❌হেযবুত তাওহীদের ভ্রান্ত মতবাদ ❌
দীন শব্দের অর্থ জীবনব্যবস্থা আর কাইয়্যেমাহ শব্দটি এসেছে কায়েম থেকে যার অর্থ প্রতিষ্ঠিত, আদি, শাশ্বত, চিরন্তন। যা ছিল, আছে, থাকবে। সনাতন শব্দের অর্থও আদি, শাশ্বত, চিরন্তন। এই হিসাবে আমরা বলতে পারি, স্রষ্টার প্রেরিত সকল ধর্মই সনাতন ধর্ম। সুতরাং সকল ধর্মের অনুসারীরাই একে অপরের ভাই।(হেযবুত তওহীদের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত ‘সকল ধর্মের মর্মকথা সবার ঊর্ধ্বে মানবতা’ প্রবন্ধ)
(বই-সকল ধর্মের মর্মকথা সবার ঊর্ধ্বে মানবতাঃপৃষ্ঠা- ৩-৪)
(বই-সকল ধর্মের মর্মকথা সবার ঊর্ধ্বে মানবতাঃপৃষ্ঠা- ৩-৪)
মানবসমাজে একটি ধারণা ব্যাপকভাবে প্রচলিত আছে যে, ‘পৃথিবীতে এতগুলো ধর্মের মধ্যে মাত্র একটি ধর্ম সত্য হতে পারে (!) অন্য সকল ধর্ম মিথ্যা এবং ঐ সত্য ধর্মই কেবল মানুষকে মুক্তি দিতে সক্ষম।’ এ ধারণা প্রচলিত থাকায় সকল ধর্মের অনুসারীরাই দাবি করে যে, কেবল তাদের ধর্মই সত্যধর্ম। এটা ছাড়া অন্য কোনো ধর্ম মেনে চলে স্বর্গে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো- স্রষ্টা প্রদত্ত সকল ধর্মই সত্যধর্ম। এগুলোর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এর যে কোনোটি মানুষ মেনে চলতে পারে। তবে মানতে হবে পূর্ণাঙ্গভাবে।(হেযবুত তওহীদের ওয়েব সাইটে প্রকাশিত ‘মানবসমাজে ধর্ম-অধর্ম ও শান্তি-অশান্তির চিরন্তন দ্বন্দ্ব’ প্রবন্ধ)
কুরআন স্পষ্টভাবে ইসলাম ব্যতীত অন্য যেকোন ধর্মকে সত্য হওয়ার সম্ভাবনাকে নাকচ করে দিয়েছে ।
আল্লহ তা’য়ালা কুরআন মাজীদে বলেনঃ
নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম।(সূরা আল ইমরান-১৯)
আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। (সূরা মায়েদা-৩)
তারা কি আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন তালাশ করছে? আসমান ও যমীনে যা কিছু রয়েছে স্বেচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় হোক, তাঁরই অনুগত হবে এবং তাঁর দিকেই ফিরে যাবে।
(সূরা আল ইমরান- ৮৩)
যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না এবং আখেরাতে সে ক্ষতি গ্রস্ত।(সূরা আল ইমরান-৮৫)
হে ঈমানদারগণ! তোমরা যদি আহলে কিতাবদের কোন ফেরকার কথা মান, তাহলে ঈমান আনার পর তারা তোমাদিগকে কাফেরে পরিণত করে দেবে।(সূরা আল ইমরান-১০০)
উপরোক্ত আয়াত গুলো দ্বারা দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট হয়ে গেল যে আল্লহ সুবাহানাহু ওয়া তা’য়ালার নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম।
মানবরচিত অন্যান্য ধর্মকে সত্যায়ন করে হিযবুত তাওহীদ স্পষ্টভাবে কুরআনের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে।
অন্য ধর্ম অনুসরণ করে নাজাত পাওয়ার জন্য হিযবুত তাওহীদ শর্তারোপ করে বলেছে,”তবে মানতে হবে পূর্ণাঙ্গভাবে”।
আমরা জানি কোন ধর্ম অনুসরণ করা হয় সেই ধর্মের ধর্মগ্রন্থের ভিত্তিতে ।
ইহুদি এবং খ্রিস্টানরা নিজেদের ‘তাওরাত ও ইঞ্জিল’ এ দুটি আসমানী কিতাব এর অনুসারী বলে দাবি করে।কিন্তু তারা সত্যিকার আসমানী কিতাবের অনুসারী নয়।বরং তারা তাদের কিতাবকে বিকৃত করে ফেলেছে ।
চলুন দেখে নেই এ ব্যপারে কুরআন হাদীসের বক্তব্য কি
#কুরআনের_বক্তব্যঃ
অতএব তাদের জন্যে আফসোস! যারা নিজ হাতে গ্রন্থ লেখে এবং বলে, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ-যাতে এর বিনিময়ে সামান্য অর্থ গ্রহণ করতে পারে। অতএব তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের হাতের লেখার জন্য এবং তাদের প্রতি আক্ষেপ, তাদের উপার্জনের জন্যে।(সূরা বাকারাহ-৭৯)
‘আবদুল্লাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, ইবনু ‘আববাস (রাঃ) বলেছেন, তোমরা কিভাবে আহলে কিতাবদেরকে কোন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস কর? অথচ তোমাদের কিতাব (আল-কুরআন) তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এখন অবতীর্ণ হয়েছে, তা তোমরা পড়ছ যা পূত-পবিত্র ও নির্ভেজাল। এ কিতাব তোমাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছে, আহলে কিতাবরা আল্লাহর কিতাবকে পরিবর্তিত ও বিকৃত করে দিয়েছে। তারা নিজ হাতে কিতাব লিখে তা আল্লাহর কিতাব বলে ঘোষণা দিয়েছে, যাতে এর দ্বারা সামান্য সুবিধা লাভ করতে পারে। তোমাদের কাছে যে ইল্ম আছে তা কি তোমাদেরকে তাদের কাছে কোন মাসআলা জিজ্ঞেস করতে নিষেধ করছে না? আল্লাহর কসম! আমরা তো তাদের কাউকে দেখিনি কখনো তোমাদের উপর নাযিল করা কিতাব সম্পর্কে কিছু জিজ্ঞেস করতে। (সহীহ বুখারী,ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৬৮৬০)
উক্ত আয়াত ও হাদীস দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হল বর্তমানে প্রচলিত তাওরাত ও ইঞ্জিল বিকৃত করা হয়েছে ।
এছাড়াও বেদে যোগ হচ্ছে নতুন নতুন শ্লোক যা হিন্দু পণ্ডিতরাই স্বীকার করেন। তারা এও বলে যে তাদের ধর্মগ্রন্থে অনেক কিছু যোগ বিয়োগ করা হয়েছে।
সুতরাং যাদের ধর্মগ্রন্থই বিকৃত,তাদের ধর্ম যে মানবরচিত মিথ্যা ধর্ম তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পক্ষান্তরে কুরআন মাজীদ সম্পর্কে আল্লহ সুবাহানাহু ওয়া তা’য়ালার স্পষ্ট ঘোষণাঃ
আমি স্বয়ং এ উপদেশ গ্রন্থ অবতারণ করেছি এবং আমি নিজেই এর সংরক্ষক।(সূরা হিজর-৯)
তাই একথাই প্রতিয়মাণ হয় যে পৃথিবীর বুকে একমাত্র সত্যধর্ম হল ইসলাম।ইসলাম ছাড়া অন্য কোন দ্বীন আল্লহ তা’য়ালার নিকট গ্রহণযোগ্য নয়।
যারা কুরআনের এমন সুস্পষ্ট বক্তব্যের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তারা কখনও হিযবুত তাওহীদ বা তাওহীদের দল হতে পারে না।বরং তাদের এই বক্তব্য স্পষ্ট কুফরের দিকে আহ্বান ।
হে হিযবুত তাওহীদের সমর্থক ভাই/বোনেরা!
একবারো ভেবে দেখেছেন কি ,তারা আপনাকে তাওহীদের চমকপ্রদ আহ্বানের অন্তরালে কুফরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে কিনা?
আপনার সমীপে কুরআনের একটি আয়াত তুলে ধরছি।আশা করি আপনি আপনার মেধার যথাযথ প্রয়োগ করবেন।
আল্লহ তা’য়ালা ইরশাদ করেনঃ
الَّذِیۡنَ یَسۡتَمِعُوۡنَ الۡقَوۡلَ فَیَتَّبِعُوۡنَ اَحۡسَنَہٗ ؕ اُولٰٓئِکَ الَّذِیۡنَ ہَدٰىہُمُ اللّٰہُ وَ اُولٰٓئِکَ ہُمۡ اُولُوا الۡاَلۡبَابِ
যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন করেন এবং তারাই বুদ্ধিমান।(সূরা যুমার-১৮)
No comments:
Post a Comment