বিশ্বব্যাপী একই দিনে সিয়াম (রোজা) ও ঈদ পালন ও শারীয়াহর মূলনীতির আলোকে কুরাইব রহ. এর হাদিস
বিসমিল্লাহ, মহান আল্লাহ বলেছেন,
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথেমিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন করো না।"- (সূরাঃ আল-বাকারাহ্, আয়াতঃ৪২)
এ আয়াতটি পেশ করার উদ্দেশ্য হলো যে বর্তমানে অনেক মানুষকে দেখা যায় যারা জেনে বুঝে সত্যকে অস্বীকার করে-
নিজের অন্তরের অনুসরণ করে
তর্কে জিতার জন্য
সত্য মেনে নিলে মানসম্মান কমে যাবে এই ভয়ে
লোকে খারাপ বলতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবার মূল কথায় আসি। আমার এই পোষ্টটা হচ্ছে একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করা না করা বিষয়ে কুরাইব রহ. এর হাদিস প্রসঙ্গে।
শারীয়াহর একটি মূলনীতি হচ্ছে -
আপনি এক আয়াতের এমন কোন ব্যাখ্যা নিতে পারবেন না, যে ব্যাখ্যাটি অন্য আয়াতের বিরুদ্ধে যায়।
একই ভাবে আপনি এক হাদিসের এমন কোন ব্যাখ্যা নিতে পারবেন না, যেটি অন্য হাদিসের বিরুদ্ধে যায়।
সেই ব্যাখ্যাটিই গ্রহণ করতে হবে যেটা গ্রহণ করলে দুটো গ্রহণযোগ্য হাদিসের মধ্যেই সমন্বয় সাধিত হয়।
এবার সেই বিখ্যাত কুরাইব রহ. এর হাদিসটি নিয়ে আলোচনা করছি।
কুরাইব (রহ.) হতে বর্ণিত, মুয়াবিয়া (রা.) এর উদ্দেশ্য উম্মুল ফাযল বিনতুল হারিস (রা.) তাকে শামে (সিরিয়া) প্রেরণ করেন। কুরাইব (রহ.) বলেন সিরিয়ায় পৌঁছানোর পর আমি উম্মুল ফাযল (রা.) এর কাজটি শেষ করলাম। আমি সিরিয়ায় থাকাবস্থায় রমজান মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়া গেল। আমরা জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) চাঁদ দেখতে পেলাম। রমজানের শেষের দিকে মাদীনায় ফিরে আসলাম। ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে (কুশলাদি) জিজ্ঞেস করার পর চাঁদ দেখার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বললেন কোনদিন তোমরা চাঁদ দেখতে পেয়েছিলে? আমি বললাম জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) চাঁদ দেখতে পেয়েছি। তিনি বললেন (ইবনে আব্বাস (রা.) জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) তুমি কি স্বয়ং চাঁদ দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম লোকেরা দেখতে পেয়েছে এবং তারা স্বওম (রোজা) পালন করছে এবং মুয়াবিয়া (রা.)ও স্বওম (রোজা) পালন করছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আমরা কিন্তু শনিবার রাতে (শুক্রবার রাতে) চাঁদ দেখেছি। অতএব, ত্রিশ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত আমরা স্বওম পালন করতে থাকবো। আমি বললাম (কুরাইব (রহ.) মুয়াবিয়া (রা.) এর স্বওম (রোজা) পালন করা এবং চাঁদ দেখা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়। তিনি ***(ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, না, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে এরূপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন***।”
সূত্র: মুসলিম, অধ্যায় ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বিয়াম, হাদিস ২৮/১০৮৭, নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ২২, স্বিয়াম, হাদিস # ২১১১, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বিয়াম, হাদিস # ২৩৩২, তিরিমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৬, কিতাবুস্ স্বওম, হাদিস # ৬৯৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ স্বিয়াম, হাদিস # ৮২০৫ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।
এই হাদিস থেকে অনেক ভাই বুঝ নেন যে,
১. এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়
২. যারা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করে, তারা হারাম কাজ করে।
৩. সিরিয়ার চাঁদ মাদিনার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
৪. নিজ নিজ অঞ্চলের চাঁদ দেখেই সিয়াম ও ঈদ পালন করতে হবে
যদি কেউ এমন বুঝ গ্রহণ করে থাকেন তবে উনি ভুল বুঝেছেন। কারণ স্বয়ং রসূলুল্লাহ সা: নিজেই ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেছেন। সুতরাং আপনি উপরোক্ত হাদিসের এমন ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছেন যে, ব্যাখ্যাটি অন্য একটি সহীহ হাদিসের বিরুদ্ধে চলে গেছে, এমনকি রসূলুল্লাহ সা: এরও আমলের বিপরীত। নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন:-
আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, “তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর সাহাবী আমার কতিপয় আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ আমাদের উপর গোপন থাকে। আমরা (পরের দিন অর্থাৎ ঈদের দিন) স্বওম (রোজা) পালন করি। এমতাবস্থায়, ঐ দিনের শেষভাগে একটি কাফেলা নাবী (ছঃ ) এর কাছে এসে বিগতকাল চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। তখন রসলুল্লাহ্ (ছঃ) আমাদের স্বওম (রোজা) ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন এবং তারপরের দিন ঈদের (স্বলাতের) জন্য বের হতে বললেন।” –
আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলে, হাদিস # ২৯৩৯, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৭, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ, ঃ ৫, দুইজন নতুন চাঁদ দেখার স্ব্যা দিলে, হাদিস # ১৬৫৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বা্েযর ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৮, ৮১৮৯, ৮১৯০, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৩, হাদিস # ৮১৯৬, ৮১৯৮, ৮১৯৯ (হাদিসটি ইবনু মাজাহ্’র বর্ণনা)।
সুতরাং যারা বলে এক অঞ্চলের কুরাইব রহ. এর হাদিসটি দিয়ে বুঝাতে চায় এক অঞ্চলের চাঁদ
অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়, তাদের ব্যাখ্যাটি উপরের হাদিসটির বিপরীতে গিয়েছি এবং রসূলুল্লাহ সা: এর আমলেরও বিপরীতে গিয়েছে। সুতরাং “এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়” ব্যাখ্যাটি ভুল, ভুল, ভুল।
একই ভাবে যারা বলে, “ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর নিয়ে যারা সিয়াম ও ঈদ পালন করে, তারা হারাম কাজ করে” তারা মূলত: এ কথাই বুঝাতে চায় যে, স্বয়ং রসূলুল্লাহ সা: ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করে হারাম কাজ করেছেন। (নাউজুবিল্লাহ)।
একই ভাবে যারা বলে সিরিয়ার চাঁদ মাদিনার জন্য প্রযোজ্য নয়, তাদের কথাও ভুল। কারণ বর্তমানে সিরিয়া ও মাদিনায় একই সাথে সিয়াম ও ঈদ পালন করে। যারা বলে সিরিয়া ও মাদিনা ভিন্ন অঞ্চল হওয়ায় একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করা হারাম,
****তাদের নিকট প্রশ্ন, বর্তমানে যে, সিরিয়া ও মাদিনা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করছে, তারা কি হারাম কাজ করছে?****
সুতরাং আমি আবারও পয়েন্টগুলো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, যারা কুরাইব রহ. এর হাদিসটি একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালনের বিপক্ষে দালিল হিসেবে পেশ করেন, তারা:-
১. কুরাইব রহ. এর হাদিসটির এমন ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছে যেটি অন্য হাদিসের বিরুদ্ধে গেছে ;
২. তারা হাদিসটির এমন ব্যাখ্যাই করেছে, যেই ব্যাখ্যা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ সা: ও ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করে ভুল করেছেন বলে প্রতীয়মান হয় (নাউজুবিল্লাহ)
৩. তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সিরিয়া ও মাদিনায় একই দিনে ঈদ পালন করা হারাম। অথচ তাদের কথা মেনে নিলে বলতে হয়, বর্তমানে যারা সিরিয়া ও মাদিনা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করে তারা হারাম
কাজ করছে।
পক্ষান্তরে আমরা যে ব্যাক্ষ্যাটি গ্রহণ করেছি সেটি সকল হাদিসের মধ্যে সমন্বয় হয়েছে।
===============================================================================================
হাদিসটির আরো একটি অংশ নিয়ে আলোচনা না করলেই নয়।
প্রথমত: নতুন চাঁদ দেখার শর্ত হচ্ছে দুজন মুসলিম স্বাক্ষ্য দিবে। কিন্তু কুরাইব রহ. হচ্ছেন একজন ব্যক্তি। এজন্যই ইবনে আব্বাস রা. স্ব্যাটি গ্রহণ করেননি।
দ্বিতীয়ত: কুরাইব রহ. এর হাদিসটির শেষের অংশ হচ্ছে, “ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন, রসূল আমাদের এরূপ নির্দেশই দিয়েছেন”। কিন্তু নির্দেশ কি ছিল সেটা হাদিস থেকে স্পষ্ট নয়। আমরা জানি এক হাদিস অন্য হাদিসের ব্যাখ্যায় সাপোর্ট হিসেবে আসে। রাসূলুল্লাহ সা: এর নির্দেশ কি ছিল সেটা আমরা বের করেছি।
হুসাইন ইবনুল হারিস আল-জাদালী (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, “একদা মাক্কাহ্’র আমীর ভাষণ প্রদানের সময় বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে চাঁদ দেখে হাজ্বের সময় নির্ধারণ করতে বলেছেন। যদি চাঁদ না দেখি তাহলে নিষ্ঠাবান দু’জন ব্যক্তির (চাঁদ দেখার) স্বা্েযর ভিত্তিতে যেন আমরা হাজ্ব পালন করি।....... এরপর আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমার (রা.) বলেন, ****রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে উক্ত নির্দেশ দিয়েছেন****।
সূত্র: আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্ব্যা দেয়া, হাদিস # ২৩৩৮, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বা্েযর ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৫ (হাদিসটি আবু দাউদের বর্ণনা)।
সুতরাং উপরোক্ত হাদিসটি থেকে স্পষ্ট হয়, ইবনে আব্বাস রা: দুজন স্বাক্ষী না থাকাতে এবং কুরাইব রহ. একজন হওয়ার কারণেই চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেননি। আর ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন বলতে, দুজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের কথাই বলেছেন যার প্রমাণ ইবনে ওমর রা. এর হাদিস।
আবারও বলছি উপরোক্ত হাদিসটি থেকে স্পষ্ট হয়, ইবনে আব্বাস রা: দুজন স্বাক্ষী না থাকাতে এবং কুরাইব রহ. একজন হওয়ার কারণেই চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেননি। আর ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন বলতে, দুজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের কথাই বলেছেন যার প্রমাণ ইবনে ওমর রা. এর হাদিস।
আল্লামা ইবনু ক্বুদামাহ্ (রঃ) তার মুগণী কিতাবে -এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, যদিও ইবনু আব্বাস রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাথে কুরাইব রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু-এর আলোচনা হয়েছিল রমজানের চাঁদ দেখা নিয়ে কিন্তু এর প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া পড়ছিল অত্যাসন্ন ঈদুল ফিতরের উপর। কারণ উক্ত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুরাইব রাদি আল্লাহু তায়ালা আনহু রমযানের শেষের দিকে শাম থেকে মাদিনায় এসে ছিলেন। আর শরীয়তের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কমপক্ষে দু’জনের সাক্ষী ছাড়া রোযা ছেড়ে ঈদ করা যায়না। তাই ইবনু আব্বাস রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু
একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ না করে বলেছিলেন- هكذا امرنا النبى صلى الله عليه وسلم এবং فلانزال -نصوم حتى نكمل ثلثين اونرا
(দেখুনঃ তানযীমুল আশতাত, খন্ড-২, পৃঃ-৪১, মিফতাহুন্নাজ্জাহ, খন্ড-১, পৃঃ-৪৩২,
সুতরাং হাদিসটি কোনোভাবেই ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম ও ঈদ পালনের পক্ষে দালিল হিসেবে আসতে পারে না। দালিল হিসেবে আসলে আজ সিরিয়া ও মাদিনা ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করত। যারা এমন ভুল বুঝ নিয়ে বসে আছেন, আল্লাহর নিকট তাদের জন্য দুআ করি যেন আল্লাহ তাদের সঠিক বুঝ দান করেন।
===============================================================================================
যদি বলেন, মুহাম্মাদ সা: এর নিকট যে কাফিলাটি এসেছিল, সেটি এসেছিল মাদিনার খুবই নিকট থেকে। এজন্যই রসূল সা: গ্রহণ করেছেন। তাহলে আমাদের প্রশ্ন:-
কাছ থেকে আসলে চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করা যাবে আর দূর থেকে আসলে গ্রহণ করা যাবে না, এর দালিল কি?
দূরত্বের পরিমাণ কত কিলোমিটার হবে?
কাফিলাটি কাছ থেকে আসলে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে আসার কথা ধরা যায়। তার মানে বুঝা যায়, আপনার কথা অনুযায়ী ৫০ কিলোমিটার থেকে চাঁদ দেখার খবর আসলে গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু ৫০ কিলোমিটারের বেশী দূর থেকে আসলে গ্রহণ করা যাবে না। তাহলে এবার বলুন, কুষ্টিয়ার চাঁদ দেখার খবর কেন ঢাকাতে গ্রহণ করেন যেখানে দূরত্বের পরিমাণ হচ্ছে ২৬২ কিলোমিটার? কি উত্তর দিবেন এ প্রশ্নের?
অনেকে বলে থাকেন, রসূলুল্লাহ সা: সিয়াম ভেঙ্গে এবং সাহাবীদের ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়ে, কেন পরের দিন ঈদগাহে ডাকলেন? এর উত্তর হচ্ছে ঈদের সলাত পড়া হয় সকালের দিকে। সেদিন সন্ধার কিছু আগে খবর পাওয়ায় যেহেতু ঈদের সলাত আদায় করা সম্ভব ছিল না, তাই তিনি পরদিন ঈদগাহে আসতে বলেছেন। আর পরদিন ঈদগাহে আসতে বলা দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম পালন করার প্রমাণ হয় না।
===============================================================================================
সুতরাং এর পরেও যারা সত্যকে অস্বীকার করবে, নিজের অন্তরের অনুসরণ করতে গিয়ে হাদিসের এমন ব্যাখ্যা গ্রহণ করবে যেটি অন্য হাদিসকে বাতিল করে, যারা নিজেদের আলিমদের অন্ধ অনুসরণ করে ”আমার আলিম বেশী বুঝে” টাইপের গোঁড়ামী নিয়ে বসে আছে, তাদের বিচারের ভার আল্লাহর উপর ন্যাস্ত করছি।
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًا
যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। (সূরা নিসা-৪/১১৫)
আল্লাহ আমাদের সত্য মেনে নেওয়ার ও সঠিত পথের উপর রাখুন, এই দুআ করেই আমার পোষ্টটি শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য এই বইটা সংগ্রহে রাখুন। এই বিষয়ের উপর হাফেজ হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
ডাউনলোড লিংক:
http://www.mediafire.com/download/219otdrihnde3d5/Muslims+are+Obliged+to+Fast+and+Celebrate+Eid+on+a+SAME+DAY+Latest.pdf
উমার রঃ হতে বর্নিত,তিনি বলেন,লোকেরা একবার রমজানের নতুন চাদের অন্বেষণ করছিল।তিনি নাবী সঃ কে বললেন লোকেরা চাদ দেখতে পেয়েছে।অতপর তিনি নিজেও স্বওম পালন করল এবং লোকদেরও স্বওম পালন করতে নির্দেশ দিলেন।
আবু দাউদঃ ২৩৪২
সুতরাং সবাই কে চাদ দেখার প্রয়োজন নেই।
২/ তাহলে কি নাবী সঃ বুঝিয়েছেন নিজ নিজ দেশের চাদ দেখে স্বওম পালন করতে হবে?
উত্তরঃ হাদিসে তোমরা শব্দটি সার্বজনীন। হাদিসে তোমরা শব্দ দিয়ে অনেক আহলে হাদিসের ভাইয়েরা বুঝাতে চেয়েছেন পৃথক পৃথক দেশের লোকদের বুঝানো হয়েছে।যা কোন যুক্তিতেই খাটে না।যারা বলেন এই তোমরা শব্দ দিয়ে নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের বুঝায় তাদের কে বলছি তাহলে বলেন ত বহু আগে যখন এই দেশ ভারতদের অধীনে ছিলো তখন কি শুধু এই তোমরা দিয়ে ভারতদের বুঝানো হয়েছিল।১৯৭১ সালের আগে যখন এই দেশ পাকিস্তানদের দখলে ছিল তখন কি শুধু এই তোমরা শব্দটি দিয়ে শুধু পাকিস্তানদদের বুঝানো হয়েছিল? ধরেন, কোনো একদিন ঠাকুরগাঁও জেলাটা বাংলাদেশ হতে পৃথক হয়ে যায় তখন কি শুধু হাদিসের এই তোমরা শব্দটি দিয়ে ঠাকুরগাঁও এর লোকদের পৃথক করে বুঝাবে? তাছাড়া চাদ দেখার সাক্ষী লাগবে দুজন।
*******************
কুরাইব রহঃ হতে বর্নিত, তিনি বলেন,আমাকে উম্মুল ফাযল বিনতু হারিস এর উদ্দেশ্যে সিরিয়া প্রেরণ করেন।আমি সিরিয়ায় পৌছে উম্মুল ফাযল রঃ এর কাজটি শেষ করলাম।আমি রমজানের শেষদিকে মদিনায় ফিরে আসলাম।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ আমাকে (কোশলদি) বিনিময়ের পর রমজানের নতুন চাদ সম্পর্কে জানতে চাইল যে তোমরা কখন চাদ দেখেছ?আমি বললাম জুমুআহর রাতে। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বললেন, তুমি কি স্বয়ং চাদ দেখেছ? আমি বললাম লোকেরা নতুন চাদ দেখতে পেয়েছে এবং তারা স্বওম পালন করেছে এবং মুয়াবিয়া রঃ ও স্বওম পালন করেছেন।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বলেন,আমরা ত শনিবার রাতে চাদ দেখেছি।এবং আমরা ৩০ দিন পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত বা চাদ দেখা না পর্যন্ত আমরা স্বওম পালন করতে থাকব।কুরাইব রহঃ বললেন: আপনি কি মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখা ওস্বওম পালন কে যথেষ্ট মনে করেন না? তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বললেন,রসুলুল্লাহ সঃ আমাদেরকে এরকমই নির্দেশ দিয়েছেন।
মুসলিমঃ২৪১৮
হাদিসটির শেষের অংশ লক্ষ করি,আমি কুরাইব রহঃ বললাম, মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখা ওস্বওম পালন আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়? আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বললেনঃ না। রসুলুল্লাহ সঃ আমাদের রকমই নির্দেশ দিয়েছেন।
এই হাদিসের শেষের অংশ হতে দুটি বিষয় ফুটে ওঠেছে।
১/মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখাকে না মেনে।উক্ত কথাটি বললেন।নাবী সঃ কি মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখা বা চাদের সংবাদ গ্রহন করতে না করেছেন?
উত্তরঃ নিশ্চয়ই না।কারন, মুয়াবিয়া রঃ একজন উচু মানের সাহাবী।নাবী সঃ কখনোই এরকম কথা বলতে পারেন না।
২/ তাহলে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ কি বুঝাতে চেয়েছেন মদিনার বাহির হতে চাদের সংবাদ আসলে গা গ্রহনীয় নয়।
উত্তরঃ এটাও অসম্ভব। কারন,নাবী সঃ নিজেই মদিনার বাহির হতে চাদের সংবাদ গ্রহন করে স্বওম পালন করেছেন।
আনাস বিন মালিক রহঃ হতে বর্নিত,তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ সঃ এর এক সাহাবী ও আমার আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ননা করেন।একবার শাওয়ালের নতুন চাদ আমাদের উপর গোপন থাকে।আমরা নতুন চাদ দেখতে পাইনি।আমরা( পরের) স্বওম রাখি।দিনের শেষভাগে রসুলুল্লাহ সঃ নিকট একটি কাফেলা বিগত দিনের নতুন চাদ উদয়ের সাক্ষ্য দিল।রসুলুল্লাহ সঃ লোকদের স্বওম ভাংতে নির্দেশ দিলেন এবং পরের দিন ঈদগাহে (স্বলাতের) জন্য বের হতে নির্দেশ দিলেন।
ইবনে মাজাহঃ ১৬৫৩
তাহলে এই হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা কি হবে?
উত্তরঃ আব্দুর রহমান ইবনে যায়দ রঃ বর্নিত,..... নিশ্চয়ই নাবী সঃ বলেছেনঃ যদি (মুসলিমদের) দুজন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় (নতুন চাদ উদয়ের) ব্যাপারে তাহলে তোমরা স্বওম বা ঈদ পালন কর।নাসাঈঃ ২১১৬
যেহেতু চাদের সাক্ষ্যি দুজন লাগবে। আর কুরাইব রহঃ একজন।আর তাই আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ একজনের সাক্ষ না মেনে উক্ত কথাটি বলেছেন।এখন আবার প্রশ্ন করতে পারেন,
উমর রঃ হতে বর্নিত,তিনি বলেন, একবার লোকেরা রমজানের নতুন চাদের অন্বেষণ করছিল।তিনি নাবী সঃ কে বললেন লোকরা চাদ দেখতে পেয়েছে।অতঃপর নাবী সঃ নিজেও স্বওম পালন করলো এবং লোকদেরও স্বওম পালন করতে নির্দেশ দিলেন।
আবুদাউদঃ ২৩৪২
এই হাদিসে নাবী সঃ একজনের সাক্ষী গ্রহন করেছেন তাহলে আপনারা কোন যুক্তিতে বলছেন যে একজনের সাক্ষের কারনে কুরাইব রহঃ এর বর্ননা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ সাক্ষ মানেন নি?
উত্তরঃ চাদ দেখার সাক্ষী দুজন লাগবে এটি নাবী সঃ বলেছেন। আর নাবী সঃ একজনের সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন।
রসুলুল্লাহ সঃ এর কোনো قولي হাদিস যখন فيلي হাদিসের বিপরীত হয় তখন قولي হাদিসের উপর আমল করা বাধ্যতামুলক হয়ে যায়। আর فيلي হাদিস নাবী সঃ এর জন্য খাস হয়ে যায়।রসুলুল্লাহ সঃ যা আমাদের করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তাই قولي হাদিস।আর নাবী সঃ নিজে করেছেন কিন্তু আমাদের তা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেননি তাকে فيلي হাদিস বলে।এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত ভাবে বর্ননা দিচ্ছি।
আবু আইয়ুব আনসারী রঃ হতে বর্নিত, রসুলুল্লাহ সঃ বলেছেনঃ তোমরা যখন প্রস্রাব পায়খানায় যাবে তখন কেউ কিবলার দিকে পীঠ বা মুখ করে বসবে না।বুখারীঃ১৪৪
এই হাদিসে নাবী সঃ আমাদের কিবলার দিকে মুখ বা পীঠ করে প্রস্রাব পায়খানা করতে না করেছেন।কিন্তু আরেক হাদিসে আছে,
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রঃ হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি একবার আমার বোন হাফসা রঃ এর ঘরে গেলাম।একদা ঘরের সাদে উঠলাম।অতঃপর আমি রসুলুল্লাহ সঃ কে কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা করতে দেখলাম।বুখারীঃ ১৪৫
এখন যদি কেউ বলে নাবী সঃ কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা করেছে তাই আমিও করব তাহলে এটা হবে বোকামি।কারন,নাবী সঃ আমাদের কিবলার দিকে পীঠ বা মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা করতে না করেছেন।কিবলার দিকে মুখ বা পীঠ করে না বসার জন্য বলা হাদিসটি قوليহাদিস। আর নাবী সঃ কিবলার দিকে মুখ করে প্রসাব পায়খানা করেছেন এটি فيلي হাদিস।তেমনি চাদ দেখার সাক্ষী দুজন লাগবে এটি নাবী সঃ এর قولي হাদিস।আর নাবী সঃ একজনের সাক্ষী গ্রহন করেছেন এটি فيلي হাদিস।আরقوليহাদিস যখন فيلي হাদিসের বিপরীত হয় তখন قولي হাদিস আমাদের জন্য পালন করা বাধ্য হয়ে যায়। আরفيلي হাদিস নাবী সঃ এর জন্য খাস হয়ে যায়।
বিসমিল্লাহ, মহান আল্লাহ বলেছেন,
তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথেমিশ্রিত করো না এবং জেনে-বুঝে সত্য গোপন করো না।"- (সূরাঃ আল-বাকারাহ্, আয়াতঃ৪২)
এ আয়াতটি পেশ করার উদ্দেশ্য হলো যে বর্তমানে অনেক মানুষকে দেখা যায় যারা জেনে বুঝে সত্যকে অস্বীকার করে-
নিজের অন্তরের অনুসরণ করে
তর্কে জিতার জন্য
সত্য মেনে নিলে মানসম্মান কমে যাবে এই ভয়ে
লোকে খারাপ বলতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবার মূল কথায় আসি। আমার এই পোষ্টটা হচ্ছে একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করা না করা বিষয়ে কুরাইব রহ. এর হাদিস প্রসঙ্গে।
শারীয়াহর একটি মূলনীতি হচ্ছে -
আপনি এক আয়াতের এমন কোন ব্যাখ্যা নিতে পারবেন না, যে ব্যাখ্যাটি অন্য আয়াতের বিরুদ্ধে যায়।
একই ভাবে আপনি এক হাদিসের এমন কোন ব্যাখ্যা নিতে পারবেন না, যেটি অন্য হাদিসের বিরুদ্ধে যায়।
সেই ব্যাখ্যাটিই গ্রহণ করতে হবে যেটা গ্রহণ করলে দুটো গ্রহণযোগ্য হাদিসের মধ্যেই সমন্বয় সাধিত হয়।
এবার সেই বিখ্যাত কুরাইব রহ. এর হাদিসটি নিয়ে আলোচনা করছি।
কুরাইব (রহ.) হতে বর্ণিত, মুয়াবিয়া (রা.) এর উদ্দেশ্য উম্মুল ফাযল বিনতুল হারিস (রা.) তাকে শামে (সিরিয়া) প্রেরণ করেন। কুরাইব (রহ.) বলেন সিরিয়ায় পৌঁছানোর পর আমি উম্মুল ফাযল (রা.) এর কাজটি শেষ করলাম। আমি সিরিয়ায় থাকাবস্থায় রমজান মাসের চাঁদ দেখতে পাওয়া গেল। আমরা জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) চাঁদ দেখতে পেলাম। রমজানের শেষের দিকে মাদীনায় ফিরে আসলাম। ইবনে আব্বাস (রা.) আমাকে (কুশলাদি) জিজ্ঞেস করার পর চাঁদ দেখার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বললেন কোনদিন তোমরা চাঁদ দেখতে পেয়েছিলে? আমি বললাম জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) চাঁদ দেখতে পেয়েছি। তিনি বললেন (ইবনে আব্বাস (রা.) জুমুয়ার রাতে (বৃহস্পতিবার রাত) তুমি কি স্বয়ং চাঁদ দেখতে পেয়েছ? আমি বললাম লোকেরা দেখতে পেয়েছে এবং তারা স্বওম (রোজা) পালন করছে এবং মুয়াবিয়া (রা.)ও স্বওম (রোজা) পালন করছেন। ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, আমরা কিন্তু শনিবার রাতে (শুক্রবার রাতে) চাঁদ দেখেছি। অতএব, ত্রিশ দিন পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত অথবা চাঁদ না দেখা পর্যন্ত আমরা স্বওম পালন করতে থাকবো। আমি বললাম (কুরাইব (রহ.) মুয়াবিয়া (রা.) এর স্বওম (রোজা) পালন করা এবং চাঁদ দেখা আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়। তিনি ***(ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, না, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে এরূপ করতে নির্দেশ দিয়েছেন***।”
সূত্র: মুসলিম, অধ্যায় ঃ ১৩, কিতাবুস্ স্বিয়াম, হাদিস ২৮/১০৮৭, নাসাঈ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ২২, স্বিয়াম, হাদিস # ২১১১, আবু দাউদ, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বিয়াম, হাদিস # ২৩৩২, তিরিমিযী, স্বহীহ, অধ্যায় ঃ ৬, কিতাবুস্ স্বওম, হাদিস # ৬৯৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ স্বিয়াম, হাদিস # ৮২০৫ (হাদিসটি মুসলিমের বর্ণনা)।
এই হাদিস থেকে অনেক ভাই বুঝ নেন যে,
১. এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়
২. যারা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করে, তারা হারাম কাজ করে।
৩. সিরিয়ার চাঁদ মাদিনার জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
৪. নিজ নিজ অঞ্চলের চাঁদ দেখেই সিয়াম ও ঈদ পালন করতে হবে
যদি কেউ এমন বুঝ গ্রহণ করে থাকেন তবে উনি ভুল বুঝেছেন। কারণ স্বয়ং রসূলুল্লাহ সা: নিজেই ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেছেন। সুতরাং আপনি উপরোক্ত হাদিসের এমন ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছেন যে, ব্যাখ্যাটি অন্য একটি সহীহ হাদিসের বিরুদ্ধে চলে গেছে, এমনকি রসূলুল্লাহ সা: এরও আমলের বিপরীত। নিচের হাদিসটি লক্ষ্য করুন:-
আনাস ইবনু মালিক (রা.) হতে বর্ণিত, “তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ (দ.) এর সাহাবী আমার কতিপয় আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, একবার শাওয়ালের নতুন চাঁদ আমাদের উপর গোপন থাকে। আমরা (পরের দিন অর্থাৎ ঈদের দিন) স্বওম (রোজা) পালন করি। এমতাবস্থায়, ঐ দিনের শেষভাগে একটি কাফেলা নাবী (ছঃ ) এর কাছে এসে বিগতকাল চাঁদ দেখার স্বাক্ষ্য প্রদান করেন। তখন রসলুল্লাহ্ (ছঃ) আমাদের স্বওম (রোজা) ভাঙ্গতে নির্দেশ দিলেন এবং তারপরের দিন ঈদের (স্বলাতের) জন্য বের হতে বললেন।” –
আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্বাক্ষ্য দিলে, হাদিস # ২৯৩৯, ইবনু মাজাহ্, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৭, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ, ঃ ৫, দুইজন নতুন চাঁদ দেখার স্ব্যা দিলে, হাদিস # ১৬৫৩, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বা্েযর ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৮, ৮১৮৯, ৮১৯০, অনুচ্ছেদ ঃ ৬৩, হাদিস # ৮১৯৬, ৮১৯৮, ৮১৯৯ (হাদিসটি ইবনু মাজাহ্’র বর্ণনা)।
সুতরাং যারা বলে এক অঞ্চলের কুরাইব রহ. এর হাদিসটি দিয়ে বুঝাতে চায় এক অঞ্চলের চাঁদ
অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়, তাদের ব্যাখ্যাটি উপরের হাদিসটির বিপরীতে গিয়েছি এবং রসূলুল্লাহ সা: এর আমলেরও বিপরীতে গিয়েছে। সুতরাং “এক অঞ্চলের চাঁদ অন্য অঞ্চলের জন্য প্রযোজ্য নয়” ব্যাখ্যাটি ভুল, ভুল, ভুল।
একই ভাবে যারা বলে, “ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর নিয়ে যারা সিয়াম ও ঈদ পালন করে, তারা হারাম কাজ করে” তারা মূলত: এ কথাই বুঝাতে চায় যে, স্বয়ং রসূলুল্লাহ সা: ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করে হারাম কাজ করেছেন। (নাউজুবিল্লাহ)।
একই ভাবে যারা বলে সিরিয়ার চাঁদ মাদিনার জন্য প্রযোজ্য নয়, তাদের কথাও ভুল। কারণ বর্তমানে সিরিয়া ও মাদিনায় একই সাথে সিয়াম ও ঈদ পালন করে। যারা বলে সিরিয়া ও মাদিনা ভিন্ন অঞ্চল হওয়ায় একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করা হারাম,
****তাদের নিকট প্রশ্ন, বর্তমানে যে, সিরিয়া ও মাদিনা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করছে, তারা কি হারাম কাজ করছে?****
সুতরাং আমি আবারও পয়েন্টগুলো স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, যারা কুরাইব রহ. এর হাদিসটি একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালনের বিপক্ষে দালিল হিসেবে পেশ করেন, তারা:-
১. কুরাইব রহ. এর হাদিসটির এমন ব্যাখ্যাই গ্রহণ করেছে যেটি অন্য হাদিসের বিরুদ্ধে গেছে ;
২. তারা হাদিসটির এমন ব্যাখ্যাই করেছে, যেই ব্যাখ্যা অনুযায়ী রসূলুল্লাহ সা: ও ভিন্ন অঞ্চলের চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করে ভুল করেছেন বলে প্রতীয়মান হয় (নাউজুবিল্লাহ)
৩. তাদের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সিরিয়া ও মাদিনায় একই দিনে ঈদ পালন করা হারাম। অথচ তাদের কথা মেনে নিলে বলতে হয়, বর্তমানে যারা সিরিয়া ও মাদিনা একই দিনে সিয়াম ও ঈদ পালন করে তারা হারাম
কাজ করছে।
পক্ষান্তরে আমরা যে ব্যাক্ষ্যাটি গ্রহণ করেছি সেটি সকল হাদিসের মধ্যে সমন্বয় হয়েছে।
===============================================================================================
হাদিসটির আরো একটি অংশ নিয়ে আলোচনা না করলেই নয়।
প্রথমত: নতুন চাঁদ দেখার শর্ত হচ্ছে দুজন মুসলিম স্বাক্ষ্য দিবে। কিন্তু কুরাইব রহ. হচ্ছেন একজন ব্যক্তি। এজন্যই ইবনে আব্বাস রা. স্ব্যাটি গ্রহণ করেননি।
দ্বিতীয়ত: কুরাইব রহ. এর হাদিসটির শেষের অংশ হচ্ছে, “ ইবনে আব্বাস রা: বলেছেন, রসূল আমাদের এরূপ নির্দেশই দিয়েছেন”। কিন্তু নির্দেশ কি ছিল সেটা হাদিস থেকে স্পষ্ট নয়। আমরা জানি এক হাদিস অন্য হাদিসের ব্যাখ্যায় সাপোর্ট হিসেবে আসে। রাসূলুল্লাহ সা: এর নির্দেশ কি ছিল সেটা আমরা বের করেছি।
হুসাইন ইবনুল হারিস আল-জাদালী (রহ.) সূত্রে বর্ণিত, “একদা মাক্কাহ্’র আমীর ভাষণ প্রদানের সময় বলেন যে, রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে চাঁদ দেখে হাজ্বের সময় নির্ধারণ করতে বলেছেন। যদি চাঁদ না দেখি তাহলে নিষ্ঠাবান দু’জন ব্যক্তির (চাঁদ দেখার) স্বা্েযর ভিত্তিতে যেন আমরা হাজ্ব পালন করি।....... এরপর আব্দুল্লাহ্ ইবনু ওমার (রা.) বলেন, ****রসূলুল্লাহ্ (দ.) আমাদেরকে উক্ত নির্দেশ দিয়েছেন****।
সূত্র: আবু দাউদ, স্বহীহ্, অধ্যায় ঃ ৮, কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ১৩, দুই ব্যাক্তি শাওয়াল (মাসের) নতুন চাঁদের স্ব্যা দেয়া, হাদিস # ২৩৩৮, বায়হাক্বী (সুনানুল কুবরা), হাসান, অধ্যায় ঃ কিতাবুস্ স্বওম (রোজা), অনুচ্ছেদ ঃ ৬২, যে দুইজন নিষ্ঠাবান থেকে নতুন চাঁদের স্বা্েযর ভিত্তিতে ঈদুল ফিতর করে, হাদিস # ৮১৮৫ (হাদিসটি আবু দাউদের বর্ণনা)।
সুতরাং উপরোক্ত হাদিসটি থেকে স্পষ্ট হয়, ইবনে আব্বাস রা: দুজন স্বাক্ষী না থাকাতে এবং কুরাইব রহ. একজন হওয়ার কারণেই চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেননি। আর ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন বলতে, দুজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের কথাই বলেছেন যার প্রমাণ ইবনে ওমর রা. এর হাদিস।
আবারও বলছি উপরোক্ত হাদিসটি থেকে স্পষ্ট হয়, ইবনে আব্বাস রা: দুজন স্বাক্ষী না থাকাতে এবং কুরাইব রহ. একজন হওয়ার কারণেই চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করেননি। আর ইবনে আব্বাস রা. রাসূলুল্লাহ সা: আমাদের এরূপ নির্দেশ দিয়েছেন বলতে, দুজন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যের কথাই বলেছেন যার প্রমাণ ইবনে ওমর রা. এর হাদিস।
আল্লামা ইবনু ক্বুদামাহ্ (রঃ) তার মুগণী কিতাবে -এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন যে, যদিও ইবনু আব্বাস রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাথে কুরাইব রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু-এর আলোচনা হয়েছিল রমজানের চাঁদ দেখা নিয়ে কিন্তু এর প্রত্যক্ষ প্রতিক্রিয়া পড়ছিল অত্যাসন্ন ঈদুল ফিতরের উপর। কারণ উক্ত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, কুরাইব রাদি আল্লাহু তায়ালা আনহু রমযানের শেষের দিকে শাম থেকে মাদিনায় এসে ছিলেন। আর শরীয়তের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কমপক্ষে দু’জনের সাক্ষী ছাড়া রোযা ছেড়ে ঈদ করা যায়না। তাই ইবনু আব্বাস রদি আল্লাহু তায়ালা আনহু
একজনের সাক্ষ্য গ্রহণ না করে বলেছিলেন- هكذا امرنا النبى صلى الله عليه وسلم এবং فلانزال -نصوم حتى نكمل ثلثين اونرا
(দেখুনঃ তানযীমুল আশতাত, খন্ড-২, পৃঃ-৪১, মিফতাহুন্নাজ্জাহ, খন্ড-১, পৃঃ-৪৩২,
===============================================================================================
যদি বলেন, মুহাম্মাদ সা: এর নিকট যে কাফিলাটি এসেছিল, সেটি এসেছিল মাদিনার খুবই নিকট থেকে। এজন্যই রসূল সা: গ্রহণ করেছেন। তাহলে আমাদের প্রশ্ন:-
কাছ থেকে আসলে চাঁদ দেখার খবর গ্রহণ করা যাবে আর দূর থেকে আসলে গ্রহণ করা যাবে না, এর দালিল কি?
দূরত্বের পরিমাণ কত কিলোমিটার হবে?
কাফিলাটি কাছ থেকে আসলে সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার দূর থেকে আসার কথা ধরা যায়। তার মানে বুঝা যায়, আপনার কথা অনুযায়ী ৫০ কিলোমিটার থেকে চাঁদ দেখার খবর আসলে গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু ৫০ কিলোমিটারের বেশী দূর থেকে আসলে গ্রহণ করা যাবে না। তাহলে এবার বলুন, কুষ্টিয়ার চাঁদ দেখার খবর কেন ঢাকাতে গ্রহণ করেন যেখানে দূরত্বের পরিমাণ হচ্ছে ২৬২ কিলোমিটার? কি উত্তর দিবেন এ প্রশ্নের?
অনেকে বলে থাকেন, রসূলুল্লাহ সা: সিয়াম ভেঙ্গে এবং সাহাবীদের ভাঙ্গার নির্দেশ দিয়ে, কেন পরের দিন ঈদগাহে ডাকলেন? এর উত্তর হচ্ছে ঈদের সলাত পড়া হয় সকালের দিকে। সেদিন সন্ধার কিছু আগে খবর পাওয়ায় যেহেতু ঈদের সলাত আদায় করা সম্ভব ছিল না, তাই তিনি পরদিন ঈদগাহে আসতে বলেছেন। আর পরদিন ঈদগাহে আসতে বলা দ্বারা ভিন্ন ভিন্ন দিনে সিয়াম পালন করার প্রমাণ হয় না।
===============================================================================================
সুতরাং এর পরেও যারা সত্যকে অস্বীকার করবে, নিজের অন্তরের অনুসরণ করতে গিয়ে হাদিসের এমন ব্যাখ্যা গ্রহণ করবে যেটি অন্য হাদিসকে বাতিল করে, যারা নিজেদের আলিমদের অন্ধ অনুসরণ করে ”আমার আলিম বেশী বুঝে” টাইপের গোঁড়ামী নিয়ে বসে আছে, তাদের বিচারের ভার আল্লাহর উপর ন্যাস্ত করছি।
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءتْ مَصِيرًا
যে কেউ রসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে, তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং সব মুসলমানের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ঐ দিকেই ফেরাব যে দিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্টতর গন্তব্যস্থান। (সূরা নিসা-৪/১১৫)
আল্লাহ আমাদের সত্য মেনে নেওয়ার ও সঠিত পথের উপর রাখুন, এই দুআ করেই আমার পোষ্টটি শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।
এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য এই বইটা সংগ্রহে রাখুন। এই বিষয়ের উপর হাফেজ হয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।
ডাউনলোড লিংক:
http://www.mediafire.com/download/219otdrihnde3d5/Muslims+are+Obliged+to+Fast+and+Celebrate+Eid+on+a+SAME+DAY+Latest.pdf
উমার রঃ হতে বর্নিত,তিনি বলেন,লোকেরা একবার রমজানের নতুন চাদের অন্বেষণ করছিল।তিনি নাবী সঃ কে বললেন লোকেরা চাদ দেখতে পেয়েছে।অতপর তিনি নিজেও স্বওম পালন করল এবং লোকদেরও স্বওম পালন করতে নির্দেশ দিলেন।
আবু দাউদঃ ২৩৪২
সুতরাং সবাই কে চাদ দেখার প্রয়োজন নেই।
২/ তাহলে কি নাবী সঃ বুঝিয়েছেন নিজ নিজ দেশের চাদ দেখে স্বওম পালন করতে হবে?
উত্তরঃ হাদিসে তোমরা শব্দটি সার্বজনীন। হাদিসে তোমরা শব্দ দিয়ে অনেক আহলে হাদিসের ভাইয়েরা বুঝাতে চেয়েছেন পৃথক পৃথক দেশের লোকদের বুঝানো হয়েছে।যা কোন যুক্তিতেই খাটে না।যারা বলেন এই তোমরা শব্দ দিয়ে নিজ নিজ দেশের নাগরিকদের বুঝায় তাদের কে বলছি তাহলে বলেন ত বহু আগে যখন এই দেশ ভারতদের অধীনে ছিলো তখন কি শুধু এই তোমরা দিয়ে ভারতদের বুঝানো হয়েছিল।১৯৭১ সালের আগে যখন এই দেশ পাকিস্তানদের দখলে ছিল তখন কি শুধু এই তোমরা শব্দটি দিয়ে শুধু পাকিস্তানদদের বুঝানো হয়েছিল? ধরেন, কোনো একদিন ঠাকুরগাঁও জেলাটা বাংলাদেশ হতে পৃথক হয়ে যায় তখন কি শুধু হাদিসের এই তোমরা শব্দটি দিয়ে ঠাকুরগাঁও এর লোকদের পৃথক করে বুঝাবে? তাছাড়া চাদ দেখার সাক্ষী লাগবে দুজন।
*******************
কুরাইব রহঃ হতে বর্নিত, তিনি বলেন,আমাকে উম্মুল ফাযল বিনতু হারিস এর উদ্দেশ্যে সিরিয়া প্রেরণ করেন।আমি সিরিয়ায় পৌছে উম্মুল ফাযল রঃ এর কাজটি শেষ করলাম।আমি রমজানের শেষদিকে মদিনায় ফিরে আসলাম।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ আমাকে (কোশলদি) বিনিময়ের পর রমজানের নতুন চাদ সম্পর্কে জানতে চাইল যে তোমরা কখন চাদ দেখেছ?আমি বললাম জুমুআহর রাতে। আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বললেন, তুমি কি স্বয়ং চাদ দেখেছ? আমি বললাম লোকেরা নতুন চাদ দেখতে পেয়েছে এবং তারা স্বওম পালন করেছে এবং মুয়াবিয়া রঃ ও স্বওম পালন করেছেন।আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বলেন,আমরা ত শনিবার রাতে চাদ দেখেছি।এবং আমরা ৩০ দিন পূর্ন না হওয়া পর্যন্ত বা চাদ দেখা না পর্যন্ত আমরা স্বওম পালন করতে থাকব।কুরাইব রহঃ বললেন: আপনি কি মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখা ওস্বওম পালন কে যথেষ্ট মনে করেন না? তিনি আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বললেন,রসুলুল্লাহ সঃ আমাদেরকে এরকমই নির্দেশ দিয়েছেন।
মুসলিমঃ২৪১৮
হাদিসটির শেষের অংশ লক্ষ করি,আমি কুরাইব রহঃ বললাম, মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখা ওস্বওম পালন আপনার জন্য কি যথেষ্ট নয়? আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ বললেনঃ না। রসুলুল্লাহ সঃ আমাদের রকমই নির্দেশ দিয়েছেন।
এই হাদিসের শেষের অংশ হতে দুটি বিষয় ফুটে ওঠেছে।
১/মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখাকে না মেনে।উক্ত কথাটি বললেন।নাবী সঃ কি মুয়াবিয়া রঃ এর চাদ দেখা বা চাদের সংবাদ গ্রহন করতে না করেছেন?
উত্তরঃ নিশ্চয়ই না।কারন, মুয়াবিয়া রঃ একজন উচু মানের সাহাবী।নাবী সঃ কখনোই এরকম কথা বলতে পারেন না।
২/ তাহলে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ কি বুঝাতে চেয়েছেন মদিনার বাহির হতে চাদের সংবাদ আসলে গা গ্রহনীয় নয়।
উত্তরঃ এটাও অসম্ভব। কারন,নাবী সঃ নিজেই মদিনার বাহির হতে চাদের সংবাদ গ্রহন করে স্বওম পালন করেছেন।
আনাস বিন মালিক রহঃ হতে বর্নিত,তিনি বলেনঃ রসুলুল্লাহ সঃ এর এক সাহাবী ও আমার আনসার পিতৃব্য আমার নিকট বর্ননা করেন।একবার শাওয়ালের নতুন চাদ আমাদের উপর গোপন থাকে।আমরা নতুন চাদ দেখতে পাইনি।আমরা( পরের) স্বওম রাখি।দিনের শেষভাগে রসুলুল্লাহ সঃ নিকট একটি কাফেলা বিগত দিনের নতুন চাদ উদয়ের সাক্ষ্য দিল।রসুলুল্লাহ সঃ লোকদের স্বওম ভাংতে নির্দেশ দিলেন এবং পরের দিন ঈদগাহে (স্বলাতের) জন্য বের হতে নির্দেশ দিলেন।
ইবনে মাজাহঃ ১৬৫৩
তাহলে এই হাদিসটির সঠিক ব্যাখ্যা কি হবে?
উত্তরঃ আব্দুর রহমান ইবনে যায়দ রঃ বর্নিত,..... নিশ্চয়ই নাবী সঃ বলেছেনঃ যদি (মুসলিমদের) দুজন ব্যক্তি সাক্ষ্য দেয় (নতুন চাদ উদয়ের) ব্যাপারে তাহলে তোমরা স্বওম বা ঈদ পালন কর।নাসাঈঃ ২১১৬
যেহেতু চাদের সাক্ষ্যি দুজন লাগবে। আর কুরাইব রহঃ একজন।আর তাই আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ একজনের সাক্ষ না মেনে উক্ত কথাটি বলেছেন।এখন আবার প্রশ্ন করতে পারেন,
উমর রঃ হতে বর্নিত,তিনি বলেন, একবার লোকেরা রমজানের নতুন চাদের অন্বেষণ করছিল।তিনি নাবী সঃ কে বললেন লোকরা চাদ দেখতে পেয়েছে।অতঃপর নাবী সঃ নিজেও স্বওম পালন করলো এবং লোকদেরও স্বওম পালন করতে নির্দেশ দিলেন।
আবুদাউদঃ ২৩৪২
এই হাদিসে নাবী সঃ একজনের সাক্ষী গ্রহন করেছেন তাহলে আপনারা কোন যুক্তিতে বলছেন যে একজনের সাক্ষের কারনে কুরাইব রহঃ এর বর্ননা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রঃ সাক্ষ মানেন নি?
উত্তরঃ চাদ দেখার সাক্ষী দুজন লাগবে এটি নাবী সঃ বলেছেন। আর নাবী সঃ একজনের সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন।
রসুলুল্লাহ সঃ এর কোনো قولي হাদিস যখন فيلي হাদিসের বিপরীত হয় তখন قولي হাদিসের উপর আমল করা বাধ্যতামুলক হয়ে যায়। আর فيلي হাদিস নাবী সঃ এর জন্য খাস হয়ে যায়।রসুলুল্লাহ সঃ যা আমাদের করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন তাই قولي হাদিস।আর নাবী সঃ নিজে করেছেন কিন্তু আমাদের তা করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেননি তাকে فيلي হাদিস বলে।এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত ভাবে বর্ননা দিচ্ছি।
আবু আইয়ুব আনসারী রঃ হতে বর্নিত, রসুলুল্লাহ সঃ বলেছেনঃ তোমরা যখন প্রস্রাব পায়খানায় যাবে তখন কেউ কিবলার দিকে পীঠ বা মুখ করে বসবে না।বুখারীঃ১৪৪
এই হাদিসে নাবী সঃ আমাদের কিবলার দিকে মুখ বা পীঠ করে প্রস্রাব পায়খানা করতে না করেছেন।কিন্তু আরেক হাদিসে আছে,
আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রঃ হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি একবার আমার বোন হাফসা রঃ এর ঘরে গেলাম।একদা ঘরের সাদে উঠলাম।অতঃপর আমি রসুলুল্লাহ সঃ কে কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা করতে দেখলাম।বুখারীঃ ১৪৫
এখন যদি কেউ বলে নাবী সঃ কিবলার দিকে মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা করেছে তাই আমিও করব তাহলে এটা হবে বোকামি।কারন,নাবী সঃ আমাদের কিবলার দিকে পীঠ বা মুখ করে প্রস্রাব পায়খানা করতে না করেছেন।কিবলার দিকে মুখ বা পীঠ করে না বসার জন্য বলা হাদিসটি قوليহাদিস। আর নাবী সঃ কিবলার দিকে মুখ করে প্রসাব পায়খানা করেছেন এটি فيلي হাদিস।তেমনি চাদ দেখার সাক্ষী দুজন লাগবে এটি নাবী সঃ এর قولي হাদিস।আর নাবী সঃ একজনের সাক্ষী গ্রহন করেছেন এটি فيلي হাদিস।আরقوليহাদিস যখন فيلي হাদিসের বিপরীত হয় তখন قولي হাদিস আমাদের জন্য পালন করা বাধ্য হয়ে যায়। আরفيلي হাদিস নাবী সঃ এর জন্য খাস হয়ে যায়।
************************************************************************
************************************************************************
************************************************************************
#আপনারা কুরাইবের যে আছাড়টি দলিল হিসাবে উপাস্থাপন করছেন, আসলেই কি আপানাদের অবস্থান এই আছাড়ের পক্ষে?? না, বিপক্ষে?
অবশ্য, অবশ্যই বিপক্ষে, ১০০% বিপক্ষে।
প্রমানঃ
১) উক্ত হাদিস অনুযায়ী ইবনে আব্বাস রা, শাসক আমিরে মুয়াবিয়া রা চাঁদ দেখার ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করছেন।
#আর আপনারা বলছেন শাসকের ঘোষণাকে অবশ্যই মানতে হবে।
২) ইবনে আব্বাস রা একই দেশে ২টি ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলে ভিন্ন ভিন্ন দিনে ঈদ ও সিয়াম করেছেন।
#আর আপনারা একই দেশে ২টি ভিন্ন ভিন্ন শহরে (যেমন ঢাকা ও চট্টগ্রামে) শুধু এক অঞ্চলের চাঁদ দেখেই উভয় অঞ্চলে একই দিনে ঈদ সিয়াম করছেন, যা ইবনে আব্বাস রা এর অবস্থানের বিপরীত।
কাজেই যে আছার আপনারা মোটেই মানছেন না, তা আবার দলিল হিসাবে উপাস্থাপন করছেন কিভাবে?
--------------------------------------------
****************************
💠 আসারে কুরাইব রহঃ প্রসঙ্গেঃ
লা, হাকাযা আমারনা রসূল (ﷺ)।
অর্থঃ না, রসূল (ﷺ) আমাদের এরুপ করতে বলেছেন।
🗣️ রসূল (ﷺ) কি রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল এর মাধ্যমে সংবাদ গ্রহন করেছেন⁉️
🗣️ সাহাবারা কি রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল এর মাধ্যমে সংবাদ গ্রহন করেছেন⁉️
🗣️ কোন তাবেঈন কি রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল এর মাধ্যমে সংবাদ গ্রহন করেছেন⁉️
🗣️ কোন তাবে-তাবেঈন কি রেডিও, টেলিভিশন, মোবাইল এর মাধ্যমে সংবাদ গ্রহন করেছেন⁉️
এই ৪ যুগের কেউই কোন প্রযুক্তির মাধ্যমে সংবাদ গ্রহন করেননি।
তবে আপনি করছেন কেন⁉️
বরং ইবনে আব্বাস (রা) বলেছেন, লা, হাকাযা আমারনা রসূল (ﷺ)।
অর্থঃ না, রসূল (ﷺ) আমাদের এরুপ করতে বলেছেন।
আসুন দেখি রসূল (ﷺ) কি করেছেন-
তিনি (ﷺ) চাঁদ দেখতে না পেয়ে দূর থেকে আসা ২ জন মুসলিমের সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন।
নোট: তারা সম্ভাব্য সর্বোচ্চ ৩৭ মাইলের দূরত্ব থেকে এসেছেন। এক্ষেত্রে তর্কের খাতিরে দূরত্ব কয়েকগুণ বাড়িয়ে ১০০ মাইল দূরত্ব ধরে নিলাম।
এখন ১০০ মাইলের অধিক দূরত্ব থেকে যদি কোন নতুন চাঁদের সংবাদ আসে তবে বলবেন, লা হাকাযা আমারনা রসূল (ﷺ)।
অর্থঃ না, রসূল (ﷺ) আমাদের এরুপ করতে বলেছেন।
:
সাক্ষী ২ জন এসেছিল উটে করে, ঘোড়ায় করে কিংবা পায়ে হেটে।
নোট: যদি ২ জন সাক্ষী ঘোড়া কিংবা উট কিংবা পায়ে হেঁটে না আসে, তবে বলবেন, লা হাকাযা আমারনা রসূল (ﷺ)।
অর্থঃ না, রসূল (ﷺ) আমাদের এরুপ করতে বলেছেন।
:
রসূল (ﷺ) এর যুগ, সাহাবীদের যুগ, তাবেঈনদের যুগ ও তাবে-তাবেঈনদের এই ৪ যুগের কেউই প্রযুক্তির মাধ্যমে সংবাদ গ্রহন করেন নি, তবে আপনি করছেন কেন⁉️
আপনাদের উচিৎ পায়ে হাটা কিংবা উটে চড়ে আসা কিংবা ঘোড়ায় চড়ে আসা ২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা।
আবার তারপরেও যদি প্রযুক্তির মাধ্যমে খবর গ্রহণ করেন তাহলেও সর্বোচ্চ ৩৭ বা ১০০ মাইলের ভিতরের সংবাদ গ্রহন করবেন এর চেয়ে বেশি দূরত্বের সংবাদ গ্রহণ করা যাবে না।
যদি ১০০+ মাইল দূরত্ব থেকে সংবাদ পান তাহলে বলবেন, লা হাকাযা আমারনা রসূল (ﷺ)।
অর্থঃ না, রসূল (ﷺ) আমাদের এরুপ করতে বলেছেন।
অন্যথায় হাদিসের মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়া বন্ধ করুন।
------------------------------
*******************
কুরাইব রঃ এর হাদিসের আরবিঃ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي حَرْمَلَةَ، أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ، أَنَّ أُمَّ الْفَضْلِ بِنْتَ الْحَارِثِ، بَعَثَتْهُ إِلَى مُعَاوِيَةَ بِالشَّامِ . قَالَ فَقَدِمْتُ الشَّامَ فَقَضَيْتُ حَاجَتَهَا وَاسْتُهِلَّ عَلَىَّ هِلاَلُ رَمَضَانَ وَأَنَا بِالشَّامِ فَرَأَيْنَا الْهِلاَلَ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ ثُمَّ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فِي آخِرِ الشَّهْرِ فَسَأَلَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ ثُمَّ ذَكَرَ الْهِلاَلَ فَقَالَ مَتَى رَأَيْتُمُ الْهِلاَلَ فَقُلْتُ رَأَيْنَاهُ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ . فَقَالَ أَأَنْتَ رَأَيْتَهُ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ فَقُلْتُ رَآهُ النَّاسُ وَصَامُوا وَصَامَ مُعَاوِيَةُ . قَالَ لَكِنْ رَأَيْنَاهُ لَيْلَةَ السَّبْتِ فَلاَ نَزَالُ نَصُومُ حَتَّى نُكْمِلَ ثَلاَثِينَ يَوْمًا أَوْ نَرَاهُ . فَقُلْتُ أَلاَ تَكْتَفِي بِرُؤْيَةِ مُعَاوِيَةَ وَصِيَامِهِ قَالَ لاَ هَكَذَا أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ لِكُلِّ أَهْلِ بَلَدٍ رُؤْيَتَهُمْ .
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، حَدَّثَنَا إِسْمَاعِيلُ بْنُ جَعْفَرٍ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي حَرْمَلَةَ، أَخْبَرَنِي كُرَيْبٌ، أَنَّ أُمَّ الْفَضْلِ بِنْتَ الْحَارِثِ، بَعَثَتْهُ إِلَى مُعَاوِيَةَ بِالشَّامِ . قَالَ فَقَدِمْتُ الشَّامَ فَقَضَيْتُ حَاجَتَهَا وَاسْتُهِلَّ عَلَىَّ هِلاَلُ رَمَضَانَ وَأَنَا بِالشَّامِ فَرَأَيْنَا الْهِلاَلَ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ ثُمَّ قَدِمْتُ الْمَدِينَةَ فِي آخِرِ الشَّهْرِ فَسَأَلَنِي ابْنُ عَبَّاسٍ ثُمَّ ذَكَرَ الْهِلاَلَ فَقَالَ مَتَى رَأَيْتُمُ الْهِلاَلَ فَقُلْتُ رَأَيْنَاهُ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ . فَقَالَ أَأَنْتَ رَأَيْتَهُ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ فَقُلْتُ رَآهُ النَّاسُ وَصَامُوا وَصَامَ مُعَاوِيَةُ . قَالَ لَكِنْ رَأَيْنَاهُ لَيْلَةَ السَّبْتِ فَلاَ نَزَالُ نَصُومُ حَتَّى نُكْمِلَ ثَلاَثِينَ يَوْمًا أَوْ نَرَاهُ . فَقُلْتُ أَلاَ تَكْتَفِي بِرُؤْيَةِ مُعَاوِيَةَ وَصِيَامِهِ قَالَ لاَ هَكَذَا أَمَرَنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ ابْنِ عَبَّاسٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ غَرِيبٌ . وَالْعَمَلُ عَلَى هَذَا الْحَدِيثِ عِنْدَ أَهْلِ الْعِلْمِ أَنَّ لِكُلِّ أَهْلِ بَلَدٍ رُؤْيَتَهُمْ .
তিরমিজীঃ ৬৯৩, আবু দাউদ (১০২১), মুসলিম
No comments:
Post a Comment