Sunday, August 30, 2020

আশুরার দিন সম্পর্কে

 শুধু মাত্র যারা হক জানতে ও মানতে চায় তাদের জন্য

আরবীতে সপ্তাহের সাত দিনের নাম নিম্নরূপঃ


১) يوم السبت = শনিবার।

২) يوم الاحد = রবিবার।

৩) يوم الاثنين  = সোমবার

৪) يوم الثلاثاء = মঙ্গলবার ।

৫) يوم الاربعاء = বুধবার।

৬) يوم الخميس = বৃহস্পতিবার।

৭) يوم الجمعة = জুম্মাবার।

-----------------------------------------

🤔يوم عاشوراء= আশুরার দিন

-----------------------------------------

জুম্মা যেমন ২৪ ঘন্টার,

আশুরাও ঠিক ২৪ ঘন্টার।

ইয়াওম = ১ দিন বা ২৪ ঘন্টার।


দিবসের ক্ষেত্রে ১টি ইয়াওম কখনোই পৃথিবীর হিসেবে ২৪ ঘন্টার অধিক হতে পারে না। 


মূর্খতা পরিহার করে লোক হাসানো বন্ধ করি।





Friday, August 28, 2020

জাতীয়তাবাদ হারাম

 বৃটিশের দেয়া হারাম জাতীয়তাবাদী সীমান্তের একপাশের জন্য মুসা আঃ এর মুক্তি শনিবার আর বর্ডারের অপর পাশের  জন্য মুসা আঃ এর  মুক্তি রবিবার এটা হতে পারেনা। সুস্থ বিবেক সম্পন্ন মানুষ এটা মেনে নিতে পারেনা। মুসা আঃ পরপর দুইদিন দুইবার মুক্তি পাননি। একবারই পেয়েছিলেন। 


তেমনি বৃটিশের দেয়া হারাম জাতিয়তাবাদী কাঁটাতারের বেড়ার একপাশে লাইলাতুল ক্বদর একরাতে আর অপর পাশে লাইলাতুল ক্বদর তার পরের রাতে, এটা হতে পারেনা। কুরআন আল্লাহ এক রাতেই নাযিল করেছেন। যে রাতে নাযিল করেছেন সেটাই ক্বদরের রাত। জাতিয়তাবাদী কাঁটাতারের বেড়ার কারনে কুরআন দুইরাতে নাযিল হতে পারেনা। 


জাতিয়তাবাদী বর্ডারের একপাশে প্রধান শয়তানকে যেদিন বাঁধা হয়, অপরপাশে প্রধান শয়তানকে তার পরের দিন বাঁধা হয়, এটা হতে পারেনা। প্রধান শয়তান তো একটি। বৃটিশের দেয়া বর্ডার এর কারনে একটাই প্রধান শয়তান কে বর্ডারের দুইপাশে দুইদিন দুইবার বাঁধা হয় এটা হতে পারে না। তেমনিভাবে জাতিয়তাবাদী সীমান্তের একপাশের জন্য বেহেশতের দরজা যেদিন খোলা হবে সীমান্তের অন্যপাশের জন্য একদিন পরে খোলা হবে এটাও বিবেকগ্রাহ্য নয়। 


পৃথিবীর সমস্ত মুসলিম একই জাতি হওয়া স্বত্তেও ব্রিটিশের ভাগ করা সীমান্ত অনুযায়ী রোজা, ক্বদরের রাত, ঈদের দিন আলাদা কেন হবে? বৃটিশরা দাগ টেনেছে মাটিতে, আর কিছু মুসলিম সেই দাগ আকাশেও টেনে বলছে, আমার দাগের ভিতরে চাঁদ আসলে এটা আমার চাঁদ, তোমার দাগের ভিতরে আসলে তোমার চাঁদ! কি ভয়ংকর জাতিয়তাবাদ!!


রাসূল (সঃ) বলেন, 

“সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয় যে জাতিয়তাবাদের দিকে আহবান করে, জাতিয়তাবাদের জন্য যুদ্ধ করে বা জাতিয়তাবাদের জন্য মারা যায়” 

[আবু দাউদ, হাদিস নং ৫১২১]]


রসূল (সঃ) আরও বলেন,

“যে আসাবিয়্যার (অর্থাৎ জাতীয়তাবাদের) জাহেলী আহবানের দিকে মানুষকে ডাকে সে যেন তার পিতার লজ্জাস্থান কামড়ে ধরে পড়ে আছে (তাকে ছাড়তে চাইছে না) । (এরপর রাসূল সাঃ বলেন) এবং একথাটি লুকিয়ে রেখোনা (অর্থাৎ বলার ক্ষেত্রে কোনো লজ্জা বা অস্বস্তি বোধ করোনা)”। 

[মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং ২১২৩৩]


সুতরাং কোনো জাতি রাষ্ট্রের সীমানা অনুযায়ী মুসলিম উম্মত বিভক্ত হওয়া হারাম। শরীয়তের দৃষ্টিতে প্রত্যেক মুসলিম পরস্পর ভাই ভাই এবং তাদের ভূমিগুলো একই ভূমি হিসেবে বিবেচিত হয়। 


চাঁদ দেখার সংবাদ গ্রহণের ক্ষেত্রে রসূল সঃ দেশের সীমারেখার কোন শর্ত দেননি আমরাও দেই না। 

Thursday, August 27, 2020

যে সকল আত্মীয়-স্বজন নানাভাবে ক্ষতি করার চেষ্টা করে তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করা কি বৈধ?

 

প্রশ্ন: যেসব আত্মীয়-স্বজন (যেমন শশুর-শাশুড়ি) কুফরি কালাম বা যাদু-টোনার মাধ্যমে সংসার ভেঙ্গে দেওয়ার চেষ্টা করে, সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে, সংসারের সদস্যদের শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন করে। এ ধরণের আত্মীয়দের সাথে কি সম্পর্কচ্ছেদ করা জায়েজ আছে? তাদের সাথে কোন ধরণের যোগাযোগ-দেখাসাক্ষাৎ না করলে কি গুনাহ হবে?


উত্তর:

যাদের সাথে সম্পর্ক রাখলে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাদের ক্ষত-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে তাদেরকে এড়িয়ে চলা এবং সাময়িকভাবে কথাবার্তা ও যোগাযোগ বন্ধ রাখা জায়েয রয়েছে তারা রক্ত সম্পর্কীয় বা একান্ত নিকটাত্মীয় হলেও।

সামাজের কিছু মানুষ অন্যের ক্ষতি করতে বা মানুষকে কষ্ট দিতে সিদ্ধহস্ত। তাই অন্যরা সাধ্যমত তাদের থেকে দূরে থাকতে চেষ্টা করে। এমন মানুষ আল্লাহ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট।


মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচার স্বার্থে অথবা কারো কথাবার্তা ও আচার-আচরণ খারাপ হলে তাদের থেকে দূরে থাকার অনুমতি পাওয়া যায় নিম্নোক্ত হাদীস সমূহ থেকে:

◼ ১. ‘আয়িশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ عِنْدَ اللهِ مَنْزِلَةً يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ شَرِّهِ

‘‘নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা‘আলার নিকট সর্ব নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে যাকে অন্যরা পরিত্যাগ করে তার অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে’’। (বুখারী ৬০৩২; মুসলিম ২৫৯১)


◼ ২) রাসূল (ﷺ) বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْزِلَةً عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَنْ وَدَعَهُ أَوْ تَرَكَهُ النَّاسُ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ

“কিয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে ঐ ব্যক্তি নিকৃষ্ট স্তরের বলে গণ্য হবে, যাকে লোকজন তার দুর্ব্যবহারের জন্য পরিত্যাগ করে।” (মুসলিম: ৬৪৯০; বুখারী: ৬০৩২; আবূ দাউদ; ৪৭৯১)।


◼ ৩. রাসূল (ﷺ) বলেছেন,

إِنَّ شَرَّ النَّاسِ مَنْ تَرَكَهُ النَّاسُ ـ أَوْ وَدَعَهُ النَّاسُ ـ اتِّقَاءَ فُحْشِهِ

“নিশ্চয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে।” (বুখারী: ৬০৫৪)।


আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সমাজের অসাধু, ক্ষতিকর ও খারাপ মানুষের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে হেফাজত করুন। আমীন।

আল্লাহু আলাম।


উত্তর প্রদানে:

আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল (মাদানি)

লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (আল হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ)

দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব। cld.

▬▬▬◄❖►▬▬▬

Sunday, August 23, 2020

নারীদের গাড়ি চালানো কি জায়েজ?


প্রশ্ন : মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশে মহিলাদের গাড়ি চালানো নিষেধ। কিন্তু কেন? এটা কি ঐসব দেশের নিজস্ব আইন দ্বারা বন্ধ করা হয়েছে নাকি ইসলাম ধর্মমতে মহিলাদের গাড়ি চালানো নিষেধ। যদি ইসলাম ধর্মমতে মহিলাদের গাড়ি চালানো নিষেধ হয়ে থাকে তাহলে কোরআন ও হাদিসের আলোকে এর কারণ জানতে চাই।

উত্তর : 

ইসলাম ধর্মে কিছু বিষয় আছে যেগুলো সরাসরি কুরআন হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হয়তো বৈধ, আদিষ্ট, নতুবা নিষিদ্ধ। যেমন নামায পড়ার আদেশ আর মদ পানে নিষেধ।

আবার কিছু বিষয় আছে যেগুলো সরাসরি কুরআন হাদীসে উল্লেখ করে নিষেধ করা হয়নি, কিন্তু এমন কিছু কারণ বা বিষয়ের উপস্থিতি আছে তাতে, যেগুলো পৃথকভাবে নিষিদ্ধ। ফলে সেসবের উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়টিও নিষিদ্ধ হয়ে যায়। নারীর গাড়ি চালানো এ প্রকারের অন্তর্ভুক্ত।

উপরোক্ত ভূমিকার সাথে আরেকটু যোগ করি, কুরআনের একটি আয়াত আছে।

وَلَا تَسُبُّوا الَّذِينَ يَدْعُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ فَيَسُبُّوا اللَّهَ عَدْوًا بِغَيْرِ عِلْمٍ ۗ  [٦:١٠٨]

“তোমরা তাদেরকে মন্দ বলো না, যাদের তারা আরাধনা করে আল্লাহকে ছেড়ে। তাহলে তারা ধৃষ্টতা করে অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহকে মন্দ বলবে।” (৬:১০৮)

এই আয়াতটি লক্ষ্য করুন। আল্লাহ তায়ালা তিনি ব্যতিত অন্য উপাস্যদের মন্দ বলতে নিষেধ করছেন। এর কারণ তিনি উল্লেখ করছেন এই, যে, এতে সেসব উপাস্যদের উপাসকরাও না বুঝে আল্লাহকে মন্দ বলবে।

এই আয়াত থেকে একটি মূলনীতি আমারা খুঁজে পাই। সেটি হলো,

ما أفضى إلى محرم فهو محرم

অর্থাৎ, যা করার প্রেক্ষিতে কোনো হারাম কাজ করতে হয়, সে কাজটিও হারাম হয়ে যায়।

উল্লিখিত আয়াতে লক্ষ্য করুন, আল্লাহকে মন্দ বলা হারাম। কিন্তু তিনি ব্যতিত অন্য উপাস্যদের মন্দ বলা হারাম নয়। অথচ তাদের মন্দ বললে (যা বৈধ) আল্লাহকেও মন্দ বলা হয় (যা হারাম)। কাজেই তাদেরকে মন্দ বলাও হারাম হয়ে গেল।

আবার আরেকটি আয়াত দেখুন। আল্লাহ বলছেন,

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ ۖ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِنْ نَفْعِهِمَا ۗ  [٢:٢١٩]

তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এতদুভয়ের মধ্যে রয়েছে মহাপাপ। আর মানুষের জন্যে উপকারিতাও রয়েছে। তবে এগুলোর পাপ উপকারিতা অপেক্ষা অনেক বড়। (২:২১৯)

উপরোক্ত আয়াতে আল্লাহ তা’আলা মদ হারাম ঘোষণা করার প্রাক্কালে বলেন, মদ ও জুয়ায় কিছু উপকারিতাও আছে, আবার কিছু পাপও আছে। তবে পাপের অংশটা উপকারিতার অংশ থেকে বড়। আর উপকারিতা গ্রহণের চেয়ে পাপ বর্জন গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই মদ পরিত্যাগ করাই উচিৎ।

এ আয়াত থেকে আমরা আরেকটি মূলনীতি পাই। সেটি হলো,

درء المفاسد – إذا كانت مكافئة للمصالح أو أعظم – مقدم على جلب المصالح

অর্থাৎ, অনিষ্ট দূর করা উপকারিতা অর্জনের চেয়ে অগ্রগামী।

এই দুই মূলনীতির ভিত্তিতেই শেখ আব্দুল্লাহ বিন বায ও শেখ উসাইমিন প্রমুখ নারীর জন্য গাড়ি চালানো হারাম বলেছেন। তারা দেখিয়েছেন যে, গাড়ি চালানো যদিও সরাসরি কুরআন-হাদীস দ্বারা নিষিদ্ধ নয়, তথাপি নারী যখন তা চালায়, তখন এমন কিছু বিষয় সামনে আসে, যেগুলো নিষিদ্ধ। পর্দাহীনতা, আকষ্মিক অশ্লীলতা, অনিচ্ছাকৃত আরো কিছু বিষয়, যেগুলো নিষিদ্ধ। কাজেই গাড়ি চালানোও তাদের জন্য নিষিদ্ধ।

নারীর গাড়ি চালানোতে যে উপকারিতা আছে তার চেয়ে এর কারেণ সংঘটিত পাপের অংশ বড়। আর উপকারিতা অর্জনের চেয়ে পাপ বর্জন শ্রেয়। কাজেই নারীদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ।

তবে তারা এও বলেছেন যে, যদি কারো একান্ত প্রয়োজন হয়, স্বামী-সন্তান বা ভাই-বাবা কেউ না থাকে, কর্মস্থলে যেতে হয় নিজে গাড়ি চালিয়ে, তাহলে সে চালাতে পারে। তদুপরি পর্দা ও মডেস্টির যথোপযুক্ত সংরক্ষণ করেই সে চালাতে পারে।

সংক্ষেপে, গাড়ি চালানো হারাম নয়, তবে যদি এর মাধ্যমে বা এর দ্বারা হারাম কাজ সংঘটিত হয় বা আশংকা থাকে তাহলে জায়েজ নয়। আর বেশির ভাগ ক্ষেত্রে হারামই সংঘটিত হয় তাই আমভাবে জায়েজ নয় তবে বিশেষ ক্ষেত্রে জায়েজ যা উক্ত ব্যক্তির অবস্থা, পরিবেশ, নিয়তের উপর নির্ভর করবে।

Wednesday, August 5, 2020

মৃত্যু সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীস

#মৃত্যু সম্পর্কিত কিছু আয়াত ও হাদীসঃ

মহান আল্লহ তা’আলা বলেছেন,
نَحْنُ قَدَّرْنَا بَيْنَكُمُ الْمَوْتَ
❖আমি তোমাদের মাঝে মৃত্যুকে নির্ধারণ করেছি।
সূরা ওয়াক্বিয়া-৬০
قُلْ إِنَّ الْمَوْتَ الَّذِي تَفِرُّونَ مِنْهُ فَإِنَّهُ مُلَاقِيكُمْ ثُمَّ تُرَدُّونَ إِلَى عَالِمِ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ فَيُنَبِّئُكُم بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
❖বলুন, তোমরা যে মৃত্যু থেকে পলায়ন কর, সেই মৃত্যু অবশ্যই তোমাদের মুখামুখি হবে, অতঃপর তোমরা অদৃশ্য, দৃশ্যের জ্ঞানী আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দিবেন সেসব কর্ম, যা তোমরা করতে।
আল্ জুমআ ৮
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُم مِّن تُرَابٍ ثُمَّ مِن نُّطْفَةٍ ثُمَّ مِنْ عَلَقَةٍ ثُمَّ يُخْرِجُكُمْ طِفْلًا ثُمَّ لِتَبْلُغُوا أَشُدَّكُمْ ثُمَّ لِتَكُونُوا شُيُوخًا وَمِنكُم مَّن يُتَوَفَّى مِن قَبْلُ وَلِتَبْلُغُوا أَجَلًا مُّسَمًّى وَلَعَلَّكُمْ تَعْقِلُونَ
❖তিনি তো তোমাদের সৃষ্টি করেছেন মাটির দ্বারা, অতঃপর শুক্রবিন্দু দ্বারা, অতঃপর জমাট রক্ত দ্বারা, অতঃপর তোমাদেরকে বের করেন শিশুরূপে, অতঃপর তোমরা যৌবনে পদর্পণ কর, অতঃপর বার্ধক্যে উপনীত হও। তোমাদের কারও কারও এর পূর্বেই মৃত্যু ঘটে এবং তোমরা নির্ধারিত কালে পৌঁছ এবং তোমরা যাতে অনুধাবন কর।
সূরা গাফির:৬৭
قُل لَّن يَنفَعَكُمُ الْفِرَارُ إِن فَرَرْتُم مِّنَ الْمَوْتِ أَوِ الْقَتْلِ وَإِذًا لَّا تُمَتَّعُونَ إِلَّا قَلِيلًا
❖ বলুন! তোমরা যদি মৃত্যু অথবা হত্যা থেকে পলায়ন কর, তবে এ পলায়ন তোমাদের কাজে আসবে না। তখন তোমাদেরকে সামান্যই ভোগ করতে দেয়া হবে।
সূরা আল্ আহযাব :১৬
اللَّهُ الَّذِي خَلَقَكُمْ ثُمَّ رَزَقَكُمْ ثُمَّ يُمِيتُكُمْ ثُمَّ يُحْيِيكُمْ هَلْ مِن شُرَكَائِكُم مَّن يَفْعَلُ مِن ذَلِكُم مِّن شَيْءٍ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ
❖আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন। তোমাদের শরীকদের মধ্যে এমন কেউ আছে কি, যে এসব কাজের মধ্যে কোন একটিও করতে পারবে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা থেকে পবিত্র ও মহান।
সূরা আর্ রূম:৪০
أَيْنَمَا تَكُونُواْ يُدْرِككُّمُ الْمَوْتُ وَلَوْ كُنتُمْ فِي بُرُوجٍ مُّشَيَّدَةٍ وَإِن تُصِبْهُمْ
❖তোমরা যেখানেই থাক না কেন; মৃত্যু কিন্তু তোমাদেরকে পাকড়াও করবেই। যদি তোমরা সুদৃঢ় দূর্গের ভেতরেও অবস্থান কর, তবুও।
সূরা আন নিসা:৭৮
كُلُّ نَفْسٍ ذَآئِقَةُ الْمَوْتِ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَمَن زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ وَما الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ مَتَاعُ الْغُرُورِ
❖প্রত্যেক প্রাণীকে আস্বাদন করতে হবে মৃত্যু। আর তোমরা কিয়ামতের দিন পরিপূর্ণ বদলা প্রাপ্ত হবে। তারপর যাকে দোযখ থেকে দূরে রাখা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, তার কার্যসিদ্ধি ঘটবে। আর পার্থিব জীবন ধোঁকা ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নয়।
সূরা আল্ ইমরান: ১৮৫
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَنَبْلُوكُم بِالشَّرِّ وَالْخَيْرِ فِتْنَةً وَإِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
❖প্রত্যেককে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে। আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা পরীক্ষা করে থাকি এবং আমারই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
সুরা আম্বিয়া :৩৫
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ ثُمَّ إِلَيْنَا تُرْجَعُونَ
❖জীবমাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে। অতঃপর তোমরা আমারই কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে।
সুরা আনকাবুত :৫৭
إِنَّكَ مَيِّتٌ وَإِنَّهُم مَّيِّتُونَ
❖নিশ্চয় তোমারও মৃত্যু হবে এবং তাদেরও মৃত্যু হবে।
সুরা যুমার:৩০
فَإِذَا جَاء أَجَلُهُمْ لاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ يَسْتَقْدِمُونَ
❖অতঃপর নির্ধারিত সময়ে যখন তাদের মৃত্যু এসে যাবে, তখন এক মুহুর্তও বিলম্বিত কিংবা তরান্বিত করতে পারবে না।
সূরা নাহল-৬১
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تُلْهِكُمْ أَمْوَالُكُمْ وَلَا أَوْلَادُكُمْ عَن ذِكْرِ اللَّهِ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْخَاسِرُونَ
وَأَنفِقُوا مِن مَّا رَزَقْنَاكُم مِّن قَبْلِ أَن يَأْتِيَ أَحَدَكُمُ الْمَوْتُ فَيَقُولَ رَبِّ لَوْلَا أَخَّرْتَنِي إِلَى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ وَأَكُن مِّنَ الصَّالِحِينَ
وَلَن يُؤَخِّرَ اللَّهُ نَفْسًا إِذَا جَاء أَجَلُهَا وَاللَّهُ خَبِيرٌ بِمَا تَعْمَلُونَ
❖হে মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদেরকে আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত।আমি তোমাদেরকে যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলে না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মশীলদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।প্রত্যেক ব্যক্তির নির্ধারিত সময় যখন উপস্থিত হবে, তখন আল্লাহ কাউকে অবকাশ দেবেন না। তোমরা যা কর, আল্লাহ সে বিষয়ে খবর রাখেন।
সূরা মুনাফিকুন:৯-১১
حَتَّى إِذَا جَاء أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ رَبِّ ارْجِعُونِ
لَعَلِّي أَعْمَلُ صَالِحًا فِيمَا تَرَكْتُ كَلَّا إِنَّهَا كَلِمَةٌ هُوَ قَائِلُهَا وَمِن وَرَائِهِم بَرْزَخٌ إِلَى يَوْمِ يُبْعَثُونَ
فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ فَلَا أَنسَابَ بَيْنَهُمْ يَوْمَئِذٍ وَلَا يَتَسَاءلُونَ
فَمَن ثَقُلَتْ مَوَازِينُهُ فَأُوْلَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ
وَمَنْ خَفَّتْ مَوَازِينُهُ فَأُوْلَئِكَ الَّذِينَ خَسِرُوا أَنفُسَهُمْ فِي جَهَنَّمَ خَالِدُونَ
تَلْفَحُ وُجُوهَهُمُ النَّارُ وَهُمْ فِيهَا كَالِحُونَ
❖যখন তাদের কারও কাছে মৃত্যু আসে, তখন সে বলে,”হে আমার পালনকর্তা! আমাকে পুনরায় (দুনিয়াতে ) প্রেরণ করুন। যাতে আমি সৎকর্ম করতে পারি, যা আমি করিনি।
কখনই নয়, এ তো তার একটি কথার কথা মাত্র। তাদের সামনে পর্দা আছে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।অতঃপর যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে, সেদিন তাদের পারস্পরিক আত্নীয়তার বন্ধন থাকবে না এবং একে অপরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে না।যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই হবে সফলকাম, এবং যাদের পাল্লা হাল্কা হবে তারাই নিজেদের ক্ষতিসাধন করেছে, তারা দোযখেই চিরকাল বসবাস করবে।আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে।
সূরা মুমিনুন:৯৯-১০৪
أَلَمْ يَأْنِ لِلَّذِينَ آمَنُوا أَن تَخْشَعَ قُلُوبُهُمْ لِذِكْرِ اللَّهِ وَمَا نَزَلَ مِنَ الْحَقِّ وَلَا يَكُونُوا كَالَّذِينَ أُوتُوا الْكِتَابَ مِن قَبْلُ فَطَالَ عَلَيْهِمُ الْأَمَدُ فَقَسَتْ قُلُوبُهُمْ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ
❖ মুমিনদের জন্য কি এখনো সে সময় আসে নি যে তাদের হৃদয় আল্লাহর স্মরণে বিগলিত হবে? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।
সূরা হাদীদ-১৬
وَمَا تَدْرِي نَفْسٌ بِأَيِّ أَرْضٍ تَمُوتُ
❖ এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে।
সূরা লোকমান -৩৪
আল-হাদীস:
❖ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমার কাঁধ ধরে বললেন:
“দুনিয়াতে এভাবে কাটাও যেন তুমি একজন মুসাফির বা পথিক।”
ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) বলতেন,
“তুমি সন্ধ্যায় উপনীত হয়ে সকাল বেলার অপেক্ষা (আশা) করো না এবং সকালে উপনীত হয়ে সন্ধ্যা বেলার অপেক্ষা করো না। সুস্বাস্থ্যের দিনগুলোতে রোগব্যাধির (দিনগুলোর) জন্য প্রস্তুতি নাও এবং জীবদ্দশায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো।”
(বুখারী)
রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৫
❖ ইবনে মাসঊদ (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত।
তিনি বলেন,
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) একটি বর্গক্ষেত্র আঁকলেন, তার মাঝ বরাবর কয়েকটি সরল রেখা টানলেন যা বর্গক্ষেত্র ভেদ করে বাইরে চলে গেছে। তিনি মধ্যবর্তী এ রেখাটির সাথে যুক্ত আরো কতগুলো ছোট ছোট সরল রেখা (আড়াআড়ি ভাবে) টানলেন, তারপর বলেন:
“এটা হল মানুষ এবং এটা তার মৃত্যু যা তাকে বেষ্টন করে আছে। (বর্গক্ষেত্র ভেদ করে) বাইরে বেরিয়ে যাওয়া রেখাটুকু হচ্ছে তার আশা-আকাঙ্ক্ষা। ছোট ছোট রেখাগুলো হল তার জীবনের বিপদাপদ। একটি বিপদ থেকে ছুটতে পারলে অপর বিপদ এসে তাকে বিচলিত করে।। আবার দ্বিতীয়টি থেকে রেহাই পেলে তৃতীয়টি তাকে নিষ্পেষিত করে।”
(বুখারী)
রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৮
❖ আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন,
রাসূলুল্লাহ(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন:
“সাতটি জিনিস প্রকাশ পাওয়ার পূর্বেই তোমরা নেক কাজের দিকে সত্ত্বর অগ্রসর হও।
(১) তোমরা কি অপেক্ষা করছো এমন দরিদ্র্যের যা অমনোযোগী (অক্ষম) করে দেয়,
(২) অথবা এমন প্রাচুর্যের যা ধর্মদ্রোহী বানায়,
(৩) অথবা এরূপ রোগ-ব্যাধির যা (দৈহিক সামর্থ্যকে) তছনছ করে দেয়,
(৪) অথবা এমন বৃদ্ধাবস্থার যা জ্ঞান-বুদ্ধিকে লোপ করে দেয়,
(৫) অথবা এমন মৃত্যুর যা অলক্ষ্যেই উপস্থিত হয়,
(৬) কিংবা দাজ্জালের, যা অপেক্ষামাণ নিকৃষ্ট অনুপস্থিত বস্তু,
(৭) অথবা কিয়ামাতের যা অত্যন্ত বিভীষিকাময় ও তিক্ত।”
ইমাম তিরমিযী হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, এটি হাসান হাদীস।
রিয়াদুস সলিহীন:৫৭৯
❖ আবু হুরাইরা (রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন:
“তোমরা (দুনিয়ার) স্বাদ-আহলাদ নিঃশেষকারী মৃত্যুকে বেশি বেশি স্মরণ করো।”
ইমাম তিরমিযী এ হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, এটি হাসান হাদীস।
মৃত্যু যন্ত্রনা সম্পর্কে নবী করিম (সাঃ) এরশাদ করেনঃ
হযরত হাসান বসরী বর্ননা করেন নবী করীম সাঃ বলেন, মুমিনের মৃত্যু যন্ত্রনা ও কষ্ট ৩০০ বার তলোয়ারের আঘাতের সমান। মৃত্যু সম্পর্কে যার এ বিশ্বাস রয়েছে তার উচিত নেক কাজ করে ও পাপ কাজ পরিত্যগ করে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেয়া। কারন মানুষ জানে না যে মৃত্যু কখন আসবে।
একদিন হযরত উমর রাঃ কা’ব রাঃ কে বললেন- হে কা’ব মৃত্যু সম্পর্কে বলুন। তিনি বললনে যে মৃত্যু হল একটি কাঁটাযুক্ত গাছের ন্যায়। সে গাছটি আদম সন্তানের পেটে প্রবেশ করিয়ে দিলে তার প্রতিটি কাঁটা শিরা উপশিরায় গেঁথে গেল। অতঃপর কোন শক্তিশালী ব্যাক্তি সেটা ধরে টান দিলে তার কিছু অংশ ছিঁড়ে চলে এল আর কিছু অংশ রয়ে গেল।

হে আল্লহ, মৃত্যুর সময় তুমি আমাদেরকে দয়া করে ঈমান এবং ভালো আমলের সাথে মৃত্যু দান করিও।

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...