প্রাথমিক রুকইয়াহ পদ্ধতিঃ
১।
মানুষ ও জ্বীনের বদনজর ও জ্বীনের আছর থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়তে -
দুরুদে ইব্রাহিম, সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক ও নাস প্রতিটি ৩বার করে পড়ে ডান কানে হালকা করে ফুঁ দিয়ে অতঃপর সমস্ত শরীরে ফুঁ দিয়ে দিতে হবে প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায়।
আর ঘুমাতে যাওয়ার সময় এগুলো পড়েই নিজ দুই হাতের তালু একত্র করে ফুঁ দিয়ে বাচ্চার শরীরের মাথা থেকে পা পর্যন্ত হাত দিয়ে মুছে/মাসেহ করে দিতে হবে এবং নিজের উপরেও প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে ডান হাত দিয়ে প্রথমে মাথা থেকে সামনের দিকে পা পর্যন্ত আবার মাথা থেকে পেছনের দিকে পা পর্যন্ত। অতঃপর দুই হাত দিয়ে মাথা থেকে দুই পার্শ্ব একই সাথে কিংবা আলাদা ভাবে মুছে দিতে হবে।
২।
এই দুআটি সকাল-সন্ধ্যা ৩ বার করে পড়ে ফুঁ দিয়ে দিতে হবেঃ
রছুল ছঃ হাসান ও হুসাইন রঃ -এর জন্য এই বলে (আল্লাহ্র) আশ্রয় প্রার্থনা করতেন-
أُعِيْذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللّٰهِ التَّامَّةِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَّهَامَّةٍ، وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لاَمَّةٍ
অর্থঃ আমি তোমাদের দু’জনকে আল্লাহ্র পরিপূর্ণ কালেমাসমূহের আশ্রয়ে নিচ্ছি যাবতীয় শয়তান ও বিষধর জন্তু থেকে এবং যাবতীয় ক্ষতিকর চক্ষু (বদনযর) থেকে।
উচ্চারণঃ উ‘ইযুকুমা বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তাম্মাতি মিং কুল্লি শাইত্ব-নিওঁয়া হা-ম্মাহ্, ওয়ামিং কুল্লি য়া'ইনিল্লা-ম্মাহ্
(বুখারী ৪/১১৯, নং ৩৩৭১; ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীস থেকে)
৩।
এই দুআটি সকাল-সন্ধ্যা ১ বার পড়ে ফুঁ দিয়ে দিতে হবেঃ
اللَّهُمَّ رَبَّ النَّاسِ أَذْهِبِ الْبَاسَ، اشْفِهِ وَأَنْتَ الشَّافِي، لاَ شِفَاءَ إِلاَّ شِفَاؤُكَ، شِفَاءً لاَ يُغَادِرُ سَقَمًا
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা রব্বান্নাসি আযহিবিল বা’স, ইশফিহি ওয়া আংতাশ শা-ফী-, লা শিফা-আ ইল্লা শিফা-উক, শিফা-আন লা-ইউ গ-দিরু সাক্বমা-
৪।
উত্তমরূপে পানি পড়া তৈরি করে নিতে হবে যা প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ বেলা খাওয়াতে হবে এবং চোখে মুখে ছিটা দিয়ে দিতে হবে।
গোসলের সময় মগের পানির সাথে পড়া পানি বিসমিল্লাহ বলে একটু মিশিয়ে নিয়ে পানি মাথায় ঢেলে দিতে হবে।
পানি পড়া তৈরির পদ্ধতিঃ
ক) অজুসহ পাকপবিত্র অবস্থায় মানুষ ও জ্বীনের বদনজর এবং জ্বীনের আছর ও শয়তানের কুপ্রভাব থেকে হিফাযত ও শিফার নিয়ত মনে মনে করে নিতে হবে।
খ) প্রথমে আউজুবিল্লা বলে শুরু করে দুরুদে ইব্রাহিম (৩বার) এরপর বিসমিল্লাহ সহকারে সুরা ফাতিহা, আয়াতুল কুরসি, ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস প্রতিটি ৭বার করে ধীরস্থীর সহিহ উচ্চারণে পড়ে হাত স্পর্শ ব্যতিত পরিস্কার পানিতে ফুঁ দিতে হবে। ফুঁ দেয়ার ক্ষেত্রে একেকবার পড়ার পরেই একবার ফুঁ দিতে হবে। অর্থাৎ দুরুদ একবার পড়া হলে একবার ফুঁ পুনরায় পড়ে আবার ফুঁ এভাবে ফুঁ দিতে হবে।
গ) সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত ১ বার পড়ে ফুঁ দিতে হবে।
ঘ) একবার তৈরী করা পানি কয়েকদিন ব্যবহার করা যাবে। এক্ষেত্রে পড়া পানির পাত্র নিচে না রেখে উঁচুতে রাখতে হবে।
বিধিনিষেধঃ
১। মাগরিবের ১০-১৫ মিনিট পূর্ব থেকে পরের ১০-১৫ পর্যন্ত বাচ্চাদের নিয়ে বের হওয়া যাবে না।
২। বাচ্চাদের রুমে (পুরো বাসাতেই রাখা ঠিক না) কোন প্রকাশমাণ প্রাণীর ছবি ও পুতুল রাখা যাবে না।
৩। মাগরিবের ২০মিনিট পুর্বে দরজা ও জানালা বিসমিল্লাহ বলে বন্ধ করে দিতে হবে এবং মাগরিবের ১৫-২০ মিনিট পর খুলে দেয়া যাবে যদি প্রয়োজন হয়। খোলার সময় বিসমিল্লাহ বলে খুলতে হবে।
৪। রাতের বেলা অযথা বাচ্চাকে বাহিরে নেয়া যাবেনা।
৫। বাচ্চাকে জাগ্রত অবস্থায় বিশেষ করে রাতে বেলা একাকি রাখা যাবে না।
৬। ছলাত আদায়ের সময় বাচ্চাকে সাথে নিয়ে ছলাত শুরু করা উচিত এরপরে সে যা করে করুক।