখে (বা সৌন্দর্য প্রদর্শন করে) মসজিদে জামা‘আতে যেতে পারবে না।[2] মহিলাদের জন্য বাড়ীতে গৃহকোণে নিভৃতে একাকী বা জামা‘আতের সাথে ছালাত আদায় করা উত্তম।[3]
.
[1] . আবুদাঊদ হা/৫৬৭, ৫৭০; আহমাদ হা/২৭১৩৫; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৭১। [2] . আবুদাঊদ হা/৫৬৫; সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী) হাঃ নং ৮৭৪-৮৮৪ (ইফা) ৮৭২-৮৮২; সহীহ্ বুখারী (তাওহীদ পাবলিকেশন্স) ৮৭৩ (ইফা) ৮৩১, মিশকাত হা/১০৫৯-৬১ ‘জামা‘আতে ছালাত ও তার ফযীলত’ অনুচ্ছেদ-২৩; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১৭১। [3] . আবুদাঊদ হা/৫৬৭, ৫৭০; মিশকাত হা/১০৬২-৬৩।
.
এরকম কিছু পার্থক্য ৷



নারী এবং পুরুষের নামাযের নিয়ম এক



"নারী এবং পুরুষের নামাযেরমধ্যে পার্থক্য", আমি ইন্টারনেটেএই আর্টিকেলটি পড়ে বিস্মিত হলাম যে, এই আর্টিকেলটিসম্পূর্ণরূপে দুর্বল এবং জাল হাদীসের উপর ভিত্তি করে লেখা।হয়তোবা আর্টিকেলটির লেখহাদীস শাস্ত্রের উসুল সম্পর্কে তারজ্ঞানের অভাবের কারণে যাচাই-বাছাই ছাড়াই লেখাটি লিখেছেনবা কপি-পেস্ট করেছেন অথবাতিনি ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা আরোপ করেছেন। তাই, ইন শা’ আল্লাহ আমি ই লেখায়আর্টিকেলটির মধ্যে উম্মাহর জন্য, বিশেষকরে বোনদের জন্য ক্ষতিকর এমন বিষয়গুলোখুঁটিয়ে পরীক্ষা করবো।

১ নাম্বার প্রমানঃ
عن عبد الله بن عمر قال قال رسولالله صلى الله عليه وسلم إذا جلستالمرأة في الصلوة وضعت فخذهاعلى فخذها الاخرى وإذا سجدتالصقت بطنها في فخذيها كالستر مايكون لها وان الله تعالى ينظر إليهاويقول يا ملائكتى اشهدكم انى قدغفرت لها
অনুবাদ: ইবনে উমর (রাঃবর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেন, যখন একটি মহিলা নামায পড়ে, সে যেনো তার এক উরুর উপর তারঅন্য উরুকে রাখে এবং তারউরুর সাথে তার পেট মিশিয়ে রাখে যাতে তার জন্য অধিকতরগোপনীয়তা রক্ষা হয়।প্রকৃতপক্ষে, আল্লাহ তার দিকে তাকান এবং ফেরেশতাদেরকেবলেন! "হে ফেরেশতাগণ, তোমরাসাক্ষী থাক যে, আমি তাকে ক্ষমা করে দিলাম”। [সুনান আলবায়হাকী আল কুবরা (৩/৭৪)]

আমাদের উত্তর:
এই হাদিসের একজন রাবী আবুমাতি আল হাকিম বিন আব্দুল্লাহ আল বালখী" সম্পর্কে ‘সুনানআল বায়হাকী আল কুবরা’বইয়ের একই পৃষ্ঠায় লেখা আছে - 
(ইমাম) আহমদ বলেন: "আবু
মাতীর বর্ণিত হাদীসে দুর্বলতা স্পষ্ট এবং তার রেওয়ায়েতগুলোমুতাবিয়াত হিসেবে ব্যবহ্নত হয়নাএবং আমাদের শিক্ষক বলেছেন,সে (বালখী) ইয়াহিয়া বিন মাঈন এবং অন্যান্যদের মত অনুযায়ীরাবী হিসেবে যয়ীফ”।
লেখকের কেন একটি ছলচাতুরি? একটি পৃষ্ঠা সম্পূর্ণ আরবি উদ্ধৃত করুন অথবা একটি পৃষ্ঠারসম্পূর্ণ স্ক্যান আপলোড করুন।যারা তাদের সাইটে এইপ্রতারণাপূর্ণ আর্টিকেলটিআপলোড করেছেন তাদেরকে বলছি, অধিকাংশ মুহাদ্দীসিনদের মতা জানার জন্য দেখুন ‘লিসানআল মিযান’ (২/৩৩৪-৩৩৬)। 
এই হা
দীসের দ্বিতীয় রাবী মুহাম্মদ বিন আল কাসিম আল বালখীহল একজন প্রতারক, দেখুন‘লিসান আল মীযান’ (৫/৩৪৭) এবং ‘মীযান আল আইতিদাল’।
এই হা
দীসের তৃতীয় রাবী উবায়েদবিন মোহাম্মদ আল সারখীর ইতিহাস অজানা। 

উপসংহার: এমনকি ইমামবায়হাকী (রহঃ) স্বয়ং নিজেহাদীসটিকে জাল বলেছেন এবংএই বিষয়ে হাদীসটির পরে উল্লেখ করেছেন "হাদীসান যয়ীফান লাইয়া হাতায বা মাসা লাহা" –
এই রেওয়ায়েতটি  কানজ-উলউম্মাল এ  (৭/৫৪৯ হাদীস নাম্বার২০২০৩উল্লেখিত হয়েছে এবংবায়হাকী  এবং ইবনে আদি (আল কামিল ২/৫০১) সম্পর্কে বলা হয়েছে - 
"
رواه ابن عدى والبيهقي وضعفة عن ابن عمر"
ইবনে ওমর থেকে ইবনে আদীএবং আল বায়হাকীর বর্ণিত এই রেওয়ায়েতটি যয়ীফ।

২ নাম্বার প্রমানঃ
عن يزيدَ بن أبي حبيب أنَّ رسولَ اللهمَرَّ عَلَى امرأتينِ تصليانِ، فقال «إذَاسَجَدْتُمَا فَضُمَّا بعضَ اللحمِ إلىالأرضِ، فإنَّ المرأةَ لَيْسَتْ في ذلِكَكالرجلِ
অনুবাদঃ ইয়াজীদ ইবনে আবিহাবীব (রহঃ) থেকে বর্ণিত,আল্লাহর রাসুল (সাঃ) নামাযরত অবস্থায় দুটি মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এবং বলেন, যখনতোমরা সিজদা করো, তোমরা তোমাদের শরীর মাটিতে মিশিয়ে রাখবে কারণ, এইক্ষেত্রে নারীরাপুরুষদের মত না" [সুনান আলবায়হাকী আল কুবরা (৩/৭৪)]
ই’লাল আল সুন্নাহ (৩/২৬বইতে বলা হয়েছে যে, এই হাদিসেরাবীরা নির্ভরযোগ্য ও বাতিলনন।

আমাদের উত্তর:
ইমাম 
বায়হাকী (হিজরী ৮৭) নিজে আবু দাউদ এর কিতাবআল মারাসিল থেকে কপি করারআগে বলেন -
এই হাদিস হল "
মুনকাতা"(বিচ্ছিন্ন)
ইয়াজীদ বিন আবি হাবীব  ৫৩ হজরীতে জন্মগ্রহন করেন এবং১২৮ হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন
তাহদীব আত তাহদীব ভলিউম ১১, পৃষ্ঠা ২৭৯ অতএব, এই রেওয়ায়েতে ইয়াজীদ থেকে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) পর্যন্ত অন্তত ২টি চেইন মিসিংআছে
"মুনকাতাহাদীস সম্পর্কে উসুল-আল হাদিস জাদীদ  বইয়ে লেখা আছে:

"উলেমাদের ঐক্যমত্য আছে যে,মুনকাতা রেওয়ায়েত  যয়ীফ বাদূর্বলকারণ এর মাহযুফ রাবীহল মাজহুল"
(
তাফসীর মাস্তালহা আল হাদীস৮৭,১ আল মুনকাতা)
আবু 
দাউদের কিতাব আলমারাসিল এর মধ্যে এ কথাওল্লেখিত আছে যে, তাউস (রাহঃ)বর্ণনা করেন,
"নবী (
সাঃনামাযে বুকে উপর তার হাত বাঁধতেন" (পাতা ৪০)
আহলে তাকলীদ যারা নিজেরামুরসাল হাদীসের উপর আমল করেনা, তখন তারা কেন আমাদের কাছে সেগুলো উপস্থাপন করেন? আল্লাহ ভাল জানেন। 
এই রেওয়ায়েতের মধ্যে দ্বিতীয়আপত্তি হল যে, রাবী সেলিম বিনগাইলান হল মাতরুক (পরিত্যক্ত)
আল্লামা তুরকুমানি আল-হানাফীনিজে এই রেওয়ায়ের উদ্ধৃতিদেওয়ার পরে বলেন,
ظاهر كلامه أنه ليس في هذاالحديث إلا الانقطاع ، وسالم متروك ،حكاه صاحب الميزان عنالدارقطني
আপাতদৃষ্টিতে, বিহাকী ( হঃ)এর ভাষ্য থেকে এটা স্পষ্ট যে, যে এতে শুধুমাত্র ইনকিতা(বিচ্ছিন্নতা) রয়েছে।  "আলমীযান" (যাহাবীগ্রন্থের লেখক দারা কুতনী থেকে বর্ণনা করেন, “(আসলে) সালেম একজন পরিত্যক্ত রাবী”। আল জোহারআল নাকী ফি রাদ্দ আল বিহাকী ২/৩১৫।
সাওয়ালাত আল বুরকানীতে(৩৫/২০৫) উল্লেখ করা হয়েছে -
وسألته عن (سالم بن غيلان); يروي عنه ابن وهب? فقالبصري متروك
“বাসরী মাতরুক”।
শায়খ আলবানীর মত অনুযায়ীএই হাদীস যয়ীফ, সিলসিলা আহাদীস আল যয়ীফ হাদীস নং২৬৫২।

৩ নাম্বার প্রমানঃ
عن عليّ قالإذا سجدت المرأة فلتحتفر ولتضم فخذيها.
অনুবাদ: আমির উল মুমিনীন সায়্যিদিনা আলী (রাঃ) বলেন: “যখন একজন নারী সিজদাতে যায় তার নিতম্বের উপর বসার সময় একপাশে হেলে বসা উচিত এবং তার একটির উরুর কাছাকাছি অন্য উরু রাখা উচিত [মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বা, (১/৩০২হাদীস ২৭৭৩)] 
এই আসারের রেওয়ায়েতটি অন্যান্য সনদেও বর্ণিত হয়েছে। মুসান্নাফ আব্দুর রাজ্জাকে তা ইসরাইলী সনদে  এবং ইবনে আবি শায়বাতে এটি আবুল আহওয়াস থেকে এসেছে।

আমাদের উত্তর:
সর্বপ্রথমে যেহাদিসটি হল মওকুফ (বন্ধ). 
যদিও ভাই এই হাদীসটি যে বায়হাকীতে (২/২২৩) রয়েছে তা উল্লেখ করেননি, 
উভয় বায়হাকী এবং মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাতে এই হাদীস থেকে "আলী (রাঃ) থেকে আল হারিস থেকে আবি ইসহাক” এই সনদে বর্ণিত হয়েছে।  
অধিকাংশ মুহাদ্দিসীনদের মত অনুযায়ী রাবী "আল হারিসহল কট্টর মাজরুহ রাবী। 
জাইলি হানাফী নিজে বলেন, "তার (আল হারিসের) কাছ থেকে হুজ্জাহ (বা দলীল) নেওয়া যাবে না" (নাসব আর রায়া ২/৪২৬),তিনি  আরো বলেছেন, "শুবা এবং আল মাদিনি তাকে কাজ্জাব(মিথ্যাবাদী) বলে ঘোষণা করেছেন" ((নাসব আর রায়া ২/৩)
ইমাম মুসলিম (রহঃ) তাঁর সহীহ মুসলিমের মুকাদ্দামায় "আল হারিস বিন আব্দুল্লাহ আলাওয়ার" সম্পর্কে উল্লেখ করেছেন  যে, ইমাম আল শোবি (রহঃ) বলেছেন "তিনি কাজ্জাব(মিথ্যাবাদী)" (সহীহ মুসলিম ভলিউম ১
এই হাদিসের দ্বিতীয় রাবী হলো "আবু ইসহাকযিনি একজন মুদাস্সিল (তাবাকাত আল মুদাস্সিলিন লা ইবনে ই হাজার,আল মারতাবা আল সালাসা ৩/৯১)। 
উপসংহার: এই রেওয়ায়েত বাতিল (মিথ্যা)।
গুরুত্বপূর্ণ টীকা: 
তারাব্বু সম্পর্কিত ৪ এবং ৫ নাম্বার প্রমানের আসন্ন হাদীসগুলো ৬ নাম্বার প্রমানের খণ্ডন দ্বারা ব্যাখ্যা করা হবে কারণ হানাফীরা বিশ্বাস করে যে তাররাবু রহিত করা হয়েছিল। 
১ নাম্বার পয়েন্টতারাব্বুর ক্রমানুসার কোনো মারফু হাদীস থেকে প্রমাণিত হয়না। 
২ নাম্বার পয়েন্টযদি কোনো মারফু হাদীস থেকে তাররাবুর ক্রমানুসার প্রমানিত না হয়,তাহলে কেন আপনি মারফু হাদীসের পরিবর্তে মাকউফ রেওয়ায়েতের উপর ভিত্তি করে আপনার মাযহাবকে গ্রহণ করবেন?
৩ নাম্বার পয়েন্ট: হানাফীদের মতে যেখানে “তাররাবু” মানসুখ হয়েছে সুতরাংকেনো তারা এটা থেকে উদ্ধৃতি করছে? পার্থক্য ছিলো বলতে গেলে তাদের একটি মারফু হাদিস থেকে উদ্ধৃত করা উচিত যে এই আদেশ যেমন পূর্বে রুকু করা হতো হাঁটুর মধ্যে হাত স্থাপন করে কিন্তু পরে এটি মনসুখ করা হয়েছিল। একইভাবেপূর্বে কিবলাহ ছিল বাইতুল মুকাদ্দাস এবং পরে এটা পরিবর্তন করে কাবা করা হয়।তাই সাহাবারা এটি বর্ণনা করেছেন। হানাফীদের এই প্রমান দেওয়া উচিত যে এই আদেশ কখন দেওয়া হয়েছিলমুসনাদে আবু হানিফা থেকে তাদের উদ্ধৃত করা মনসুখ করার হাদিসটি দুর্বল।
সুতরাং, কিভাবে এটি রহিত হয়েছে তার ক্রমানুসার দেওয়া হয় না। 
যদি এটা রহিত করা হয়ে থাকে, তাহলে তাদের আবার কোন সহীহ মারফু হাদীস উদ্ধৃত করতে হবে, নতুন পদ্ধতি কি সেইটা জানার জন্য।

যদি এটা রহিত হয়ে থাকে এবং কোন সহীহ হাদীস বর্তমান না থাকে, তাহলে এটা গ্রহণ করা উচিত যে পূর্বে ও পরে কোনো পার্থক্য নেইঅবশ্যই হানাফীরা তাদের কিবলাহ বাইতুল মুকাদ্দাসকে ধরে নামায পড়েনা।
আরেকটি উদাহরণ হল যে হানাফীরা দাবী করে রুকুর আগে এবং রুকুর পরে "রাফা ইয়াদাইন"রহিত করা হয়েছে, তাই যখন তারা নিজেরা রহিত কোনো আমল করেনা তাহলে তারা কেন আমাদের সামনে এই হাদীসগুলো উপস্থিত করে? 
যখন কোন সহীহ হাদীস এবং মারফু নেই  যে তাররাবুর  আদেশ ক্রমানুসারে করা হয়েছিলতাহলে কিভাবে সম্ভব যে সাহাবীরা কোনো কিছুর আমল করেছেন যা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরোধী?

৪ নাম্বার প্রমানঃ
عن خالد بن اللجلاج قالكن النساءيؤمرن أن يتربعن إذا جلسن فيالصلاة ولا يجلسن جلوس الرجالعلى أوراكهن 
অনুবাদ: খালিদ ইবনে জিল্লাজ(রাঃ) বর্ণনা করেননারীদেরকে আদেশ করা হয়েছে নামাযে বসা অবস্থায় তারাব্বু করতে এবং তারা "তাদের পুরুষদের মত বসা উচিত নয়" [মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বান (১/৩০৩)] 
উল্লেখ্য: তারাব্বু মানে আড়াআড়িভাবে পা রেখে বসা।

আমাদের উত্তর:
র সনদ হলো
 
حدثنا أبو بكر قال: نا إسماعيل بن علية عن محمد بن إسحاق عن زرعة عن إبراهيم عن خالد بن اللجلاج قال: كن النساء يؤمرن أن يتربعن إذا جلسن في الصلاة ولا يجلسن جلوس الرجال على أوراكهن يتقي ذلك على المرأة مخافة أن يكون منها الشيء.
মুহাম্মদ বিন ইসহাক হল মুদাল্লিস
দ্বিতী্যত, যখন তিনি তালাক সম্পর্কিত হাদীসগুলোতে রাবী হিসেবে আসেন তখন এই পক্ষপাতদুষ্ট মানুষরা (হানাফীরা)তার কঠোর সমালোচনা করেএবং তার হাদীস প্রত্যাখ্যান করে।
হক্ক হলো তিনি সত্যবাদী কিন্তুমুদাল্লিস এবং যদি তিনি যখন কোনো রেওয়ায়েতে আসেনতখন তা প্রমাণ হিসেবে গ্রহণযোগ্য না। 
উম্মে দারদা (রাঃথেকে বর্ণিত আছে, তিনি নামাযে পুরুষদের মতোই বসতেন ([মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ  ১/২০৭ হাদীস নং২৭৮৫, এবং উমদাতুল কারী৬/১০১, সনদ কুয়িআল তারিখ আল সাগীর আল-বুখারী ১/২২৩তারিখ দামিস্ক আল ইবনে আসাকির ৭৪/১১৭এবংতাগলিক আল তালিক ২/৩২৯)
এবং এই হাদিস 
সহীহ হাদিস যা ইমাম বুখারী (রহঃবর্ণনাকরেছেন তার বিরুদ্ধে,
"
উম্মে দারদা (রাঃ) নামাযেপুরুষদের মতোই বসতেন এবংতিনি একজন ফকীহ ছিলেন" (বুখারী ৮২৭)বিষয়টা কেমন, উম্মে দারদা(রাঃ) যিনি একজন ফকীহ ছিলেন এবং বিখ্যাত সাহাবীসায়্যিদিনা আবু দারদা (রা) এর স্ত্রী যার থেকে তিনি নামাযেরপদ্ধতি শিখেছেন? এটি আরেক বিখ্যাত তাবেয়ী ইমাম ইব্রাহিম আল নাখয়ী (রহঃ) যিনি ইমাম আবু হানিফার শিক্ষক, তার উক্তি থেকে আরো পরিষ্কার হয়"নামাযে নারীদের পুরুষদের মতবসতে হবে" (মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বাহ  ১/২৭১ হাদীস নং২৭৮৮, অন্য সনদে হাদীস নং২৮০৮, সহীহ সনদ)

স্ক্যানকৃত পৃষ্ঠা:

৫ নাম্বার প্রমানঃ
حدثنا أبو بكر قال نا أبو خالد عن محمد بن عجلان عن نافع أن صفية كانت تصلي وهي متربعة.

অনুবাদ: নাফি বর্ণনা করেন যেসায়্যিদ সাফিয়াহ (রা) "তারাব্বু"অবস্থায় নামায পড়তেন[মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বান(১/৩০৩)]

আমাদের উত্তরঃ
হানাফীরা কেনো মারফু হাদিসথেকে উদ্ধৃতি করতে অপারগএইরেওয়ায়েত হলো মওকুফ(বিচ্ছিন্ন)। দলীল হিসেবেরাসুলুল্লাহ (সাঃ)এর হাদিসদেওয়া উচিত
এই আসারে মুহাম্মদ বিনআজলান কজন ‘মুদাল্লিস’(তাবাকাত  মুদাল্লিসীন৩/৯৮) এবং তিনি অপরিচিত কারো থেকে বর্ণনা করেছেন, তাই তিনি ‘হুজ্জাহ’ হতে পারেন না। অতএব এর জন্যও কোনো প্রমান নেই।

৬ নাম্বার প্রমানঃ
(عن نافع، عن ابن عمر أنه سئل كيف كن النساء يصلين على عهد رسول اللّه صلى اللّه عليه وسلم أي في زمانه صلى اللّه عليه وسلم (قالكن يتربعنأي في حال قعودهن (ثم أمرن أن يحتفزن

অনুবাদ: ইবনে উমরকে (রাঃ)প্রশ্ন করা হয়েছিলো, রাসুলুল্লাহ(সাঃএর সময় মহিলারা কিভাবে বসতেন সে সম্পর্কে। তিনি বলেন: শুরুর দিকে তারা "তারাব্বু"করতেন কিন্তু পরে তারা‘ইহতিফায’ করতে আদিষ্ট হন[মুসনাদ ইমাম আবু হানিফা(১/১২০)]
উল্লেখ্য: "তারাব্বুপরবর্তীতেরহিত হয়ে যায় এবং ‘ইহতিফায’(অর্থাত্ নিতম্বের উপর একপাশে বসা) হয়ে ওঠে পরবর্তী প্র্যাকটিস, এমনকি এই রদ নিজেই পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে প্রার্থনা এর পার্থক্য প্রমাণকরে।
এই হাদিস ছাড়াও অন্যান্যহাদিসগুলো দুর্বল, এবং সম্পর্কিত ব্যখ্যা পূর্ববর্তী দুটিহাদিসের উত্তর দিবে।
এটি দুর্বল কারণ তা সনদে আবু মুহাম্মাদ আল বুখারী, যার আসল নাম হল আবদুল্লাহ বিন মোহাম্মদ বিন ইয়াকুব আল হারিসি আলবুখারী রয়েছে তাঁর কুনিয়্যাহ হল আবু মুহাম্মদ ইমাম ইবনে আলজাউযী বলেন, ইমাম আবু সায়ীদআল রাউস বলেন: "তিনি জাল হাদিস রচনা করার জন্য অভিযুক্ত"। ইমাম আহমদ আলসুলাইমানী বলেছেন: "তিনি বিভিন্ন মতন বিভিন্ন হাদিসেসনদে ব্যবহার করতেনএবং এটা হলো জাল হাদীস তৈরী করার একটা উপায়। ইমাম আবুজুর’আ বলেছেন, তিনি দুর্বল(জয়ীফ)"। ইমাম হাকিম বলেছেন "তিনি বিশ্বস্ত রাবীরসঙ্গে অযাচিত রেওয়ায়েত জুড়ে দিয়েছেন। ইমাম খাতিব আলবাগদাদী বলেছেন: "তিনি বিশ্বস্ত ন"। (মীযান আল ই’তেদাল২/৪৯৬লিসান আল মীযান৩/৩৪৮)। মুহাদ্দিস এবং রিজাল শাস্ত্রের বাকি ইমামগণ তাকে দুর্বল (জয়ীফ) বলে অভিহিত করেছেন। এবং এই হাদিস এর কিছু রাবী দুর্বল এবং মাজহুলদেখুন (ফতোয়ায়ে উদ্দিন আলখালিস ৪/৮৬)
সুতরাং এই হাদিস দুর্বল এবং একে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করা যাবে না

৭ নাম্বার প্রমানঃ
حدّثنا أبو بكر قال نا ابن مبارك عن هشام عن الحسن قالالمرأة تضم في السجود
অনুবাদ: হাসান আল বসরী(রহঃ) বলেন: একজন মহিলাসিজদার সময় নিজেকেজড়োসড়ো করে রাখা উচিত[মুসান্নাফ ইবনে আবি শায়বান(১/২৭০)]

আমাদের উত্তরঃ
এই রেওয়ায়েতের সনদ - ইবনে আল মুবারক থেকে হাশাম থেকেআল হাসান হাশাম বিন হাসান একজন মুদাল্লিস (তাবাকাত আলমুদাল্লিসীন, আল মারতাবা আলসালাসা ৩/১১০এটা হলো মানান, সেইজন্য দুর্বল

৮ নাম্বার প্রমানঃ
وعن وائلِ بنِ حجرٍ قالَقالَ لي رسولُ الله صلى الله عليه وسلّم : «يا وائلُ بنَ حجرٍ إِذَا صَلَّيْتَ فَاجْعَلْ يَدَيْكَ حِذَاءَ أُذُنَيْكَ، والمَرْأَةُ تَجْعَلُ يَدَيْهَا حِذَاءَ ثَدْيَيْهَا».
অনুবাদওয়াইল বিন হুজর (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী(সাঃতাঁকে বলেছে, তুমি যখন(পুরুষ) নামায শুরু করো খনতোমার কান পর্যন্ত হাত তুলবে,যেখানে একজন মহিলা(কেবলমাত্র) তার কাঁধ পর্যন্ততাদের হাত তুলবে। [মাজমু আজ-জাওয়েদ (২/১০৩), ই’লাআস-সুন্নান (২/১৫৬)]

আমাদের উত্তরঃ
হাফিজ নূর 
দ্দীন আল হায়সামী(রহঃতার বই ‘মাজমু আজ-জাওয়েদে এই সনদ উল্লেখ করেছেন এবং বলছে: "আমিউম্মে ইয়াহিয়াকে চিনিনা, বাকীরাবীদের বিশ্বস্ত হিসেবে জানি"
যখন ইতিমধ্যে হাফিজ 
হায়সামী(রহঃএটিকে জিররাহ করেছেন,কেন এই প্রবন্ধের লেখক সেটিগোপন করেছেন?
এক
টি কৌতুকহানাফী তার্কিকআমিন ওকরাভী প্রমাণ হিসেবেএই হাদীস উপস্থাপন করেছেন(মাজমুয়া রাসায়েল ভল্যুম ১,পাতা ২ থেকে পাতা ৯৪)
এবং
, যখন এই রাবী থেকে অন্যহাদিস হানাফীদের বিরুদ্ধে যায়,সে সম্পর্কে তিনি লিখেছেন:"উম্মে ইয়াহিয়া হল মাজহুল"মাজমুয়া রাসায়েল ভল্যুম ১,পাতা ১ থেকে পাতা ৩৪৬)
ফাতহুল বারীতে উল্লেখিত হয়েছেযে, "যদি একটি হাদিসে একজনরাবী মাজহুল হয়, তাহলে সেটি ছুড়ে ফেলো কারণ এর ফলেহাদিসটি দুর্বল হয়ে যায় এবংমাজহুল রাবী রেওয়ায়েতহুজ্জত হতে পারেনা" (ফাতহুল বারী ১/১৪৬)
নবী (সাঃবলেন, "তোমরা ঠিক সেইভাবে নামায পড় যেইভাবেআমাকে নামায পড়তেদেখেছো" (বুখারী)
এখনকিছু মানুষকে এরকম বলতে দেখা যায় যে "এটাঅযৌক্তিক হবে কারণ, নবী (সাঃ)নামায পড়ার সময় পাগড়ি পড়াছিলেন, তাই কোনো নারীপাগড়ি ড়া শুরু করা উচিতহবে”?
এই 
যুক্তি অযৌক্তিক কারণ, নবী(সাঃএরকম বলেননি যে,"তোমরা ঠিক সেইভাবে কাপড়ে পড়ো যেইভাবে আমাকে কাপড় পড়তে দেখেছো" নবী(সাঃ)নামাযের পোশাক সম্পর্কে না, নামাযের পদ্ধতি সম্পর্কেজো দিয়েছেন।
আরেকটি অভিযোগঅনুবাদ:নবী (সাঃবলেনজুমু’আর নামায জামাতে পড়া প্রত্যেকমুসলিমের উপর ওয়াজিব, শুধুমাত্র চার প্রকার মানুষ ছাড়া,(দাস ("মহিলা" (শিশু(4) এবং অসুস্থ ব্যক্তি  (ইমামহাকিম তার আল মুসতাদারাক আলা সাহীহাইন  বর্ণনা করেছেন যেখানে ইমাম হাকিমহাদীসেটিকে বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী সহীহ বলেছেনএবং ইমাম যাহাবী তার সাথে"একমত" হয়েছেন (১/৪২৩হাদীস # ১০৬২)] "
যদি এই হাদিস 
থেকে কেউ নামাযের ভিন্ন পদ্ধতি প্রমান করার চেষ্টা করেন তবে তাকে সংশোধন করে নেয়া উচিত, কারণ এই হাদীস নামাযের পদ্ধতিসম্পর্কে কথা বলেনাঅন্যথায়হানাফীদের দাস ও শিশুদের জন্যভিন্ন পদ্ধতি আবিষ্কার করতে হবে। 
আরেকটি অভিযোগঅনুবাদ:এটা আবু 
হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (শান্তি তার উপর)বলেনতাসবীহ (ইমামের ভুল হলে লোকমা দেওয়ার জন্য আল্লাহু আকবার বলা) পুরুষদেরজন্য আর মহিলাদের জন্য হলোহাত তালি দেওয়া । [জামি-উস-সাহীহ আল বুঝারী(১/৪০২)]
এছাড়াওনবী (সাঃরোযাসম্পর্কে বলেছে, কিন্তু তিনিরোযা জন্য আলাদা কোনোপদ্ধতি বলেন নি, কিন্তু একটিমাত্রসাধারণ হুকুম যা নারী ও পুরুষের উভয়ের জন্য কার্যকর

আলেমদের বক্তব্য:

ইমাম 
বুখারী (রহঃসহীহ সনদেরসঙ্গে উম্মে দারদা (রাঃথেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি নামাযেপুরুষদের মতই বসতেন [আল তারিখ আল সাগীর আল বুখারী৯০]
ইব্রাহিম আল 
নাখাই (রহঃ) বলেন"নারীরা নামাযে পুরুষদের মতবসবে" [ইবনে আবি শায়বাহ১/১৭০]
ইবনে 
হাজম (রহঃ) বলেন "পুরুষ এবং মহিলাদের নামাযের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই" [আলমাহাল্লা ৩/৩৭]
ইবনে 
হাজার (রহঃ) বলেন "পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য তাকবীরের সময় হাত তোলা মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই" [ফাতহুল বারী২/২২২]
ইবনে 
কুদামাহ (রহঃ) বলেন"প্রকৃতপক্ষে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য নামাযের পদ্ধতি এক বলেই প্রমাণিত হয়েছেশুধুমাত্র এটা ছাড়া যে তারজন্যরুকু এবং সিজদার সময়নিজেকে আবৃত রাখা মুস্তাহাব" [আল মুগনি ২/২৫৮]
ইমাম 
নববী (রহঃ) বলেন"নারীদের (নামাযে দাঁড়ানো অবস্থায়)পুরুষদের মতই বুকের উপর হাত বাঁধা উচিত" [শরাহমুসলিম ১/১৯৫]
ইমাম 
বায়হাকী (রহঃ) সুনান আলকুবরাতে স্বতন্ত্র একটি অধ্যায়ে বলেছেন যে "সুন্নাহ হলো নামাযেবুকের উপর হাত বাঁধা"
শায়খ নাসির উদ্দীন আল-আলবানী (রহঃ) বলেন,
উপরন্তু, 
ইমাম বুখারী তারিখ আস-সাগীরে (পৃষ্টা ৯৫উম্মে দারদা থেকে সহীহ সনদে বর্ণনা করেছেন যে, নামাযের মধ্যে যেমন একজন পুরুষ বসতো তিনিও ঠিক সেভাবেই বসতেন, এবং তিনি ছিলেন একজন ফকীহা (দ্বীন সম্পর্কে জ্ঞানী)।
একজন নারী সিজদার সময় পুরুষের মতো বসবে না – এ সম্পর্কিত হাদীসটি মুরসাল এবং সহীহ নয়। আবু দাউদ আলমারাসিল থেকে ইয়াজিদ ইবনেআবি হাবীব কর্তৃ এই রেওয়ায়েতটি বর্ণনা করেছেন।

ইমাম আহমদ থেকে তাঁর পুত্রআব্দুল্লাহর মাসায়েলে ইবনেউমর থেকে বর্ণনা করা হয়েছে যেতিনি তাঁর স্ত্রীদেরকে নামাযেরমধ্যে আড়াআড়ি বসতে শিখাতেন, তার সনদ সহীহ নয়,কারণ তার মধ্যে আব্দুল্লাহ ইবনেউমর আল আমরি রয়েছেন, যিনিএকজন দুর্বল রাবী। (সিফাতসালাহ আল নাবী)
.
এ ব্যাপারে জাকির নায়েকের বক্তব্য -
https://m.youtube.com/watch?v=qqHByJ1SOZs
.
সালাত এর মাসয়ালা-মাসায়েল ও পদ্ধতি নিয়ে সহীহ দলীল ভিত্তিক কিছু বইয়ের ডাউনলোড লিঙ্ক ↴
.
✔ বইঃ স্বালাতে মুবাশ্শির ৷
লেখকঃ শায়খ আব্দুল হামীদ আল ফাইযী আল-মাদানী ৷
লিসান্সঃ মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়, সৌদিআরব ৷
(সৌদী আরবের আল-মাজমাআ অঞ্চলের দাওয়াত সেন্টারে কর্মরত দাওয়াত-কর্মী এবং বাংলা ভাষার প্রসিদ্ধ লেখক ও অনুবাদক। আলোচকঃ পিস টিভি বাংলা ৷)
ডাউনলোড লিঙ্কঃ http://preachingauthenticislaminbangla.blogspot.com/2016/06/blog-post.html?m=1
.
✔ বইঃ ছালাতুর রাসূল (ছাঃ) ৷
লেখকঃ ড. মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব ৷
ডাউনলোড লিঙ্কঃ
http://preachingauthenticislaminbangla.blogspot.com/2013/07/blog-post_3274.html?m=1
.
✔ বইঃ জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত ৷
লেখকঃ শায়খ মুজাফফর বিন মুহসিন ৷ আলোচকঃ পিস টিভি বাংলা ৷
ডাউনলোড লিঙ্কঃ
http://www.mediafire.com/file/lmfpw3e7lxfnnc1/Jal+Hadiser+Kobole+Rasulullar+Salat.pdf
.
✔ মুখে সশব্দে নিয়ত পড়া প্রসঙ্গ ৷
লেখক: আব্দুর রাকীব (মাদানী),
লিসান্স: মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়,
দাওয়াহ সেন্টার, আল্ খাফজী, সৌদী আরব।
লিঙ্কঃ http://preachingauthenticislaminbangla.blogspot.com/2013/03/blog-post_27.html?m=1
.
✔ বইঃ জানাযার নামায পড়ার নিয়ম ৷
মূলঃ শাইখ আবদুল হাসান ইবন মুহাম্মাদ নাসসার ৷
সম্পাদনাঃ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া ৷ পিএইচডি (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা), সহকারী অধ্যাপক- ফিকাহ্ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া ৷ আলোচকঃ পিস টিভি বাংলা ৷
ডাউনলোড লিঙ্কঃ https://islamhouse.com/bn/articles/727217/

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...