হাদীসে কুরাইব সম্পর্কে বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীসের সাবেক সভাপতি মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল কুরাইশী (রঃ) লিখেছেন,
“রাসূলুল্লাহ (দঃ) কি আদেশ করিয়াছেন, ইবনে আব্বাস তাহা উল্লেখ করেন নাই, রাসূলুল্লাহর (দঃ) আদেশের যে তাৎপর্য তিনি উপলদ্ধি করিয়াছেন, তিনি কেবল তাহাই উল্লেখ করিয়াছেন, সুতরাং এক প্রদেশের রূয়ত অন্য প্রদেশের জন্য প্রযোজ্য না হওয়া হযরত ইবনে আব্বাসের নিজস্ব ইজতিহাদ মাত্র।
রাসূলুল্লাহর (দঃ) নির্দেশ ইমাম আহমাদ, মুসলিম ও তিরমিযি প্রভৃতি ইবনে উমর ও আবু হুরায়রার (রাঃ) বাচনিক রেওয়ায়েত করিয়াছেন:
‘হিলাল (চাঁদ) দর্শন করার পর রোযা রাখিবে আর উহা দর্শন করিয়া ফিতর (ঈদ) করিবে, যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়, তাহা হইলে দিন গণনা করিবে’। অন্য রেওয়ায়েতে আছে, রাসূলুল্লাহ (দঃ) বলিলেন, ‘আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইলে ত্রিশের সংখ্যা পূর্ণ করিবে’। (বুখারী (১) ২১৫, মুসলিম (১) ৩৪৭, তিরমিযী (২) ৩৪ পৃঃ)
রাসূলু্ল্লাহর এই আদেশ ব্যাপক, কোন অঞ্চল বা ভূভাগকে তাঁর আদেশে সীমাবদ্ধ করা হয় নাই সুতরাং একস্হানের রূয়ত (দেখা) দ্বারা সকল স্থানে উহার বিধান বলবৎ করার আদেশ অধিকতর স্পষ্ট এবং নস্সের ব্যাপক আদেশকে ইবনে আব্বাসের ইজতিহাদ সীমাবদ্ধ করিতে সক্ষম নয়।
বুখারী ও মুসলিমের উল্লিখিত হাদীস প্রসঙ্গে ইমাম শাওকানী লিখিয়াছেন:
‘রাসূলুল্লাহর (দ:) আদেশ আঞ্চলিক বিভিন্নতার জন্য পৃথক পৃথক হয় নাই, সকল মুসলমান উক্ত আদেশে সম্বোধিত হইয়াছেন, সুতরাং এক নগরের রূয়ত অন্য নগরের প্রতি প্রযোজ্য হইবার ব্যবস্থা – না হইবার ব্যবস্থা অপেক্ষা সুস্পষ্ট। কারণ এক শহরের মুসলমানের চন্দ্র দর্শন সকল মুসলমানের দর্শনের অনুরূপ, সুতরাং সেই শহরের মুসলমানগণের উপর যাহা প্রযোজ্য হইবে, অপর স্হানের মুসলমানদের উপর ও তাহা বলবৎ হইবে’। (ইমাম শাওকানীর কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হয়েছে) [(নাইলুল আওতার)]
তারপর এক শহরের রূয়ত (দেখা) অন্য শহরের জন্য অনুসরণীয় না হওয়াই যদি ইবনে আব্বাসের ইঙ্গিতকৃত হাদীসের তাৎপর্য হয়, তাহা হইলে দূরত্বের পরিমাণ এবং মত্লার পার্থক্য ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে উহাতে কোন উল্লেখ নাই। আবার ইহাও লক্ষ্য করার বিষয় যে শাম ও মদীনার দূরত্ব এত দূর নয় যাহাতে মতলার পার্থক্য ঘটিতে পারে, সুতরাং ইবনে আব্বাসের শামের রূয়ত অস্বীকার করার হেতুবাদ তাহার ইজতিহাদ মাত্র”।
মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল কুরাইশী (রঃ) আরও লিখেছেন,
“ইবনে আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহর (সঃ) বাচনিক এমন কোন হাদীস রেওয়ায়েত করেন নাই, যদ্বারা আমরা বিবেচনা করিয়া দেখিতে পারি যে, উহা হযরতের (সঃ) ব্যপক আদেশকে সীমাবদ্ধ করিতে পারে কিনা। সর্বশেষ কথা এই যে, ইবনে আব্বাসের ইজতিহাদকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ব্যপক আদেশের সংকোচক বলিয়া মানিয়া লইলে বেশীর বেশী এইটুকু সাব্যস্ত হইতে পারে যে, মদীনা হইতে দামেশকের দূরত্ব যতখানি ততখানি দূরত্বে অবস্থিত কোন শহরের রূয়ত অন্য শহরের উপর প্রযোজ্য নয়, কিন্তু ইবনে আব্বাসের (রাঃ) ইজতিহাদকে মারফু হাদীসের সংকোচক স্বীকার করার উপায় নাই।
ইমাম কুরতুবী তাঁহার উস্তাদগনের উক্তি উদ্ধৃত করিয়াছেন যে,
‘এক নগরীর অধিবাসীরা হিলাল দর্শন করিলে সকল প্রদেশের অধিবাসীগণের জন্য উহা অনুসরণীয় হইবে ইহাই ইমাম আবু হানীফা, ইমাম মালিক এবং ইমাম আহমাদের সিদ্ধান্ত’। (ইমাম কুরতুবীর কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হয়েছে) [গায়াতুল আমানী (৯) ২৭২ পৃষ্ঠা]
রাসূলুল্লাহর (দঃ) স্পষ্ট নির্দেশের সহিত এই সিদ্ধান্তই সুসামঞ্জস্য এবং আমরা ইহাকেই অনুসরণযোগ্য মনে করি।” (মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল কুরাইশী (রঃ) এর কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) ।
[ ফাতাওয়া ও মাসায়েল- পৃষ্ঠা -১৭৯ (প্রকাশক - অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল বারী রঃ- সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস ) ]
.
ওয়ামা- 'আলাইনা- ইল্লাল বালাগ,
ওয়াল্লাহু আ'লাম।
“রাসূলুল্লাহ (দঃ) কি আদেশ করিয়াছেন, ইবনে আব্বাস তাহা উল্লেখ করেন নাই, রাসূলুল্লাহর (দঃ) আদেশের যে তাৎপর্য তিনি উপলদ্ধি করিয়াছেন, তিনি কেবল তাহাই উল্লেখ করিয়াছেন, সুতরাং এক প্রদেশের রূয়ত অন্য প্রদেশের জন্য প্রযোজ্য না হওয়া হযরত ইবনে আব্বাসের নিজস্ব ইজতিহাদ মাত্র।
রাসূলুল্লাহর (দঃ) নির্দেশ ইমাম আহমাদ, মুসলিম ও তিরমিযি প্রভৃতি ইবনে উমর ও আবু হুরায়রার (রাঃ) বাচনিক রেওয়ায়েত করিয়াছেন:
‘হিলাল (চাঁদ) দর্শন করার পর রোযা রাখিবে আর উহা দর্শন করিয়া ফিতর (ঈদ) করিবে, যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়, তাহা হইলে দিন গণনা করিবে’। অন্য রেওয়ায়েতে আছে, রাসূলুল্লাহ (দঃ) বলিলেন, ‘আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হইলে ত্রিশের সংখ্যা পূর্ণ করিবে’। (বুখারী (১) ২১৫, মুসলিম (১) ৩৪৭, তিরমিযী (২) ৩৪ পৃঃ)
রাসূলু্ল্লাহর এই আদেশ ব্যাপক, কোন অঞ্চল বা ভূভাগকে তাঁর আদেশে সীমাবদ্ধ করা হয় নাই সুতরাং একস্হানের রূয়ত (দেখা) দ্বারা সকল স্থানে উহার বিধান বলবৎ করার আদেশ অধিকতর স্পষ্ট এবং নস্সের ব্যাপক আদেশকে ইবনে আব্বাসের ইজতিহাদ সীমাবদ্ধ করিতে সক্ষম নয়।
বুখারী ও মুসলিমের উল্লিখিত হাদীস প্রসঙ্গে ইমাম শাওকানী লিখিয়াছেন:
‘রাসূলুল্লাহর (দ:) আদেশ আঞ্চলিক বিভিন্নতার জন্য পৃথক পৃথক হয় নাই, সকল মুসলমান উক্ত আদেশে সম্বোধিত হইয়াছেন, সুতরাং এক নগরের রূয়ত অন্য নগরের প্রতি প্রযোজ্য হইবার ব্যবস্থা – না হইবার ব্যবস্থা অপেক্ষা সুস্পষ্ট। কারণ এক শহরের মুসলমানের চন্দ্র দর্শন সকল মুসলমানের দর্শনের অনুরূপ, সুতরাং সেই শহরের মুসলমানগণের উপর যাহা প্রযোজ্য হইবে, অপর স্হানের মুসলমানদের উপর ও তাহা বলবৎ হইবে’। (ইমাম শাওকানীর কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হয়েছে) [(নাইলুল আওতার)]
তারপর এক শহরের রূয়ত (দেখা) অন্য শহরের জন্য অনুসরণীয় না হওয়াই যদি ইবনে আব্বাসের ইঙ্গিতকৃত হাদীসের তাৎপর্য হয়, তাহা হইলে দূরত্বের পরিমাণ এবং মত্লার পার্থক্য ইত্যাদি বিষয় সম্বন্ধে উহাতে কোন উল্লেখ নাই। আবার ইহাও লক্ষ্য করার বিষয় যে শাম ও মদীনার দূরত্ব এত দূর নয় যাহাতে মতলার পার্থক্য ঘটিতে পারে, সুতরাং ইবনে আব্বাসের শামের রূয়ত অস্বীকার করার হেতুবাদ তাহার ইজতিহাদ মাত্র”।
মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল কুরাইশী (রঃ) আরও লিখেছেন,
“ইবনে আব্বাস (রাঃ) রাসূলুল্লাহর (সঃ) বাচনিক এমন কোন হাদীস রেওয়ায়েত করেন নাই, যদ্বারা আমরা বিবেচনা করিয়া দেখিতে পারি যে, উহা হযরতের (সঃ) ব্যপক আদেশকে সীমাবদ্ধ করিতে পারে কিনা। সর্বশেষ কথা এই যে, ইবনে আব্বাসের ইজতিহাদকে রাসূলুল্লাহ (সঃ) এর ব্যপক আদেশের সংকোচক বলিয়া মানিয়া লইলে বেশীর বেশী এইটুকু সাব্যস্ত হইতে পারে যে, মদীনা হইতে দামেশকের দূরত্ব যতখানি ততখানি দূরত্বে অবস্থিত কোন শহরের রূয়ত অন্য শহরের উপর প্রযোজ্য নয়, কিন্তু ইবনে আব্বাসের (রাঃ) ইজতিহাদকে মারফু হাদীসের সংকোচক স্বীকার করার উপায় নাই।
ইমাম কুরতুবী তাঁহার উস্তাদগনের উক্তি উদ্ধৃত করিয়াছেন যে,
‘এক নগরীর অধিবাসীরা হিলাল দর্শন করিলে সকল প্রদেশের অধিবাসীগণের জন্য উহা অনুসরণীয় হইবে ইহাই ইমাম আবু হানীফা, ইমাম মালিক এবং ইমাম আহমাদের সিদ্ধান্ত’। (ইমাম কুরতুবীর কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হয়েছে) [গায়াতুল আমানী (৯) ২৭২ পৃষ্ঠা]
রাসূলুল্লাহর (দঃ) স্পষ্ট নির্দেশের সহিত এই সিদ্ধান্তই সুসামঞ্জস্য এবং আমরা ইহাকেই অনুসরণযোগ্য মনে করি।” (মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহিল কাফী আল কুরাইশী (রঃ) এর কথা এপর্যন্তই এখানে দেয়া হল) ।
[ ফাতাওয়া ও মাসায়েল- পৃষ্ঠা -১৭৯ (প্রকাশক - অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল বারী রঃ- সাবেক সভাপতি বাংলাদেশ জমঈয়তে আহলে হাদীস ) ]
.
ওয়ামা- 'আলাইনা- ইল্লাল বালাগ,
ওয়াল্লাহু আ'লাম।
No comments:
Post a Comment