ইতিকাফ রাসুল (সা.) করেছেন। মক্কা থেকে হিজরত করে যখন মদিনায় এসেছেন, সেই থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিবারই তিনি ইতিকাফ করেছেন। ইতিকাফ রাসুল (সা.) নিজে করেছেন, সাহাবাগণ ইতিকাফ করেছেন এবং রাসুলের (সা.) স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।
‘ইতিকাফ’ শব্দের অর্থ অবস্থান করা। ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী বুঝায় দুনিয়ার সব ঝামেলা থেকে মুক্ত হয়ে একান্ত আল্লাহ রব্বুল আলামিনের সান্নিধ্যে মসজিদে চলে আসা। হজরত আয়েশা (রা.) বলেছেন যে, রাসুল (সা.) তাঁর জীবদ্দশায় মদিনায় আসার পর মৃত্যু পর্যন্ত ইতিকাফ করেছেন। আর ইতিকাফ করার শর্ত হলো মসজিদ। ইতিকাফ মসজিদে করতে হবে, ঘরে বসে ইতিকাফ করা যাবে না। বায়তুল্লায় নবী করিম (সা.)-কে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমার ঘরকে পূতপবিত্র করুন, ইতিকাফকারীদের জন্য। নাবী করিম (সা.) মসজিদে ইতিকাফ করেছেন, উনার স্ত্রীরা অনুমতি চেয়েছেন, তাঁদের জন্য আলাদাভাবে মসজিদে ইতিকাফ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যদিও কোনো কোনো আলিম বলেছেন, ঘরে মহিলারা ইতিকাফ করতে পারবেন। কিন্তু অধিকাংশ আলিম বলেছেন, ইতিকাফের জন্য মাসজিদ হলো শর্ত। অতএব, মাসজিদে ইতিকাফ করতে হবে।
ইতিকাফের নিয়মকানুন বলতে বোঝায়, মাসজিদে এসে দুনিয়ার অন্যান্য ঝামেলা, ব্যবসা-বাণিজ্য এইসব কাজ থেকে মুক্ত থাকা।
🔴ইতিকাফের সর্ত;--
যে মসজিদে জুমার নামায হয় সে মসজিদে ইতিকাফ করা শরিয়তসম্মত। যদি ইতিকাফকারী ব্যক্তির উপর জুমার নামায ফরয হয় এবং ইতিকাফের সময়ের মধ্যে জুমাবার থাকে এমনক্ষেত্রে জুমা মসজিদে (জামে মসজিদে) ইতিকাফ করা উত্তম। ইতিকাফের জন্য রোজা থাকা শর্ত নয়। সুন্নত হচ্ছে- ইতিকাফকালে কোন রোগীকে দেখতে না যাওয়া; নিমন্ত্রণে না যাওয়া, পরিবারের প্রয়োজনপূরণে সাড়া না দেয়া, জানাযার নামাযে না যাওয়া, মসজিদের বাইরে কোন কাজে না যাওয়া। এর সপক্ষে দলিল হচ্ছে
🔸আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত হাদিস তিনি বলেন: “ইতিকাফকারীর জন্য সুন্নত হচ্ছে- রোগী দেখতে না যাওয়া, জানাযায় শরিক না হওয়া, নারী সহবাস বা নারীকে বাহুবন্ধনেনা নেয়া, যে প্রয়োজন পূরণ না করলে নয় এমন প্রয়োজন ছাড়া অন্য কোন কারণে মসজিদ থেকে বের না হওয়া।[আবু দাউদ (২৪৭৩)]
🔴ইতিকাফ এর হুকুম কি?
কুরআন-সহীহ হাদিস ও ইজিম ভিত্তিতে ইতিকাফ শরয়ি বিধান।
কুরআনের দলিল হচ্ছে আল্লাহ্র বাণী: “এবং আমি ইব্রাহীম ও ইসমাঈলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।”
[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১২৫]
[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১২৫]
এবং আল্লাহ্র বাণী: “আর যতক্ষণ তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে যৌনকর্ম করো না।”
[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৭]
[সূরা বাক্বারা, আয়াত: ১৮৭]
🔺হাদিসের দলিল: এ সংক্রান্ত অনেক হাদিস রয়েছে। যেমন আয়েশা (রাঃ) এর হাদিস: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রমযান মাসের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীগণও ইতিকাফ করেছেন।”
[সহিহ বুখারী (২০২৬) ও সহিহ মুসলিম (১১৭২)]
[সহিহ বুখারী (২০২৬) ও সহিহ মুসলিম (১১৭২)]
🔺ইজমা: একাধিক আলেম ইতিকাফ শরয়ি বিধান হওয়ার পক্ষে ইজমা উদ্ধৃত করেছেন; যেমন- ইমাম নববী, ইবনে কুদামা ও শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া প্রমুখ।
[দেখুন: আল-মাজমু (৬/৪০৪), আল-মুগনি (৪/৪৫৬), শারহুল উমদা (২/৭১১)।
[দেখুন: আল-মাজমু (৬/৪০৪), আল-মুগনি (৪/৪৫৬), শারহুল উমদা (২/৭১১)।
শাইখ বিন বায (রহঃ) ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’ গ্রন্থে (১৫/৪৩৭) বলেন:
“কোন সন্দেহ নেই ইতিকাফ আল্লাহ্র নৈকট্য হাছিলের একটি মাধ্যম। ইতিকাফ রমযান মাসে পালন করা অন্য সময়ে পালন করার চেয়ে উত্তম...। এটি রমযান মাসে ও অন্য সময়ে পালন করা শরিয়তসম্মত।”।
দুই:
ইতিকাফের হুকুম: ইতিকাফের মূল বিধান হচ্ছে- এটি সুন্নত; ওয়াজিব নয়। তবে, কেউ মানত করলে তার উপর ওয়াজিব হবে।
যেহেতু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহ্র কোন আনুগত্য পালন করার মানত করে সে যেন সেই আনুগত্য আদায় করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ্র অবাধ্য হওয়ার মানত করে সে যেন আল্লাহ্র অবাধ্য না হয়।”
দলীল সহিহ বুখারী (৬৬৯৬)]
দলীল সহিহ বুখারী (৬৬৯৬)]
এবং যেহেতু উমর (রাঃ) বলেছেন: ইয়া রাসূলুল্লাহ্! আমি জাহেলি যুগে মাসজিদুল হারামে এক রাত ইতিকাফ করার মানত করেছি। তিনি বললেন: “তুমি তোমার মানত পূর্ণ কর। সহীহ বুখারী হাদিস নং-৬৬৯৭
ইবনুল মুনযির তাঁর ‘আল-ইজমা’ নামক গ্রন্থে (পৃষ্ঠা-৫৩) বলেন:
আলেমগণ ইজমা করেছেন যে, ইতিকাফ সুন্নত; ফরয নয়। তবে কেউ যদি মানত করে নিজের উপর ফরয করে নেয় তাহলে ফরয হয়।”
দেখুন: ড. খালেদ আল-মুশাইকিহ এর ‘ফিকহুল ইতিকাফ’ পৃষ্ঠা- ৩১
দেখুন: ড. খালেদ আল-মুশাইকিহ এর ‘ফিকহুল ইতিকাফ’ পৃষ্ঠা- ৩১
🔴ইতিকাফ এর সময় - সিমা?
যে কোন সময় ইতিকাফ করা জায়েয। সবচেয়ে উত্তম ইতিকাফ হচ্ছে- রমযান মাসের শেষ দশদিনের ইতিকাফ। কারণ এতে রয়েছে রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীবর্গের অনুসরণ। সহিহ হাদিসে এটাও সাব্যস্ত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন এক বছর শাওয়াল মাসে ইতিকাফ করেছেন।
যে কোন সময় ইতিকাফ করা জায়েয। সবচেয়ে উত্তম ইতিকাফ হচ্ছে- রমযান মাসের শেষ দশদিনের ইতিকাফ। কারণ এতে রয়েছে রাসূলুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সাহাবীবর্গের অনুসরণ। সহিহ হাদিসে এটাও সাব্যস্ত হয়েছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোন এক বছর শাওয়াল মাসে ইতিকাফ করেছেন।
বছরের যে কোন সময় ইতিকাফ করা সুন্নত; সেটা রমযানের মধ্যে হোক অথবা রমযানের বাইরে হোক। এর পক্ষে দলিল পাওয়া যায়, ইতিকাফ সংক্রান্ত সাধারণ দলিলগুলো থেকে; যেগুলো রমযান মাস ও অন্য যে কোন মাসকে শামিল করে।
🔸ইমাম নববী আল-মাজমু গ্রন্থে (৬/৫০১) বলেন:
ইতিকাফ একটি সুন্নত ইবাদত। যা ইজমার মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়েছে। অনুরূপভাবে ইজমার মাধ্যমে সাব্যস্ত হয়েছে যে, শুধুমাত্র মান্নতের কারণে ইতিকাফ ফরজ হতে পারে। বেশি বেশি ইতিকাফ করা মুস্তাহাব। রমযানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করা মুস্তাহাব; এ সময়ে এর মুস্তাহাব হওয়াটা আরও জোরদার হয়।
তিনি আরও (৬/৫১৪) বলেন:
সর্বোত্তম ইতিকাফ হলো- রোযার সাথে যে ইতিকাফ; রমযান মাসের ইতিকাফ; রমযানের শেষ দশদিনের ইতিকাফ।
🔸আলবানি তাঁর ‘কিয়ামু রমযান’ গ্রন্থে বলেন:
ইতিকাফ রমযানে ও রমযানের বাইরে বছরের যে কোন সময় পালন করা সুন্নত। এ বিষয়ে দলিল হচ্ছে আল্লাহর বাণী: “যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত থাক”। এছাড়া নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইতিকাফের ব্যাপারে সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে এবং সলফে সালেহীনদের থেকে মুতাওয়াতির রেওয়ায়েত এসেছে।
↕↕↕↕↕↕↕↕↕↕
উমর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেছেন, জাহেলী যুগে আমি মান্নত করেছিলাম যে, মসজিদে হারামে এক রাত্রি ইতিকাফ করব? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: সুতরাং তোমার মান্নত পূর্ণ কর। ফলে তিনি এক রাত ইতিকাফ করলেন।[বুখারি ও মুসলিম]
↕↕↕↕↕↕↕↕↕↕
উমর (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলেছেন, জাহেলী যুগে আমি মান্নত করেছিলাম যে, মসজিদে হারামে এক রাত্রি ইতিকাফ করব? নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: সুতরাং তোমার মান্নত পূর্ণ কর। ফলে তিনি এক রাত ইতিকাফ করলেন।[বুখারি ও মুসলিম]
আবু হুরায়রা (রাঃ) এর হাদিসের ভিত্তিতে রমযানে ইতিকাফ পালনের বিধান জোরদার হয়: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রমযান মাসে দশদিন ইতিকাফ করতেন। যে বছর তিনি মারা যান সে বছর বিশদিন ইতিকাফ করেন।[সহিহ বুখারি]
রমযানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করা সর্বোত্তম ইতিকাফ। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মৃত্যু অবধি রমযানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করেছেন।
[সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম, সংক্ষেপিত ও সংকলিত]
[সহিহ বুখারি ও সহিহ মুসলিম, সংক্ষেপিত ও সংকলিত]
🔸শাইখ বিন বায তাঁর ফতোয়াসমগ্র (১৫/৪৩৭) তে বলেন:
সন্দেহ নেই যে, মসজিদে ইতিকাফ করা একটি ইবাদত ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম। রমযানে এ ইবাদত পালন করা অন্য সময় পালন করার চেয়ে উত্তম। এটি রমযানে ও রমযানের বাইরে পালন করা যেতে পারে।[সংক্ষেপিত]
দেখুন: ড. খালেদ আল-মুশাইকিহ এর ফিকহুল ইতিকাফ, পৃষ্ঠা-৪১।
🔴ইতিকাফ এর সময় সিমা আরো কিছু আলোচনা।
ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময়ের ব্যাপারে আলেমগণের মাঝে মতভেদ রয়েছে।অধিকাংশআলেমের মতে ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় এক মুহূর্তের জন্যও হতে পারে। এটি ইমাম আবু হানিফা, ইমাম শাফেয়ি ও ইমাম আহমাদের মাযহাব।
দেখুন:➖➖
আদ্দুরুলমুখতার ১/৪৪৫,আলমাজমু-৬/৪৮৯,
আলইনস্বাফ (৭/৫৬৬)
দেখুন:➖➖
আদ্দুরুলমুখতার ১/৪৪৫,আলমাজমু-৬/৪৮৯,
আলইনস্বাফ (৭/৫৬৬)
🔸ইমাম নববী আলমাজমূ (৬/৫১৪) গ্রন্থে বলেছেন:
“আর ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় সম্পর্কে অধিকাংশ আলেম দৃঢ়তার সাথে যে মত ব্যক্ত করেছেন সেটাই সঠিক মত। তা হচ্ছে-ইতিকাফের জন্য মসজিদে অবস্থান করা শর্ত।সেটা বেশি সময়ের জন্য হতে পারে, কম সময়ের জন্যেও হতে পারে। এমনকি সামান্য সময় বা এক মুহূর্তের জন্যেও হতে পারে।”সমাপ্ত ও সংক্ষেপিত।
এ মতের পক্ষে তাঁরা কয়েকটি দলীল পেশ করেছেন :
যেমনঃ-১. ইতিকাফ শব্দেরআভিধানিকঅর্থ হচ্ছে-অবস্থানকরা।এটিদীর্ঘসময়ের জন্যেও হতে পারে, অল্পসময়েরজন্যেওহতেপারে। শরিয়তের এমনকোনদলীলপাওয়াযায়নাযানির্দিষ্টকোনসময়সীমার মধ্যে ইতিকাফকেসীমাবদ্ধ করে দিবে।
যেমনঃ-১. ইতিকাফ শব্দেরআভিধানিকঅর্থ হচ্ছে-অবস্থানকরা।এটিদীর্ঘসময়ের জন্যেও হতে পারে, অল্পসময়েরজন্যেওহতেপারে। শরিয়তের এমনকোনদলীলপাওয়াযায়নাযানির্দিষ্টকোনসময়সীমার মধ্যে ইতিকাফকেসীমাবদ্ধ করে দিবে।
▪ইবনে হাযম বলেছেন:
“আরবী ভাষায়ইতিকাফ শব্দের অর্থ-অবস্থান করা। তাই আল্লাহর মসজিদে তাঁর নৈকট্য লাভের আশায় যে কোন অবস্থানই হল ইতিকাফ। সেটা কম সময়ের জন্যে হোক অথবা বেশি সময়ের জন্যে হোক। যেহেতু কুরআন ও সুন্নাহ নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বা সময় নির্ধারণ করেনি”।
[আল-মুহাল্লা (৫/১৭৯)]
[আল-মুহাল্লা (৫/১৭৯)]
২. ইবনে আবু শাইবাহ ইয়ালা ইবনে উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন:“আমি মসজিদে অল্প কিছু সময় অবস্থান করলেও সেটা আমি ইতিকাফের নিয়্যতে অবস্থান করি।”ইবনে হাযম‘আল-মুহাল্লা’ গ্রন্থে (৫/১৭৯) এই রেওয়ায়েতদিয়েদলীল পেশ করেছেন এবং হাফেজ ইবনে হাজার ‘ফাতহুল বারী’গ্রন্থে তা উদ্ধৃতকরেছেন; কিন্তু কোন মন্তব্য করেননি। রেওয়ায়েতটিতে الساعة (ঘন্টা) দ্বারা বর্তমান পরিভাষায় যা বুঝি ৬০ মিনিট সেটা উদ্দেশ্য নয়। বরং এর দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে- কিছু সময়।
কিছু কিছু আলেমের মতে ইতিকাফেরসর্বনিম্ন সময় একদিন। ইমাম আবু হানিফা থেকে ও মালেকি মাযহাবের কোন কোন আলেম থেকে এ ধরনের একটি বর্ণনা পাওয়া যায়।
🔺শাইখ ইবনে বায ‘মাজমুউল ফাতাওয়া’গ্রন্থে (১৫/৪৪১) বলেছেন:
“ইতিকাফ হলো আল্লাহতাআলার আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করা, সময় কম হোক অথবা বেশি হোক। কারণ আমার জানা মতে এমন কোন বর্ণনা পাওয়া যায় না যা একদিন, দুইদিন বা এর চেয়ে বেশী দিনের জন্য ইতিকাফ করাকে নির্দিষ্ট করবে। ইতিকাফশরিয়তসম্মত ইবাদত।তবে কেউ যদি মান্নত করে তখন মান্নতের কারণে তার উপর ইতিকাফ করা ওয়াজিব হয়ে যাবে। ইতিকাফের বিধান নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।”
🔴এবার আসেন ইতিকাফের ফযিলত নিয়ে কিছু যঈফ হাদিস আলোচনা করি।।
ইতিকাফ একটি শরয়ি আমল। এটি আল্লাহ্র নৈকট্য হাছিল করা যায় এমন নেক আমল।
এটা যখন সাব্যস্ত হল, জেনে রাখুন আল্লাহ্র নৈকট্যশীল নফল আমলের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে অনেক হাদিস বর্ণিত হয়েছে। এ হাদিসগুলোর সাধারণ হুকুমের অধীনে সকল ইবাদত অর্ন্তভুক্ত হয়; যার মধ্যে ইতিকাফও রয়েছে।
এ ধরণের হাদিসের মধ্যে রয়েছে: হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ্ তাআলার বাণী “আমি আমার বান্দার প্রতি যা ফরয করেছি তা দ্বারাই সে আমার অধিক নৈকট্য হাছিল করে। আমার বান্দা নফল ইবাদতের মাধ্যমে উপর্যুপরি আমার নৈকট্য হাছিল করতে থাকে। এক পর্যায়ে আমি তাকে ভালবাসি। যখন আমি তাকে ভালবাসি তখন আমি তার কর্ণ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমি তার চক্ষু হয়ে যাই, যা দিয়ে সে দেখে। আমি তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমি তার পা হয়ে যাই, যে পা দিয়ে সে চলাফেরা করে। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করে আমি তাকে তা প্রদান করি। সে যদি আমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে, আমি তাকে আশ্রয় দেই।
[সহিহ বুখারী (৬৫০২)]
[সহিহ বুখারী (৬৫০২)]
দুই:
ইতিকাফের ফযিলত সম্পর্কেও কিছু হাদিস বর্ণিত হয়েছে; কিন্তু সে হাদিসগুলো দুর্বল কিংবা বানোয়াট:
আবু দাউদ বলেন: আমি আহমাদকে (অর্থাৎ আহমাদ বিন হাম্বলকে) বললাম: আপনি কি ইতিকাফের ফযিলত বিষয়ে কিছু জানেন? তিনি বললেন: না; দুর্বল কিছু ব্যতীত।
[মাসায়েলু আবি দাউদ, পৃষ্ঠা-৯৬]
[মাসায়েলু আবি দাউদ, পৃষ্ঠা-৯৬]
এ ধরণের হাদিসগুলোর মধ্যে রয়েছে:
১। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইতিকাফকারীর ব্যাপারে বলেছেন: “ইতিকাফকারী গুনাহকে প্রতিরোধ করেন। ইতিকাফকারীকে সকল নেক আমলকারীর ন্যায় নেকী দেয়া হবে।”
🔸[শাইখ আলবানি ‘যয়িফু ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে যয়িফ (দুর্বল) বলেছেন]
🔸[শাইখ আলবানি ‘যয়িফু ইবনে মাজাহ’ গ্রন্থে হাদিসটিকে যয়িফ (দুর্বল) বলেছেন]
২। তাবারানী, হাকিম ও বায়হাকী ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে হাদিস বর্ণনা করেন, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি আল্লাহ্র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে একদিন ইতিকাফ করে আল্লাহ্ তার মাঝে ও জাহান্নামের আগুনের মাঝে তিনটি পরিখার দূরত্ব সৃষ্টি করে দেন; যা পূর্ব-পশ্চিমের চেয়েও বেশি দূরত্ব”।
▪[বাইহাকী হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন]
▪[বাইহাকী হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন]
৩। দাইলামি আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ও সওয়াবের আশায় ইতিকাফ করবে তার পূর্বের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।”
▪[আলবানি ‘যায়িফুল জামে’ গ্রন্থে (৫৪৪২) হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন]
▪[আলবানি ‘যায়িফুল জামে’ গ্রন্থে (৫৪৪২) হাদিসটিকে দুর্বল বলেছেন]
৪। ইমাম বাইহাকী হাসান বিন আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি রমযান মাসে দশদিন ইতিকাফ করবে এর সওয়াব দুইটি হজ্জ ও দুইটি উমরার সমান।”
🔸[শাইখ আলবানি ‘আল-সিলসিলাতুয্ যায়িফা’ গ্রন্থে (৫১৮) হাদিসটি সংকলন করে বলেছেন: মাওযু (বানোয়াট)]
🔸[শাইখ আলবানি ‘আল-সিলসিলাতুয্ যায়িফা’ গ্রন্থে (৫১৮) হাদিসটি সংকলন করে বলেছেন: মাওযু (বানোয়াট)]
🔴এবার আসেন মহিলাদের বাড়িতে ইতিকাফ সম্পকে,, কিছু বলছি,,
ইতিকাফের জন্য শর্ত হল, মসজিদ। মসজিদ ছাড়া ইতিকাফ সহীহ নয়। এই শর্ত পুরুষ-মহিলা সবার জন্য প্রযোজ্য।
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
“তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।"
▪(সূরা বাকারা: ১২৫)
আল্লাহ তায়ালা বলেন:
أَن طَهِّرَا بَيْتِيَ لِلطَّائِفِينَ وَالْعَاكِفِينَ وَالرُّكَّعِ السُّجُودِ
“তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী ও রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখ।"
▪(সূরা বাকারা: ১২৫)
🔸আল্লাহ আরও বলেন: وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ
“আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। ” (সূরা বাকরা:১৮৭)
“আর যতক্ষণ তোমরা এতেকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না। ” (সূরা বাকরা:১৮৭)
🔺সূরা বাকারাহ আয়াত ১৮৭ থেকে প্রমান হলো যে আল্লাল পাক রব্বুল আলামীন,, মসজিদে ইতিকাফ করতে হুকম করছেন,, বাড়িতে নয়,,
কারন ২;১৮৭
الْمَسٰجِدُ
দ্বারা বুঝা যায় ইতিকাফ মাসজিদে করতে হবে।
কারন ২;১৮৭
الْمَسٰجِدُ
দ্বারা বুঝা যায় ইতিকাফ মাসজিদে করতে হবে।
এ আয়াতগুলোতে মসজিদে ইতিকাফ করার কথা উল্লেখিত হয়েছে।
🔺আসেন সহীহ হাদিস কি বলে দেখি?
সহীহ বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে, উম্মুল মুমিনীন আয়েশা রা. হতে বর্ণিত। তিনি বলেন,
أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يعتكف العشر الأواخر من رمضان حتى توفاه الله، ثم اعتكف أزواجه من بعده
“রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রামযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন আর তাঁর ইন্তিকালের পরে তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।”
أن النبي صلى الله عليه وسلم كان يعتكف العشر الأواخر من رمضان حتى توفاه الله، ثم اعتكف أزواجه من بعده
“রাসূল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রামযানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন আর তাঁর ইন্তিকালের পরে তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ করেছেন।”
নারীদের জন্য তার ঘরকে মসজিদ বলা ঠিক নয়। কারণ, মসজিদে ঋতুবতি মহিলাদের প্রবেশ নিষেধ। ঘর যদি মসজিদ হত তাহলে সে ঘরে মহিলাদের অবস্থান করা বৈধ হত না এবং ঐ ঘর বিক্রয় করা বৈধ হত না।
বি: দ্র: মসজিদের মধ্যে মহিলাদের যদি নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে এবং তার ইতিকাফের কারণে যদি সন্তান প্রতিপালন, ঘর-সংসারের নিরাপত্তা এবং তার উপর অর্পিত অপরিহার্য কবর্ত্য পালনে ব্যাঘাত না ঘরে তবে স্বামী বা অভিভাবকের অনুমতি স্বাপেক্ষে ইতিকাফ করা বৈধ হবে। অন্যথায়, তার জন্য ইতিকাফ না করে বরং নিজ দায়িত্ব যাথাযথভাবে পালন, সংসার দেখা-শোনা, স্বামীর সেবা ইত্যাদিতেই অগণিত কল্যাণ নিহীত রয়েছে। তিনি কাজের ফাঁকে যথাসাধ্য দুয়া, তাসবীহ, কুরআন তিলাওয়াত, নফল সালাত ইত্যাদির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের চেষ্টা করবেন। আল্লাহই তাওফীক দাতা।
দেখেন ইতিকাফ হলো সুন্নাত ইবাদত কেও না মান্নাত করলে ফরজ হয় না,,,
ইমাম নববী বলছেন এটা সুন্নাত,
আলবানী বলছেন সুন্নাতে মুকাদাহ,,
আলবানী বলছেন সুন্নাতে মুকাদাহ,,
করলে ভালো,,,
সূরা বাকারাহ আয়ায়,, ১৮৭
الْمَسٰجِدُ
দ্বারা বুঝা যায় ইতিকাফ মাসজিদে করতে হবে।
এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন ইতিকাফ মসজিদে করতে,,
الْمَسٰجِدُ
দ্বারা বুঝা যায় ইতিকাফ মাসজিদে করতে হবে।
এই আয়াতে আল্লাহ বলছেন ইতিকাফ মসজিদে করতে,,
সহীহ হাদিসে আছে,,
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর স্ত্রীগণও মাসজিদে ইতিকাফ করতেন
(সহীহ বুখারী হা: ২০৩৩)।
(সহীহ বুখারী হা: ২০৩৩)।
তাই মহিলাগণও মাসজিদে ইতিকাফ করবে তবে মহিলাদের জন্য সম্পূর্ণ পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে।
,,,
বিশেষজ্ঞদের মত দিয়েছেন যে বাড়িতে ইতিকাফ করা শরীয়ত সামর্থ্য নয়,,,
,,,
বিশেষজ্ঞদের মত দিয়েছেন যে বাড়িতে ইতিকাফ করা শরীয়ত সামর্থ্য নয়,,,
নারীর জন্য তার নিজ ঘরে ইতিকাফ করার কোন বিধান নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “আর তোমরা মসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না।”[২ আল-বাক্বারাহ : ১৮৭]
এছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীগণ তাঁর কাছে মসজিদে ইতিকাফ করার অনুমতি চান এবং তিনি তাঁদেরকে অনুমতি দেন।
◾“আলমাজমূ” (৬/৪৮০) গ্রন্থে ইমাম নববী বলেছেন:
“নর-নারী কারো জন্য মসজিদের বাইরে ইতিকাফ করা শুদ্ধ নয়।”
◾“আশ-শারহ আল-মুমতি” (৬/৫১৩) গ্রন্থে এটাই হচ্ছে শাইখ উছাইমীনের নির্বাচিত অভিমত।
ইমাম নববী আল মাজমূ (৬/৫১৪) গ্রন্থে বলেছেন:
“আর ইতিকাফের সর্বনিম্ন সময় সম্পর্কে অধিকাংশ আলেম দৃঢ়তার সাথে যে মত ব্যক্ত করেছেন সেটাই সঠিক মত। তা হচ্ছে- ইতিকাফের জন্য মসজিদে অবস্থান করা শর্ত। সেটা বেশি সময়ের জন্য হতে পারে, কম সময়ের জন্যেও হতে পারে। এমনকি সামান্য সময় বা এক মুহূর্তের জন্যেও হতে পারে।” সমাপ্ত ও সংক্ষেপিত।
১. ইতিকাফ শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- অবস্থান করা। এটি দীর্ঘ সময়ের জন্যেও হতে পারে, অল্প সময়ের জন্যেও হতে পারে। শরিয়তের এমন কোন দলীল পাওয়া যায় না যা নির্দিষ্ট কোন সময়সীমার মধ্যে ইতিকাফকে সীমাবদ্ধ করে দিবে।
ইবনে হাযম বলেছেন:
“আরবী ভাষায় ইতিকাফ শব্দের অর্থ-অবস্থান করা। তাই আল্লাহর মসজিদে তাঁর নৈকট্য লাভের আশায় যে কোন অবস্থানই হল ইতিকাফ। সেটা কম সময়ের জন্যে হোক অথবা বেশি সময়ের জন্যে হোক। যেহেতু কুরআন ও সুন্নাহ নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা বা সময় নির্ধারণ করেনি” সমাপ্ত।
[আল-মুহাল্লা (৫/১৭৯)]
[আল-মুহাল্লা (৫/১৭৯)]
ইবনে আবু শাইবাহ ইয়ালা ইবনে উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেন: “আমি মসজিদে অল্প কিছু সময় অবস্থান করলেও সেটা আমি ইতিকাফের নিয়্যতে অবস্থান করি।” ইবনে হাযম ‘আল-মুহাল্লা’ গ্রন্থে (৫/১৭৯)
নারীদের জন্য রমজানের শেষ দশদিন মসজিদে ইতিকাফ করা জায়েয।
বরং ইতিকাফ নারী-পুরুষ উভয় শ্রেণীর জন্য একটি সুন্নত ইবাদত। মুমিনদের মাতাগণ তথা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীবর্গ তাঁর জীবদ্দশায় ও তাঁর মৃত্যুর পরে মসজিদে ইতিকাফ করেছেন।
🔺দেখেন সহীহ বুখারী (২০২৬)ও সহীহ মুসলিম (১১৭২) এ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলা মৃত্যু দানের আগ পর্যন্ত তিনি রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ পালন করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ পালন করেছেন।”
🔺দেখেন সহীহ বুখারী (২০২৬)ও সহীহ মুসলিম (১১৭২) এ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর স্ত্রী আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে: “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ তাআলা মৃত্যু দানের আগ পর্যন্ত তিনি রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ পালন করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রীগণ ইতিকাফ পালন করেছেন।”
“আউনুল মাবূদ” গ্রন্থে বলা আছে-
“এ হাদিসে দলীল পাওয়া যায় যে ইতিকাফের ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ সমান।”
শাইখ আবদুল আযীয ইবনে বায রাহিমাহুল্লাহ বলেছেন:
“ইতিকাফ নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সুন্নত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি রমজানে ইতিকাফ পালন করতেন। সবশেষে তাঁর ইতিকাফ রমজানের শেষ দশদিনে স্থির হয় এবং তাঁর কয়েকজন স্ত্রীও তাঁর সাথে ইতিকাফ পালন করতেন। তাঁর মৃত্যুর পরেও তাঁরা ইতিকাফ পালন করেছেন। ইতিকাফের স্থান হচ্ছে- এমন মসজিদ যেখানে জামাতের সাথে সালাত আদায় করা হয়।”
▪ শাইখ ইবনে বাযের
▪ শাইখ ইবনে বাযের
🔴আরো কিছু আলোচনা মহিলাদের ইতিকাফ মসজিদে না বাড়িতে করবেন?
﴿وَلَا تُبَاشِرُوهُنَّ وَأَنْتُمْ عَاكِفُونَ فِي الْمَسَاجِدِ﴾
যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান কর, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সাথে মিশো না।
▪(সূরা বাকারা, ২ : ১৮৭)
الْمَسٰجِدُ
◾দ্বারা বুঝা যায় ইতিকাফ মাসজিদে করতে হবে।
▪(সূরা বাকারা, ২ : ১৮৭)
الْمَسٰجِدُ
◾দ্বারা বুঝা যায় ইতিকাফ মাসজিদে করতে হবে।
অর্থাৎ স্ত্রী সহবাস করো না। ইবনু আব্বাস বলেন, মুবাশারাত, মুলামাসাত এবং মাস সব শব্দেরই উদ্দেশ্য হলো স্ত্রী সহবাস।
🔺বায়হাকী, সুনানুল কুবরা ৪/৩২১ (শা. স.)
🔺বায়হাকী, সুনানুল কুবরা ৪/৩২১ (শা. স.)
হাফিয ইবনে হাজার বলেছেন,
ووجه الدلالة من الآية أنه لو صحَّ في غير المسجد لم يختص تحريم المباشرة به , لأنَّ الجماع مناف للاعتكاف بالإجماع. فعلم من ذكر المساجد أنَّ المراد أنَّ الاعتكاف لا يكون إلاَّ فيها
আয়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করা যায় এভাবে যে, যদি ইতিকাফ মসজিদ ব্যতীত অন্য জায়গায় সহীহ হত তাহলে স্ত্রী সহবাস হারাম হওয়াকে মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট করা হত না। কারণ সর্বসম্মতিক্রমে স্ত্রী সহবাস হল ইতিকাফ বিনষ্টকারী। তাই মসজিদ উল্লেখ করা একথাই বুঝায় যে, মসজিদ ব্যতীত ইতিকাফ হবে না।
🔺ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী ৪/২৭২ (শা. স.)
আয়াত দ্বারা প্রমাণ পেশ করা যায় এভাবে যে, যদি ইতিকাফ মসজিদ ব্যতীত অন্য জায়গায় সহীহ হত তাহলে স্ত্রী সহবাস হারাম হওয়াকে মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট করা হত না। কারণ সর্বসম্মতিক্রমে স্ত্রী সহবাস হল ইতিকাফ বিনষ্টকারী। তাই মসজিদ উল্লেখ করা একথাই বুঝায় যে, মসজিদ ব্যতীত ইতিকাফ হবে না।
🔺ইবনে হাজার, ফাতহুল বারী ৪/২৭২ (শা. স.)
এছাড়াও দলীল হিসাবে একটি হাদীস পেশ করা হলো, লক্ষ্য করুন-
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا زَوْجِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَعْتَكِفُ الْعَشْرَ الْأَوَاخِرَ مِنْ رَمَضَانَ حَتَّى تَوَفَّاهُ اللَّهُ ثُمَّ اعْتَكَفَ أَزْوَاجُهُ مِنْ بَعْدِهِ
উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রা.) বলেন, নবী (সা.) এর মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত রমাযান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তারপর তাঁর স্ত্রীগণ (শেষ দশকে) ইতিকাফ করতেন।
🔺সহীহ বুখারী : ১৯২২, সহীহ মুসলিম : ২৮৪১
উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রা.) বলেন, নবী (সা.) এর মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত রমাযান মাসের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন। তারপর তাঁর স্ত্রীগণ (শেষ দশকে) ইতিকাফ করতেন।
🔺সহীহ বুখারী : ১৯২২, সহীহ মুসলিম : ২৮৪১
এই হাদীসে মহিলাদের ইতিকাফ বৈধ হওয়ার দলীল পাওয়া যায়। এবং তা মসজিদে হতে হবে। তবে এর জন্য তাদের অভিভাবকগণের অনুমতি থাকতে হবে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হতে হবে এবং পুরুষদের সাথে মেলামেশা সম্ভাবনামুক্ত হতে হবে। এবং মসজিদে সমস্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে মহিলা দের জন্য,,
আর কিছু ফাতুয়া পাওয়া যাই যে কিছু আলেমের যে মহিলা বাড়িতে ইতিকাফ করবেন তাদের ফাতুয়া গ্রহনযগ্য নয়,,, কারন কোরআন ও সহীহ হাদিস ও হিজমা অনুযায়ী মহিলা ও পুরুষের ইতিকাফ করার জায়গা হলো মসজিদ মসজিদ ছারা ইতিকাফ হবে না,,,
আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার তাওফীক দিন।
ইতিকাফ ও ইতিকাফের নিয়ম -ডাঃ জাকির নায়েকঃ
No comments:
Post a Comment