➽ স্বামী-স্ত্রী বনাম কৃষক-জমি:
আমরা যদি স্ত্রীকে জমি এবং স্বামীকে কৃষকের সাথে তুলনা করে দেখি, তাহলে দেখবো এই উপমাটা কত সুন্দর!!
একজন কৃষকের যাবতীয় চিন্তা এবং মনোযোগ হচ্ছে তার জমিকে ঘিরে। সে সারাদিন চিন্তা করে তার জমির জন্য কী করতে হবে, যেন সে ঠিকমতো ফসল পেতে পারে। সে প্রতিদিন যত্ন করে জমি থেকে আগাছা পরিষ্কার করে। জমি শুকিয়ে গেলে পানি দেয়। জমিতে যেন পুষ্টির অভাব না হয়, সে জন্য ঠিকমতো সার দেয়। তার সঞ্চয়ের একটা বড় অংশ চলে যায় জমির পেছনে। তারপর যখন সময় হয়, তখন সে জমিতে বীজ বুনে দেয়। তারপর থেকে শুরু হয় জমির আরও বেশি যত্ন। জমিতে যেন পুষ্টির অভাব না হয়, পানির অভাব না হয়, আগাছা না জন্মায়, দুষ্ট কেউ এসে জমির ক্ষতি করতে না পারে, সে জন্য তার ব্যস্ততার সীমা থাকে না। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে তার প্রথম চিন্তা হচ্ছে জমি কেমন আছে? সারাদিন জমির জন্য কাজ করে বাসায় আসার পরেও মন পড়ে থাকে জমিতে। শেষ পর্যন্ত যখন জমি থেকে চারা বের হওয়া শুরু হয়, তখন তার খুশি কে দেখে! চারাগুলো বড় না হওয়া পর্যন্ত সেই জমির জন্য তার কত যত্ন, কত ছোটাছুটি। আর যখন ফসল কেটে ঘরে তোলার দিন আসে, সে দিনের খুশি, আনন্দ, সাফল্যের অনুভূতি যে কত তীব্র, তা শুধু একজন কৃষকই জানে।
একজন স্বামীর চিন্তা এবং পরিকল্পনার একটা বড় অংশ হচ্ছে তার স্ত্রীকে নিয়ে। স্ত্রীর যেন খাওয়া-পরার অভাব না হয়, সে জন্য সে সারাদিন পরিশ্রম করে। স্ত্রীর অসুখ হলে ছুটাছুটি করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। যত খরচ লাগুক চিকিৎসা করায়। তার সঞ্চয়ের একটা বড় অংশ চলে যায় স্ত্রীর পেছনে। সুন্দর ভবিষ্যতের আসায় সে স্ত্রীর কাছে বীজ বুনে দেয়। তারপর স্ত্রী যখন সন্তান সম্ভবা হয়, তখন শুরু হয় আরও বেশি যত্ন। ঠিকমতো খাচ্ছে তো? ঠিকমতো ঘুমাচ্ছে তো? বাচ্চা যথেষ্ট পুষ্টি পাচ্ছে তো? সারাদিন অফিসে কাজ করলেও, কিছুক্ষণ পর পর ফোন করে খোঁজ নেয় স্ত্রী ঠিক আছে কিনা। তারপর যখন সন্তান জন্ম হওয়ার তারিখ ঘনিয়ে আসে, তখন তার খুশি দেখে কে! কত ছোটাছুটি, কত পরিকল্পনা, ফার্নিচার সরানো, ঘর গোছানো। শেষ পর্যন্ত যেদিন বাচ্চার ডেলিভারি হয়, সে দিনের খুশি, আনন্দ, সাফল্যের অনুভূতি যে কত তীব্র, তা শুধু একজন স্বামীই জানে।
স্ত্রীদেরকে শস্য ক্ষেতের সাথে তুলনা করে আল্লাহ ﷻ যথার্থই উপমা দিয়েছেন।
نِسَآؤُكُمْ حَرْثٌ لَّكُمْ فَأْتُواْ حَرْثَكُمْ أَنَّى شِئْتُمْ وَقَدِّمُواْ لأَنفُسِكُمْ وَاتَّقُواْ اللّهَ وَاعْلَمُواْ أَنَّكُم مُّلاَقُوهُ وَبَشِّرِ الْمُؤْمِنِينَ.
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
(সুরা বাক্বারা, আয়াত- ২২৩)
তোমাদের স্ত্রীরা হলো তোমাদের জন্য শস্য ক্ষেত্র। তোমরা যেভাবে ইচ্ছা তাদেরকে ব্যবহার কর। আর নিজেদের জন্য আগামী দিনের ব্যবস্থা কর এবং আল্লাহকে ভয় করতে থাক। আর নিশ্চিতভাবে জেনে রাখ যে, আল্লাহর সাথে তোমাদেরকে সাক্ষাত করতেই হবে। আর যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে সুসংবাদ জানিয়ে দাও।
(সুরা বাক্বারা, আয়াত- ২২৩)
إِنْ أَرَادُواْ إِصْلاَحًا وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِي عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللّهُ عَزِيزٌ حَكُيمٌ.
আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
(সুরা বাক্বারা, আয়াত- ২২৮)
আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনি ভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েছে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীরদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছে পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ।
(সুরা বাক্বারা, আয়াত- ২২৮)
وَآتُواْ النَّسَاء صَدُقَاتِهِنَّ نِحْلَةً فَإِن طِبْنَ لَكُمْ عَن شَيْءٍ مِّنْهُ نَفْسًا فَكُلُوهُ هَنِيئًا مَّرِيئًا
আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর দিয়ে দাও খুশীমনে। তারা যদি খুশী হয়ে তা থেকে অংশ ছেড়ে দেয়, তবে তা তোমরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভোগ কর।
(সুরা নিসা,আয়াত- ৪)
(সুরা নিসা,আয়াত- ৪)
এর থেকে সুন্দর উপমা আর কিছু হতে পারে না।
No comments:
Post a Comment