সালাতুয যাওয়াল তথা সূর্য ঢলার সালাত:
যে নামটি অধিকাংশ মানুষের কাছে অপরিচিত!
▬▬▬▬◢◣▬▬▬▬
এ কথা অনস্বীকার্য যে, সালাতুয যাওয়াল তথা সূর্য ঢলার সালাত নামে কোন সালাতের অস্তিত্ব আছে এ বিষয়টি অধিকাংশ মানুষের কাছে অপরিচিত। অথচ
রাসূল সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ঠিক মাথা বরাবর থেকে পশ্চিম দিগন্তে একটু ঢলে গেলে নিয়মিতভাবে চার রাকআত সালাত আদায় করতেন। এ সময় আসমানের দরজাগুলো খোলা হয় এবং বান্দাদের আমলগুলো উপরে উত্তোলন করা হয়।
হাদিসের কিতাবগুলোতে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে আছে আর মুহাদ্দিস ও ফকিহগণ সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
নিম্নে এ প্রসঙ্গে কয়েকটি হাদিস পেশ করা হল:
🔹 ১ম হাদিস:
عَنْ أَبيِْ أَيُّوْبَ الْأَنْصَارِيْ رَضِيَ اللهُ عَنهُ : أُنَّ النَّبِيَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كاَنَ يُدْمِنُ أَرْبَعُ رَكْعَاتٍ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ فَقُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّكَ تُدْمِنُ هَذِهِ الأْرْبَعَ رَكَعَاتٍ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ ؟ فَقَالَ إِنَّ أَبْوَابِ السَّمَاءِ تُفْتَحُ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ فَلاَ تُرَتِّجُ حَتَّى يُصَلِّى الظُّهْرَ فَأُحِبُّ أَنْ يَّصْعَدَ لِيْ فِيْ تِلْكَ السَّاعَةِ خَيْرٌ قُلْتُ : أَفِيْ كُلِّهِنَّ قِرَاءَةٌ ؟ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ : هَلْ فِيْهِنَّ تَسْلِيْمٌ فَاصِلٌ ؟ قَالَ لاَ
আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতিনিয়ত সূর্য ঢলার সময় চার রাকআত নামায পড়তেন।
একদা আমি বললাম: ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি সূর্য ঢলার সময় এই চার রাকআত প্রতিনিয়তই পড়ছেন?’
তিনি বললেন: “সূর্য ঢলার সময় আসমানের দরজাসমূহ খোলা হয় এবং যোহরের নামায না পড়া পর্যন্ত বন্ধ করা হয় না। অতএব আমি পছন্দ করি যে, এই সময় আমার নেক আমল (আকাশে আল্লাহর নিকট) উত্তোলন করা হোক।”
আমি বললাম: এ সালাতের প্রত্যেক রাকআতেই কি কিরাআত আছে?’
তিনি বললেন: “হ্যাঁ।”
আমি বললাম: ‘তার মাঝে কি পৃথককারী সালাম আছে?’
তিনি বললেন: “না।” (শাইখ আলবানী রচিত মুখতাসারুশ শামাইলিল মুহাম্মাদিয়াহ, হা/২৪৯, তিনি এটিকে সহিহ বলেছেন)
🔹 ২য় হাদিস:
عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ السَّائِبِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعاً بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ وَقَالَ إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ فَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِيهَا عَمَلٌ صَالِحٌ رواه التِّرمِذِيُّ وَقَالَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
আব্দুল্লাহ ইবনুস সায়েব রা. হতে বর্ণিত, সূর্য (পশ্চিম দিগন্তে) ঢলে যাবার পর, যোহরের ফরযের পূর্বে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার রাকআত সালাত পড়তেন। আর বলতেন, “এটা এমন সময়, যখন আসমানের দ্বারসমূহ খুলে দেওয়া হয়। তাই আমার পছন্দ যে, সে সময়েই আমার সৎকর্ম ঊর্ধ্বে উঠুক।” (তিরমিযী ৪৭৮, হাসান, সহিহুত তারগিব হা/ ৫৮৭)
🔹 ৩য় হাদিস:
عَن أَبِى أَيُّوبَ عَن النَّبِىِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ أَرْبَعٌ قَبْلَ الظُّهْرِ لَيْسَ فِيهِنَّ تَسْلِيمٌ تُفْتَحُ لَهُنَّ أَبْوَابُ السَّمَاءِ
আবু আইয়ুব রা. হতে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যোহরের পূর্বে চার রাকআত-যার মাঝে কোন সালাম নেই-তার জন্য আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়।” (আবু দাউদ ১২৭০, ইবনে মাজাহ ১১৫৭, ইবনে খুযাইমা ১২১৪, সহীহুল জামে’ ৮৮৫নং)
🔹 ৪র্থ হাদিস:
أنهُ كان يُصلِّي أربعَ ركعاتٍ بعدَ الزوالِ لا يُسلِّمُ إلا في آخرِهنَّ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ঢলার পর চার রাকআত পড়তেন। এ ক্ষেত্রে তিনি চার রাকআত শেষ করার পূর্বে সালাম ফেরাতেন না।" [সিলসিলা সহিহাহ ৭/১১৯৭, শাইখ আলবানী বলেন, এর সনদ সহিহ মুসলিমের শর্তানুযায়ী جيد (ভালো)। এছাড়াও তিনি তাখরীজু মিশকাতিল মাসাবিহ গ্রন্থে এটিকে সহিহ বলেছেন। হা/১২২৬]
উপরোক্ত হাদিস সমূহ থেকে স্পষ্ট যে, এ চার রাকআত সালাতে দু রাকআত পড়ে সালাম ফেরানো যাবে না বরং চার রাকআত শেষ করে সালাম ফিরাতে হবে।
🔹 ৫ম হাদিস:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
أربعُ ركعاتٍ قبلَ الظهرِ يعْدِلْنَ بصلاةِ السَّحَرِ
"যোহরের পূর্বে চার রাকআত সালাত ভোররাতের সালাত (তাহাজ্জুদ) সমতুল্য।" (সহিহুল জামে, হা/৮৮২)
♦ এই চার রাকআত কোন সালাত?
এখন এই চার রাকআত কোন সালাত? এগুলো কি যোহরের পূর্বের চার রাকআত সুন্নতে রাতেবা (নিয়মিত সুন্নত) না কি তা স্বতন্ত্র সালাত? এ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমগণের মাঝে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। কতিপয় আলেম বলেন, এই চার রাকআত মূলত: যোহরের চার রাকআত সুন্নত সালাত আর কতিপয় বিদ্বানের মতে, এটি যোহরের পূর্বের চার রাকআত সুন্নত নয় বরং এটি স্বতন্ত্র সালাত।
যে নামটি অধিকাংশ মানুষের কাছে অপরিচিত!
▬▬▬▬◢◣▬▬▬▬
এ কথা অনস্বীকার্য যে, সালাতুয যাওয়াল তথা সূর্য ঢলার সালাত নামে কোন সালাতের অস্তিত্ব আছে এ বিষয়টি অধিকাংশ মানুষের কাছে অপরিচিত। অথচ
রাসূল সাল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ঠিক মাথা বরাবর থেকে পশ্চিম দিগন্তে একটু ঢলে গেলে নিয়মিতভাবে চার রাকআত সালাত আদায় করতেন। এ সময় আসমানের দরজাগুলো খোলা হয় এবং বান্দাদের আমলগুলো উপরে উত্তোলন করা হয়।
হাদিসের কিতাবগুলোতে এ বিষয়ে পর্যাপ্ত হাদিস বর্ণিত হয়েছে আছে আর মুহাদ্দিস ও ফকিহগণ সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।
নিম্নে এ প্রসঙ্গে কয়েকটি হাদিস পেশ করা হল:
🔹 ১ম হাদিস:
عَنْ أَبيِْ أَيُّوْبَ الْأَنْصَارِيْ رَضِيَ اللهُ عَنهُ : أُنَّ النَّبِيَ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كاَنَ يُدْمِنُ أَرْبَعُ رَكْعَاتٍ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ فَقُلْتُ : يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّكَ تُدْمِنُ هَذِهِ الأْرْبَعَ رَكَعَاتٍ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ ؟ فَقَالَ إِنَّ أَبْوَابِ السَّمَاءِ تُفْتَحُ عِنْدَ زَوَالِ الشَّمْسِ فَلاَ تُرَتِّجُ حَتَّى يُصَلِّى الظُّهْرَ فَأُحِبُّ أَنْ يَّصْعَدَ لِيْ فِيْ تِلْكَ السَّاعَةِ خَيْرٌ قُلْتُ : أَفِيْ كُلِّهِنَّ قِرَاءَةٌ ؟ قَالَ نَعَمْ قُلْتُ : هَلْ فِيْهِنَّ تَسْلِيْمٌ فَاصِلٌ ؟ قَالَ لاَ
আবু আইয়ুব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রতিনিয়ত সূর্য ঢলার সময় চার রাকআত নামায পড়তেন।
একদা আমি বললাম: ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনি সূর্য ঢলার সময় এই চার রাকআত প্রতিনিয়তই পড়ছেন?’
তিনি বললেন: “সূর্য ঢলার সময় আসমানের দরজাসমূহ খোলা হয় এবং যোহরের নামায না পড়া পর্যন্ত বন্ধ করা হয় না। অতএব আমি পছন্দ করি যে, এই সময় আমার নেক আমল (আকাশে আল্লাহর নিকট) উত্তোলন করা হোক।”
আমি বললাম: এ সালাতের প্রত্যেক রাকআতেই কি কিরাআত আছে?’
তিনি বললেন: “হ্যাঁ।”
আমি বললাম: ‘তার মাঝে কি পৃথককারী সালাম আছে?’
তিনি বললেন: “না।” (শাইখ আলবানী রচিত মুখতাসারুশ শামাইলিল মুহাম্মাদিয়াহ, হা/২৪৯, তিনি এটিকে সহিহ বলেছেন)
🔹 ২য় হাদিস:
عَن عَبْدِ اللهِ بْنِ السَّائِبِ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم كَانَ يُصَلِّي أَرْبَعاً بَعْدَ أَنْ تَزُولَ الشَّمْسُ قَبْلَ الظُّهْرِ وَقَالَ إِنَّهَا سَاعَةٌ تُفْتَحُ فِيهَا أَبْوَابُ السَّمَاءِ فَأُحِبُّ أَنْ يَصْعَدَ لِي فِيهَا عَمَلٌ صَالِحٌ رواه التِّرمِذِيُّ وَقَالَ حَدِيثٌ حَسَنٌ
আব্দুল্লাহ ইবনুস সায়েব রা. হতে বর্ণিত, সূর্য (পশ্চিম দিগন্তে) ঢলে যাবার পর, যোহরের ফরযের পূর্বে নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চার রাকআত সালাত পড়তেন। আর বলতেন, “এটা এমন সময়, যখন আসমানের দ্বারসমূহ খুলে দেওয়া হয়। তাই আমার পছন্দ যে, সে সময়েই আমার সৎকর্ম ঊর্ধ্বে উঠুক।” (তিরমিযী ৪৭৮, হাসান, সহিহুত তারগিব হা/ ৫৮৭)
🔹 ৩য় হাদিস:
عَن أَبِى أَيُّوبَ عَن النَّبِىِّ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّم قَالَ أَرْبَعٌ قَبْلَ الظُّهْرِ لَيْسَ فِيهِنَّ تَسْلِيمٌ تُفْتَحُ لَهُنَّ أَبْوَابُ السَّمَاءِ
আবু আইয়ুব রা. হতে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, “যোহরের পূর্বে চার রাকআত-যার মাঝে কোন সালাম নেই-তার জন্য আসমানের দরজাসমূহ উন্মুক্ত করা হয়।” (আবু দাউদ ১২৭০, ইবনে মাজাহ ১১৫৭, ইবনে খুযাইমা ১২১৪, সহীহুল জামে’ ৮৮৫নং)
🔹 ৪র্থ হাদিস:
أنهُ كان يُصلِّي أربعَ ركعاتٍ بعدَ الزوالِ لا يُسلِّمُ إلا في آخرِهنَّ
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সূর্য ঢলার পর চার রাকআত পড়তেন। এ ক্ষেত্রে তিনি চার রাকআত শেষ করার পূর্বে সালাম ফেরাতেন না।" [সিলসিলা সহিহাহ ৭/১১৯৭, শাইখ আলবানী বলেন, এর সনদ সহিহ মুসলিমের শর্তানুযায়ী جيد (ভালো)। এছাড়াও তিনি তাখরীজু মিশকাতিল মাসাবিহ গ্রন্থে এটিকে সহিহ বলেছেন। হা/১২২৬]
উপরোক্ত হাদিস সমূহ থেকে স্পষ্ট যে, এ চার রাকআত সালাতে দু রাকআত পড়ে সালাম ফেরানো যাবে না বরং চার রাকআত শেষ করে সালাম ফিরাতে হবে।
🔹 ৫ম হাদিস:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
أربعُ ركعاتٍ قبلَ الظهرِ يعْدِلْنَ بصلاةِ السَّحَرِ
"যোহরের পূর্বে চার রাকআত সালাত ভোররাতের সালাত (তাহাজ্জুদ) সমতুল্য।" (সহিহুল জামে, হা/৮৮২)
♦ এই চার রাকআত কোন সালাত?
এখন এই চার রাকআত কোন সালাত? এগুলো কি যোহরের পূর্বের চার রাকআত সুন্নতে রাতেবা (নিয়মিত সুন্নত) না কি তা স্বতন্ত্র সালাত? এ বিষয়ে বিজ্ঞ আলেমগণের মাঝে মতভেদ পরিলক্ষিত হয়। কতিপয় আলেম বলেন, এই চার রাকআত মূলত: যোহরের চার রাকআত সুন্নত সালাত আর কতিপয় বিদ্বানের মতে, এটি যোহরের পূর্বের চার রাকআত সুন্নত নয় বরং এটি স্বতন্ত্র সালাত।
No comments:
Post a Comment