আসসালামু আলাইকুম।
➡️চাঁদ দেখার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম থেকে যতগুলো হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার মূল বক্তব্য বহন করছে আলোচিত হাদীস দু’টি। এ কারণেই চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদাত পালনের তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সকল ফকীহ ও আলেমগণ নিজ নিজ মতের সমর্থনে অত্র হাদীস দু’টিকে দলীল হিসেবে পেশ করে থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ উক্ত হাদীস দু’টি হচ্ছে-
➡️১ এক, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম ইরশাদ করেন-
-لاتصوموا حتى تروه ولاتفطروا حتى تروه
তোমরা চাঁদ না দেখে রোযা রাখবেনা এবং চাঁদ না দেখে রোযা ছাড়বেনা (ঈদ করবেনা) । --- (সহীহ বুখারী ১৯০৬, সহীহ মুসলিম ২৫৫০, সুনানে নাসায়ী ২১২০)
হাদীসটির ব্যাখ্যায় পবিত্র বোখারী শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব “ফাতহুল বারী”-তে আল্লামা ইবনু হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লেখেন-
"রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম-এর বাণী فلاتصوموا حتى تروه এর মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজে চাঁদ দেখতে হবে এমন উদ্দেশ্য নেয়া যাবেনা। বরং পবিত্র বাণীটির উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু ব্যক্তির চাঁদ দেখা। জমহুর ফকীহ গণের মতানুসারে রমযানের চাঁদ একজনের দেখাই যথেষ্ট হবে। যা হানাফী ফকীহগণের মত। আর অন্যদের মতে দু’জনের দেখা যথেষ্ট হবে। এ মতামত অপরিচ্ছন্ন আকাশের ক্ষেত্রে, কিন্তু আকাশ যদি পরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে এমন সংখ্যক ব্যক্তির চাঁদ দেখতে হবে যাদের সংখ্যা দ্বারা চাঁদ দেখার সংবাদ প্রমাণিত হবে। যারা এক দেশের দেখা অন্য দেশের জন্য প্রযোজ্য বলে মত প্রকাশ করেছেন এটা তাদের মত। আর যারা প্রত্যেক দেশের জন্য চাঁদ দেখার মত প্রকাশ করেছেন তারা বলেছেন “যতক্ষণ না তাকে দেখবে” এর মাধ্যমে বিশেষ অঞ্চলের মানুষকে সম্বোধন করা হয়েছে। যা অন্য অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয়। কিন্তু দ্বিতীয় পক্ষের এ মত হাদীসের প্রকাশ্য বক্তব্যের পরিবর্তন। অতএব চাঁদ দেখাকে প্রত্যেক মানুষের সাথে এবং প্রত্যেক দেশের সাথে সীমিত করা যাবে না।"
----- (ফাতহুল বারী ফি শরহে ছহীহীল বুখারী, খন্ড-৪, পৃঃ-১৫৪)
➡️দুই, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন-
-صوموا لرؤيته وافطروا لروؤيته
অর্থাৎ চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা ছাড়, ঈদ কর। ----- (মুসলিম শরীফ-২৫৬৭)
মুসলিম শরীফের যে পৃষ্ঠায় হাদীসটির বর্ননা রয়েছে সে পৃষ্ঠায়ই হাদীসটির অর্থ করা হয়েছে এভাবে-
"এবং চাঁদ দেখার প্রমাণ সাপেক্ষে তোমরা রোযা ছাড়, ঈদ কর।” এর অর্থ হলো কিছু মুসলমানের দেখার মাধ্যমে উদয় প্রমাণিত হওয়া। এ শর্ত করা যাবেনা যে প্রত্যেক মানুষেরই চাঁদ দেখতে হবে। বরং যে কোন দেশের যে কোন দু'জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির দেখাই সকল মানুষের জন্য যথেষ্ট হবে। বরং সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতে রোযার ক্ষেত্রে একজন সৎ ব্যক্তির দেখাই সকলের আমলের জন্য যথেষ্ট । আর অধিকাংশ ফকীহগণের মতে শাওয়ালের নুতন চাঁদ প্রমাণের জন্য একজনের সাক্ষ্য যথেষ্ট হবেনা।"
(মুসলীম শরীফ, খন্ড-১, পৃঃ-৩৪৭, শরহে নাবাবী আলা মুসলিম ৭/১৯০)
➡️৩ জামে তিরমিজি শরীফের মুকাদ্দামায় লেখা হয়েছে-
“প্রত্যেক দেশের মানুষ নিজ নিজ দেশের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমল করবে কিনা? এ প্রসংগে হানাফী মাযহাবের তিনটি মত বর্নিত হয়েছে। ১) এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহনীয় হবেনা। ২) এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহনীয় হবে। ৩) বিশেষ সতর্কতা, যেমন- রোযা রেখে ইবাদতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে গ্রহনীয় হবে, অন্যথায় গ্রহনীয় হবেনা। কিন্তু এ তিনটি মতের মধ্যে প্রসিদ্ধমত হলো ২য়টি এবং এমতের উপর-ই হানাফী মাযহাব প্রতিষ্ঠিত”।
--- (তিরমিজি শরীফ মুকাদ্দামা-২২পৃষ্ঠা)
যে সকল ফকীহ ও আলেমগণ সমগ্র বিশ্বে একই দিনে আমলের পক্ষে ফাতওয়া দিয়েছেন তারা নিজেদের মতের সমর্থনে অত্র হাদীস দু’টিকে দলীল হিসেবে পেশ করেছেন। তাদের যুক্তি হল হাদীস দু’টির মধ্যে “তোমরা” বলে সম্বোধন দেশ মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যে ব্যাপক অর্থবোধক সম্বোধন।
➡️চাঁদ দেখার ব্যাপারে রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম থেকে যতগুলো হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার মূল বক্তব্য বহন করছে আলোচিত হাদীস দু’টি। এ কারণেই চাঁদের তারিখ নির্ভর সকল ইবাদাত পালনের তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সকল ফকীহ ও আলেমগণ নিজ নিজ মতের সমর্থনে অত্র হাদীস দু’টিকে দলীল হিসেবে পেশ করে থাকেন। গুরুত্বপূর্ণ উক্ত হাদীস দু’টি হচ্ছে-
➡️১ এক, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম ইরশাদ করেন-
-لاتصوموا حتى تروه ولاتفطروا حتى تروه
তোমরা চাঁদ না দেখে রোযা রাখবেনা এবং চাঁদ না দেখে রোযা ছাড়বেনা (ঈদ করবেনা) । --- (সহীহ বুখারী ১৯০৬, সহীহ মুসলিম ২৫৫০, সুনানে নাসায়ী ২১২০)
হাদীসটির ব্যাখ্যায় পবিত্র বোখারী শরীফের ব্যাখ্যা গ্রন্থ বিশ্ব বিখ্যাত কিতাব “ফাতহুল বারী”-তে আল্লামা ইবনু হাজার আসকালানী রহমাতুল্লাহি আলাইহি লেখেন-
"রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম-এর বাণী فلاتصوموا حتى تروه এর মাধ্যমে প্রত্যেক ব্যক্তি নিজে চাঁদ দেখতে হবে এমন উদ্দেশ্য নেয়া যাবেনা। বরং পবিত্র বাণীটির উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু ব্যক্তির চাঁদ দেখা। জমহুর ফকীহ গণের মতানুসারে রমযানের চাঁদ একজনের দেখাই যথেষ্ট হবে। যা হানাফী ফকীহগণের মত। আর অন্যদের মতে দু’জনের দেখা যথেষ্ট হবে। এ মতামত অপরিচ্ছন্ন আকাশের ক্ষেত্রে, কিন্তু আকাশ যদি পরিচ্ছন্ন থাকে তাহলে এমন সংখ্যক ব্যক্তির চাঁদ দেখতে হবে যাদের সংখ্যা দ্বারা চাঁদ দেখার সংবাদ প্রমাণিত হবে। যারা এক দেশের দেখা অন্য দেশের জন্য প্রযোজ্য বলে মত প্রকাশ করেছেন এটা তাদের মত। আর যারা প্রত্যেক দেশের জন্য চাঁদ দেখার মত প্রকাশ করেছেন তারা বলেছেন “যতক্ষণ না তাকে দেখবে” এর মাধ্যমে বিশেষ অঞ্চলের মানুষকে সম্বোধন করা হয়েছে। যা অন্য অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রযোজ্য নয়। কিন্তু দ্বিতীয় পক্ষের এ মত হাদীসের প্রকাশ্য বক্তব্যের পরিবর্তন। অতএব চাঁদ দেখাকে প্রত্যেক মানুষের সাথে এবং প্রত্যেক দেশের সাথে সীমিত করা যাবে না।"
----- (ফাতহুল বারী ফি শরহে ছহীহীল বুখারী, খন্ড-৪, পৃঃ-১৫৪)
➡️দুই, রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম আরো ইরশাদ করেন-
-صوموا لرؤيته وافطروا لروؤيته
অর্থাৎ চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা রাখ এবং চাঁদ দেখার ভিত্তিতে তোমরা রোযা ছাড়, ঈদ কর। ----- (মুসলিম শরীফ-২৫৬৭)
মুসলিম শরীফের যে পৃষ্ঠায় হাদীসটির বর্ননা রয়েছে সে পৃষ্ঠায়ই হাদীসটির অর্থ করা হয়েছে এভাবে-
"এবং চাঁদ দেখার প্রমাণ সাপেক্ষে তোমরা রোযা ছাড়, ঈদ কর।” এর অর্থ হলো কিছু মুসলমানের দেখার মাধ্যমে উদয় প্রমাণিত হওয়া। এ শর্ত করা যাবেনা যে প্রত্যেক মানুষেরই চাঁদ দেখতে হবে। বরং যে কোন দেশের যে কোন দু'জন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির দেখাই সকল মানুষের জন্য যথেষ্ট হবে। বরং সর্বাধিক বিশুদ্ধ মতে রোযার ক্ষেত্রে একজন সৎ ব্যক্তির দেখাই সকলের আমলের জন্য যথেষ্ট । আর অধিকাংশ ফকীহগণের মতে শাওয়ালের নুতন চাঁদ প্রমাণের জন্য একজনের সাক্ষ্য যথেষ্ট হবেনা।"
(মুসলীম শরীফ, খন্ড-১, পৃঃ-৩৪৭, শরহে নাবাবী আলা মুসলিম ৭/১৯০)
➡️৩ জামে তিরমিজি শরীফের মুকাদ্দামায় লেখা হয়েছে-
“প্রত্যেক দেশের মানুষ নিজ নিজ দেশের চাঁদ দেখার ভিত্তিতে আমল করবে কিনা? এ প্রসংগে হানাফী মাযহাবের তিনটি মত বর্নিত হয়েছে। ১) এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহনীয় হবেনা। ২) এক দেশের চাঁদ দেখা অন্য দেশে গ্রহনীয় হবে। ৩) বিশেষ সতর্কতা, যেমন- রোযা রেখে ইবাদতে প্রবেশ করার ক্ষেত্রে গ্রহনীয় হবে, অন্যথায় গ্রহনীয় হবেনা। কিন্তু এ তিনটি মতের মধ্যে প্রসিদ্ধমত হলো ২য়টি এবং এমতের উপর-ই হানাফী মাযহাব প্রতিষ্ঠিত”।
--- (তিরমিজি শরীফ মুকাদ্দামা-২২পৃষ্ঠা)
যে সকল ফকীহ ও আলেমগণ সমগ্র বিশ্বে একই দিনে আমলের পক্ষে ফাতওয়া দিয়েছেন তারা নিজেদের মতের সমর্থনে অত্র হাদীস দু’টিকে দলীল হিসেবে পেশ করেছেন। তাদের যুক্তি হল হাদীস দু’টির মধ্যে “তোমরা” বলে সম্বোধন দেশ মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্যে ব্যাপক অর্থবোধক সম্বোধন।
No comments:
Post a Comment