Thursday, May 16, 2019

খেলাধুলা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে (লুডু, দাবা)

ইসলাম সময়ের মূল্যায়ন করে থাকে। কারন খুব অল্প সময়ের জন্যই মানুষ এই দুনিয়াতে এসেছে।প্রতিটি মানুষেরই অনেক দায়বদ্ধতা রয়েছে। মহান আল্লাহর দরবারে ফিরে যেতে হবে ও দায়বদ্ধতার জবাবদিহী করতে হবে, সময়ের ব্যবহারের পূর্ণ হিসাব দিতে হবে,সেখানে প্রকৃত ঈমানদারের সময় টান পড়ার কথা। তারপরেও মানুষ বড় বৈচিত্রতা পছন্দ করে। ইসলাম সেটাকেও মূল্যায়ন করে। মহান আল্লাহই মানুষকে বানিয়েছেন, সুতরাং তিনিই তার চাহিদাও জানেন। সেই অনুযায়ী বিধান দিয়েছেন।
রুচিসম্মত চিত্তবিনোদন কিংবা শরীর চর্চার উদ্দেশ্যে খেলাধূলা করাকে ইসলাম অবৈধ বলে না। তবে অবশ্যই তা ইসলামের সীমারেখার ভিতরে থেকে হতে হবে। কিছু শর্ত সাপেক্ষে ইসলাম খেলাধূলার বৈধতা দেয়। শর্তগুলো নিম্নরূপ-
১.    শরীরচর্চা ও মানসিক প্রশান্তি দায়ক খেলা হতে হবে। অহেতুক সময় অপচয় বা শুধু খেলার জন্য খেলা হতে পারবে না।
২.    সম্পূর্ণ জুয়া মুক্ত হতে হবে।
৩.    শরীয়ত নির্দেশিত সতরের সীমালঙ্ঘন করা যাবে না। অর্থাৎ শরীয়তে নিষিদ্ধ পোশাক পরিধান করা যাবে না।
৪.    শরীয়ত নির্দেশিত পর্দা-বিধানের প্রতি যথাযথ যত্নবান হতে হবে।
৫.    খেলায় লিপ্ত হওয়ার দ্বারা নামায, জামাআত বা শরীয়তের কোন বিধান পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা না থাকতে হবে।
৬।অতিরিক্ত সময় ধরে সময় ব্যয় করা যাবে না।
সুতরাং উপরোক্ত শর্ত সাপেক্ষে  খেলা বৈধ হবে এবং উপরোক্ত শর্ত সাপেক্ষে  সাময়িকের জন্য তা দেখাও জায়েয হবে। পক্ষান্তরে উপরোক্ত শর্তের কোন একটি শর্ত অনুপস্থিত থাকলে খেলা জায়েয হবে না এবং তা দেখাও নাজায়েয হবে।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, বুদ্ধিমান সেই ব্যক্তি যে মৃত্যু পরবর্তী জীবনের পাথেয় সংগ্রহ করে। (সুনানে তিরমিযী; হা.নং ২৪৫৯)
খেলা-ধুলা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের পরিবর্তন হয়। কিন্তু সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি তা কেবল সময়ের অপচয় হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি দ্বীন থেকে গাফেল হয়, দায়িত্ব বিস্মৃত হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত হয়।
একদিন দু’জন আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কি ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্তু যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক (لَهْو) … (নাসাঈ, ছহীহাহ হা/৩১৫)। এতে বুঝা যায় যে, বৈধ খেলাও যদি আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, তবে সেটাও জায়েয হবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (لَهْو) বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাৎহুলবারী ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায় ৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃঃ)।
আল্লাহ বলেন, লোকদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে, যারা অজ্ঞতাবশে বাজে কথা খরিদ করে মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুৎ করার জন্য এবং সত্য পথকে তারা বিদ্রুপ করে, তাদের জন্য রয়েছে লাঞ্ছনাকর শাস্তি’। ‘যখন তার নিকট আমাদের আয়াত সমূহ পাঠ করা হয়, তখন সে দম্ভভরে মুখ ফিরিয়ে নেয়, যেন সে এটা শুনতেই পায়নি। যেন তার দুই কানে বধিরতা আছে। অতএব তুমি তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দাও’ (লোকমান ৬-৭)।
★এইক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞগন বলেন  লুডু খেলাটা নিষেধ কারন এটাতেও একধরনের ডাইস ব্যবহার করা হয়(যা আমরা ছক্কা বলে থাকি)।যে সকল খেলায় ডাইস ব্যবহার হয় তা হারাম বলা হয়েছে।
★দাবা খেলার ব্যপারে দুই ধরনের মত পাওয়া যায়।
একদল বলেছেন যে এটা হারাম।
অপরদল বলেছেন শরীয়তের শর্ত(খেলার জন্য যা)যদি বজায় রাখে তাহলে খেলতে পারে।
আলবানী র.বলেছেন যে, শরীয়তের শর্তের সাথে যদি গুটিগুলো থেকে মূর্তী(ঘোড়া,হাতি)ইত্যাদি মাথা ভেংগে অন্য কিছু( প্রানী ছাড়া) করে নেয়া যায় তাহলে খেলতে পারে।


শায়খ আছিম আল হাকিমঃ https://youtu.be/G4NC9QlFnu4


ড. মঞ্জুর এলাহিঃ https://youtu.be/nADkT_A4FQA




No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...