Wednesday, February 19, 2020

বর্তমান সময়ে বেবীদের বেশী যে সমস্যাটা হয়, সেটা হল নিউমনিয়া। শিশুর নিউমোনিয়া কত প্রকার ও কি কি? কেন হয়?নিউমোনিয়ার ঝুকি কাদের বেশি থাকে?
→ ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ নিউমোনিয়া। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া হয়।
বাংলাদেশে তো বটেই, বিশ্বে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যুর প্রধান কারণ নিউমোনিয়া। যেসব শিশু নিউমোনিয়ায় ভোগার ঝুঁকিতে থাকে তারা হলোঃ
প্রিম্যাচিউর শিশু—অকালজাত, স্বল্পজন্ম, ওজন কম যাদের।
শিশুকে যদি বুকের শালদুধ ও প্রথম ছয় মাস শুধু বুকের দুধ না খাইয়ে ফিডারে বোতলে করে ফর্মুলা খাওয়ানো হয়।
অপুষ্টিজনিত শিশু।
ভিটামিন-এর অভাবজনিত সংকট।
ঘিঞ্জি অস্বাস্থ্যকর আলো-বাতাসহীন, ধূমপায়ী পরিবেশে থাকা শিশু প্রভৃতি।
তবে এর বাইরে শিশুর যত্নের অনেক ভুলেও অন্য রকম নিউমোনিয়ার শিকার হতে পারে শিশুরা। যেমন—
অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়াঃ- শিশুদের পাকস্থলীর সাইজ বেশ ছোট থাকে। অথচ তাকে পেটভরা অবস্থায় খেতে না চাইলেও জোরজবরদস্তি করে খাওয়ানো হয়।
এতে শিশুর তীব্র বমি হয়, সে খাবার উগরে দেয়। এতে তার শ্বাস-প্রশ্বাস জালিকা ও ফুসফুসে চলে যেতে পারে। তখন অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়ার লক্ষণ হিসেবে দ্রুত শ্বাস, কাশ ও জ্বর দেখা যায়। বিশ্বব্যাপী এই নিউমোনিয়ায় মৃত্যুহার প্রায় ২৫ শতাংশ।
হাইড্রোকার্বন নিউমোনিয়াঃ শিশু যদি কার্নিস অয়েল, কেরোসিন, গ্যাসোলিন এসব দুর্ঘটনাবশত খেয়ে ফেলে, তবে তার কিয়দংশ ফুসফুসে চলে যেতে পারে, বিশেষত সে যদি এর পরবর্তী সময় বমি করে বা তাকে বমি করানো হয়, এতেই তৈরি হয় মারাত্মক নিউমোনিয়া।
লিপয়েড নিউমোনিয়াঃ সর্দি-কাশি হলে শিশুর নাকে-মুখে অনেকে তেল যেমন পেট্রোলিয়াম জেলি, সরিষার তেল, কডলিভার অয়েল, অ্যানিমেল অয়েল (ঘি) দেন এসব তৈলাক্ত পদার্থ সামান্য পরিমাণেও যদি ফুসফুসে পৌঁছে তবে সংকট তৈরি হতে পারে।
অন্যান্য নিউমোনিয়াঃ বেবি পাউডারের দানাগুলো এত হালকা, তা ব্যবহারের সময় শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাস সূক্ষ্ম পথে প্রবাহিত হয়ে ভেতরে চলে যায়। এতে সে শ্বাস-প্রশ্বাস কষ্টে ভোগে। ট্যালকম পাউডারের এক বিশেষ উপাদান পরবর্তী সময় ফুসফুসে ক্যান্সার তৈরিতে ভূমিকা রাখে।
কখন শিশুকে ডাক্তার দেখানো জরুরীঃ
বুকে গড় গড় শব্দ হলে।
নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় শিশুর পেট ভেতরে ঢুকে গেলে।
মিনিটে ৪০ বারের বেশি শ্বাস নিলে।
নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় নাক ফুলে উঠলে।
মুখ ও ঠোঁটের চারপাশ নীল হলে, সঙ্গে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর থাকলে।
বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হলে। এ অবস্থায় সাধারণত শিশুর বুকের যেদিকে ব্যথা করে সেদিকটা ধরে থাকে। এবং যেদিকে ব্যথা সেদিকেই পাশ ফিরে শুয়ে থাকে। হাঁটু মুড়ে, হাঁটুকে বুকের কাছে এনে পাশ ফিরে থাকে।
ঘন ঘন শুকনো কাশি হলে। কাশি হতে থাকলেও কফ বের করতে না পারলে।
সব সময় মনে একটা অস্বস্তি, দুশ্চিন্তার মতো ভাব থাকলে।
→ কি কি সতর্কতা অবলম্বন করা উচিতঃ
শিশুকে জোরজবরদস্তি করে খাওয়ানো উচিত নয়। শিশু তার ‘পেটভরা অবস্থা’ বড়দের চেয়ে আগেভাগে বুঝতে পারে। ভরপেট খাওয়ানোর পর শিশুকে ডান কাত করে শোওয়ানো উচিত—তাতে তার পাকস্থলী খানিকটা নিচের দিকে থাকে।
খাওয়ানোর পর উগরানো কমাতে শিশুর মাথার নিচে বালিশ দিয়ে মাথার দিক উঁচু করে রাখা ভালো।
শিশুর শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সংকট বাড়লে দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত, যাতে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণ ও অন্যান্য চিকিৎসা সম্পন্ন হয়। (সংগৃহীত) 

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...