Wednesday, February 19, 2020

মানব দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতির পরিনতি

ক্যালসিয়াম মানব দেহের অন্যতম একটি উপাদান। এর গুরুত্ব অনেক বেশি। কেননা ক্যালসিয়ামকে জিবনের উৎস বলা হয়। গবেষণা বলছে শুধু ক্যালসিয়ামের অভাবে মানব দেহে ১০০-১২০ ধরনের রোগ হতে পারে।
আপনার কয়টা রোগ দরকার?
এখানে সবগুলো রোগের বর্ননা দেয়া সম্ভব না, তাই Calcium ঘাটতি জনিত প্রধান কয়েকটি সমস্যা নিয়ে সংক্ষিপ্ত পোস্ট লিখছি।
ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব ও অভাবজনিত প্রধান লক্ষণ সমূহ।
ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। শরীরে কোথাও কেটে গেলে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে।
ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ:
পেশী সংকোচন বা মাংসপেশির ব্যাথা।
হাড় ঘনত্ব কমে যাওয়া:
জয়েন্টে ব্যাথা:
শরীরের কাঠামো নষ্ট হওয়া,
নখের দৃঢ়তা কমে যাওয়া:
দাঁতের মাড়ির সমস্যা বা দাত ব্যথা:
মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন সময় অস্বাভাবিক ব্যথা:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
স্নায়ুবিক সমস্যা:
হার্ট দুর্বল হওয়া, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পাওয়া ইত্যাতি:
শরীরে ক্যালসিয়ামের অভাব হলে তাকে হাইপোক্যালসেমিয়া বলে। এটি তখনই হয় যখন আমাদের শরীরের ক্যালসিয়ামের মাত্রা ঠিক থাকে না।
চিকিৎসকদের মতে, সুন্দর ত্বকের জন্য ক্যালসিয়ামের গুরুত্ব অনেক' তাই তারা ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খেতে বলেন । তবে তারা শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে নিজের থেকে কোন ঔষধ বা ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নিতে নিষেধ করেন। ডাক্তারদের পরামর্শ মোতাবেক পুষ্টিকর খাবারের সাথে ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে।
সাধারণত বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পড়তে থাকে। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম হাড়ে সঞ্চিত থাকে। বয়স বৃদ্ধি পেলে হাড় পাতলা হয়, হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। এজন্য ক্যালসিয়াম জরুরী হয়ে দাঁড়ায়। ক্যালসিয়ামের উৎস সম্বলিত খাবার খেয়ে এর অভাব পুরো করা যেতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্ষুধার্থ থাকা ও অপুষ্টিতে ভোগা, হরমোন জনিত সমস্যা, অপ্রাপ্ত বয়সে বাচ্চা প্রসব, ক্যালসিয়াম শোষিত না হওয়া অর্থাৎ খাবারে যথাযথ ভিটামিন ও খনিজ থাকলেও তা শরীর কর্তৃক শোষণে ব্যর্থ হওয়া, ইত্যাদি কারণে ক্যালসিয়ামের অভাব হয়।
ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ সমূহের সংক্ষিপ্ত বর্ননাঃ
পেশী সংকোচন:
শরীরের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক থাকা ও পর্যাপ্ত পানি পান করার পরও যদি নিয়মিত মাংশপেশী সংকুচিত হয় অর্থাৎ খিঁচুনি ধরে তবে বুঝতে হবে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আছে।
হাড় ঘনত্ব কমে যাওয়া:
বয়স বাড়ার সাথে সাথে হাড়ের মিনারেলাইজেশন জরুরী হয়ে পড়ে। ক্যালসিয়াম কম হলে হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়। ত্বকের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। অস্টিওপরোসিস বা হাড় ছিদ্র হয়ে যায়। ফলে হাড় ভঙ্গুর হয়।
নখের দৃঢ়তা কমে যাওয়া:
নখ শক্ত বা দৃঢ়তা বৃদ্ধিতে ক্যালসিয়াম অত্যাবশ্যকীয়। যদি ক্যালসিয়াম কম হয় তবে নখ নরম, ভঙ্গুর ও দৃঢ়তাহীন হবে।
দাঁতের মাড়াতে সমস্যা বা দাত ব্যথা:
আমাদের শরীরের শতকরা ৯০ ভাগ ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়ে জমা থাকে। যদি ক্যালসিয়াম কমে যায় তবে দাঁত ও হাড় ব্যথা করতে পারে।
মাসিক বা পিরিয়ড জনিত ব্যথা:
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে মহিলাদের মাসিকের সময় তীব্র ব্যথা হয়। কারণ, মাংশপেশীর কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে ক্যালসিয়ামের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া:
ক্যালসিয়াম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হলে জীবাণু বা প্যাথোজেন মোকাবেলা করার শক্তি কমে যায়।
স্নায়ুবিক সমস্যা:
ক্যালসিয়ামের অভাবে নানা ধরনের স্নায়ুবিক সমস্যা, মাথা ব্যথা হতে পারে। ডিপ্রেশন, ইনসোমনিয়া ও ডেমেনশিয়াও হতে পারে।
হার্ট দুর্বল, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি:
ক্যালিসিয়াম হৃদপিণ্ডের সঠিক কার্যচালনার জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এটি কম হলে হৃদস্পন্দন বেড়ে যাবে। ক্যালসিয়াম হৃদপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে সহায়তা করে।
যদি লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তবে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন। তিনি রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দিবেন। ক্যালসিয়ামের অভাব মোকাবেলায় নিয়মিত ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার অথবা পুষ্টিকর সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।
লেখক ডাঃ মোহাম্মদ ইলিয়াছ হোসাইন

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...