ঈমানদার নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান, তাছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। (সূরা-নূর : ৩১)
অন্য এক হাদিসে আল্লহর রছূল (সা.) এরশাদ ফরমান- আমি জাহান্নামে মহিলাদের অনেক রকমের আযাবে ভোগতে দেখেছি, তন্মধ্যে একজনকে চুলের সাথে উল্টা লটকিয়ে রাখা হয়েছে, যার মগজ খুলে খুলে ঝরছে। তার পাপ ছিলো সে পর পুরুষের সামনে মাথার চুল ঢেকে রাখতোনা। (আল কাবায়ের, পৃষ্ঠা ১৭৭)
কোনো মহিলা বিনা ওজরে তার স্বামী থেকে তালাক চাইলে সে বেহেস্তের গন্ধও পাবে না। (ইমাম আহমদ, আবু দাউদ, তিরমীজি ও ইবনে মাজাহ)
পর্বঃ ২
#নারী, #নারীর_পর্দা ও #নারীর_ব্যবহার #এবং_বিয়ে
বিবাহ স্বামী-স্ত্রীর মাঝে একটি সুদৃঢ় বন্ধন। আল্লহ তাআলা এর চির স্থায়িত্ব পছন্দ করেন, বিচ্ছেদ অপছন্দ করেন। ইরশাদ হচ্ছে:
‘তোমরা কীভাবে তা (মোহরানা) ফেরত নিবে ? অথচ তোমরা পরস্পর শয়ন সঙ্গী হয়েছ এবং তোমাদের নিকট সুদৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণ করেছে।’ [নিসা : ২১]
এ চুক্তিপত্র ও মোহরানার কারণে ইসলাম স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মাঝে কতক দায়দায়িত্ব ও অধিকার নিশ্চিত করেছে। যা বাস্তবায়নের ফলে দাম্পত্য জীবন সুখী ও স্থায়ী হবে—সন্দেহ নেই। সে সব অধিকারের প্রায় সবগুলোই সংক্ষেপ আকারে বর্ণিত হয়েছে কুরআনের আয়াতে: ‘যেমন,
নারীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমন তাদের জন্যও অধিকার রয়েছে ন্যায্য-যুক্তিসংগত ও নীতি অনুসারে। তবে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব পুরুষদের। আল্লহ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ [বাকারা : ২২৭]
আল্লহ তাআলা এই আয়াতে বর্ণনা করেছেন যে, প্রত্যেকের উপর প্রত্যেকের অধিকার রয়েছে। যদিও আনুগত্য এবং রক্ষনা-বেক্ষন ও অভিভাবকত্বের বিবেচনায় শ্রেষ্ঠত্ব পুরুষদের।
এখানে আমরা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের মাঝে
#স্বামী_স্ত্রীর মধ্যে ভালোবাসাটা হলো সবচাইতে বেশি অন্তরঙ্গ। তবু কিন্তু স্বামীকে একটু নিজের মান বাঁচিয়ে রাখতে হবে। মাঝে মাঝে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে মনো মালিন্য হয় এক্ষেত্রে স্ত্রী যদি ভুল করে তার ভুল বুঝে স্বামীর কাছে মাফ চাইবে এক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীর পায়ে ধরলেও দোষের কিছু নাই কিন্তু স্বামী যদি ভুল করেন তাহলে তাঁর মাফ চাওয়ার ধরনটা কিরকম হবে, তিনি কি স্ত্রীর পায়ে ধরবেন ...... সেটা কেমন দেখাবে? আর স্ত্রী যদি অবুঝ হয় (তিনি হয়ত শিক্ষিত তা কোন ব্যাপার নয়) এবং অন্যদের ব্যাপারটা প্রকাশ করে দেয় তাহলে ব্যাপারটা কেমন দেখাবে .......? স্ত্রীর প্রতি স্বামীর যেমন অগাধ বিশ্বাস এবং ভালোবাসা থাকবে তেমনি সতর্কও থাকতে হবে যাতে করে ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় তিনি ভুল করে না বসেন। অনেক স্ত্রীকে দেখা যায় তিনি খুব ধার্মিক এবং স্বামী ভক্ত অথচ তাঁর আচার-আচরণ চাল চলন ও যাতায়াত পরপুরুষে দৃষ্টি এড়াতে পারে না এবং নিজেকে গুণী-জ্ঞানী বা দামি ভাবার জন্য স্বামীর অনেক একান্ত বিষয় অবলীলায় বলে ফেলেন যেকারণে স্বামীর মান অন্যের কাছে অক্ষুণ্ন থাকে না, হয়তোবা স্বামী তা জানেন না বা বুঝতে পারেন না।
#নারী_পুরুষের_পোশাক_ও_আচরণ : কখনো দেখা যায় মহিলারা শার্ট প্যান্ট পরে হাটে-বাজারে মার্কেটে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের অভিশপ্ত বলে নিচের হাদিসে আল্লহর রসূল (ছ.) ঘোষণা করেছেন-
ابن عباس رضي الله عنهما- لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم الرجل يلبس لبس المرأة ، والمرأة تلبس لبس الرجل - رواه الإمام أحمد وأبو داود
হযরত ইবনে আব্বাস (র.) থেকে বর্ণিত, নাবী (ছ.) ঐসকল পুরুষকে অভিশম্পাত করেছেন যারা নারীদের পোশাক পরে এবং ঐসকল নারীদের অভিশম্পাত করেছেন যারা পুরুষদের পোশাক পরে। (আবু দাউদ, মুসনাদে আহমদ)
চাল-চলন, কথা-বার্তা ইত্যাদি যাবতীয় আচরণে পুরুষ-মহিলা একে অপরের অনুকরণ করাকে আল্লহর রছূল লানত করেছেন-
لعن رسول الله صلى الله عليه وسلم المتشبهين من الرجال بالنساء ، والمتشبهات من النساء بالرجال -رواه البخاري
হযরত মুহাম্মদ ছঃ (সা.) ঐসকল পুরুষকে অভিশম্পাত করেছেন যারা নারীদের অনুকরণ করে এবং ঐসকল নারীদের অভিশম্পাত করেছেন যারা পুরুষদের অনুকরণ করে।
(সহীহ মুসলিম, মুসনাদে আহমদ)
পশ্চিমা সংস্কৃতি আজ আমাদের এমনভাবে ঘ্রাস করেছে, বোরকাতো দূরের কথা ঠিকমত ঢিলেঢালা কাপড়টাও পরা মেয়েরা অপছন্দ করে, ছোটখাটো পোশাকটাই তাদের কাছে বেশি পছন্দের, যা আজ সমাজে পুরুষদের নারীদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট করতে উৎসাহিত করছে এবং সমাজে দিন দিন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে।
অমুসলিমদের অনুকরণ করে চলা বা পোশাক পরার ব্যাপারে হুজুর (ছ..) এরশাদ ফরমান-
عن ابن عمر رضي الله عنهما (من تشبه بقوم فهو منهم) مسند أحمد
ইবনে ওমর (রা.) হুমা থেকে বর্ণিত- যে ব্যক্তি যে সম্প্রাদায়ের অনুকরণ করবে সে তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমদ)
من لبس ثوب شهرة في الدنيا البسه الله ثوب مذلة يوم القيام، ثم الهب في النار – رواه أبي داود
যে দুনিয়ার খ্যাতি অর্জনের আশায় পোশাক পরবে আল্লহ তায়লা তাকে কেয়ামতের দিন অপমানের পোশাক পরাবেন এবং উদ্দীপ্ত আগুনে নিক্ষেপ করবেন। (আবু দাউদ)
রছূলুল্লহ (ছ.) বলেছেন, তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তী জাতিদের ধর্মাদর্শকে এমনভাবে আস্তে আস্তে অল্প অল্প করে এক হাত এক হাত করে অনুসরণ-অনুকরণ করবে শেষ পর্যন্ত তারা যদি হিংস্র সন্তুর গুহায়ও প্রবেশ করে তাহলে তোমরাও তাতে প্রবেশ করবে। সাহাবায়ে কিরাম জিজ্ঞেস করলেন: হে আল্লহর রছূল: পূর্ববর্তী জাতি কি ইয়াহুদী নাছারা? উত্তরে নাবী ছঃ বললেন- এছাড়া আর কারা? (মুসলিম)
পর্বঃ ৩
#নারী_তুমি_তো_রানী
মায়ের চোখে,বাবার চোখে, ভাইয়ের চোখে,সন্মানিত আর স্বামীর আদুরীনি।
তাহলে এই সাজ কেন পরপুরুষ এর জন্য সাজো।এই সুগন্ধি কেন তাদের জন্য বিলাও।
মহান আল্লহ্ সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। মানব সমাজে এ পরম আকর্ষণের প্রতি ইসলাম বিধি-নিষেধ আরোপ করে সৌন্দর্য চর্চার একটি মাপকাঠি রচনা করে দেয় যাতে ভারসাম্যপূর্ণভাবে তার চর্চা হয় ও অশ্লীলতার কারণ না হয়ে যায়। তাই প্রতিটি মুছলিম নর-নারীর কর্তব্য হলো, সৌন্দর্য চর্চাকে স্বীয় স্বামী ও মহিলা অঙ্গন পর্যন্ত সীমিত রাখা। মুহরিম ব্যক্তিদের পর্যন্ত তা সম্প্রসারিত করা দোষণীয় নয়। এছাড়া অন্যদের সামনে সাজ-গোজের কোন মূল্য নেই।
#স্বামীর_উদ্দেশ্য_সাজ_সজ্জা_গ্রহণ:
স্বামীর উদ্দেশ্য সাজসজ্জা গ্রহণ করা একটি ছওয়াবের কাজ। স্বামীর উদ্দেশ্য সাজসজ্জায় থাকার জন্য স্ত্রীর প্রতি শরীয়তে নির্দেশ রয়েছে। বর্তমানে নারীদের অবস্থা হলো, স্বামীর সামনে তারা নোংরা অপরিছন্ন ও ময়লা কাপড়-চোপড় পরে থাকে। আর বাইরে বেড়াতে যাওয়ার সময় আপাদমস্তক সুসজ্জিত হয়ে যায়। কেউ স্বামীর উদ্দেশ্য সাজ-সজ্জা গ্রহণ করলে সমালোচনা শুরু হয়ে যায় যে, মেয়েটির লাজ-লজ্জা বলতে কিছুই নেই- স্বামীর সামনে সে কেমন রূপচর্চা করছে!
পরিতাপের বিষয়! যেখানে সাজসজ্জা গ্রহণ করা উচিত সেখানে তা নিন্দনীয়। আর যেখানে
সাজসজ্জা গ্রহণ করা উচিত নয় সেখানে তা প্রশংসনীয়। স্বামী যখন স্ত্রীর সাজ-সজ্জা কামনা করে তখন তা গ্রহণ না করার কি যুক্তি থাকতে পারে?
আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, মহিলারা স্বগৃহে তো বাদী-দাসী ও গৃহপরিচালিকার ন্যায় অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন থাকে। আর যখন কোন বিশেষ অতিথির আগমন ঘটে তখন বিভিন্ন সাজ-সজ্জায় সজ্জিত হয়ে সম্পূর্ণ আকর্ষণীয় হয়ে যায়।
প্রতিটি জিনিসের একটি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থাকে। আমার প্রশ্ন, ভাল কাপড়-চোপড় পরিধানের উদ্দেশ্য কি শুধু অন্যদেরকে দেখানো? অদ্ভুত কা-ন্ড! যাকে দেখানের জন্য এই কাপড়-চোপড়ও সাজ পোশাক তৈরি হয়েছে, যার টাকায় তৈরি বা কেনা হয়েছে, তার সামনে তা পরিধান না করে অন্যদের সামনে পরিধান করা হয়। বিষয়টা কিছুটা লজ্জাজনক হলে ও সংশোধনের প্রয়োজনের বলতে হচ্ছে। বোনেরা এখন তো এক নতুন পোষাক বের হয়েছে। প্লাজো, আর হাপ সার্ট /গেন্জি। কোন মতে এসব পড়ে বাসায় থাকেন। আর বাহিরে ফিটিং আপাদমস্তক মেকআপ।সেটআপ পারফিউম,এটা ওটাদিয়ে পর পুরুষের যৌন ক্ষুদা ও চোখের জেনার ব্যাবস্থা করে বেরান। বলি কেন হে বোন?
আজকালকার স্ত্রীরা স্বামীর সঙ্গে কখনও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কথা বলবে না । তার সামনে ভাল কাপড়-চোপড় পরিধান করবে না। অথচ অন্যের গৃহে গেলে সুমিষ্টভাষী বনে যাবে, সুন্দর থেকে সুন্দরতম এবং উন্নত থেকে উন্নততর সাজে সজ্জিত হবে এ কেমন কথা? অর্থ খরচ করবে স্বামী আর উপভোগ করবে অন্যরা?
মাহরাম ব্যতীত অন্য লোকদের উদ্দেশ্যে সৌন্দর্য চর্চা করা:
যাদের জন্য সৌন্দর্যচর্চা করা জায়েয তারা হলো, স্বামীসহ ঐ সকল পুরুষ যাদের সাথে মেয়ে লোকের বিয়ে চিরস্থায়ীভাবে হারাম। তাদের তালিকা হচ্ছে: নিজ বাপ, ভাই, ছেলে, ছেলের ছেলে, শ্বশুর, স্বামীর ছেলে ইত্যাদি।
তবে শর্ত হলো, ওই ব্যক্তিকে আমানতদার হতে হবে যিনি আল্লাহ্কে ভয় করেন। সে যদি ফাসিক ও গুনাহগার হয় তাদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশ করা জায়েয নেই, সেটা নিজ ভাই হলেও না। অনুরূপভাবে মহিলারা অমুসলিম মহিলাদের সামনে সৌন্দর্য প্রকাশের বিষয়ে মতভেদ রয়েছে। পবিত্র কুরআনের নিম্নোক্ত বাণীটি তার সুস্পষ্ট প্রমাণ।
মহান আল্লহ্ বলেন. অর্থাৎ ‘তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর. পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভাগিনা, স্ত্রীলোক, অধিকারভুক্ত দাসী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত অন্য কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে’। (সূরা আন-নূর: ৩১)
মহিলারা আয়াতে বর্ণিত সকল লোক ব্যতীত অন্যদের সামনে সুসজ্জিতাবস্থায় যতবারই আসুক ততবারই তাদের গুণাহ হবে।
বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু মূসা আল আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদীস থেকেও এ মর্মে একটি হাদীস বর্ণিত আছে।
রছূল (ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম) ইরশাদ করেন: ‘প্রত্যেক চোখ যেনা করে। মেয়েলোক যখন সুগন্ধি মেখে কোন মজলিশের পাশ অতিক্রম করে, সেও যেনাকারিণী”। (আবু দাউদ ও তিরমিযী)
এর অর্থ হলো, সে যেনার প্রতি আহ্বানকারিণী। এ প্রকার তৎপরতার জন্য সে গুনাহগার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।
বোন আপনী হবেন রানী,কেন আপনী নিষিদ্ধ নারীদের খাতায় নাম দিচ্ছেন।কেন এই জাহিলিয়াতিদের অনুসরন করবেন। আপনিই তো আপনার সন্তানের চোখে শ্রেষ্ঠ মা হবেন।স্বামীর আদুরীনি ও তার রানী। পরিবারের আদর্শ। নিজেকে সবার সাথে এভাবে বন্টন করে কেন নিজেকে ছোট করছেন?
বোন ফিরে আসুন ফিরে আসুন শান্তি ও প্রশান্তি সন্ধানে হারিয়ে যেতে। রব্বের কাছে মন খুলে চাইতে গভির রাতে চোখের পানিতে শিক্ত হতে।
বোন আপনি তো দুনিয়ার চোখে রানী
আল্লহ আমাদের বোনদের নিজেদের সন্মান করার মত বুদ্ধি বিবেচনা দান করুন।এবং বুঝার ক্ষমতা বারিয়ে দিন। আমিন ছুম্মা আমিন
পর্বঃ ৪
মহান আল্লহ তায়ালা পবিত্র কুুরআনের সূরা আহযাবে বলেছেন,,
“ "হে নাবী, বলুন আপনার স্ত্রী ও কন্যাদেরকে এবং বিশ্বাসী নারীদেরকে যে, তাঁরা যেন তাঁদের বহিরাবরণ পরে থাকে (যখন বাইরে যাবে)। এটা তাঁদের পরিচিতির অত্যন্ত উপযোগী। (তাঁরা যেন পরিচিত হয় বিশ্বাসী নারী হিসেবে) তাহলে আর অহেতুক উৎপিড়ীত হবে না। আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল দয়াবান।["৩৩:৫৯] ”
সাধারণত ইসলাম সর্বাবস্থায় নারীদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখার কথা বলে না। এ সম্পর্কে হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত,
“ "রছূল (ছঃ) বলেন, অবশ্যই প্রয়োজনে তোমাদের (নারীদের) বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে।"[সহিহ বুখারী]”
তবে, সেক্ষেত্রে দূর যাত্রা হলে সাথে মাহ্রম নিতে হবে। মাহ্রম হল সাথে কোনো পুরুষ অভিভাবক থাকা। এ সম্পর্কে সহীহ বুখারী শারীফে হযরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণিত,
“ "রছূলুল্লহ (ছঃ) বলেছেন, মাহ্রমের উপস্থিতি ব্যতীত কোনো পুরুষ কোনো নারীর সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে না। এক ব্যক্তি ওঠে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রছূলুল্লহ! আমার স্ত্রী হজ্বে বেরিয়ে গেছে। এবং অমুক অমুক জিহাদে অংশগ্রহণের জন্য আমার নাম তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। নাবী (ছঃ) বললেন, ফিরে যাও এবং স্ত্রীর সাথে হজ্ব সমাপন কর।[সহিহ বুখারী"] ”
নারীদের ক্ষেত্রে এমন কোনো রঙিন পোশাক পরে বাইরে বের হওয়া নিষেধ যা অন্যের দৃষ্টি আকৃষ্ট করে। নারীর পোশাক যেন এত ক্ষীণ ও পাতলা কিংবা লাগোয়া বা চিপেচাপা না হয় যা তার দেহ আবরণের জন্য যথেষ্ট নয়। ঢিলেঢালা এবং শালীন পোশাকেই নারীর প্রকৃত সৌন্দর্য ও সুরক্ষা নিহীত।
পুরুষদের আকৃষ্ট করার জন্য সুগন্ধি মেখে ঘরের বাইরে বের হতে রছূল (ছ.) নিষেধ করেছেন। তিনি এমন পোশাক পরতেও মানা করেছেন যা পুরুষদের পোশাকের সাথে মিলে যায়। বিধর্মী নারীদের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কোনো পোশাক পরিধান করা এবং গর্ব ও অহঙ্কারের জন্য দামি পোশাক পড়ে মানুষকে দেখানো থেকেও বিরত থাকতে ইসলাম নারীকে তাগিদ দিয়েছে।
এ বিষয়টিও মনে রাখতে হবে, রসুল (ছ.) স্পষ্টভাবে বলেছেন, সুন্দর সুন্দর জামা পরিধান করা কিংবা পোশাকে পরিপাটি হয়ে থাকা অহঙ্কার নয়। বরং আল্লহ পাক সুন্দর এবং তিনি বান্দার সৌন্দর্যকে ভালোবাসেন। এগুলো অহঙ্কার হিসেবে তখনই গণ্য হবে যখন কেউ সুন্দর জামা গায়ে দিয়ে অন্যকে তুচ্ছ করে এবং নিজেকে সবার চেয়ে দামি ও সুন্দর ভাবতে থাকে।
খুব সংক্ষেপে ইসলামের পোশাক সম্পর্কিত নির্দেশনা কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন। আরবদের পোশাক কিংবা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির পোশাক দেখে অন্ধ অনুসরণ নয়, বরং পবিত্র কুরআন ও হাদীসে নববীতে যেভাবে মুসলমান পুরুষ ও নারীদের জন্য আবরণের কথা বলা হয়েছে, সেভাবে মেনে চলার মধ্যে প্রকৃত শান্তি ও সম্মান এবং নিরাপত্তা নিহিত।
ভুলে গেলে চলবে না, নিজেদের যুক্তি ও প্রবৃত্তির লালসাকে আল্লহর জন্য ত্যাগ করে তার বিধান ও হুকুমের সামনে অবনত হওয়ার নাম ইসলাম। অনেকে আজ নানা অজুহাতে ও প্রলোভনে সুকৌশলে মুসলিম দের এ পোশাক সৌন্দর্য ও আদর্শ কেড়ে নিতে চাইছে। এসব ধোঁকা থেকে সজাগ থাকা আজ ঈমানের দাবি।হে বোন আমার এখনও কি ভেবে দেখবেননা!
বোন আপনি নিজেকে পুরুষের সমান ভাবতে গিয়ে আজ পদে পদে নিজেকে ছোট করছেন বাসে,ট্রেনে রাস্তা ঘাটে কত শত আনাচে কানাচে লজ্জিত হচ্ছেন। ছোট করছেন পরিবার এর কাছে ছোট করছেন সন্তান ও স্বামীর কাছে। ছোট ও অপ্রীয় হয়ে উঠছেন রব্ব এর কাছে। এখনও কি আপনার হুস ফিরবেনা বোন আমার। ইসলাম নারীদের দিয়েছে অগ্রাধিকার সমান অধিকার নয়। বোন নিজেকে সন্মান করা শিখুন। নির্লজ্জতা ও অপমানিত জীবন কে বেছে নিবেননা না ফিরে আসুন জাহিলিয়াত থেকে।। নিজেকে সন্মান করুন দেখবেন আপনি সম্মানের হতে পারবেন সবার চোখে ইং শা আল্লহ।।।
বোন আপনি তো রাজ কন্যা বাবার চোখে,
বেন আপনি রানী হবেন স্বামীর চোখে,
আর সন্তানদের চোখে চোখ জুরানো
ভালোবাসার নীর আদর্শ মা।
আর আপনি যদি টপস,জিন্স,পাতলা ফিনফিনে জামা,পাতলা বোরখা,দশতালা হিজাব,ইহুদিদের মত,শাড়ী বেপর্দা হয়ে বাহিরে চলেন তাহলে একদিন আপনার কন্যা সন্তানটি আপনাকে অনুকরন করে করে আপনার সাথেই যোগ দিবে।
আর পুত্র সন্তানটি কু দৃষ্টি সম্পন্ন পুরুষে পরিনত হতে পারে।(আল্লহু আলাম)
হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতে কল্যাণ দিন। আর আখিরাতেও কল্যাণ দিন এবং আমাদেরকে আগুনের আযাব থেকে রক্ষা করুন।
রব্বানা--- আ-তিনা-ফিদ্ দুন্ইয়া-হাছনাতাওঁ অয়াফি-ল্ আ-খিরতি হাছানাতাওঁ অয়াক্বিনা-‘আয্বা-বান্না-র।
সূরা আল বাকারাহ - ২:২০১
পর্বঃ ৫
📖#নারীর_শিক্ষা_সম্পর্কে_ইসলামের_নির্দেশনা
বিছ্ মিল্লা-হির রহমা-নির রহি---ম
ٱقْرَأْ بِٱسْمِ رَبِّكَ ٱلَّذِى خَلَقَ
( তুমি পড়ো তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন, --)
সূরা আলাক্ব (العلق), আয়াত: ১
জ্ঞানার্জনের কোনো বিকল্প ইসলামে নেই। ইসলামের প্রাথমিক যুগে জ্ঞানচর্চার যে প্রবাহ শুরু হয়, নারীরাও সেখানে শামিল হয়েছিল। পরবর্তীতে আববাসীয় ও উমাইয়্যা যুগে নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটে।[ফাতেমা আলী, ইসলামে নারী, ঢাকাঃ মদীনা পাবলিকেশন্স, ১৯৯৫, পৃ. ৩৫-৪১।]
ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য না করে উভয়কে সমভাবে জ্ঞানার্জনের আদেশ দিয়েছে, কুরআনের নির্দেশও তাই। কুরআন সকল পাঠককেই আদেশ করছে পড়তে, চিন্তা-গবেষণা করতে, অনুধাবন করতে, এমনকি বিশ্ব প্রকৃতির মাঝে লুক্কায়িত বিভিন্ন নিদর্শন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে।
নাবী (ছ.) এর কাছে প্রথম যে ওহী নাযিল তার প্রথম শব্দ ছিল ‘ইকর-' ’অর্থাৎ পাঠ কর। এখানে স্ত্রী-পুরুষ সকলকেই পাঠ করতে বলা হয়েছে। সুতরাং জ্ঞানার্জন শুধুমাত্র পুরুষের জন্য সীমাবদ্ধ করা হয়নি, পুরুষের মত নারীকেও জ্ঞানার্জনের পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে। নাবী (ছ.) প্রত্যেক মুছলিম নর-নারীর জন্য জীবনব্যাপী জ্ঞানের সাধনা করার নির্দেশ দিয়েছেন। এমনকি তিনি ক্রীতদাসীদেরকেও শিক্ষার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দান করেছেন। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই নাবী (ছ.) বক্তৃতার আসরে যোগ দিতেন। বদর যুদ্ধে বন্দীদের শর্ত দেওয়া হয়েছিল, তাদের মধ্যে যে কেউ দশজন মুসলিমকে বিদ্যা শিক্ষা দিবে তাদের প্রত্যেককেই বিনা মুক্তিপণে ছেড়ে দেওয়া হবে।
ইসলামে পার্থিব শিক্ষা লাভ করার জন্য নারীকে শুধু অনুমতিই দেওয়া হয়নি; বরং পুরুষের শিক্ষা-দীক্ষা যেমন প্রয়োজন মনে করা হয়েছে, নারীদের শিক্ষা-দীক্ষাও তদ্রূপ মনে করা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে ইসলাম নারী-পুরুষের মধ্যে কোনো পার্থক্য করে নি, উভয়ের অধিকার সমান।
আবুদ্দারদা রদিয়াল্লহু ‘আনহু বলেন, ‘‘কিয়ামতের দিন মর্যাদার দিক দিয়ে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি বলে সাব্যস্ত হবে সেই আলিম, যার ইলমের দ্বারা কোনো কল্যাণ সাধিত হয় না।’’
[দারেমী, সুনান, প্রাগুক্ত, পৃ. ৯৪।]
এছাড়াও জ্ঞানীদের সুউচ্চ মর্যাদা বর্ণনা করতে গিয়ে রাসূল ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম বলেছেন,
«وَإِنَّ العَالِمَ لَيَسْتَغْفِرُ لَهُ مَنْ فِي السَّمَوَاتِ وَمَنْ فِي الأَرْضِ حَتَّى الحِيتَانُ فِي المَاءِ، وَفَضْلُ العَالِمِ عَلَى العَابِدِ، كَفَضْلِ القَمَرِ عَلَى سَائِرِ الكَوَاكِبِ، إِنَّ العُلَمَاءَ وَرَثَةُ الأَنْبِيَاءِ»
‘‘জ্ঞানী ব্যক্তির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে আকাশ ও পৃথিবীর অধিবাসীরা, এমনকি পানির নিচের মাছ। অজ্ঞ ইবাদত গুজারের তুলনায় জ্ঞানী ব্যক্তি ঠিক সেরকম মর্যাদাবান, যেমন পূর্ণিমার রাতের চাঁদ তারকারাজির উপর দীপ্তিমান। আর জ্ঞানীগণ নবীদের উত্তরাধিকারী।’’
[সুনান আত্-তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৮২।]
অতএব, নারীদের শিক্ষা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরী। কেননা, নারী কখনো মা, কখনো বোন, কখনো ছাত্রী আবার কখনো পরিবারের কর্তী হিসেবে আবির্ভূত হন। তাছাড়া মা ই তার সন্তানের প্রথম শিক্ষক। সামগ্রিকভাবে সুশিক্ষিতা মা স্বভাবতই জ্ঞানী, চরিত্রবান, ব্যক্তিত্ব সম্পন্না, নিষ্ঠাবান, নম্র ও ভদ্র। শিক্ষিত মায়ের এসব গুণ আপনাআপনিই সন্তানের মধ্যে সঞ্চারিত হয়।
নারীরা শুধু শিক্ষিত নয়, শিক্ষকও হতে পারেন। রসূল ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া ছাল্লামের স্ত্রী আয়েশা রদিয়াল্লহু ‘আনহা ছিলেন অন্যতম একজন শিক্ষক। এছাড়াও উম্মে সালমা, উম্মে হাবিবা, হাফসা, আসমা বিনতে আবু বকর, মায়মুনা, উম্মে হানী প্রমুখ মহিলা সাহাবিয়ার নাম প্রথম সারিতে এসে যায়।
অতএব আল্-কুরআন ও সুন্নাহর এই অমোঘ নির্দেশের মধ্য দিয়ে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, ইসলাম নারী শিক্ষার উপর অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করেছে। শিক্ষার অধিকার প্রদানের মাধ্যমেই ইসলাম নারীকে সুউচ্চ স্থানে অধিষ্ঠিত করেছে। কারণ, বিশ্বাসী ও জ্ঞানীদের উচ্চাসন দেবেন বলে আল্লহ্ নিজেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
[ইসলামী দৃষ্টিতে নারী : একটি সমীক্ষা, ঢাকা, ইসলামিক ফাউন্ডেশন পত্রিকা, ৩৬ বর্ষ, ৩য় সংখ্যা, জানু-মার্চ, ১৯৯৭, পৃ. ৫৫]
মহান আল্লহপাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তাঁর ইবাদতের জন্য। পবিত্র কূরআনে ইরশাদ হচ্ছে- ‘আমি সৃষ্টি করেছি জিন ও মানুষকে এই জন্য যে, তারা একমাত্র আমারই ইবাদত করবে’ (সূরা জারিয়াত, আয়াত -৫৬)।
একমাত্র আল্লহর ইবাদত করার নির্দেশ দিয়ে মহান আল্লহপাক ইরশাদ করেন- ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের সেই প্রতিপালকের ইবাদত কর যিনি তোমাদেরকে ও তোমাদের পূর্ববর্তীদেরকে সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা মুত্তাকী হতে পার’ (সূরা বাকারা: আয়াত-২১)।
সেই ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য আল্লহপাক একটি শর্ত যুক্ত করেছেন। সেই শর্তটি হচ্ছে ইলিম বা জ্ঞান। ইলম বা জ্ঞান ব্যতীত কোন ইবাদত আল্লহর দরবারে কবুল হবে না। এজন্য ইবাদত করার পূর্বে এ সম্পর্কে শিক্ষা অর্জন করা সকলের উপর ফরজ। শিক্ষা লাভ করা থেকে নর-নারী কাউকে বাদ দেয়া যাবে না। কেউ বিরত থাকতে পারবে না। আল্লহপাক পুরুষকে যেমন শিক্ষা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন তেমন নারীকেও শিক্ষা অর্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লহর বিধানে শিক্ষা অর্জন করা নর-নারীর সমান অধিকার। শিক্ষা ক্ষেত্রে সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য পবিত্র কোরআন নাজিল করে মহান আল্লহপাক সর্ব প্রথম যে নির্দেশ দিয়েছেন সেই নির্দেশটাই হচ্ছে নর-নারীর জন্য শিক্ষা বিষয়ক। ইরশাদ হচ্ছে-‘পড় তোমার প্রভুর নামে” (সূরা আলাক: আয়াত-১)।
শিক্ষা ছাড়া আল্লহকে জানা বুঝা যাবে না বিধায় শিক্ষা অর্জন করা প্রথম ও প্রধান ফরজ। এই ফরজ কাজ থেকে বিরত থাকা মানেই সকল ক্ষেত্রে ধ্বংস ডেকে আনা। মানবতার ইহ-পরকালীন শান্তির একমাত্র পথ হচ্ছে শিক্ষা। আর এই শিক্ষা নর-নারী উভয় কেই অর্জন করতে হবে। ইলম অর্জন করা সকল নর-নারীর উপর ফরজ ঘোষণা করে হযরত আনাস রা. বর্ণিত হাদীসে রাসূল সা. ইরশাদ করেন- ‘ইলম অর্জন করা প্রত্যেক মুছলীম নর-নারীর উপর ফরজ’ (ইবনে মাজাহ, বায়হাকী)
رَبَّنَا إِنَّكَ جَامِعُ النَّاسِ لِيَوْمٍ لَّا رَيْبَ فِيْهِ ۚ إِنَّ اللّٰهَ لَا يُخْلِفُ الْمِيْعَادَ
হে আমাদের রব, নিশ্চয় আপনি মানুষকে সমবেত করবেন এমন একদিন, যাতে কোন সন্দেহ নেই। নিশ্চয় আল্লহ প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেন না।
(সূরা আলে ইমরান - ৩:৮-৯)
মহান আল্লহ সবাইকে সঠিক টা বুঝার মত জ্ঞান দিন আমিন ছুম্মা আমিন।
পর্বঃ ৬
ইসলামে নারীর সন্মান, এবং ইসলাম দিয়েছে সকল মা কে সর্বোচ্চ সন্মানিত আসন।
ইসলাম ই একমাত্র নারীর মর্যাদা দিয়েছে সর্বোচ্চ সন্মানের। আলহামদুলিল্লাহ আমি এই ইসলাম ই পেয়েছি আমার ধর্ম।আমি মুছলিম আলহামদুলিল্লাহ। আমিই নারী আমি আল্লহর একজন গুনাহগারী বান্দী।আলহামদুলিল্লাহ
ওগো মা তুমি এই ধরনীর শ্রেষ্ঠ নেয়ামত, তোমারী পদতলে রয়েছে জান্নাত। মা কে কষ্ট দিয়েননা কেউ, মা যেমনই হোক না কেন সে আপনারই মা,,
মানুষ সামাজিক জীব, অন্যদিকে প্রকৃতির অংশ। তাই মানুষকে জীবন ধারণ, বেঁচে থাকা ও অস্তিত্ব রক্ষার জন্য প্রাকৃতিক ও সামাজিক উভয় বিধানই মেনে চলতে হবে। প্রাকৃতিক বিধান লঙ্ঘন করলে ধ্বংস অনিবার্য। আর সামাজিক বিধান ভঙ্গ করলে নেমে আসে বিপর্যয়। সামাজিক নিয়মগুলো প্রকৃতি থেকে মানুষের লব্ধ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে গড়ে ওঠে। বিধানসমূহের মধ্যে ধর্মীয় বিধানই শ্রেয়।
ইসলামের মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ‘নিছা’ অর্থাৎ ‘মহিলা’ শব্দটি ৫৭ বার এবং ‘ইমরাআহ’ অর্থাৎ ‘নারী’ শব্দটির ২৬ বার উল্লেখ হয়েছে। পবিত্র কুরআনে ‘নিছা’ তথা ‘মহিলা’ শিরোনামে নারীর অধিকার ও কর্তব্যসংক্রান্ত একটি স্বতন্ত্র বৃহৎ সূরাও রয়েছে। এ ছাড়া কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসে নারীর অধিকার, মর্যাদা ও তাদের মূল্যায়ন সম্পর্কে সুস্পষ্ট বর্ণনা রয়েছে। ইসলাম নারীর ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে। দিয়েছে নারীর জান-মালের নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ সম্মান।
ইসলাম নারীকে মহান মর্যাদা দিয়েছে। ইসলাম মা হিসেবে নারীকে সম্মান দিয়েছে। মায়ের সাথে সদ্ব্যবহার করা, মায়ের আনুগত্য করা, মায়ের প্রতি ইহসান করা ফরয করেছে। মায়ের সন্তুষ্টিকে আল্লহ্র সন্তুষ্টি হিসেবে গণ্য করেছে। ইসলাম জানিয়েছে, মায়ের পদতলে বেহেশত অর্থাৎ জান্নাতে যাওয়ার সহজ রাস্তা হচ্ছে- মায়ের মাধ্যমে। মায়ের অবাধ্য হওয়া, মাকে রাগান্বিত করা— হারম; এমনকি সেটা যদি শুধু উফ্ উফ্ শব্দ উচ্চারণ করার মাধ্যমে হয় তবুও। পিতার অধিকারের চেয়ে মায়ের অধিকারকে মহান ঘোষণা করেছে। বয়স হয়ে গেলে ও দুর্বল হয়ে গেলে মায়ের খেদমত করার উপর জোর তাগিদ দিয়েছে। কুরআন-হাদিসের অসংখ্য স্থানে এ বিষয়গুলো উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন-
আল্লহর বাণী:
“আমরা মানুষকে তার মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি।”[সূরা আহক্বাফ, আয়াত: ১৫]
“আর আপনার রব আদেশ দিয়েছেন তিনি ছাড়া অন্য কারো ইবাদত না করতে ও মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করতে। তারা একজন বা উভয়ই তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। তাদের সাথে সম্মানসূচক কথা বল। আর মমতাবশে তাদের প্রতি নম্রতার পক্ষপুট অবনমিত কর এবং বল ‘হে আমার রব! তাঁদের প্রতি দয়া করুন যেভাবে শৈশবে তাঁরা আমাকে প্রতিপালন করেছিলেন।”[সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত: ২৩-২৪]
ইবনে মাজাহ (২৭৮১) মুয়াবিয়া বিন জাহিমা আল-সুলামি (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন: আমি রছূলুল্লহ্ ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম এর কাছে এসে বললাম: ইয়া রছূলুল্লহ্! আমি আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই; এর মাধ্যমে আল্লহ্র সন্তুষ্টি ও আখেরাত অর্জন করতে চাই। তিনি বললেন: তোমার জন্য আফসোস! তোমার মা কি জীবিত? আমি বললাম: হ্যাঁ। তিনি বললেন: ফিরে গিয়ে তার সেবা কর। এরপর আমি অন্যভাবে আবার তাঁর কাছে এসে বললাম: ইয়া রছূলুল্লহ্! আমি আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। এর মাধ্যমে আল্লহ্র সন্তুষ্টি ও আখিরাত অর্জন করতে চাই। তিনি বললেন: তোমার জন্য আফসোস! তোমার মা কি জীবিত? আমি বললাম: হ্যাঁ। তিনি বললেন: তার কাছে ফিরে গিয়ে তার সেবা কর। এরপরও আমি তাঁর সামনে থেকে এসে বললাম: ইয়া রছূলুল্লহ্! আমি আপনার সাথে জিহাদে যেতে চাই। এর মাধ্যমে আল্লহ্র সন্তুষ্টি ও আখিরাত অর্জন করতে চাই। তিনি বললেন: তোমার জন্য আফসোস! তোমার মা কি জীবিত? আমি বললাম: হ্যাঁ। তিনি বললেন: তোমার জন্য আফসোস! তুমি তার পায়ের কাছে পড়ে থাক। সেখানেই জান্নাত রয়েছে।”[আলবানী সহিহু সুনানে ইবনে মাজাহ গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। হাদিসটি সুনানে নাসাঈ গ্রন্থেও (৩১০৪) রয়েছে। সেখানে হাদিসটির ভাষ্য হচ্ছে- “তার পায়ের কাছে পড়ে থাক। তার পায়ের নীচে রয়েছে – জান্নাত।”
সহিহ বুখারী (৫৯৭১) ও সহিহ মুসলিমে (২৫৪৮) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তিনি বলেন: “এক ব্যক্তি রছূলুল্লহ্ ছল্লাল্লহু আলাইহি ওয়া ছাল্লাম এর কাছে এসে বলল: ইয়া রছূলুল্লহ্! আমার সদ্ব্যবহার পাওয়ার বেশি অধিকার কার? তিনি বললেন: তোমার মায়ের। লোকটি বলল: এরপর কার? তিনি বললেন: তোমার মায়ের। লোকটি বলল: এরপর কার? তিনি বললেন: তোমার মায়ের। লোকটি বলল: এরপর কার? তিনি বললেন: তোমার পিতার।”
ইসলাম মা হিসেবে কতটা সন্মানিত করেছেন চিন্তা করুন হে আমার বোনেরা। আপনি নিজেকে এমন একজন সন্তানের মা হিসেবে,তৈরী করুন। যে সন্তান আপনার মুখে দিকে তাকিয়ে তার জান্নাত খুজে পাবে। বোন আল্লহর হুকুম পালনেই রয়েছে সন্মান। আপনি হয়ে উঠুন আপনার সন্তান এর চোখে আদর্শ মা। বোন নিজেকে আর নিচে নামাবেননা নিজের সৌন্দর্য স্বামীর জন্য। আপনার সন্তানদের আদর্শ মা আপনি। আপনি তাদের প্রাথমীক শিক্ষীকা।
আমার জীবন মৃত্যু,রিজক,ও সন্মানের মালীক মহান আল্লহ আমায় ও আমার প্রতিটা মা বোনকে আপনি ক্ষমা করুন, আর আপনার এই দাসীদেরকে আপনার হুকুম পালন করার তাওফিক দান করুন।
আমিন ছুম্মা আমিন।
বোন আপনি আজ অর্ধ-উলঙ্গ হয়ে সর্বত্র চলাফেরা করলে আপনার কন্যা শিশুটিও এটা দেখে নিজেকে তৈরী করবে আপনার ই মতো।।আর পূত্র শিশুটি যখন বড় হয়ে তার ওস্তাদ এর কাছে শিখবে পর্দা করা ফরজ। তখন আপনার প্রতি তার একটি ঘৃনার দৃষ্টি তৈরী হবে বোন। হয়তবা সে আপনার কর্মের কারনেই ও রকম কোন ওস্তাদ এর স্বরনাপন্ন হতেও পারবেনা।
কেননা সে শিখবে ফ্রি মিক্সিং, জাস্ট ফ্রেন্ড নামের শয়তানী,সে হারাম প্রেম লিলাকে অনায়েসে গা ভাসিয়ে দিতে শিখবে।। আল্লহু আলাম।