Wednesday, August 21, 2019

কোয়ান্টাম মেথড সম্পর্কে

কোয়ান্টাম মেথড: দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, জীবন বদলে যাবে। (শেয়ার করুন)


তবে দৃষ্টিভঙ্গি বদলের আগে আপনাদের একটি বিষয়ে সতর্ক হতে হবে তা হচ্ছে, আপনি যদি কুরআন ও ওহীর আলোকে নিজের অন্তদৃষ্টিকে তৈরী না করে থাকেন তবে এই বদলের হাওয়া ঠিক আপনাকে কোথায় নিয়ে যাবে তা আপনি ঠিক বুঝতেই পারবেন না। হয়ত সেটা আপনার অন্তরকে শান্ত করবে কিন্তু ঈমানকে তৃপ্ত করবে না। কেননা, শিরক-বিদআত আর কুফরে মন-ধ্যান-জ্ঞান শান্ত হতে পারে (যেমনটা হিন্দুদের উপাসনা, মাযারীদের কবরকেন্দ্রীক আচারে অন্তর প্রশান্ত হয়) কিন্তু ঈমানটাই মৃত্যু বরণ করে।
ভারতে আধ্যাত্তিক গুরূ শ্রী শ্রী রবি শংকর বা বাবা রামদেবের নাম ঢাক সারা বিশ্বময়। ধ্যান, যোগ, সাধনা ইত্যাদি দিয়ে তিনি হাজার হাজার মানুষের জীবনকে বদলে দিতে পেরেছেন। কিন্তু সেই বদলটা কি তাদের উভলোকের জন্য কল্যাণ এনে দিতে পারবে?
আজ আপনাদের কোয়ান্টাম বা মেডেটেশান বা যোগ ব্যামের বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই যা সাধারণত অনেকেরই নজর এড়িয়ে যায় হয়ত,
🧘‍♂️ধ্যান; এই মেডিটেশান পদ্ধতি মি. মহাজাতক/ গুরুজি কোথা থেকে নিয়েছেন তা অনেকেই ভাবেন না। ধ্যান, সংসারত্যাগী বৈরাগী/সন্যাষীদের মাঝে ব্যাপকভাবে দেখা যায়। বিশেষ করে মুশরিকদের মাঝেই এর প্রচলন বেশি। 🕉️ হিন্দু আর বৌদ্ধ সাধকরাই এমন কি তাদের মুর্তির আকৃতিও তারই জানান দেয়। ইসলামে মেডিটেশন বা ধ্যান করার ব্যাপারে কোন কিছু উল্লেখ করা নেই। অনেকে দাবী করেন যে, রাসূল (স) হেরা গুহায় ধ্যান করতেন। তাদের খুব স্পষ্টভাবে জেনে রাখা প্রয়োজন যে –
🔸 রাসূল (স) হেরা গুহায় ঠিক কি করতেন, যা করতেন সেটাকে ধ্যান বলে আখ্যায়িত করা যায় কিনা এ ব্যাপারে আমাদের কোন বিস্তারিত তথ্য জানা নেই।
🔸 যদি বা তর্কের খাতিরে ধরেও নেই যে, রাসূল (স) হেরা গুহায় ধ্যান করতেন, তবে তা করতেন নব্যুয়তের আগে। নব্যুয়তের আগে তাঁর করা কোন কাজ আমাদের জন্য শরীয়াতের উৎস নয়।
কোন সহীহ হাদীস নেই যেখানে বলা হয়েছে যে রাসুল (স) ধ্যান করতেন, কিংবা তাঁর সাহাবীরা ধ্যান করতেন, কিংবা রাসুল (স) তাঁর সাহাবীদের নিয়ে ধ্যান করতেন কিংবা রাসুল (স) তাঁর উম্মতদের ধ্যান করতে বলে গেছেন। এরকম কোন নজীরও নেই। রাসুল (স) এর জীবনযাপন ছিল খোলা বইয়ের পাতার মত – সবাই জানতেন তিনি কিভাবে জীবনযাপন করেন। উম্মতরা যাতে সহজেই তাঁকে অনুসরণ করতে পারেন সেজন্য তাঁর সব কথা আর কাজই হাদীস গ্রন্থে আশ্রয় পেয়েছে। তাঁর করা সকল ইবাদতই কুরআন-হাদীসের মাধ্যমে সবাই জানেন – তাহাজ্জুদ, ইশরাক প্রভৃতি সকল ইবাদত তিনি করেছেন, তাঁকে দেখে তাঁর সাহাবীরা করেছেন এবং এভাবে কালপরিক্রমায় আমরাও তা করছি। কিন্তু তিনি সবাইকে নিয়ে জামাতে ধ্যান করতেন – এরকম কোন নজীর নেই।
🔸 মেসনিক/ শয়তানের উপাসনার মিল! ⚠️
সালাতে আমরা সলাতের বৈঠকে শাহাদাত আঙ্গুল উচু করে রাখি কিন্তু সাধন-ধ্যানকারীরা বিভিন্নভাবে হাত রেখে ধ্যান করে। যারা 🔺 Fremasion বা Illuminity বিষয় ধারণা রাখেন তারা জানেন এরা শয়তানে উপাসনা করে। শয়তানকে সেলুট/গুণগান দিতে তারা নানা ইঙ্গিত/ইশারা ব্যবহার করে (আমরা যেমনটা নানা সময় আল্লাহু আকবার বলি)। আপনারা কি জানেন, কোয়ান্টামে যে ধ্যান করা হয় তখন এমনই একটি Hand Sign তারা ব্যবহার করে! এই মেডিটেশানের আরো কি কি হাতের ভঙ্গি আছে তা সহজেই পাবেন হিন্দু কোন যোগ সাধকের ভিডিও দেখলেও। যেগুলোর সবগুলোই Illuminity বা শয়তানের উপাসনাকালে শয়তানকে সেলুট দেয়ার হাত ভঙ্গি!
🔸 ভবিষ্যৎ জানা ও জ্যোতিষশাস্ত্র
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন দাবী করছে যে ইচ্ছা করলে যে কেউ ভবিষ্যৎ বা গায়েব জানতে পারে এবং সে অনুযায়ী নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। এ প্রসঙ্গে তারা কুরআনের একটি আয়াতের বিকৃত ব্যাখ্যাও করে থাকে। এছাড়া কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন ইস্তিখারাহ সালাতকে স্বপ্নচর্চা বা স্বপ্নে ভবিষ্যৎ দেখার একটি মাধ্যম বলে থাকে; যেটা সম্পূর্ণ ভুল। ইস্তিখারাহ সালাতের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ দেখা যায়না। “ইস্তিখারাহ” এর অর্থ হল আল্লাহতা’লা’র কাছ থেকে কল্যাণ চেয়ে নেওয়া।
🎼 মিউজিকের ব্যবহার!
আপনারা হয়ত জানেন কুরআনে বারবার আল্লাহ শয়তানে হাতিয়ার, উপকরণ হিসেবে 🎶 ‘#Music’কে ব্যবহার করেছেন। আমাদের এটি জানিয়ে মিউজিক বিষয়ে অবগত করেছেন, যাতে আমরা এটা থেকে বেঁচে থাকি। রাসূল সা. Music এর 🔇নিষেধাজ্ঞা বিষয় বারবার উল্লেখ করেছেন। অথচ, #কোয়ান্টাম ধ্যানের নামে তারা একটা পর্যায়ে 🎶 Relaxation musicও শুনে থাকে।
🧘‍♂️ হিন্দুদের যোগ সাধনা + মনোবিজ্ঞানের কিছু অটোসাজেশান + সুফিবাদী সবক + গুরুধরা
সবার মাঝে ধ্যানচর্চা ছড়িয়ে দেবার উদ্দেশ্যে নব্বইয়ের দশকে যোগ ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়। কালপরিক্রমায় সেটাই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন নাম নিয়ে বর্তমানে পথ চলছে। দেশে বিদেশে প্রচুর শাখা খুলে বসেছে এই কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। মনোজাগতিক কিছুদিকের সাথে হিন্দু ধর্মের নানা সাধনা ও যোগব্যায়ামকে যোগ করা হয়; সাথে মিউজিক; মনকল্পনা আর সর্বশেষ গুরুধরতে হবে। এ যেন এক নব্য সুফিবাদ। ইসলামকে ব্যবহার করে তারা যাকাত কালেকশান, সাদাকাহ হিসেবে টাকা কালেমকানও করে থাকে। এছাড়া প্রতি কোর্সে ৯/১০ হাজার টাকাতো লাগেই। সবশেষে আপনাক বলা হবে একজন #অন্তর্গুরু ধরতে যিনি আপনাকে সঠিক পথ-নির্দেশনা দিতে পারবেন। তার কাছে বায়াত হতে হবে। যেমন পীর-মুরীদিতে হয়ে থাকে। আর এও জানানো হবে যে যার থেকে শুরু করেছেন (গুরুজি) তাকে অন্তর্গুরু করলেই উত্তম।
জীবনকে বদলাতে তারা যেসকল চাবি দেয় সেই, রি-অ্যাকটিভ হবেন না, রাগ করবেন না ইত্যাদি যত কথা অটোসাজেশানে পাবেন তার এমন কোন দিক নেই যা আমাদের রাসূল সা. শিখিয়ে যান নাই। আপনি যদি ইসলামের ইবাদাত, আদাব, মুয়ামেলাতের আলোকে জীবনকে রাঙ্গাতে পারেন, প্রাত্যহিক দুআগুলো বুঝে পড়েন, তাহলে এমনিতেই এইসব আপনার হাসিল হওয়া সম্ভব। দুনিয়ার তুলনায় জান্নাতকে যখন প্রাধান্য দিবেন তখন সৃষ্টির সাথে আচরণে, নিজের দৃষ্টিভঙ্গিতে আপনি অবশ্যই পরিবর্তন দেখতে পাবেন। সাধারণ নিত্ত্ব কর্ম সালাতের সকল আহকাম বুঝে, উপলব্ধি করলে আপনার পরিবর্তনের জন্য আর মনের বাড়িতে কড়া নারতে হবে না; অন্তত তাদের মত যোগ্য সাধনা করে।
#বিস্তারিত জানতে উপেক্ষা না করে অবশ্যই পড়ুন,
.
“কোয়ান্টাম কালচার এবং বিজ্ঞান ও ইসলাম”
https://quantummethodbd.wordpress.com/
মাসিক আত-তাহরীকের কোয়ান্টাম মেথড: এক ভয়াবহ শিরকী ফেতনার নাম!

No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...