আসুন প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ মুসনাদে আহমাদ এর লেখক, ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল-রাহ., যিনি হাম্বলী ফিকহের প্রধান ইমাম, তার মতামত জেনে নেই।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল-রাহ. (২৪১ হি.)-এর ছাত্র ইমাম আবু দাউদ সিজিস্তানী (২৭৫ হি.) যিনি ‘‘আসুসনান’’-এর সংকলক, ইমাম আহমদ রাহ.-এর কাছে যেসব ফিকহী মাসাইল সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন বা তাঁর উপস্থিতিতে অন্য কেউ করেছিলেন তা একটি আলাদা কিতাবে সংকলিত হয়েছে। ‘মাসাইলু আহমদ’ নামে তা মুদ্রিত ও প্রকাশিত। এই কিতাবে লিখিত হয়েছে-
ইমাম আবু দাউদ সিজিস্তানী বর্ণনা করেছেন,
“আমি আহমদ (রহঃ) কে বলতে শুনেছি, তাঁকে কেউ প্রশ্ন করলেন, আপনার মতামত কি কুরাইবের হাদীস অনুযায়ী? অর্থাৎ, ঐ হাদীস যাতে আছে যে, কুরাইব শাম থেকে মদীনায় এলেন, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন (তোমরা কবে চাঁদ দেখেছ?),
আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) বললেন,
‘না। অর্থাৎ আমার মতামত সে অনুযায়ী নয়’।
আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) বললেন,
‘যখন (এ এলাকার লোকদের) পরিষ্কার জানা হয়ে যাবে যে, (ঐ এলাকার লোকেরা) এক দিন আগে চাঁদ দেখেছে তখন এদেরকে সেদিনের রোযা কাযা করতে হবে’। (এরপর আবু দাউদ (রহঃ) এ হাদীসের পুরা মতন উল্লেখ করেন।)”
(আবু দাউদ সিজিস্তানীর বর্ণনা এ পর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(মাসাইলু ইমাম আহমদ, আবু দাউদ সিজিস্তানী পৃষ্ঠা: ১২৮, বর্ণনা: ৬১৬, আবু মুয়ায তারিক সম্পাদিত এডিশন)]
অর্থাৎ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল-রাহ., হাদীসে কুরাইবকে দলীল হিসেবে গ্রহন করেননি। হাদীসে কুরাইব হচ্ছে সাহাবীর কথা ও কাজ অর্থাৎ মাওকুফ হাদীস। আর রাসূল সঃ এর কথা ও কাজ হচ্ছে মারফু হাদীস। মাওকুফ হাদীসের বিপরীতে মারফু হাদীস পাওয়া গেলে আমল এর ক্ষেত্রে মারফু হাদীস প্রাধান্য পাবে। অর্থাৎ সাহাবীর কথা ও কাজের বিপরীতে রাসূল সঃ এর কথা ও কাজ পাওয়া গেলে আমল এর ক্ষেত্রে রাসূল সঃ এর কথা ও কাজ প্রাধান্য পাবে। আর কুরআনের আয়াত হচ্ছে আল্লাহর কথা। তাই কুরআনের আয়াত আমল এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে।
সূরা বাকারার ১৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ নতুন চাঁদকে "মানবজাতির" জন্য তারিখ নির্দেশক এবং হজ্জের তারিখ নির্দেশক বলেছেন। "মানবজাতি" হচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ। আল্লাহ বলেননি সৌদি আরবের সীমান্তের ভেতরের মানুষ বা বাংলাদেশের বর্ডারের ভিতরের মানুষ। আর হজ্জের তারিখ তো মানবজাতির জন্য একটাই হয়। সুতরাং পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দেখা গেলে পৃথিথীর গোটা মানবজাতির জন্যই চান্দ্রমাসের তারিখ নির্ধারন হয়ে যায়।
আর রাসূল সঃ বলেছেন "দুইজন চাঁদ দেখার সংবাদ দিলে তোমরা সিয়াম ও ঈদ করো।" এখানে রাসূল সঃ বলেননি মদিনার ভেতরের তোমরা বা সৌদি আরবের সীমান্তের ভেতরের তোমরা বা বাংলাদেশের বর্ডারের ভিতরের তোমরা।
শুধু তাই নয় রাসূল সঃ তো নিজে আমল করেই দেখিয়েছেন। ২৯ রমাদানে মদীনায় চাঁদ না দেখা যাওয়ায় সাহাবীরা সকলেই ৩০ পূর্ণ করতে রোজা রাখলেও সন্ধ্যার কিছু আগে বহুদুর থেকে একদল কাফেলা গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার সংবাদ দিলে রাসূল সঃ শোনামাত্রই রোজা ভেঙে ফেলেন। কারন ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
এছাড়া তারিখ আইনের সাথে সম্পৃক্ত, যেমন কসম পূর্ণ করা, তালাক, ঋণ পরিশোধের শেষ সীমা ইত্যাদি। একেক এলাকায় একেক রকম তারিখ হলে আইন প্রয়োগে সমস্যা দেখা দেয়।
আবার এলাকা ভেদে তারিখ ভিন্ন হলে এক এলাকার তারিখ অনুযায়ী রোযা রেখে অন্য তারিখের এলাকায় ঈদ করলে রোযা ২৮ বা ৩১ হয়ে যায় অথচ রাসূল ২৮ বা ৩১ রোজা রাখতে বলেননি।
এলাকা ভেদে তারিখ ভিন্ন হলে দুটি পাশাপাশি এলাকায় ভিন্ন তারিখ হলে একপাশে রোজা অন্যপাশে ঈদ হবে ফলে দুই এলাকার সীমান্তের মানুষ রোজা নাকি ঈদ করবে তা নিয়েও সমস্যা হবে। ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
তাছাড়াও কুরআন তো একরাত্রেই নযিল হয়েছে। মূল শয়তান কে তো একদিনেই বাঁধা হয়। জান্নাতের দরজা একদিনেই খোলা হয়, জাহান্নামের দরজা একদিনেই বন্ধ হয়।
সম্ভবত এসকল দিক বিবেচনা করেই আহমদ বিন হাম্বল রঃ হাদীসে কুরাইব যা সাহাবীর কথা-কাজ বা মাওকুফ হাদীস এর পরিবর্তে কুরআনের আয়াত ও রাসূল সঃ এর কথা-কাজ বা মারফু হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে এর উপরে আমল করার মতামত দিয়েছেন।
ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল-রাহ. (২৪১ হি.)-এর ছাত্র ইমাম আবু দাউদ সিজিস্তানী (২৭৫ হি.) যিনি ‘‘আসুসনান’’-এর সংকলক, ইমাম আহমদ রাহ.-এর কাছে যেসব ফিকহী মাসাইল সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলেন বা তাঁর উপস্থিতিতে অন্য কেউ করেছিলেন তা একটি আলাদা কিতাবে সংকলিত হয়েছে। ‘মাসাইলু আহমদ’ নামে তা মুদ্রিত ও প্রকাশিত। এই কিতাবে লিখিত হয়েছে-
ইমাম আবু দাউদ সিজিস্তানী বর্ণনা করেছেন,
“আমি আহমদ (রহঃ) কে বলতে শুনেছি, তাঁকে কেউ প্রশ্ন করলেন, আপনার মতামত কি কুরাইবের হাদীস অনুযায়ী? অর্থাৎ, ঐ হাদীস যাতে আছে যে, কুরাইব শাম থেকে মদীনায় এলেন, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন (তোমরা কবে চাঁদ দেখেছ?),
আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) বললেন,
‘না। অর্থাৎ আমার মতামত সে অনুযায়ী নয়’।
আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) বললেন,
‘যখন (এ এলাকার লোকদের) পরিষ্কার জানা হয়ে যাবে যে, (ঐ এলাকার লোকেরা) এক দিন আগে চাঁদ দেখেছে তখন এদেরকে সেদিনের রোযা কাযা করতে হবে’। (এরপর আবু দাউদ (রহঃ) এ হাদীসের পুরা মতন উল্লেখ করেন।)”
(আবু দাউদ সিজিস্তানীর বর্ণনা এ পর্যন্তই এখানে দেয়া হল) [(মাসাইলু ইমাম আহমদ, আবু দাউদ সিজিস্তানী পৃষ্ঠা: ১২৮, বর্ণনা: ৬১৬, আবু মুয়ায তারিক সম্পাদিত এডিশন)]
অর্থাৎ ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল-রাহ., হাদীসে কুরাইবকে দলীল হিসেবে গ্রহন করেননি। হাদীসে কুরাইব হচ্ছে সাহাবীর কথা ও কাজ অর্থাৎ মাওকুফ হাদীস। আর রাসূল সঃ এর কথা ও কাজ হচ্ছে মারফু হাদীস। মাওকুফ হাদীসের বিপরীতে মারফু হাদীস পাওয়া গেলে আমল এর ক্ষেত্রে মারফু হাদীস প্রাধান্য পাবে। অর্থাৎ সাহাবীর কথা ও কাজের বিপরীতে রাসূল সঃ এর কথা ও কাজ পাওয়া গেলে আমল এর ক্ষেত্রে রাসূল সঃ এর কথা ও কাজ প্রাধান্য পাবে। আর কুরআনের আয়াত হচ্ছে আল্লাহর কথা। তাই কুরআনের আয়াত আমল এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে।
সূরা বাকারার ১৮৯ নং আয়াতে আল্লাহ নতুন চাঁদকে "মানবজাতির" জন্য তারিখ নির্দেশক এবং হজ্জের তারিখ নির্দেশক বলেছেন। "মানবজাতি" হচ্ছে পৃথিবীর সমস্ত মানুষ। আল্লাহ বলেননি সৌদি আরবের সীমান্তের ভেতরের মানুষ বা বাংলাদেশের বর্ডারের ভিতরের মানুষ। আর হজ্জের তারিখ তো মানবজাতির জন্য একটাই হয়। সুতরাং পৃথিবীর কোথাও চাঁদ দেখা গেলে পৃথিথীর গোটা মানবজাতির জন্যই চান্দ্রমাসের তারিখ নির্ধারন হয়ে যায়।
আর রাসূল সঃ বলেছেন "দুইজন চাঁদ দেখার সংবাদ দিলে তোমরা সিয়াম ও ঈদ করো।" এখানে রাসূল সঃ বলেননি মদিনার ভেতরের তোমরা বা সৌদি আরবের সীমান্তের ভেতরের তোমরা বা বাংলাদেশের বর্ডারের ভিতরের তোমরা।
শুধু তাই নয় রাসূল সঃ তো নিজে আমল করেই দেখিয়েছেন। ২৯ রমাদানে মদীনায় চাঁদ না দেখা যাওয়ায় সাহাবীরা সকলেই ৩০ পূর্ণ করতে রোজা রাখলেও সন্ধ্যার কিছু আগে বহুদুর থেকে একদল কাফেলা গতকাল সন্ধ্যায় চাঁদ দেখার সংবাদ দিলে রাসূল সঃ শোনামাত্রই রোজা ভেঙে ফেলেন। কারন ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
এছাড়া তারিখ আইনের সাথে সম্পৃক্ত, যেমন কসম পূর্ণ করা, তালাক, ঋণ পরিশোধের শেষ সীমা ইত্যাদি। একেক এলাকায় একেক রকম তারিখ হলে আইন প্রয়োগে সমস্যা দেখা দেয়।
আবার এলাকা ভেদে তারিখ ভিন্ন হলে এক এলাকার তারিখ অনুযায়ী রোযা রেখে অন্য তারিখের এলাকায় ঈদ করলে রোযা ২৮ বা ৩১ হয়ে যায় অথচ রাসূল ২৮ বা ৩১ রোজা রাখতে বলেননি।
এলাকা ভেদে তারিখ ভিন্ন হলে দুটি পাশাপাশি এলাকায় ভিন্ন তারিখ হলে একপাশে রোজা অন্যপাশে ঈদ হবে ফলে দুই এলাকার সীমান্তের মানুষ রোজা নাকি ঈদ করবে তা নিয়েও সমস্যা হবে। ঈদের দিন রোজা রাখা হারাম।
তাছাড়াও কুরআন তো একরাত্রেই নযিল হয়েছে। মূল শয়তান কে তো একদিনেই বাঁধা হয়। জান্নাতের দরজা একদিনেই খোলা হয়, জাহান্নামের দরজা একদিনেই বন্ধ হয়।
সম্ভবত এসকল দিক বিবেচনা করেই আহমদ বিন হাম্বল রঃ হাদীসে কুরাইব যা সাহাবীর কথা-কাজ বা মাওকুফ হাদীস এর পরিবর্তে কুরআনের আয়াত ও রাসূল সঃ এর কথা-কাজ বা মারফু হাদীসকে প্রাধান্য দিয়ে এর উপরে আমল করার মতামত দিয়েছেন।
No comments:
Post a Comment