Saturday, April 20, 2019

প্রশ্নঃ আমাদের পরিচয় কি?

উত্তরঃ 

নিশ্চয়ই এটা আমাদের রব আল্লহ (সুবাঃ) পক্ষ থেকে আমাদের কে প্রদত্ত সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত যা দিয়ে তিনি আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন যে,"তিনি আমাদেরকে একটি অবিচ্ছেদ্য জাতিতে পরিণতএকরেছেন এবং আমাদের জন্য একটি নাম পছন্দ করেছেন"! একটি নাম যা জাতির প্রতিটি মানুষের পরিচয় বহন করে, কারো ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম নেই। এ ব্যাপারে শায়খ আবদুল্লাহ ইবনে লতিফ বলেন, "তোমার পরিচয় মুসলিম এবং তুমি অন্য সমস্ত ধর্মের মানুষদের মধ্যে এই নামে আখ্যায়িত ! আর এটি হল সর্বশ্রেষ্ঠ রহমত সমূহের একটি ! যেই ভাবে আল্লহ (সুবাঃ) বলেছেন, ""তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন মুসলিম""
{(সুরা হজ্জ ২২ঃ৭৮) আদ-দুরার আস-সানিয়্যাহ ৮/৫২}

আল্লহ (সুবাঃ) আরো এরশাদ করেছেন,
"ঐ ব্যক্তির চেয়ে আর কার কথা উত্তম যে মানুষকে আল্লহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, আমি একজন মুসলিম" (সুরা হা-মীম সিজদাহ ৪১ঃ৩৩)

সুতরাং যদি আল্লহ আমাদেরকে এই আখ্যায় সম্মানিত করেন এবং আমাদেরকে বিশেষ ভাবে এই নামের জন্য পছন্দ করে থাকেন, তবে এটা পরিবর্তন বা পরিত্যাগ করা আমাদের জন্য অবৈধ ! আমাদের জন্য এটাও বৈধ নয় যে, এটা ছাড়া অন্য কোন ভিত্তির উপর আমাদের বন্ধুত্ব বা শত্রুতা স্থাপিত হবে। বরং এই সব হবে এই পরিচয়ের দাবী অনুসারে অর্থাৎ মুসলিম ভাই হিসেবে।

ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহঃ) বলেনঃ "মহিমান্বিত আল্লহ (সুবাঃ) কুরআনে আমাদের কে আখ্যায়িত করেছেনঃ "মুসলিমিন", "মু'মিনীন" (বিশ্বাসীগণ) এবং ''ই'বাদুল্লাহ'' (আল্লহর দাস) হিসেবে ! সুতরাং আল্লহ যে নামে আমাদের আখ্যায়িত করেছেন তা আমরা পরিবর্তন করি না। ঐ সকল আখ্যার বিনিময়ে যা মানুষ কর্তৃক উদ্ভাবিত, যা দ্বারা তাদের নিজেদের কে এবং তাদের পূর্বপুরুষদের আখ্যায়িত করেছে, যার কোন অধিকার আল্লহ দেন নি এবং যেটার উপর তারা তাদের বন্ধুত্ব এবং শত্রুতা স্থাপন করে থাকে।
শুধু তাই না,
বরং আল্লহর সৃষ্টির মধ্যে আল্লহর নিকট সবচেয়ে মর্যাদাবান সেই ব্যক্তি, যে ব্যক্তি তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ন্যায়পরায়ণ, তারা যেই দলেরই হোক না কেন।
আল্লহ (সুবাঃ) এরশাদ করেছেন,
"তোমাদের মধ্যে আল্লহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। {(সুরা হুজরাত ৪৯ঃ১৩) মাজমুল ফাতাওয়া ৩/৪১৫}

#আমি_স্পষ্ট_বলে_দিচ্¬ছি,,, আমি বিশেষ কোন নবউদ্ভাবিত দলের সদস্য না।
#আমার বক্তব্য বুঝার চেষ্টা করুন,,
প্রচলিত মুসলিমদের মাঝে যত ফেরকা আছে। এর সবগুলাকেই আমি মানি,
#তবে অন্ধ ভাবে কোন একটার তাকলীদ করি না। কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী যার যতটুকু কথা মিলবে, তার ততটুকুই কথা আমরা গ্রহণ করি। আর কুরআন সুন্নাহ এর বিপরিত কথা যেই বলুক না কেন, সে যত বড় ব্যক্তি হোক না কেন, আমরা তার বক্তব্য বর্জন করি।
#এটাই বলেছেন, আল্লহ ও আল্লহর রসূল সঃ
সুরা নিসা ৪ঃ৫৯ আয়াত:""তোমরা কোন বিষয়ে বিবাদে লিপ্ত হলে(অর্থাৎ দুই ইমাম দুই রকম বললে)তাহলে তা আল্লহ ও আল্লহর রাসূল এর কাছে ফিরিয়ে দাও(অর্থাৎ আল্লহর কাছে মানে হলঃ- কুরআনের সাথে মিলাও!রসূলের কাছে মানে হলঃ- সহীহ হাদিসের সাথে মিলাও)কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী যার কথা মিলবে তার টা গ্রহণ করবে! আর কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী যার কথা মিলবে না তার টা বর্জন করবে!!

বিদায় হজ্জের ভাষণে রসূলুল্লাহ সঃ বলেছেন,
""আমি তোমাদের মাঝে এমন জিনিষ রেখে যাচ্ছি, যা শক্তভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনও পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হল "কিতাবুল্লহ"(আল্লহ¬র কুরআন) (সহীহ মুসলিমঃ৩০০৯)

রসূল সঃ বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে এমন দুটো জিনিষ রেখে যাচ্ছি, যে দুটো জিনিষকে তোমরা যতক্ষণ পর্যন্ত শক্তভাবে ধারণ করে রাখবে ততক্ষণ পর্যন্ত গোমরাহ হবে না। সে দুটো জিনিষ হলঃ-
১)কিতাবুল্লহ (আল্লহর কিতাব কুরআন)
২)ওয়া সুন্নাতে রসূলুল্লাহ (রসূলুল্লাহ সঃ এর সহীহ হাদিস)
(মুআত্তায়ে মালেকঃ২৬৪০; মুসতাদরাকে হাকেমঃ৩১৯)

#শাইখ_আব্দুল্লাহ_আযযাম (রহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ
"একজন ভালো শিক্ষার্থী হও। হক্ব তো শুধু তোমার দলের সাথে বা তোমার শাইখের সাথে - এমন মনোভাব রেখো না, সবাইকে সম্মান করো। যারা যতটুকু প্রশংসার যোগ্য, তাদের তা দিয়ো।
.
নিজের দল থেকে কোন কল্যাণমূলক কাজ হলেই তাকে সমর্থন করবে আর পছন্দ করবে, কিন্তু অন্য কোন দল থেকে হলে তা পছন্দ করবে না আর তা তোমার ভালো লাগবে না - এমন অবস্থায় ইবাদত প্রকৃতপক্ষে আল্লহর জন্য হয় না, বরং দলের জন্য হয়।
.
কেননা, যদি ইবাদত আল্লহর জন্যে হতো, তাহলে যতোভাবে, যতো পথে আল্লহর দ্বীনের প্রচার-প্রসার হতো, হৃদয় ততোই বিমোহিত ও আনন্দিত হতো।

আল্লহ বলেনঃ
#তোমরা আল্লহর রজ্জুকে শক্তভাবে আকড়ে ধর এবং পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। [সুরা আল-ইমরানঃ ১০৩]

#তিনি তোমাদের নাম রেখেছেন মুসলিম, এর আগে এবং এখানেও (কুরআনে) ............ আল্লহতা’য়ালার রশি শক্তভাবে ধর । [সূরা হাজ্জ : ৭৮]

#হে মানুষ তোমরা যারা ঈমান এনেছো, আল্লহকে ভয় কর, ঠিক যতটুকু ভয় তাকে করা উচিত, (আল্লহর কাছে সম্পূর্ন আত্মসমর্পনকারী) মুসলিম না হয়ে মৃত্যু বরন করো না। [সুরা আল-ইমরানঃ ১০২]

#তার(আল্লহর) কোন শরীক নাই এবং একথা (বলার জন্যই) আমাকে আদেশ দেওয়া হয়েছে, মুসলমানদের মধ্যে আমিই(মুহাম্মাদ) হচ্ছি সর্ব-প্রথম। [সুরাঃ আন’আমঃ ১৬৩]

#আল্লহ তা'আলা বলেন :- সুতরাং যদি তারা পৃষ্ঠ-প্রদর্শন করে, তবে তোমার দায়িত্ব তো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া। [ সূরা আন-নাহল, আয়াত ৮২]

#উপদেশ ফলপ্রসূ হলে উপদেশ দান করুন। যে ভয় করে, সে উপদেশ গ্রহণ করবে। আর যে হতভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে। সে মহা-অগ্নিতে প্রবেশ করবে। অতঃপর সেখানে সে মরবেও না, জীবিতও থাকবে না।(সূরা আল আ'লা ৮৭/৯-১৩)

#আমাদের রব! আমাদের উপর ধৈর্যধারণের শক্তি দান করুন এবং আমাদেরকে মুসলিম হিসাবে মৃত্যু দান করুন। [আল আ‘রাফঃ ১২৬]





https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=2344243349143056&id=100006722419436

https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=2133305930236800&id=100006722419436

https://www.facebook.com/permalink.php?story_fbid=1959927264241335&id=100006722419436



No comments:

Post a Comment

বাচ্চাদের প্রাথমিক রুকইয়াহ ও বিধিনিষেধ

প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ  ১।   মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে - দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি,...