Monday, June 3, 2019

রসুলুল্লহ সঃ কিসের তৈরী


বিসমিল্লা-হির রহমা-নির রহীম
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লহর নামে,,
.
রছূলুল্লাহ কিসের তৈরি?
নূরের তৈরি? নাকি মাটির তৈরি?
.

খুবই গুরত্বপূর্ণ কথা। হাতে সময় নিয়ে মন দিয়ে পড়ুন কাজে লাগবে। না পড়লে বুজলেন না।
.
আমাদের মুছলিম ও মুসলমানদের মধ্যে কয়েকটি বিষয় নিয়ে প্রায়ই তর্ক-বিতর্ক লেগেই থাকে যেমন, মিলাদ, কিয়াম, নামাজে নাভিতে হাত বাধা, বুকের উপরে হাত বাধা, মিলাদুন্নবী, শবেবরাত, নামাজে মোনাজাত, মাজারে যাওয়া না যাওয়া ও ছুন্নী-ওয়াহাবী ইত্যাদি ইত্যাদি অনেকে বিষয় নিয়ে মৌলভী সহ সাধারণ মানুষের মধ্যে হর হামেশাই তর্ক-বিতর্ক লেগেই থাকে। তাদের মধ্যে আছে বিভিন্ন দল, মত, পথ, তরিকা, ফেরকা। কেহই ইহার কোন সঠিক সমাধান দেয় না, দিতে পারেও না। এক পক্ষ যা বলে অন্য পক্ষ তা মানে না। যেন কেহ কাহাকে বিশ্বাসও করতে পারে না। তেমনই আর একটি বিষয় হল আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর রছূলুল্লাহ কিসের তৈরি?
.
কেহ বলে রছূলুল্লাহ মাটির তৈরি, কেহ বলে নূরের তৈরি। আবার কেহ বলে রছূলুল্লাহ "নূরে মুজাসসাম" অর্থাৎ আপাদমস্তক নূরের সৃষ্টি কুরআন শরীফ উনার দলিল। অথচ এ কথাটি ক্বুরআন তন্ন ত্নন করে খোজলে কোথাও পাওয়া যাবে না। রছূল নূরের তৈরি এ কথা ক্বুরআনের কোথাও বলা হয়নি। এ বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই মানুষের মধ্যে তর্কাতর্কি হয়। ইউটিউবেও দেখা যায় এ নিয়ে বিভিন্ন বাদানুবাদ ও বাহাস। তবে পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান থেকে কেহই সমাধান নিতে চায় না। ফেসবুকেও ছূরা মায়ীদার ১৫ নং আয়াতের বরাত দিয়ে এ বিষয় টি নিয়ে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্নরকম পোষ্ট দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। তবে আল্লাহ বলেছেন যে, রছূল একজন মানুষ ছিলেন, এবং পূর্বেকার সমস্ত নবী-রছূলগন মানুষ ছিলেন। আল্লাহ আরও বলেছেন যে, আদমকে মাটি দিয়ে সৃষ্টি করেছেন এবং আদম ও আদমের সঙ্গি এ দুজন থেকেই সকল মানুষের সৃস্টি। তাহলে রছূলুল্লাহ কি দিয়ে সৃষ্টি?
.
আল্লাহ আল ক্বুরআনে বলেছেন যে, জ্বিন আগুনের তৈরি, ফেরেস্তাগণ নূর তথা আলোর তৈরি, আর মানুষ মাটির তৈরি। আদম ও আদমের সঙ্গি ব্যতিত পৃথিবীর সমস্ত মানুষই মায়ের গর্ভে জন্মগ্রহন করেছে এবং করবে। প্রতিটি মানুষ মাটির উপাদান খেয়ে তার দেহ মাটি দিয়েই তৈরি করে, অতপর মরে যাওয়ার পর তাকে মাটিতেই রাখা হয় এবং ঐ দেহ থেকে মাটি তার উপাদানগুলি পুনরায় নিয়ে নেয়। মাটির উপাদান খেয়ে মাটির তৈরি মানুষ মাটির পৃথিবীতেই বসবাস করে।
.
আরও লক্ষনীয় বিষষ মাটিতে আছে অনেক গুন। মাটির গুনের কথা বলে শেষ করা যাবে না। আর তাই ফেরেস্তা ও জ্বিনের চেয়ে এই মাটি মানুষকে আল্লাহ মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। নূরের তৈরি ফেরেস্তাদেরকে বেশি জ্ঞানও দেওয়া হয়নাই যতটা জ্ঞান মাটির মানুষকে দেওয়া হয়েছে। কাজেই কেহ যদি রছূলকে মাটি থেকে সরিয়ে দিয়ে নূরের মধ্যে ফেলে দেয় তাহলে সে রছূলকে হেয় করলো এবং সে আল্লাহর প্রতি, আল্লাহর ক্বুরআনের আয়াতের প্রতি ও রছূলুল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ দিল।
-------------------------
নূর অর্থ আলো বা জ্যোতি।
আল্লাহ "নূর" শব্দটি কয়েকটি
অর্থে ব্যবহার করেছেন। যেমন-
-------------------------
(১) আল ক্বুরআনকে নূর বলা
হয়েছে।- ৪:১৭৪।
-------------------------
(২) মূছা নবীর কিতাব
তাওরাতকে নূর বলা হয়েছে।
- ৬:৬১।
-------------------------
(৩) ইছা নবীর কিতাব
ইঞ্জিলকে নূর বলা হয়েছে।
- ৫:৪৬।
-------------------------
(৪) রছূলের প্রতি নাজিলকৃত
কিতাবকে নূর বলা হয়েছে।
- ৫:১৫।
-------------------------
(৫) পৃথিবীর আলোকে নূর
বলা হয়েছে।- ২:১৭।
-------------------------
(৬) আল্লাহর মনোনীত
বান্দারা নূরের মধ্যে থাকে।
- ৩৯:২২
-------------------------
(৭) মানুষকে নূর দিয়েছেন
চলার জন্য।- ৬:১২২।
-------------------------
(৮) মুমিনগনকে আল্লাহ নূর
দিবেন।- ৫৭:২৮।
-------------------------
(৯) কিয়ামতের পুরুস্কারকে
নূর বলা হয়েছে।- ৫৭:১৯।
-------------------------
(১০) জান্নাতে নবী ও
ঈমান্দারদের সামনে নূর
থাকবে।-৬৬:৮।
-------------------------
(১১) আল্লাহ নিজেই নিজেকে
নূর বলেছেন।- ২৪:৩৫।
ইত্যাদি ইত্যাদি।
-------------------------
"নূর" শব্দটি কয়েক অর্থে এ কথাগুল আমার নিজের কথা নয়। আমাদের সৃষ্টিকর্তা ক্বুরআনুন কারীমে বলেছেন। আমি প্রতিটি কথার ছূরার ও আয়াত নং দিয়েছি। মানুষ না জেনে, ক্বুরআন গবেষনা না করে ক্বুরআনের ভুল ব্যাখ্যা করে শুধু তর্ক করে আর মানুষকে বিভ্রান্ত করে এবং আল্লাহ ও রছূলের প্রতি মিথ্যা অপবাদ দেয়। নিচের দিকে বিশাল কয়েকটি আলোচনা ও "নূর" সম্পর্কিত আয়াতগুলি পড়ুন আর দেখুন আল্লাহ কি বলেছেন।
========================
.
ক্বুরআনকে "নূর" বলা হয়েছে।
.
[৬৪:৮] (আল্লাহ বলেন) 'অতএব তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের এবং আমি যে নূর অবতীর্ণ করেছি তার প্রতি ঈমান আন। আর তোমরা যে আমল করছ আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। ৬৪ নং ছূরা তাগাবূন আয়াত ৮। অনুবাদঃ আল বায়ান ফাউন্ডেশন।
(২)
আলোচনাঃ উক্ত আয়াতে আল্লাহ প্রথমে আল্লাহর প্রতি, তার পর রছূলের প্রতি, তার পর নাজিলকৃত নূরের প্রতি ঈমান আনার কথা বলেছেন। তাহলে দেখা যাচ্ছে যে আল্লাহর নাজিলকৃত কিতাব ক্বুরআনই হচ্ছে নূর বা আলো। এই আয়াতে ক্বুরআনকেই নূর বলা হয়েছে। ক্বুরআনকে নূর বলার অর্থ এই নয় যে, ক্বুরআন নূরের তৈরি।
========================
.
ক্বুরআনকে "নূর" বলা হয়েছে।
.
[৭:১৫৭]...কাজেই যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান প্রদর্শন করে, তাকে সাহায্য-সহযোগিতা করে আর তার উপর অবতীর্ণ (নূর এর) আলোর অনুসরণ করে, তারাই হচ্ছে সফলকাম। ছূরা আ'রাফ আয়াত ১৫৭। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
.
আলোচনাঃ উক্ত আয়াত বড় হওয়াতে আয়াতের শেষের অংশ দেওয়া হল, যেখানে আল্লাহ বলেছেন যে, রছূলের প্রতি যে নূর নাজিল করা হয়েছে। অর্থাৎ ক্বুরআন নাজিল করা হয়েছে। তাহলে এখানে "নূর" অর্থ ক্বুরআন।
========================
.
ক্বুরআনকে "নূর" বলা হয়েছে।
.
(১) [৪:১৭৪] হে মানবকুল! তোমাদের পরওয়ারদেগারের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট সনদ পৌঁছে গেছে। আর আমি তোমাদের প্রতি প্রকৃষ্ট (নূর) আলো অবতীর্ণ করেছি। ছূরা নিছা আয়াত ১৭৪। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
.
(২) [৪:১৭৪] 'হে মানুষ, তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট প্রমাণ এসেছে এবং আমি তোমাদের নিকট স্পষ্ট (নূর) আলো নাযিল করেছি। ছূরা নিছা আয়াত ১৭৪। অনুবাদঃ আল বায়ান ফাউন্ডেশন।
.
আলোচনাঃ উক্ত আয়াতে আরবীতে "আনঝালনা ইলাইকুম নূরম মুবীনা" বলা হয়েছে। অর্থাৎ উক্ত আয়াতের দুটি অনুবাদেই এই "নূরকে" আলো বলা হয়েছে। অর্থাৎ "নূর" নাজিল করেছেন তথা ক্বুরআন নাজিল করেছেন। তাহলে বোঝা যাচ্ছে যে, এখানে "নূর" অর্থ ক্বুরআন।
========================
.
ক্বুরআনকে "নূর" বলা হয়েছে।
.
[৪২:৫২] 'এভাবে (উপরোক্ত ৩টি উপায়েই) আমার নির্দেশের মূল শিক্ষাকে তোমার কাছে আমি ওয়াহী যোগে প্রেরণ করেছি। তুমি জানতে না কিতাব কী, ঈমান কী, কিন্তু আমি একে (অর্থাৎ ওয়াহী যোগে প্রেরিত কুরআনকে) করেছি (নূর) আলো, যার সাহায্যে আমার বান্দাহদের মধ্য হতে যাকে ইচ্ছে আমি সঠিক পথে পরিচালিত করি। তুমি নিশ্চিতই (মানুষদেরকে) সঠিক পথের দিকে নির্দেশ করছ। ছুরা শুরা আয়াত ৫২। হুবহু তাইছুরুল কুরআনের অনুবাদ এখানে কপি করে পেস্ট করা হয়েছে।
.
আলোচনাঃ তাইছিরুল ক্বুরআনের অনুবাদে হুবহু এভাবেই ক্বুরআনকে "নূর" বলা হয়েছে।
========================
.
তাওরাতে আছে নূর
.
[৫:৪৪] আমি তওরাত অবর্তীর্ন করেছি। এতে হেদায়াত ও (নূর) আলো রয়েছে। আল্লাহর আজ্ঞাবহ পয়গম্বর, দরবেশ ও আলেমরা এর মাধ্যমে ইহুদীদেরকে ফয়সালা দিতেন।...। ছূরা মায়ীদা আয়াত ৪৪। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
.
তাওরাত নূর বা জ্যোতি বিশেষ
.
[৬:৯১] তারা আল্লাহকে যথার্থ মূল্যায়ন করতে পারেনি, যখন তারা বললঃ আল্লাহ কোন মানুষের প্রতি কোন কিছু অবতীর্ণ করেননি। আপনি জিজ্ঞেস করুনঃ ঐ গ্রন্থ কে নাযিল করেছে, যা মূসা নিয়ে এসেছিল ? যা (নূর) জ্যোতিবিশেষ এবং মানব মন্ডলীর জন্যে হোদায়েতস্বরূপ, যা তোমরা বিক্ষিপ্তপত্রে রেখে লোকদের জন্যে প্রকাশ করছ এবং বহুলাংশকে গোপন করছ।...। ছূরা আন'আম আয়াত ৯১।
=======================
.
ইঞ্জিলে ছিল নূর
.
[৫:৪৬] আমি তাদের পেছনে মরিয়ম তনয় ঈসাকে প্রেরণ করেছি। তিনি পূর্ববর্তী গ্রন্থ তওরাতের সত্যায়নকারী ছিলেন। আমি তাঁকে ইঞ্জিল প্রদান করেছি। এতে হেদায়াত ও (নূর) আলো রয়েছে। এটি পূর্ববতী গ্রন্থ তওরাতের সত্যায়ন করে পথ প্রদর্শন করে এবং এটি খোদাভীরুদের জন্যে হেদায়েত উপদেশ বানী। ছূরা মায়ীদা আয়াত ৪৬। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
.
চন্দ্রের নূর আলোরূপে
.
[৭১:১৬] এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন (নূর) আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে। ছূরা নূহ আয়াত ১৬।
=======================
.
চন্দ্রের নূর, স্নিগ্ধ আলো রুপে
.
[১০:৫] তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ (নূর) আলো বিতরণকারীরূপে এবং অতঃপর নির্ধারিত করেছেন এর জন্য মনযিল সমূহ, যাতে করে তোমরা চিনতে পার বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব। আল্লাহ এই সমস্ত কিছু এমনিতেই সৃষ্টি করেননি, কিন্তু যথার্থতার সাথে। তিনি প্রকাশ করেন লক্ষণসমূহ সে সমস্ত লোকের জন্য যাদের জ্ঞান আছে। ছূরা ইউনুছ আয়াত ৫।
=======================
.
আল্লাহ মানুষকে নূর দিবেন।
.
[৫৭:২৮] হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি নিজে অনুগ্রহের দ্বিগুণ অংশ তোমাদেরকে দিবেন, তোমাদেরকে দিবেন (নূর) জ্যোতি, যার সাহায্যে তোমরা চলবে এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করবেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, দয়াময়। ছূরা হাদীদ আয়াত ২৮।
.
আলোচনাঃ উক্ত আয়াতে আল্লাহ বলেছেন যে, মুমিনগনকে আল্লাহ নূর দিবেন। এবার ভাবুন এই নুর কি? এবং কোথায় দিবেন?
========================
.
আল্লাহ মানুষকে চলার জন্য নূর দিয়েছেন
.
[৬:১২২] আর যে মৃত ছিল অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি এবং তাকে এমন একটি (নূর) আলো দিয়েছি, যা নিয়ে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে। সে কি ঐ ব্যক্তির সমতুল্য হতে পারে, যে অন্ধকারে রয়েছে-সেখান থেকে বের হতে পারছে না? এমনিভাবে কাফেরদের দৃষ্টিতে তাদের কাজকর্মকে সুশোভিত করে দেয়া হয়েছে। ছূরা আন'আম আয়াত ১২২।
.
আলোচনাঃ এই আয়াতে আরবীতে "নুর" শব্দ রয়েছে যার অর্থ দেওয়া হয়েছে আলো। হতে পারে এটা দিনের আলো, আবার থে পারে এটা জ্ঞান বা জ্ঞানের আলো। যার মাধ্যমে সে মানুষের মধ্যে চলাফেরা করে। তাহলে এই নূরের অর্থ কি দ্বাড়ায়?
=======================
.
নূর উঠিয়ে নিলে অন্ধকার হয়ে যায়।
.
[২:১৭] তাদের অবস্থা সে ব্যক্তির মত, যে লোক কোথাও আগুন জ্বালালো এবং তার চারদিককার সবকিছুকে যখন আগুন স্পষ্ট করে তুললো, ঠিক এমনি সময় আল্লাহ তার চারদিকের (নূরকে) আলোকে উঠিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অন্ধকারে ছেড়ে দিলেন। ফলে, তারা কিছুই দেখতে পায় না। ছূরা বাক্বারা আয়াত ১৭।
.
আলোচনাঃ এই আয়াতের আরবীতেও "নূর" রয়েছে যার অর্থ আলো দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ এটা আগুনের নূর তথা আলোর কথা বলা হয়েছে।
=======================
.
আল্লাহ যাকে নূর দিবেন না তার কোন নূর নাই।
.
[২৪:৪০]... আল্লাহ যাকে (নূর) জ্যোতি দেন না, তার কোন জ্যোতিই নেই। ছূরা নূর আয়াত ৪০।
.
আলোচনাঃ নূরন ফামা- লাহূ মিঁন নূর। আল্লাহ যাকে নূর বা জ্যোতি দেন না তার কোন নূর বা জ্যোতি নাই। এই আয়াতে নূর অর্থ হেদায়েত।
=======================
.
আল্লাহর মনোনীত বান্দারা নূরের মধ্যে তথা আলোর মাঝে রয়েছে
.
[৩৯:২২] আল্লাহ যার বক্ষ ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দিয়েছেন, অতঃপর সে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে আগত (নূরের) আলোর মাঝে রয়েছে। (সে কি তার সমান, যে এরূপ নয়) যাদের অন্তর আল্লাহ স্মরণের ব্যাপারে কঠোর, তাদের জন্যে দূর্ভোগ। তারা সুস্পষ্ঠ গোমরাহীতে রয়েছে। ছূরা যুমার আয়াত ২২।
=======================
.
কিয়ামতে ঈমান্দারদের সামনে ও ডানে নূর ছুটাছূটি করবে।
.
[৫৭:১২] যেদিন আপনি দেখবেন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীদেরকে, তাদের সম্মুখ ভাগে ও ডানপার্শ্বে তাদের (নূর) জ্যোতি ছুটোছুটি করবে বলা হবেঃ আজ তোমাদের জন্যে সুসংবাদ জান্নাতের, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তাতে তারা চিরকাল থাকবে। এটাই মহাসাফল্য। ছূরা হাদীদ আয়াত ১২। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
.
কিয়ামতে ঈমান্দারদের সামনে ও ডানে নূর ছুটা ছূটি করবে।
.
[৬৬:৮]... সেদিন আল্লাহ নবী এবং তাঁর বিশ্বাসী সহচরদেরকে অপদস্থ করবেন না। তাদের নূর তাদের সামনে ও ডানদিকে ছুটোছুটি করবে। তারা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের নূরকে পূর্ণ করে দিন এবং আমাদেরকে ক্ষমা করুন। নিশ্চয় আপনি সবকিছুর উপর সর্ব শক্তিমান। ছূরা তাহরীম আয়াত ৮।
=======================
.
কিয়ামতে মুমিনদের থেকে কিছু নূর চাইবে অবিশ্বাসিরা।
.
[৫৭:১৩] যেদিন কপট বিশ্বাসী পুরুষ ও কপট বিশ্বাসিনী নারীরা মুমিনদেরকে বলবেঃ তোমরা আমাদের জন্যে অপেক্ষা কর, আমরাও কিছু (নূর) আলো নিব তোমাদের (নূর) জ্যোতি থেকে।...। ছূরা হাদীদ আয়াত ১৩।
=======================
.
কিয়ামতের পুরুস্কার স্বরুপ পাবে নূর
.
[৫৭:১৯] আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক ও শহীদ বলে বিবেচিত। তাদের জন্যে রয়েছে পুরস্কার ও জ্যোতি (নূর) এবং যারা কাফের ও আমার নিদর্শন অস্বীকারকারী তারাই জাহান্নামের অধিবাসী হবে। ছূরা হাদীদ আয়াত ১৯।
=======================
.
যে আয়াত টি দিয়ে রছূলকে নূরের তৈরি দলিল দেওয়া হয় সেই আয়াতের অনুবাদের প্রতি লক্ষ করুন।
(১)
[৫:১৫] হে আহলে-কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রাসূল আগমন করেছেন! কিতাবের যেসব বিষয় তোমরা গোপন করতে, তিনি তার মধ্য থেকে অনেক বিষয় প্রকাশ করেন এবং অনেক বিষয় মার্জনা করেন। তোমাদের কাছে একটি উজ্জল (নূর) জ্যোতি এসেছে এবং একটি সমুজ্জল গ্রন্থ। ছূরা মায়ীদা আয়াত ১৫। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
(২)
[৫:১৫] (আয়াতের শেষের অংশ)... আল্লাহর নিকট হইতে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব তোমাদের নিকট আসিয়াছে। অনুবাদঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
(৩)
[৫:১৫] (আয়াতের শেষের অংশ)... তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ হতে জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব এসেছে। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
(৪)
[৫:১৫] (আয়াতের শেষের অংশ)... তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এক আলোকময় বস্ত্ত এসেছে এবং তা একটি স্পষ্ট কিতাব (কুরআন)। অনুবাদঃ মুঃ মুজিবুর রহমান।
.
আলোচনাঃ এই আয়াতের দলিল দিয়েই অনেকে বলে থাকেন যে, রছূলুল্লাকে "নূর" দিয়ে সৃস্টি করা হয়েছে। অথচ আয়াতে তাহা বলা হয়নি। বেশির ভাগ অনুবাদে বলা হয়েছে যে, তোমাদের কাছে একটি নূর বা জ্যোতি এসেছে এবং একটি কিতাব"। প্রথমে জ্যোতি বা নূর বলাতে অনেকেই বলছেন যে, এই নূর হচ্ছে মুহাম্মাদ। এতে আমারও কোন আপত্তি নেই। কারন আল্লাহ পৃথিবীর আলোকে নূর বলেছেন, তাওরাত, ইঞ্জিল ও ক্বুরআনকেও নূর বলেছেন, আবার রছূলকেও নূর বলতে পারেন। অর্থাৎ ঐ সকলই আল্লাহর নূর বা আলো। কিন্তু রছূল নূরের তৈরি এ কথা এ আয়াতে বলা হয়নি। এবং আয়াতের এই অংশে রছূলের নামও নেই। রছূলের কথা বলা হয়েছে এই আয়াতের শুরুর দিকে। এটা মানুষকে পথভ্রষ্ট করার পায়তারা মাত্র, আর আল্লাহর আয়াতের অপব্যাখ্যা, এবং রছূলের প্রতি মিথ্যারোপ করা।
.
উক্ত আয়াতের শেষের অনুবাদ মুজিবুর রহমানের অনুবাদটি লক্ষ করুন! আমি সরাসরি কপি করে পেস্ট করলাম। তিনি অনুবাদ করেছেন (("...তোমাদের কাছে আল্লাহর নিকট থেকে এক আলোকময় বস্তু এসেছে এবং তা একটি স্পষ্ট কিতাব (কুরআন"))। অনেকেই এই অনুবাদ মেনে নিবে না। তবে গভীরভাবে চিন্তা ও গবেষনা করলে এই অনুবাদকেই সঠিক বলা হবে। এ বিষয় লিখতে হলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। তবে সংক্ষেপে একটু বলছি, আরবী বর্ণমালার ২৬ তম বর্ণ হচ্ছে "ওয়াও বা ওয়া"। আরবী অভিধানে "ওয়া" এর অর্থ দেওয়া আছে যথা- এবং, ও, আর, অর্থাৎ। এই চারটি অর্থের শেষের শব্দটা যদি ছুরা মায়ীদার ১৫ নং আয়াতের শেষের বাক্যে "ওয়া" এর অর্থ "অর্থাৎ" ধরা হয় তাহলে মুজিবুর রহমানের অনুবাদ সঠিক। যাহা "মিনাল্লাহি নূরুন অ কিতাবুম মুবীন"= অর্থঃ আল্লাহর নূর অর্থাৎ স্পষ্ট কিতাব। এখানে "অ" এর অর্থ "অর্থাৎ" ধরলেই সব ঠিক।
.
"ক্বদ যা- আকুম মিনাল্লা-হি নূরুন ওয়া কিতাবুম মুবীন" এর সঠিক অর্থ হবে "তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নূর এসেছে অর্থাৎ স্পষ্ট কিতাব"। এর জলন্ত প্রমান পাওয়া যাবে এর পরের আয়াতেই। কারন, পরের আয়াতের প্রথম বাক্যেই বলা হয়েছে যে, "এর দ্বারা (অর্থাৎ এ কিতাব দ্বারা) আল্লাহ যারা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন...। তাহলে এখানে রছূলকে নূরের তৈরি বলার কোন সুযোগ থাকে না। পরের আয়াতেও "মিনাজ জুলুমা-তি ইলাঁন নূর" বলা হয়েছে। ছূরা মায়ীদার ১৫ নং আয়াতের শেষের বাক্য ও ১৬ নং আয়াতের প্রথম বাক্য এক সাথে পড়লে ইহার সত্যতা প্রমান হবে। যেমন, "তোমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি নূর এসেছে অর্থাৎ স্পষ্ট কিতাব" O "এর দ্বারা (এই কিতাব দ্বারা) আল্লাহ যারা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন"...। তবে এ বিষয়গুলি এই লেখালেখিতে বুঝানো অতটা সম্ভব নয়। মুল কথা হচ্ছে ক্বুরআন ও ছহি হাদিছে রছূলকে নূর দিয়ে বানানোর কোন কথাই বলা হয়নি। যাহা বলাহয় তাহা জাল জাদিছ এবং বিভিন্ন মানুষের উক্তি, ফতোয়া বা বয়ান। ইহা আল্লাহ ও রছূলের উপর মিথ্যা অপবাদ।
.
এই রকম আরও একটি বিষয় ঘাবলা রয়েগেছে ছূরা হূদ এর ১১৪ নং আয়াতের প্রথম অংশের অনুবাদে। সেখানে "আক্বিমিছ ছলা-তা তরফা ইঁন নাহা-রা ওয়া ঝুলাফাম মিনাল লাইলি"। অর্থঃ- "ছালাত কায়েম কর দিনের দুই কিনারায় এবং রাতের প্রথমাংশে। আর যদি "ওয়া" এর অর্থ ধরা হয় "অর্থাৎ" তাহলে হবে এভাবে যথা- "ছালাত কায়েম কর দিনের দুই কিনারায় অর্থাৎ রাতের নিকটে"। ঝুলাফা অর্থ নিকটে। তাহলে ছলাতিল ফজর ও ছলাতিল ইশা মিলে যাবে। যাক এটা অন্য প্রসঙ্গ। আমরা মূল প্রসঙ্গে আসি।
.
[৫:১৬] এর দ্বারা (অর্থাৎ এই কিতাব দ্বারা) আল্লাহ যারা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা > অন্ধকার থেকে বের করে (নূরে) আলোর দিকে আনয়ন করেন< এবং সরল পথে পরিচালনা করেন। ছূরা মায়ীদা আয়াত ১৬।
========================
.
আরও "নূর" সম্পর্কিত আয়াত
.
জুলুমাত ও নূর, অন্ধকার ও আলো দিয়েছেন।
.
[৬:১] সর্ববিধ প্রশংসা আল্লাহরই জন্য যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকার ও (নূর) আলোর উদ্ভব করেছেন। তথাপি কাফেররা স্বীয় পালনকর্তার সাথে অন্যান্যকে সমতুল্য স্থির করে। ছূরা আন'আম আয়াত ১।
.
আলোচনাঃ "জুলুমাতি অঁন নূর", আল্লাহ এখানে দিনের আলোকে "নূর" বলেছেন।
=======================
.
জুলুমাত ও নূর। আলো অন্ধকার সমান নয়
.
[১৩:১৬] জিজ্ঞেস করুন নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলের পালনকর্তা কে? বলে দিনঃ আল্লাহ! বলুনঃ তবে কি তোমরা আল্লাহ ব্যতীত এমন অভিভাবক স্থির করেছ, যারা নিজেদের ভাল-মন্দের ও মালিক নয়? বলুনঃ অন্ধ চক্ষুষ্মান কি সমান হয়? অথবা কোথাও কি অন্ধকার ও (নূর) আলো সমান হয়।...। ছূরা র'দ আয়াত ১৬।
.
আলোচনাঃ এই আয়াতেও আরবীতে "নূর" শব্দ রয়েছে যার অর্থ অন্ধকারের বিপরিত আলো।
=======================
.
জুলুমাত ও নূর। অন্ধকার ও আলো
.
[৩৫:২০] (অলাজ জুলুমা-তু অলাঁন নূর) সমান নয় অন্ধকার ও (নূর) আলো। ছূরা ফাতির আয়াত ২০।( অন্ধকারের বিপরিত শব্দ আলো। এই আলো বুঝাতে এই আয়াতে নূর  শব্দ রয়েছে)।
=======================
.
সাতটি আয়াতে আটবার জুলুমা-তি ইলাঁন নূর বলা হয়েছে।
(১)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর
.
[৫:১৬] এর দ্বারা (এ কিতাব দ্বারা) আল্লাহ যারা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে, তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা >অন্ধকার থেকে বের করে (নূরের দিকে) আলোর দিকে আনয়ন করেন< এবং সরল পথে পরিচালনা করেন। ছূরা মায়ীদা আয়াত ১৬। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
(২)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর
.
[১৪:১] 'আলিফ-লাম-র, একটা কিতাব যা তোমার প্রতি অবতীর্ণ করেছি যাতে তুমি মানুষকে তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে >অন্ধকার থেকে নিয়ে আসতে পার (নূরের দিকে) আলোর দিকে< মহাপরাক্রমশালী প্রশংসিতের পথে। ছূরা ইব্রাহীম আয়াত ১। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
=======================
(৩)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর
.
[১৪:৫] আমি মূসাকে নিদর্শনাবলী সহ প্রেরণ করেছিলাম যে, স্বজাতিকে > অন্ধকার থেকে (নূরের দিকে) আলোর দিকে আনয়ন< এবং তাদেরকে আল্লাহর দিনসমূহ স্মরণ করান। নিশ্চয় এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল কৃতজ্ঞের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। ছূরা ইবরাহীম আয়াত ৫। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
(৪)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর
.
[৬৫:১১] একজন রসূল, যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করেন, যাতে বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণদের > অন্ধকার থেকে (নূরে) আলোতে আনয়ন করেন।< যে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তিনি তাকে দাখিল করবেন জান্নাতে, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, তথায় তারা চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাকে উত্তম রিযিক দেবেন। ছূরা তালাক্ব আয়াত ১১। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
(৫)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর
.
[৩৩:৪৩] তিনিই তোমাদের প্রতি রহমত করেন এবং তাঁর ফেরেশতাগণও রহমতের দোয়া করেন >-অন্ধকার থেকে তোমাদেরকে (নূরে) আলোতে বের করার জন্য।< তিনি মুমিনদের প্রতি পরম দয়ালু। ছূরা আহযাব আয়াত ৪৩। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
(৬)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর
.
[৫৭:৯] তিনিই তাঁর দাসের প্রতি প্রকাশ্য আয়াত অবতীর্ণ করেন, যাতে তোমাদেরকে > অন্ধকার থেকে (নূরে) আলোকে আনয়ন করেন।< নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের প্রতি করুণাময়, পরম দয়ালু। ছূরা হাশর আয়াত ৯। মা'রেফুল ক্বুরআন।
=======================
(৭)
জুলুমা-তি ইলাঁন নূর। দুই বার।
.
[২:২৫৭] যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন > অন্ধকার থেকে (নূরে) আলোর দিকে।< আর যারা কুফরী করে তাদের অভিভাবক হচ্ছে তাগুত। তারা তাদেরকে >(নূর থেকে) আলো থেকে বের করে অন্ধকারের< দিকে নিয়ে যায়। এরাই হলো দোযখের অধিবাসী, চিরকাল তারা সেখানেই থাকবে। ছূরা বাক্বারা আয়াত ২৫৭।
.
আলোচনাঃ উপরক্ত সাতটি আয়াতে আটবার "জুলুমা-তি ইলাঁন নূর" বাক্যটি রয়েছে। যার অর্থ ক্বুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসেন। এই আলো দিনের আলো নয়, আর এটা দিনের অন্ধকারও নয়। এটা সকলেই বুজতে পারছেন যে, এটা কোন ধরনের আলো। সৎপথে ফিরে আসাকেই আল্লাহ নূর বা আলো বলেছেন। কাজেই এই নূর দিয়ে আল্লাহ কোন মানুষ সৃষ্টি করেন নাই। অতএব, কেউ যদি বলেন যে, রছূলুল্লাহকে "নূর" দিয়ে সৃষ্টি করেছেন তাহলে সে রছূলুল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করলো।
=======================
.
আল্লাহর নূর নিভাতে চায় মুখের ফুৎকারে।
.
[৬১:৮] তারা মুখের ফুঁৎকারে আল্লাহর (নূর) আলো নিভিয়ে দিতে চায়। আল্লাহ তাঁর আলোকে পূর্ণরূপে বিকশিত করবেন যদিও কাফেররা তা অপছন্দ করে। ছূরা ছফ আয়াত ৮।
=======================
.
আল্লাহর নূর নিভাতে চায় মুখের ফুৎকারে।
.
[৯:৩২] তারা তাদের মুখের ফুৎকারে আল্লাহর নূরকে নির্বাপিত করতে চায়। কিন্তু আল্লাহ অবশ্যই তাঁর নূরের পূর্ণতা বিধান করবেন, যদিও কাফেররা তা অপ্রীতিকর মনে করে। ছূরা তাওবা আয়াত ৩২।
=======================
.
আল্লাহর নূর, নূরের উপর নূর, বা আলোর উপরে আলো। এই আয়াতে ৫ বার নূর শব্দ।
.
[২৪:৩৫] আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের (নূর) জ্যোতি, তাঁর (নূরের) জ্যোতির উদাহরণ যেন একটি কুলঙ্গি, যাতে আছে একটি প্রদীপ, প্রদীপটি একটি কাঁচপাত্রে স্থাপিত, কাঁচপাত্রটি উজ্জ্বল নক্ষত্র সদৃশ্য। তাতে পুতঃপবিত্র যয়তুন বৃক্ষের তৈল প্রজ্বলিত হয়, যা পূর্বমুখী নয় এবং পশ্চিমমুখীও নয়। অগ্নি স্পর্শ না করলেও তার তৈল যেন আলোকিত হওয়ার নিকটবর্তী। জ্যোতির উপর জ্যোতি। (নূরের উপর নূর) আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পথ দেখান তাঁর (নূরের) জ্যোতির দিকে। আল্লাহ মানুষের জন্যে দৃষ্টান্তসমূহ বর্ণনা করেন এবং আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত। ছূরা নূর আয়াত ৩৫।
=======================
.
আল্লাহর নূরে পৃথিবী আলোকিত হবে
.
[৩৯:৬৯] পৃথিবী তার পালনকর্তার নূরে উদ্ভাসিত হবে, আমলনামা স্থাপন করা হবে, পয়গম্বরগণ ও সাক্ষীগণকে আনা হবে এবং সকলের মধ্যে ন্যায় বিচার করা হবে-তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না। ছূরা যুমার আয়াত ৬৯।
.
আলোচনাঃ এই আয়াতে রবের নূরের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ আল্লাহর নূরে বা আল্লাহর আলোয় পৃথিবী পুনরায় আলোকিত হবে।
=======================
.
আলোচনাঃ আল্লাহ ক্বুরআনুম মাজীদে বহুস্থানে নূর শব্দটি বলেছেন। কোন একটি নূর শব্দ দ্বারা মানুষ সৃষ্টিকে বোঝানো হয়নি। এক শ্রেণীর মানুষ যারা নিজেরা ক্বুরআন বুঝে পড়ে না, তেমনি অন্যকেও বুঝে পড়ার উৎসাহ দেয় না। এরা নিজেরা যেমন বিভ্রান্ত ঠিক তেমনি অন্যকেও বিভ্রান্ত করে, এবং ক্বুরআনের দোহাই দিয়ে বলে যে, রছূলুল্লাহ "নূরে মুজাসসাম"। অথচ আল্লাহ ক্বুরআনে এধরনের কোন বাক্যই উচ্চারণ করেন নি। আল্লাহ যাকে সৃষ্টি করলেন তাঁকে আল্লাহ "নূরে মুজাসসাম" বললেন না, অথচ বর্তমানের মানুষ আল্লাহর প্রতি কিরুপ মিথ্যা অপবাদ দেয়, এরা কি আল্লাহর চেয়েও বেশি জানেন? নাউযুবিল্লাহ। ইহা আল্লাহর প্রতি, আল্লাহর ক্বুরআনের আয়াতের প্রতি ও রছূলুল্লাহর প্রতি মিথ্যা অপবাদ। আল্লাহ ও আল্লাহর রছূলের প্রতি মিথ্যা অপবাদের জন্য কিয়ামতের দিন তাহাদেরকে আল্লাহর সামনে জবাবদিহি করতে হবে।
========================
.
[১১:১৮] (আল্লাহ বলেন) 'যারা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা রচনা করে তাদের থেকে বড় যালিম আর কে হতে পারে? তাদেরকে তাদের প্রতিপালকের সামনে উপস্থিত করা হবে আর সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিবে যে, এই লোকরাই তাদের রবেবর বিরুদ্ধে মিথ্যা বলেছিল। শুনে রেখ! আল্লাহর অভিশাপ সেই যালিমদের উপর। ছূরা হূদ আয়াত ১৮। অনুবাদঃ তাছিরুল ক্বুরআন।
========================
.
[৩৯:৬০] যারা আল্লাহর প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, কেয়ামতের দিন আপনি তাদের মুখ কাল দেখবেন। অহংকারীদের আবাসস্থল জাহান্নামে নয় কি? ছূরা যুমার আয়াত ৬০। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[২৯:৬৮] 'তার চেয়ে বড় যালিম আর কে আছে যে আল্লাহর সম্বন্ধে মিথ্যে রচনা করে আর প্রকৃত সত্যকে অস্বীকার করে যখন তা তাঁর নিকট থেকে আসে? অস্বীকারকারীদের আবাস স্থল কি জাহান্নামের ভিতরে নয়? ছূরা আনকাবূত আয়াত ৬৮। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
========================
.
[৩৯:৩২] 'যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে আর সত্য সমাগত হওয়ার পর তা অস্বীকার করে তার চেয়ে বড় যালিম আর কে আছে? (এমন) কাফিরদের আবাসস্থল কি জাহান্নামে নয়? ছূরা যুমার আয়াত ৩২। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
========================
.
[৬১:৭] যে ব্যক্তি ইসলামের দিকে আহুত হয়েও আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা বলে; তার চাইতে অধিক যালেম আর কে? আল্লাহ যালেম সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করেন না। ছূরা ছফ আয়াত ৭। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[৩৯:৩]...(সত্য পথ থেকে সরে গিয়ে মিথ্যে পথ ও মতের জন্ম দিয়ে) তারা যে মতভেদ করছে, আল্লাহ তার চূড়ান্ত ফয়সালা করে দেবেন। যে মিথ্যেবাদী ও কাফির আল্লাহ তাকে সঠিক পথ দেখান না। ছূরা যুমার আয়াত ৩। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
========================
.
[১৮:৫] 'এ সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই, আর তাদের পিতৃ-পুরুষদেরও ছিল না। তাদের মুখ থেকে বের হয় বড়ই সাংঘাতিক কথা। তারা যা বলে তা মিথ্যে ছাড়া কিছুই নয়। ছূরা কাহাফ আয়াত ৫। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
.
(এখনও মানুষের মুখ থেকে সাংঘাতিক মিথ্যা কথা বের হয়, যাহা সম্বন্দে তাহাদের কোন জ্ঞান নাই এবং যাহা আল্লাহ ও আল্লাহর রছূল বলেননি)।
========================
.
[৫২:১১-১২] সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে, O যারা ক্রীড়াচ্ছলে মিছেমিছি কথা বানায়। ছূরা তূর আয়াত ১১-১২। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[১৬:১০৫] 'যারা আল্লাহর আয়াতসমূহে বিশ্বাস করে না, তারাই মিথ্যে রচনা করে আর তারাই মিথ্যাবাদী। ছূরা নাহল আয়াত ১০৫। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
.
আলোচনাঃ এই আয়াতে বোঝাযাচ্ছে যে, যাহারা আল্লাহর আয়াতে বিশ্বাস করবে তাহারা কোন অবস্থাতেই ইছলামের মধ্যে বিধিবিধান রুপে বা নিয়ম-কানুন রুপে কোন কিছুই রচনা করতে পারে না। আর যারা আল্লাহর আয়াত বিশ্বাস করে না তাহারাই হাজারও মিথ্যা বিধান রচনা করেছে।
========================
.
[৪:৫০] 'দেখ, এরা আল্লাহর সম্বন্ধে কেমন মিথ্যে রচনা করে, সুস্পষ্ট গুনাহের জন্য এটাই যথেষ্ট। ছূরা নিছা আয়াত ৫০।
========================
.
[৬:২৪] 'বরং(আসল ব্যাপার হল) আগে (দুনিয়াতে) তারা (মিথ্যের আবরণে) যা গোপন করে রাখত এখন তা তাদের কাছে প্রকাশ করা হয়েছে আর তাদেরকে (পৃথিবীতে) ফিরিয়ে দেয়া হলে তারা আবার তা-ই করবে যা করতে তাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে, নিশ্চয় তারা হল মিথ্যুক। ছূরা আন'আম আয়াত ৬:২৪। অনুবাদঃ তাইছিরুল ক্বুরআন।
========================
.
[৫৪:৩] তারা মিথ্যারোপ করছে এবং নিজেদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করছে। প্রত্যেক কাজ যথাসময়ে স্থিরীকৃত হয়। ছূরা ক্বমার আয়াত ৩। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[৪৫:২৭] নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন মিথ্যাপন্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ছূরা জাছিয়া আয়াত ২৭। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[৫৬:৫১-৫৬] অতঃপর হে পথভ্রষ্ট, মিথ্যারোপকারীগণ। O তোমরা অবশ্যই ভক্ষণ করবে যাক্কুম বৃক্ষ থেকে, O অতঃপর তা দ্বারা উদর পূর্ণ করবে, O অতঃপর তার উপর পান করবে উত্তপ্ত পানি। O পান করবে পিপাসিত উটের ন্যায়। O কেয়ামতের দিন এটাই হবে তাদের আপ্যায়ন। ছূরা অক্বিয়া আয়াত ৫১-৫৬। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[৫৬:৯২-৯৫] আর যদি সে পথভ্রষ্ট মিথ্যারোপকারীদের একজন হয়, O তবে তার আপ্যায়ন হবে উত্তপ্ত পানি দ্বারা। O এবং সে নিক্ষিপ্ত হবে অগ্নিতে। O এটা ধ্রুব সত্য। ছূরা অক্বিয়া আয়াত ৯২-৯৫। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[৪৫:৭-৮] প্রত্যেক মিথ্যাবাদী পাপাচারীর দুর্ভোগ। O সে আল্লাহর আয়াতসমূহ শুনে, অতঃপর অহংকারী হয়ে জেদ ধরে, যেন সে আয়াত শুনেনি। অতএব, তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিন। ছূরা জাছিয়া আয়াত ৭-৮। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
[৬৮:৮] (আল্লাহ রছূলকে বললেন) অতএব, আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না। ছূরা ক্বলাম আয়াত ৮। অনুবাদঃ মা'রেফুল ক্বুরআন।
========================
.
ক্বুরআনের চেয়ে সত্য বাণী এ পৃথিবীতে আর কিছু নেই। যে ক্বুরআন দিয়ে কথা বলে সেই সত্যকথা বলে। মিথ্যাবাদীরা পূর্বেও ছিল এখনও আছে। মিথ্যাবাদীরা নিজেরা বিভিন্ন শ্রেণীতে দলভুক্ত হয়ে ক্বুরআন থেকে সমাধান না নিয়ে ইছলামের মধ্যে বিভিন্ন দল তৈরি করে যে যার মত ইছলামের ব্যাখ্যা দেয়। এবং তাহাদের অজান্তেই তাহারা আল্লাহর প্রতি ও রছূলের প্রতি বিভিন্ন বিষয় মিথ্যারোপ করে। যাহারা ক্বুরআন থেকে সমাধান নিবে না তাহাদেরকে পরিচালনা করে শয়তান। এক মিথ্যাবাদিরা অন্য মিথ্যাবাদিদের কাছ থেকে অনুমান ভিত্তিক ফতোয়া গ্রহন করে আল্লাহর সৃষ্টি নিয়েও আল্লাহর প্রতি মিথ্যারোপ করে। আল্লাহ বলেন-
========================
.
[২:১৬৯] 'সে (শয়তান) তোমাদেরকে শুধু অসৎ এবং অশ্লীল কাজের নির্দেশ দেয়, আর তোমাদেরকে নির্দেশ দেয় আল্লাহর সম্বন্ধে এমন কথা বলার যা তোমরা জান না। ছূরা বাক্বারা আয়াত ১৬৯।
========================
.
[৬:১২১] (আল্লাহ বলেন)...নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদেরকে আদেশ করে-যেন তারা তোমাদের সাথে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরেক হয়ে যাবে। ছূরা আন'আম আয়াত ১২১।
========================
.
[৪৭:২৫] নিশ্চয় যারা সোজা পথ ব্যক্ত হওয়ার পর তৎপ্রতি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করে, শয়তান তাদের জন্যে তাদের কাজকে সুন্দর করে দেখায় এবং তাদেরকে মিথ্যা আশা দেয়। ছূরা মুহাম্মাদ আয়াত ২৫।
========================
.
[৪৩:৩৭] শয়তানরাই মানুষকে বাধা দেয় সৎপথে চলতে। ছূরা যুখরুফ আয়াত ৩৭।
========================
.
[২৬:২২২] 'তারা (শয়তানরা) অবতীর্ণ হয় প্রত্যেকটি চরম মিথ্যুক ও পাপীর নিকট। ছূরা শু'আরা আয়াত ২২২।
========================
.
[৩:৯৪] 'এরপরও যারা আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যারোপ করবে, তারা যালিম। ছূরা আল ইমরান আয়াত ৯৪।
♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦
.
আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদুর
রছূলুল্লাহ একজন মানুষ ছিলেন।
.
মানুষের অনুমান ভিত্তিক
উক্তি ও জাল হাদিছের
রেফারেন্স দিয়ে রছূলকে
নূরের তৈরি বলা যায় না।
রছূল একজন মানুষ ছিলেন।
রছূলুল্লাহকে কি দিয়ে তৈরি করা
হয়েছে? মাটি দিয়ে নাকি নূর
দিয়ে? এ কথা কিয়ামতে আল্লাহ
কাউকে জিজ্ঞাসা করবেন না।
আমাদের আমল/কর্ম সম্বন্ধে
আমরা জিজ্ঞাসিত হব। তবুও
শয়তানের পাল্লায় পড়ে এক
শ্রেণীর মানুষ এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক
করতেই থাকে। রছূল কি মানুষ?
নাকি নূর? এবিষয় ক্বুরআন কি
বলে?
--------------------------
কিছু আয়াতের সংক্ষিপ্ত
অনুবাদ বা মুল ভাব প্রকাশ।
[১৭:৯৪] (আল্লাহ বলেন)...আল্লাহ
কি মানুষকেই রছূল করে
পাঠিয়েছেন? তাদের এই উক্তিই
তাদেরকে ঈমান আনা থেকে
দুরে রেখেছে। ১৭ নং ছূরা
বনি-ইছরাঈল আয়াত ৯৪।
--------------------------
আলোচনাঃ পূর্বেকার এক
শ্রেণীর মানুষ এ ধরনের উক্তি
পেশ করতেন যে আল্লাহ কি
মানুষকেই রছূল করে
পাঠিয়েছেন? তারা হয়ত
বলতে চাইতেন যে, যে ধর্ম
প্রচার করবে সে আল্লাহর নূরের
তৈরি কোন ফেরেস্তা হবেন।
তাদেরই উত্তর সুরিরা আজ
রছূলকে নূরের তৈরি বলছে।
একটি আয়াতে দেখা যায় যে,
তাহারা ফেরেস্তাও দেখতে
চেয়েছিল।
--------------------------
[১৭:৯৩-৯৫] (বলুনঃ পবিত্র মহান
আমার রবঃ একজন মানুষ,
একজন রসূল ছারা আমি আর কে?)
ছূরা বনি-ইছরাঈল আয়াত ৯৩-৯৫।
--------------------------
[১৮:১১০] (আল্লাহ রছূলকে বলতে
বললেন আপনি) বলুন, আমিত
তোমাদের মতই একজন মানুষ।
ছূরা কাহাফ আয়াত ১১০।
(এই আয়াতে রছূল বললেন যে,
আমি তোমাদের মতই একজন
মানুষ। উক্ত আয়াতের ভিত্তিতে
রছূল কি আমাদের মত একজন
মানুষ নয়? আমরা মাটির তৈরি
হলে আমাদের মত মানুষটি
কিষের তৈরি? তাহলে ক্বুরআন
কি মিথ্যা বলছে? নাউযুবিল্লাহ)।
--------------------------
[ইসলামিক ফাউন্ডেশন
বোখারী শরীফ এর
প্রথম খন্ড হাদিস নং ৩৯২।
এবং সিদ্দিকীয়া পাবলিকেশন্স
বোখারী শরীফ হাদিস নং
৩৮৬] উক্ত হাদিসদয়ও ঐ
একই কথা বলা হয়েছে যে,
রছূল বললেন, "আমিও
তোমাদের মত মানুষ"। এই
কথাটা অন্যন্য বুখারি শরীফ,
মুছলিম শরীফ, ও মিশকাত
শরীফেও আছে। উক্ত হাদিছের
ভিত্তিতে কেউ যদি বলে যে,
রছূল আমাদের মতই মানুষ
তাহলে সেকি হাদিছ মান্য
করিল? নাকি অমান্য করিল?
--------------------------
[৪১:৬] (আল্লাহ কুরআনে
আবার বলেন আপনি) বলুন,
আমিত তোমাদের মতই মানুষ।
ছূরা হা-মীম ছিজদা আয়াত ৬।
(এই আয়াতেও ক্বুরআন বলছে যে,
রছূল আমাদের মতই মানুষ।
কথাগুলি তো আমি বলছি না,
কথা বলছে ক্বুরআন ও হাদিছ)।
--------------------------
[২:১৫১] (আল্লাহ বলেন)
তোমাদের মধ্য হইতেই
তোমাদের নিকট রছূল পাঠিয়েছি।
ছূরা বাক্বারা আয়াত ১৫১।
--------------------------
[৩:১৬৪] তাহাদের নিজেদের
মধ্য হইতেই তাহাদের নিকট
রছূল পাঠাইয়াছেন। ছূরা আল
ইমরান আয়াত ১৬৪।
--------------------------
[৯:১২৮] অবশ্যই তোমাদের
মধ্য হইতেই একজন রছূল
আসিয়াছে। ছূরা তাওবা ১২৮।
--------------------------
[১৬:৪৩] তোমার পূর্বে অহি
সহ মানুষকেই পাঠিয়েছিলাম।
ছূরা নাহল আয়াত ৪৩।
--------------------------
[১৬:১১৩] তাহাদের মধ্য
হইতেই এসেছিল একজন রছূল।
ছূরা নাহল আয়াত ১১৩।
--------------------------
[২১:৭] (আল্লাহ রছূলকে বল্লেন)
তোমার পুর্বে অহি সহ মানুষকেই
পাঠিয়ে ছিলাম। ছূরা আম্বিয়া
আয়াত ৭।
--------------------------
[১০:২] তাহাদের এক জনের
নিকট অহি পাঠিয়েছি। ছূরা
ইউনুছ আয়াত ২।
--------------------------
[১৬:২] বান্দাদের মধ্যে যাকে
ইচ্ছা তার কাছে অহি সহ
ফেরেস্তা পাঠান। ছূরা নাহল
আয়াত ২।
--------------------------
[১৮:১] (আল্লাহ তার) বান্দার
প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছেন।
ছূরা কাহাফ আয়াত ১।
--------------------------
[৩:৭৪] আল্লাহ (অহি পাঠানোর
জন্য) যাকে ইচ্ছা বাছিয়া লন।
ছূরা আল ইমরান আয়াত ৭৪।
--------------------------
[১৪:৯-১১] (পূর্ববর্তি নবী
রছূলগন বলিল) আমরা
তোমাদের মতই মানুষ,
বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা
(আল্লাহ) অনুগ্রহ করেন।
ছূরা ইব্রাহীম আয়াত ৯-১১।
--------------------------
[৭:৬৩] (নুহ প্রসঙ্গে আল্লাহ
বললেন) তোমাদের এক জনের
মাধ্যমেই উপদেশ আসিয়াছে।
ছূরা আ'রাফ আয়াত ৬৩।
--------------------------
[১২:১০৯] জনপদ বাসিদের
মধ্য হইতে পুরুষ গনকেই
নবী করিয়াছিলাম। ছূরা
ইঊছূফ আয়াত ১০৯।
--------------------------
[৬২:২] আল্লাহ উম্মিদের মধ্য
হইতে তাদের নিকট একজন
রছূল পাঠিয়েছেন। ছূরা
জুমু'আ আয়াত ২।
--------------------------
[২৩:৩২] উহাদের একজনকে
রছূল করিয়া পাঠাইলাম।
ছূরা মু'মিনুন আয়াত ৩২।
--------------------------
[৬:১৩০] (কিয়ামতে বলা হইবে)
হে জীন ও মানব! তোমাদের
মধ্য হইতে কি তোমাদের
নিকট রছূল আসে নায়? ছূরা
আন'আম আয়াত ১৩০।
--------------------------
উপরোক্ত সংক্ষিপ্ত আয়াতের
প্রতিটি আয়াতে ইহাই বলা
হয়েছে যে, মানুষের মধ্যে
আল্লাহ যাহাকে ইচ্ছা অহি
পাঠানোর জন্য বাছিয়া লন,
এবং মানুষকেই নবী-রছূল করে
পাঠিয়েছেন। কাজেই অহি
পাঠানোর জন্য নূরের সৃষ্টি
কাউকে বাছিয়া লন না,
মানুষকেই বাছিয়া লন। আর
মানুষ মাটির সৃষ্টি।
ক্বুরআনের জ্ঞান না থাকাতে
মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্যই
সারাক্ষন অমুকের কথা তমুকের
মিথ্যা বাণী প্রচার করা হয়। এরা
মুলত মানুষকে মিথ্যাই শিখায়।
--------------------------
রছূলুল্লাহ বিশ্ববাসির
জন্যই একটি "নুর" অর্থাৎ
আলো। এর অর্থ এই নয় যে,
তাকে নূর দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে।
রছূলুল্লাহ আল্লাহর আদেশক্রমে
মানুষকে অন্ধকার থেকে
আলোতে নিয়ে আসেন।
যে রছূলকে অনুস্মরণ করবে
সে আলো পাবে অর্থাৎ জুলুমাত
থেকে নুরে আসবে তথা
অন্ধকার থেকে আলোতে
আসবে। এর অর্থ এই নয় যে
নবীকে "নুর" তথা আলো দিয়ে
বানানো হয়েছে। ক্বুরআন ও
ছহি হাদিছের একটি আয়াত
বা একটি হাদিছও কেউ দেখাতে
পারবে না যে রছূলুল্লাহ আলোর
তৈরি। মিথ্যাবাদীরা হাজারও
মিথ্যা ফতোয়া দিয়েই মানুষকে
পথভ্রষ্ট করে।
--------------------------
[৬:১২১] (আল্লাহ বলেন)...
নিশ্চয় শয়তানরা তাদের
বন্ধুদেরকে আদেশ করে-যেন
তারা তোমাদের সাথে তর্ক
করে। যদি তোমরা তাদের
আনুগত্য কর, তোমরাও
মুশরেক হয়ে যাবে। ছূরা
আন'আম আয়াত ১২১।
----------------------------
কাজেই, যারা শয়তানের বন্দু
ও মিথ্যাবাদী তাদেরকে বর্জন
করে মানুষের শোনা কথায় কান
না দিয়ে আসুন আমরা আল্লাহর
ক্বুরআন বুঝে বুঝে পড়ি আর
ক্বুরআন দিয়েই জীবন গড়ি।
তাহলে আমাদেরকে আর
কেহই পথভ্রষ্ট করতে ও মুশরেক
বানাতে পারবে না, ইঁনশা-আল্লাহ।
----------------------------
[২:৪২] (আল্লাহ বলেন) তোমরা
সত্যের সাথে মিথ্যাকে মিশ্রিত
করিও না, এবং জেনে বুঝে সত্য
গোপন করিও না। ছূরা বাক্বারা
আয়াত ৪২।
----------------------------
[১৭:৮১] 'বল, ‘সত্য এসে
গেছে আর মিথ্যা বিলুপ্ত
হয়েছে, মিথ্যা তো বিলুপ্ত
হওয়ারই। ছূরা বানী
ইছরাঈল আয়াত ৮১।
----------------------------

(সংগৃহীত)



https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2052208715013189&id=100006722419436


https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=2025039961063398&id=100006722419436


https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1961566517410743&id=100006722419436

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...